
ভারতের ত্রিপুরার আগরতলায় সোমবার (২ ডিসেম্বর) দুপুরে বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলা, ভাঙচুর ও জাতীয় পতাকা পোড়ানোর ঘটনা ঘটেছে। এর প্রতিবাদে বুধবার (৪ ডিসেম্বর) ও মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) গোপালগঞ্জ, ফেনী, নেত্রকোনা, মাগুরা, সিলেট, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ও কুয়েটে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা এবং ছাত্র-জনতা।
প্রতিনিধিদের পাঠানো প্রতিবেদন-
গোপালগঞ্জ: গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা। দুপুরে উপজেলা বিএনপির অফিস চত্বর থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি উপজেলা শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে চৌরঙ্গী মোড়ে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে উপজেলা বিএনপির সভাপতি আ. ছালাম খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. তরিকুল ইসলাম রাজু, পৌর বিএনপির সদস্যসচিব মশিউর রহমান মিন্টু ও মুকসুদপুর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মো. মেহেদি হাসান বিপ্লব বক্তব্য রাখেন।
ফেনী: ফেনীর বিলোনিয়া স্থলবন্দরে এসে বাংলাদেশবিরোধী স্লোগানের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছে ছাত্র-জনতা। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ফেনীর পরশুরামের বিলোনিয়া স্থলবন্দরের সামনে জড়ো হয়ে এ কর্মসূচি পালন করেন তারা। বিজিবি ও পুলিশের কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে তারা এ কর্মসূচি পালন করেন।
এতে বক্তব্য রাখেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের জেলা সমন্বয়ক মোহাইমিন তাজিম, মো. ওমর ফারুক, মোহাম্মদ শাওন, ফুলগাজীর সমন্বয়ক আব্দুর রহিম বাবু, সোহাগ, সৌরভ হোসেন, আজিজুল্লাহ আহমদী, জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ। সমাবেশে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশবিরোধী ষড়যন্ত্রে মেতেছে ভারত। তারা ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব নিয়ে হুমকি দিচ্ছে। বাংলাদেশের ছাত্রজনতা এর দাঁতভাঙা জবাব দিতে প্রস্তুত।
নেত্রকোনা: দূতাবাসে হামলা ও তাদের মিডিয়ায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতন নিয়ে মিথ্যা সংবাদ প্রকাশের অভিযোগে মানববন্ধন হয়েছে। দুপুরে নেত্রকোনা পৌর শহরের বড় বাজারে বাংলাদেশ খেলাফত যুব আন্দোলনের জেলা কমিটির আয়োজনে এ কর্মসূচি পালিত হয়। এতে অংশ নেন, সংগঠনটির সহকারী সাংগঠনিক সম্পাদক গাজী আব্দুর রহিম, মাওলানা দেলোয়ার হোসেন সিদ্দিকী, আমিরুল ইসলাম এবং হাফেজ আনোয়ার হোসেন।
মাগুরা: মাগুরায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জেলা শহরের সদর উপজেলা পরিষদের সামনে থেকে ‘ভারতীয় আগ্রাসন রুখে দাও’ ব্যানার নিয়ে শহরে বিক্ষোভ মিছিল বের করে পৌর কৃষক দল। মিছিলটি শহর প্রদক্ষিণ করে চৌরঙ্গী মোড়ে সমাবেশ করে। সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, জেলা কৃষক দলের সদস্যসচিব জাহাঙ্গীর আলম হিরা, সদর থানার কৃষক দলের আহ্বায়ক এহসানুল হক পলাশ, পৌর কৃষক দলের আহ্বায়ক রিপন আকাশ অপু এবং সদর উপজেলার কৃষক দলের সদস্যসচিব রিফাতুল ইসলাম রায়হান।
এ সময় বক্তারা বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলা, ভারতীয় গণমাধ্যমে মিথ্যা প্রোপাগান্ডা ছড়ানো, বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা অবমাননা ও বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক উস্কানি সৃষ্টির তীব্র প্রতিবাদ জানান।
সিলেট: গত মঙ্গলবার রাতে সিলেট নগরীতে এ ঘটনায় বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হয়। জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নজিবুর রহমান নজিবের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহসাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ্ সিদ্দিকী, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ডা. শাহরিয়ার হোসেন চৌধুরী, অ্যাডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী ও সিলেট মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী।
খুলনা: এ ঘটনার প্রতিবাদে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় (খুবি) ও খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) বিক্ষোভ করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। গত মঙ্গলবার মধ্যরাতে দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। রাতে খুবির বিভিন্ন হল থেকে শিক্ষার্থীরা বের হয়ে হাদী চত্বরে জড়ো হন। এ সময় তারা ‘দিল্লি না ঢাকা; ঢাকা, ঢাকা’, ‘ভারতীয় আগ্রাসন ভেঙে দাও, গুঁড়িয়ে দাও’ বলে স্লোগান দিতে থাকেন।