ঢাকা ৩০ পৌষ ১৪৩১, মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারি ২০২৫

লোভের কোপে ছোট হচ্ছে পাহাড়

প্রকাশ: ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:২৭ এএম
আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৩৮ এএম
লোভের কোপে ছোট হচ্ছে পাহাড়
ব্যক্তিমালিকানাধীন জমি হওয়ায় যে যেভাবে পারছেন লালমাই পাহাড় কেটে স্থাপনা গড়ছেন। কুমিল্লা সদর দক্ষিণের ধর্মপুর থেকে তোলা। ছবি: খবরের কাগজ

কুমিল্লা জেলায় প্রায় তিন হাজার একর জায়গাজুড়ে পাহাড় রয়েছে। এর মধ্যে লালমাই পাহাড় অন্যতম। প্রত্নসম্পদে ভরপুর ঐতিহ্যেবাহী এ লালমাটির পাহাড় কেটে প্রতিদিনই নতুন নতুন উন্নয়ন কর্মকাণ্ড চালানো হচ্ছে। তৈরি হচ্ছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বিনোদন কেন্দ্র, রাস্তাঘাট, ঘরবাড়িসহ নানান স্থাপনা। ফলে পাহাড়টি এখন অস্তিত্ব হারানোর শঙ্কায় পড়েছে। 

পাহাড় কেটে বনভূমি ধ্বংসের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসন, বন বিভাগ এবং পরিবেশ অধিদপ্তর মামলা ও আইন প্রয়োগের দাবি করে এলেও স্থানীয়রা বলছেন, প্রকাশ্যে ও লুকিয়ে পাহাড় কাটা অব্যাহত থাকায় অনেক পাহাড়ি জায়গা সমতলে পরিণত হয়েছে। কখনো রাজনৈতিক প্রভাবে, কখনো আবার প্রশাসনিকভাবেও লালমাই পাহাড়ের মাটি অবাধে কাটা হয়; যা এখনো চলমান রয়েছে। 

পরিবেশবিদরা বলছেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে পরিবেশ রক্ষায় বনভূমির গুরুত্ব অপরিসীম। পাশাপাশি এগুলো জীববৈচিত্র্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। একটি দেশের মোট জমির কমপক্ষে ২৫ শতাংশ বনভূমি দরকার, সেখানে আমাদের দেশে রয়েছে মাত্র ১৫ শতাংশ। নির্বিচারে পাহাড় কাটায় এর পরিমাণ দিনদিন আরও কমছে। কুমিল্লার লালমাই পাহাড়ের মাটি কাটা বন্ধে দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না নিলে এই পাহাড় একসময় অস্তিত্ব হারিয়ে ফেলবে। আর এর প্রভাব পড়বে জীববৈচিত্র্যের ওপর।

জানা গেছে, কুমিল্লার সদর, সদর দক্ষিণ ও বরুড়া উপজেলায় অবস্থিত এ পাহাড় উত্তর-দক্ষিণে ১১ মাইল (১.৬০ কিলোমিটারে এক মাইল) লম্বা এবং পূর্ব-পশ্চিমে দুই মাইল চওড়া। লাখ লাখ বছর আগের এই লালমাই পাহাড় কেটে এবং বন উজাড় করে বিগত দুই দশক ধরে নির্মাণ করা হয়েছে কাশবন নামে দুটি পার্ক ও রিসোর্ট, ব্লু ওয়াটার পার্ক, লালমাই লেকল্যান্ড, ডাইনোসর পার্ক, ম্যাজিক প্যারাডাইস। নির্মাণ প্রক্রিয়ায় রয়েছে আরও বেশ কিছু বিনোদনকেন্দ্র। পাহাড়ের টিলা কেটে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়, বেসরকারি সিসিএন বিশ্ববিদ্যালয়, কুমিল্লা ফিজিক্যাল কলেজসহ নির্মাণ করা হয়েছে বহু সরকারি-বেসরকারি স্থাপনাও।

পরিবেশপ্রেমীরা বলছেন, এ পাহাড়ের অধিকাংশ জমি ব্যক্তিমালিকানাধীন হওয়ায় স্থানীয়রা প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে মাটি কেটে বনভূমি উজাড় করছেন। এভাবে জুলুম আর লোভের কোপে ধীরে ধীরে ছোট হচ্ছে লালমাই পাহাড়। বিলুপ্ত হচ্ছে জীবজন্তু, নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য। পরিবেশপ্রেমীদের দাবি, ইতিহাস ও প্রকৃতি রক্ষায় এ পাহাড় সংরক্ষণ জরুরি।

মাহবুবুর রহমান নামে স্থানীয় এক ব্যক্তি বলেন, ‘গত কয়েক বছরে কুমিল্লার লালমাই পাহাড় থেকে যে পরিমাণ মাটি কাটা হয়েছে তা চলমান থাকলে আগামী ১০ থেকে ১২ বছর পর আমরা এই পাহাড় আর দেখতে পাব না। এক সময় এ পাহাড়ে উঠলে কুমিল্লা শহরের বিভিন্ন স্থাপনা দেখা যেত। এখন যে যার ইচ্ছামতো পাহাড় কাটছে। বিক্রি করছে। পাহাড় কাটা বন্ধে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে এই পাহাড়কে আর রক্ষা করা যাবে না।’

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. সোহরাব উদ্দিন বলেন, ‘পরিবেশ, জীববৈচিত্র্য রক্ষা ছাড়াও এ অঞ্চলের ভূ-প্রকৃতির জন্য লালমাই পাহাড়ের গুরুত্ব অপরিসীম। আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর উচিত সম্মিলিত উদ্যোগের মাধ্যমে প্রত্নসম্পদে ভরপুর এ পাহাড় রক্ষায় সচেতনতা বাড়ানোর পাশাপাশি স্থানীয়দের মাঝে পাহাড়ের গুরুত্ব তুলে ধরা।’

কুমিল্লা পরিবেশ অধিদপ্তরের সিনিয়র কেমিস্ট রায়হান মোর্শেদ খবরের কাগজকে বলেন, ‘বিনোদন কেন্দ্র, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং রাস্তাঘাটসহ বিভিন্ন স্থাপনা তৈরিতে পাহাড় কাটার অভিযোগ রয়েছে। পরিবেশ অধিদপ্তর এসব অভিযোগের ভিত্তিতে চলতি বছর চারটি মামলা করেছে। বিভিন্ন সময় অভিযান চালানো হচ্ছে।’

বন বিভাগের কুমিল্লা বিভাগীয় বন কর্মকর্তা জি এম মোহাম্মদ কবির খবরের কাগজকে বলেন, ‘পাহাড় কাটার দায়ে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়কেও ছাড় দেওয়া হয়নি। মামলা ও আইন প্রয়োগ করা হয়েছে। বনবিভাগের সম্পত্তি দখল, মাটি কাটা ও বনভূমি ধ্বংসকারীদের বিরুদ্ধে কখনই ছাড় দেওয়া হবে না।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুমিল্লার জেলা প্রশাসক মো. আমিরুল কায়ছার বলেন, ব্যক্তি পর্যায়ে যতটুকু পাহাড় কাটা হয় তার চেয়ে অনেক বেশি কাটা হয় প্রাতিষ্ঠানিকভাবে। তাদের কারণে পাহাড় ও বনভূমি বেশি ধ্বংস হচ্ছে। কোনো প্রতিষ্ঠান করার আগে সংশ্লিষ্টদের তিনি পাহাড় ও বনভূমির জায়গা বাদ দিয়ে অন্য জমি বাছাইয়ের পরামর্শ দেন।

ঠাকুরগাঁও পাসপোর্ট অফিসে দুদকের অভিযান, অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাকাউন্টেন্ট গ্রেপ্তার

প্রকাশ: ১৪ জানুয়ারি ২০২৫, ০৫:৪৬ পিএম
ঠাকুরগাঁও পাসপোর্ট অফিসে দুদকের অভিযান, অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাকাউন্টেন্ট গ্রেপ্তার
ঘুষ লেনদেনের সময় দুদকের হাতে আটক অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাকাউন্টেন্ট মো. ফারুক আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত

ঠাকুরগাঁও পাসপোর্ট অফিসে ঘুষ লেনদেনের সময় অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাকাউন্টেন্ট মো. ফারুক আহমেদকে হাতেনাতে আটক করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) দুপুরে শহরের বাজারপাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে দুদকের একটি বিশেষ টিম তাকে আটক করে।

মেহজাবিন সরকার নামে এক ভুক্তভোগী গ্রাহক পাসপোর্ট নবায়নের জন্য আবেদন করেন। অফিসে তার সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়ে ফারুক আহমেদ ৫০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন। প্রথম কিস্তি হিসেবে ২০ হাজার টাকা নেওয়ার সময় দুদক তাকে গ্রেপ্তার করে।

মেহজাবিন সরকার বলেন, ‘টাকা না দিলে কাজ হবে না, এমন হুমকি দেন ফারুক আহমেদ। বাধ্য হয়ে আমি বিষয়টি দুদককে জানাই।’

ঠাকুরগাঁও দুর্নীতি দমন কমিশনের উপ-পরিচালক তাহাসিন মুনাবীল হক বলেন, ‘ভুক্তভোগীর অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা এই অভিযান চালাই। ঘুষ নেওয়ার সময় হাতেনাতে তাকে আটক করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং আরও কেউ জড়িত আছে কি না, তা তদন্ত করা হচ্ছে।’

ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর পাসপোর্ট অফিসে সেবা নিতে আসা সাধারণ জনগণের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। অনেকে দীর্ঘদিন ধরে চলা দুর্নীতি ও ঘুষের অভিযোগ প্রকাশ্যে আসায় দুদকের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন।

স্থানীয় বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে এসব দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযোগ করে আসছিলাম। এবার তা প্রমাণিত হয়েছে। আমরা চাই এই অভিযান চলমান থাকুক।’

আরেক ভুক্তভোগী জসিম উদ্দিন বলেন, ‘সরকারি সেবা নিতে এসে ঘুষ দিতে হবে, এটাই যেন নিয়ম হয়ে গেছে। দুদকের অভিযান আমাদের আশার আলো দেখাচ্ছে।’

এর আগে ঠাকুরগাঁও পাসপোর্ট অফিসের কিছু কর্মচারীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠলেও এবারই প্রথম সরাসরি অভিযানের মাধ্যমে প্রমাণ মিলেছে।

দুদক জানিয়েছে, পাসপোর্ট অফিসের অন্যান্য কর্মচারীদের কার্যকলাপও তদন্ত করা হচ্ছে।

নবীন হাসান/মাহফুজ

 

ময়মনসিংহে মাজার ও আশপাশের এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি

প্রকাশ: ১৪ জানুয়ারি ২০২৫, ০৬:০৭ পিএম
আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০২৫, ০৬:০৭ পিএম
ময়মনসিংহে মাজার ও আশপাশের এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি
কোতোয়ালি মডেল থানা। ছবি: খবরের কাগজ

ময়মনসিংহ নগরীর থানাঘাট এলাকার হজরত শাহ সুফী সৈয়দ কালু শাহের (রহ) মাজার ও আশপাশের এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করেছে জেলা প্রশাসন।

মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) সকাল পৌনে দশটা থেকে বিকেল সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত এ আদেশ জারি করা হয়।

জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলম স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, থানাঘাট থেকে ট্রাফিক অফিস পর্যন্ত মঙ্গলবার একাধিক পক্ষ একই স্থানে এবং একই সময়ে সভা-সমাবেশ ডেকেছে। সমাবেশ ঘিরে এলাকায় চরম উত্তেজনাকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এর ফলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিসহ রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা আছে। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।

কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সফিকুল ইসলাম বলেন, মাজারের পক্ষে ও বিপক্ষে একই সময়ে দুই পক্ষের সমাবেশ ঘিরে উত্তেজনা তৈরি হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছে।

এর আগে ৮ জানুয়ারি রাতে দিকে নগরীর থানাঘাট এলাকায় অবস্থিত ওই মাজারের ১৭৯তম বার্ষিক ওরস উপলক্ষ্যে মিলাদ মাহফিল, দোয়া ও শ্যামা কাওয়ালি অনুষ্ঠান করছিল ভক্তরা। এ সময় তিন থেকে চারটি ইসলামি গান শেষ হতেই পাশে অবস্থিত বড় মসজিদের মাদ্রাসা থেকে কয়েকশ' ছাত্র এসে হামলা চালায়। এ সময় ডেকোরেটরের চেয়ার, সামিয়ানা ও সাউন্ডসিস্টেমসহ সবকিছু ব্যাপক ভাঙচুর করা হয়।

পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়।

এরপর রাত তিনটার দিকে একই এলাকায় অবস্থিত ওই মাজারে ছাত্ররা আবারও হামলা চালিয়ে মাজার ভেঙে গুড়িয়ে দেয়। এ সময় মাজারের আলমারিতে থাকা মালামাল, সিন্দুক ও দান বাক্স ভাঙচুর করা হয়।

এ ঘটনায় ৯ জানুয়ারি রাতে কোতোয়ালি মডেল থানায় মাজারটির অর্থ সম্পাদক মো. খলিলুর রহমান বাদী হয়ে এক হাজার ৫০০ জন অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করে মামলা করেন।

এ ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বাংলাদেশ সুফিবাদ ঐক্য পরিষদ মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) বেলা ১১টায় মানববন্ধনের আয়োজন করে। 

ভাঙচুর করা মাজারের সামনে এ মানববন্ধনের আয়োজন করলে উত্তেজনা শুরু হয়।

কামরুজ্জামান/নাবিল/এমএ/

জামাইদের আপ্যায়নে বক-বুনোহাঁস, ২ ব্লগারকে খুঁজছে বন বিভাগ

প্রকাশ: ১৪ জানুয়ারি ২০২৫, ০৫:৩০ পিএম
আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০২৫, ০৬:০২ পিএম
জামাইদের আপ্যায়নে বক-বুনোহাঁস, ২ ব্লগারকে খুঁজছে বন বিভাগ
বক পাখি হাতে আল-আমিন ও বুনোহাঁস হাতে তুলি। ছবি: সংগৃহীত

বক ও বুনোহাঁস ধরে তা জবাই করে রোস্ট করে জামাইদের আপ্যায়ন করার পরিকল্পনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর আল-আমিন ও তুলি নামে দুই ব্লগারকে খুঁজছে রাজশাহী বন বিভাগ। এর আগে, সম্প্রতি আল-আমিন ও তুলি নামে দুইজন ব্লগার এসব পাখির ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করে। আল-আমিনের ৩৩ সেকেন্ডের ভিডিওতে তিনি বাসার স্পেশাল গেস্টকে (জামাই) তার হাতে থাকা পাঁচটি পরিযায়ী বক পাখি রোস্ট করে খাওয়ানোর কথা বলছেন। আবার, তুলির ৫৪ সেকেন্ডের ভিডিওতে বলতে শোনা যায়, তার বাবা রাতে বিল থেকে বুনোহাঁস পাখিটি ধরে নিয়ে এসেছেন।

এই ভিডিওতে প্রকাশ্যে পরিযায়ী পাখি ধরা ও জবাই করে রোস্ট করে খাওয়া উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে অভিযোগ তুলে রাজশাহীর বিভাগীয় কমিশনার খোন্দকার আজিম আহমেদ ও জেলা প্রশাসক আফিয়া আখতারকে স্মারকলিপি দিয়েছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ইয়ুথ অ্যাকশন ফর সোশ্যাল চেঞ্জ (ইয়্যাস)। ইয়্যাসের সভাপতি শামীউল আলীম ও সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান স্বাক্ষরিত এই স্মারকলিপিতে আল-আমিন ও তুলির শাস্তি দাবি করা হয়। এরপর থেকেই তাদের খোঁজে নেমেছে বন বিভাগ।

ইয়্যাসের ওই স্মারকলিপিতে বলা হয়, আল-আমিন ও তুলি প্রকাশ্যে পরিযায়ী পাখি ধরার ও জবাই করে রোস্ট করে খাওয়ার প্রচারনা দিচ্ছেন, যা বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন ২০১২ এর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। ফলে দুই ব্লগার আল-আমিন ও তুলির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দ্রুততম সময়ের মধ্যে নিশ্চিত করা, পাখি বা পরিযায়ী পাখি শিকারিদের আইনের আওতায় আনা ও নগরজুড়ে পাখির বিচরণ কেন্দ্র ও আবাসস্থলকে সংরক্ষিত ঘোষণা করে সেখানে আলোদূষণ ও শব্দদূষণ রোধ করারও দাবি জানানো হয়েছে।

স্মারকলিপির অনুলিপি বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের পরিচালক, প্রধান বন সংরক্ষক, রাজশাহী বিভাগীয় বন কর্মকর্তা, পরিবেশ অধিদপ্তরের রাজশাহী জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালককেও দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে আল-আমিন ও তুলি নামে ওই দুই ব্লগারের সঙ্গে মুঠোফোনে কয়েক দফা যোগাযোগ করলেও তাদের ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। ফলে তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

রাজশাহী বন বিভাগের বন্যপ্রাণী পরিদর্শক জাহাঙ্গীর কবির বলেন, আইন অনুযায়ী কোনো ব্যক্তি উল্লিখিত কোনো পাখি বা পরিযায়ী পাখির ট্রফি বা অসম্পূর্ণ ট্রফি, মাংস দেহের অংশ সংগ্রহ করলে, দখলে রাখলে বা ক্রয় বা বিক্রি করলে বা পরিবহন করলে, তিনি অপরাধ করেছেন বলে গণ্য হবে এবং এ অপরাধের জন্য তিনি সর্বোচ্চ ছয় মাস পর্যন্ত কারাদণ্ড অথবা সর্বোচ্চ ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। একই অপরাধের পুনরাবৃত্তি ঘটালে সর্বোচ্চ এক বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। তবে আমরা দুটি ভিডিও পেয়েছি। শুধু ভিডিও আছে তাদের নাম বা ঠিকানা নেই। আমরা অনুসন্ধান চালাচ্ছি। ওই ব্লগারদের সন্ধানে নেমেছি। তাদের সন্ধান পেলেই আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এনায়েত করিম/মাহফুজ

ধামরাইয়ে পৌষ মেলা শুরু

প্রকাশ: ১৪ জানুয়ারি ২০২৫, ০৫:২৩ পিএম
আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০২৫, ০৫:২৩ পিএম
ধামরাইয়ে পৌষ মেলা শুরু
ধামরাইয়ে পৌষ মেলার আয়োজন। ছবি: খবরের কাগজ

ঢাকার ধামরাইয়ে ১৬ ইউনিয়নে ১৫-১৬টি গ্রামে পৌষ মেলা শুরু হয়েছে। একে সাকরাইন মেলা বা পৌষ সংক্রান্তি মেলাও বলা হয়। হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ একে বুড়া-বুড়ির মেলাও বলে থাকেন।

মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) ভোর থেকেই এই মেলা বসে। একে সাকরাইন উৎসব বলা হয়।

এ সব মেলায় সাধারণত ঘুড়ি ওড়ানো, মাটির তৈরি জিনিসপত্র বিক্রি, মিষ্টি বিক্রি করার সাথে সাথে মুড়ি, মিষ্টি জাতীয় খাবার, বেলুন, বাশি, নারীদের ব্যবহৃত জিনিসপত্র সহ আকর্ষণীয় জিনিসপত্র বিক্রি করা হয়।

জানা যায়, উপজেলার আইঙ্গন, কাকরান, দেপাশাই, কালামপুর, শ্রীরামপুর, বাসনা, বালিয়া, পৌরসভার যাত্রাবাড়ি মাঠ, হাজীপুর, সীতিপাল্লি, সানোড়া, বাড়িগাঁও, গোপালপুর, বারবারিয়া, রোয়াইল সহ বিভিন্ন জায়গায় এই মেলা বসে।

তবে কোথাও সকালে আবার কোথাও বিকেলে এই  অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। কোথাও কোথাও তিন দিনব্যাপী হয়ে থাকে এই মেলা।

কিন্তু শ্রীরামপুর মাঠে এই মেলা প্রায় মাসব্যাপী চলে। তবে এই দিনে হিন্দুদের পূজাও পালন করা হয়।

বাঙালি সংস্কৃতিতে পৌষ মাসের এই শেষ দিনটি উৎসব মুখর পরিবেশে পালিত হয়। প্রতিবারের মতো এবারও ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ মেলায় আসেন। মেলায় কুটিরশিল্পের সরঞ্জামসিহ নানা জিনিসপত্রের পসরা সাজিয়ে থাকেন দোকানিরা।

মুসলমানরাও বিভিন্ন প্রকার জিনিসপত্র বা খাদ্যসামগ্রীর দোকান দিয়ে থাকেন।

এ মেলার প্রধান আকর্ষণ ঘুড়ি উড়ানো।

রুহুল/নাবিল/

নীলফামারীতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাজতির মৃত্যু

প্রকাশ: ১৪ জানুয়ারি ২০২৫, ০৩:৩৪ পিএম
নীলফামারীতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাজতির মৃত্যু
ছবি : খবরের কাগজ

নীলফামারী জেলা কারাগারে মমিনুর ইসলাম (৫০) নামে এক হাজতির রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেন নীলফামারী কারাগারের সুপার রফিকুল ইসলাম। 

মমিনুর নীলফামারী জেলার জলঢাকা উপজেলার মীরগঞ্জ ইউনিয়নের পূর্ব শিমুলবাড়ি এলাকার বাসিন্দা। 

গত ডিসেম্বর মাসে একটি রাজনৈতিক মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছিলো। 

কারাগার সূত্রে জানা যায়, মমিনুরের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ৭ জানুয়ারি চিকিৎসার জন্য নীলফামারী সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় পরিবারের সদস্যরা তার সঙ্গে ছিলেন। ৮ জানুয়ারি অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

জেল সুপার রফিকুল ইসলাম জানান, চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভোর ৪টার দিকে মৃত্যুবরণ করেন। ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হলে পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হবে। 

ওয়ালি সুমন/জোবাইদা/