ঢাকা ৩০ পৌষ ১৪৩১, মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারি ২০২৫

সিলেটে ৪ ছিনতাইকারী গ্রেপ্তার

প্রকাশ: ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:১১ পিএম
আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:৫৫ পিএম
সিলেটে ৪ ছিনতাইকারী গ্রেপ্তার
চার ছিনতাইকারী। ছবি: খবরের কাগজ

সিলেট নগরীর বন্দরবাজার, জেল রোডসহ বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে চার ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় তাদের কাছ থেকে টাকা ও মোবাইল উদ্ধার করা হয়। 

বুধবার (১১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় তাদের আটক করে কোতোয়ালি মডেল থানার পুলিশ। 

বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) তাদেরকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।

একই দিন রাত সাড়ে ১১টায় সিলেট মহানগর পুলিশ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানায়।

আটকরা হলেন- সিলেটের ওসমানীনগর উপজেলার কাটিপুর গ্রামের আবদুল মালিক রুহেল (২৮), সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার বোরুরাড়া গ্রামের পারভেজ আহমদ (২৫), সিলেট নগরীর বাগবাড়ি নরসিংটিলার বাবলু আহমদ (২৩) ও বাগবাড়ি সোনার বাংলা আবাসিক এলাকার মো. কয়েছ (৩০)।

পুলিশ জানায়, ১০ ডিসেম্বর বিকেল সোয়া ৪টার দিকে সিলেট নগরীর তালতলার নূরজাহান হোটেলের সামনে মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার পূর্ব জালালাবাদ গ্রামের ওয়াহিদ হোসেন (১৯) ও তার চাচাতো ভাই ছিনতাইয়ের শিকার হন। তাদের কাছ থেকে নগদ ৬ হাজার ৭০০ টাকা এবং একটি মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয় ছিনতাইকারীরা। 

এ ঘটনায় ১২ ডিসেম্বর ওয়াহিদ হোসেনের চাচা হুমায়ুন কিবরিয়া বাবলু (৩৭) বাদী হয়ে ছিনতাইকারীদের বিরুদ্ধে মামলা করেন। পরে কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মো. জিয়াউল হকের নির্দেশনায় কোতোয়ালি থানার একটি চৌকস টিম অভিযান চালিয়ে ছিনতাইকারীদের গ্রেপ্তার করে। এ সময় তাদের কাছ থেকে ছিনতাই করা তিন হাজার টাকা এবং একটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করে পুলিশ।

সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানান, চার ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেলে পাঠানো হয়েছে।

শাকিলা/পপি/

ঠাকুরগাঁও পাসপোর্ট অফিসে দুদকের অভিযান, অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাকাউন্টেন্ট গ্রেপ্তার

প্রকাশ: ১৪ জানুয়ারি ২০২৫, ০৫:৪৬ পিএম
ঠাকুরগাঁও পাসপোর্ট অফিসে দুদকের অভিযান, অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাকাউন্টেন্ট গ্রেপ্তার
ঘুষ লেনদেনের সময় দুদকের হাতে আটক অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাকাউন্টেন্ট মো. ফারুক আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত

ঠাকুরগাঁও পাসপোর্ট অফিসে ঘুষ লেনদেনের সময় অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাকাউন্টেন্ট মো. ফারুক আহমেদকে হাতেনাতে আটক করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) দুপুরে শহরের বাজারপাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে দুদকের একটি বিশেষ টিম তাকে আটক করে।

মেহজাবিন সরকার নামে এক ভুক্তভোগী গ্রাহক পাসপোর্ট নবায়নের জন্য আবেদন করেন। অফিসে তার সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়ে ফারুক আহমেদ ৫০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন। প্রথম কিস্তি হিসেবে ২০ হাজার টাকা নেওয়ার সময় দুদক তাকে গ্রেপ্তার করে।

মেহজাবিন সরকার বলেন, ‘টাকা না দিলে কাজ হবে না, এমন হুমকি দেন ফারুক আহমেদ। বাধ্য হয়ে আমি বিষয়টি দুদককে জানাই।’

ঠাকুরগাঁও দুর্নীতি দমন কমিশনের উপ-পরিচালক তাহাসিন মুনাবীল হক বলেন, ‘ভুক্তভোগীর অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা এই অভিযান চালাই। ঘুষ নেওয়ার সময় হাতেনাতে তাকে আটক করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং আরও কেউ জড়িত আছে কি না, তা তদন্ত করা হচ্ছে।’

ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর পাসপোর্ট অফিসে সেবা নিতে আসা সাধারণ জনগণের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। অনেকে দীর্ঘদিন ধরে চলা দুর্নীতি ও ঘুষের অভিযোগ প্রকাশ্যে আসায় দুদকের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন।

স্থানীয় বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে এসব দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযোগ করে আসছিলাম। এবার তা প্রমাণিত হয়েছে। আমরা চাই এই অভিযান চলমান থাকুক।’

আরেক ভুক্তভোগী জসিম উদ্দিন বলেন, ‘সরকারি সেবা নিতে এসে ঘুষ দিতে হবে, এটাই যেন নিয়ম হয়ে গেছে। দুদকের অভিযান আমাদের আশার আলো দেখাচ্ছে।’

এর আগে ঠাকুরগাঁও পাসপোর্ট অফিসের কিছু কর্মচারীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠলেও এবারই প্রথম সরাসরি অভিযানের মাধ্যমে প্রমাণ মিলেছে।

দুদক জানিয়েছে, পাসপোর্ট অফিসের অন্যান্য কর্মচারীদের কার্যকলাপও তদন্ত করা হচ্ছে।

নবীন হাসান/মাহফুজ

 

জামাইদের আপ্যায়নে বক-বুনোহাঁস, দুই ব্লগারকে খুঁজছে বন বিভাগ

প্রকাশ: ১৪ জানুয়ারি ২০২৫, ০৫:৩০ পিএম
আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০২৫, ০৫:৩০ পিএম
জামাইদের আপ্যায়নে বক-বুনোহাঁস, দুই ব্লগারকে খুঁজছে বন বিভাগ
বক পাখি হাতে আল-আমিন ও বুনোহাঁস হাতে তুলি। ছবি: সংগৃহীত

বক ও বুনোহাঁস ধরে তা জবাই করে রোস্ট করে জামাইদের আপ্যায়ন করার পরিকল্পনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর আল-আমিন ও তুলি নামে দুই ব্লগারকে খুঁজছে রাজশাহী বন বিভাগ। এর আগে, সম্প্রতি আল-আমিন ও তুলি নামে দুইজন ব্লগার এসব পাখির ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করে। আল-আমিনের ৩৩ সেকেন্ডের ভিডিওতে তিনি বাসার স্পেশাল গেস্টকে (জামাই) তার হাতে থাকা পাঁচটি পরিযায়ী বক পাখি রোস্ট করে খাওয়ানোর কথা বলছেন। আবার, তুলির ৫৪ সেকেন্ডের ভিডিওতে বলতে শোনা যায়, তার বাবা রাতে বিল থেকে বুনোহাঁস পাখিটি ধরে নিয়ে এসেছেন।

এই ভিডিওতে প্রকাশ্যে পরিযায়ী পাখি ধরা ও জবাই করে রোস্ট করে খাওয়া উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে অভিযোগ তুলে রাজশাহীর বিভাগীয় কমিশনার খোন্দকার আজিম আহমেদ ও জেলা প্রশাসক আফিয়া আখতারকে স্মারকলিপি দিয়েছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ইয়ুথ অ্যাকশন ফর সোশ্যাল চেঞ্জ (ইয়্যাস)। ইয়্যাসের সভাপতি শামীউল আলীম ও সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান স্বাক্ষরিত এই স্মারকলিপিতে আল-আমিন ও তুলির শাস্তি দাবি করা হয়। এরপর থেকেই তাদের খোঁজে নেমেছে বন বিভাগ।

ইয়্যাসের ওই স্মারকলিপিতে বলা হয়, আল-আমিন ও তুলি প্রকাশ্যে পরিযায়ী পাখি ধরার ও জবাই করে রোস্ট করে খাওয়ার প্রচারনা দিচ্ছেন, যা বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন ২০১২ এর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। ফলে দুই ব্লগার আল-আমিন ও তুলির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দ্রুততম সময়ের মধ্যে নিশ্চিত করা, পাখি বা পরিযায়ী পাখি শিকারিদের আইনের আওতায় আনা ও নগরজুড়ে পাখির বিচরণ কেন্দ্র ও আবাসস্থলকে সংরক্ষিত ঘোষণা করে সেখানে আলোদূষণ ও শব্দদূষণ রোধ করারও দাবি জানানো হয়েছে।

স্মারকলিপির অনুলিপি বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের পরিচালক, প্রধান বন সংরক্ষক, রাজশাহী বিভাগীয় বন কর্মকর্তা, পরিবেশ অধিদপ্তরের রাজশাহী জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালককেও দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে আল-আমিন ও তুলি নামে ওই দুই ব্লগারের সঙ্গে মুঠোফোনে কয়েক দফা যোগাযোগ করলেও তাদের ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। ফলে তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

রাজশাহী বন বিভাগের বন্যপ্রাণী পরিদর্শক জাহাঙ্গীর কবির বলেন, আইন অনুযায়ী কোনো ব্যক্তি উল্লিখিত কোনো পাখি বা পরিযায়ী পাখির ট্রফি বা অসম্পূর্ণ ট্রফি, মাংস দেহের অংশ সংগ্রহ করলে, দখলে রাখলে বা ক্রয় বা বিক্রি করলে বা পরিবহন করলে, তিনি অপরাধ করেছেন বলে গণ্য হবে এবং এ অপরাধের জন্য তিনি সর্বোচ্চ ছয় মাস পর্যন্ত কারাদণ্ড অথবা সর্বোচ্চ ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। একই অপরাধের পুনরাবৃত্তি ঘটালে সর্বোচ্চ এক বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। তবে আমরা দুটি ভিডিও পেয়েছি। শুধু ভিডিও আছে তাদের নাম বা ঠিকানা নেই। আমরা অনুসন্ধান চালাচ্ছি। ওই ব্লগারদের সন্ধানে নেমেছি। তাদের সন্ধান পেলেই আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এনায়েত করিম/মাহফুজ

ধামরাইয়ে পৌষ মেলা শুরু

প্রকাশ: ১৪ জানুয়ারি ২০২৫, ০৫:২৩ পিএম
আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০২৫, ০৫:২৩ পিএম
ধামরাইয়ে পৌষ মেলা শুরু
ধামরাইয়ে পৌষ মেলার আয়োজন। ছবি: খবরের কাগজ

ঢাকার ধামরাইয়ে ১৬ ইউনিয়নে ১৫-১৬টি গ্রামে পৌষ মেলা শুরু হয়েছে। একে সাকরাইন মেলা বা পৌষ সংক্রান্তি মেলাও বলা হয়। হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ একে বুড়া-বুড়ির মেলাও বলে থাকেন।

মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) ভোর থেকেই এই মেলা বসে। একে সাকরাইন উৎসব বলা হয়।

এ সব মেলায় সাধারণত ঘুড়ি ওড়ানো, মাটির তৈরি জিনিসপত্র বিক্রি, মিষ্টি বিক্রি করার সাথে সাথে মুড়ি, মিষ্টি জাতীয় খাবার, বেলুন, বাশি, নারীদের ব্যবহৃত জিনিসপত্র সহ আকর্ষণীয় জিনিসপত্র বিক্রি করা হয়।

জানা যায়, উপজেলার আইঙ্গন, কাকরান, দেপাশাই, কালামপুর, শ্রীরামপুর, বাসনা, বালিয়া, পৌরসভার যাত্রাবাড়ি মাঠ, হাজীপুর, সীতিপাল্লি, সানোড়া, বাড়িগাঁও, গোপালপুর, বারবারিয়া, রোয়াইল সহ বিভিন্ন জায়গায় এই মেলা বসে।

তবে কোথাও সকালে আবার কোথাও বিকেলে এই  অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। কোথাও কোথাও তিন দিনব্যাপী হয়ে থাকে এই মেলা।

কিন্তু শ্রীরামপুর মাঠে এই মেলা প্রায় মাসব্যাপী চলে। তবে এই দিনে হিন্দুদের পূজাও পালন করা হয়।

বাঙালি সংস্কৃতিতে পৌষ মাসের এই শেষ দিনটি উৎসব মুখর পরিবেশে পালিত হয়। প্রতিবারের মতো এবারও ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ মেলায় আসেন। মেলায় কুটিরশিল্পের সরঞ্জামসিহ নানা জিনিসপত্রের পসরা সাজিয়ে থাকেন দোকানিরা।

মুসলমানরাও বিভিন্ন প্রকার জিনিসপত্র বা খাদ্যসামগ্রীর দোকান দিয়ে থাকেন।

এ মেলার প্রধান আকর্ষণ ঘুড়ি উড়ানো।

রুহুল/নাবিল/

নীলফামারীতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাজতির মৃত্যু

প্রকাশ: ১৪ জানুয়ারি ২০২৫, ০৩:৩৪ পিএম
নীলফামারীতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাজতির মৃত্যু
ছবি : খবরের কাগজ

নীলফামারী জেলা কারাগারে মমিনুর ইসলাম (৫০) নামে এক হাজতির রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেন নীলফামারী কারাগারের সুপার রফিকুল ইসলাম। 

মমিনুর নীলফামারী জেলার জলঢাকা উপজেলার মীরগঞ্জ ইউনিয়নের পূর্ব শিমুলবাড়ি এলাকার বাসিন্দা। 

গত ডিসেম্বর মাসে একটি রাজনৈতিক মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছিলো। 

কারাগার সূত্রে জানা যায়, মমিনুরের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ৭ জানুয়ারি চিকিৎসার জন্য নীলফামারী সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় পরিবারের সদস্যরা তার সঙ্গে ছিলেন। ৮ জানুয়ারি অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

জেল সুপার রফিকুল ইসলাম জানান, চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভোর ৪টার দিকে মৃত্যুবরণ করেন। ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হলে পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হবে। 

ওয়ালি সুমন/জোবাইদা/

নোয়াখালীতে পুলিশ হেফাজতে যুবদল নেতার মৃত্যুর অভিযোগ

প্রকাশ: ১৪ জানুয়ারি ২০২৫, ০৩:১৬ পিএম
আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০২৫, ০৩:২০ পিএম
নোয়াখালীতে পুলিশ হেফাজতে যুবদল নেতার মৃত্যুর অভিযোগ
নোয়াখালীর সোনাইমুড়িতে নিহত যুবদল নেতা আবদুর রহমান । ছবি: খবরের কাগজ

নোয়াখালীর সোনাইমুড়িতে পুলিশ হেফাজতে আবদুর রহমান (৩৪) নামে এক যুবদল নেতার মৃত্যু হয়েছে।

মঙ্গলাবার (১৪ জানুয়ারি) সকালে পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

নিহত যুবদল নেতা সোনাপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক এবং বর্তমানে ইউনিয়ন যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক পদপ্রার্থী ছিলেন। তার পরিবারের দাবি, আবদুর রহমানকে ‘কন্ট্রাক্ট কিলিং’ করা হয়েছে।

এর আগে সোমবার (১৩ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় ২৫০ শয্যার নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান আবদুর রহমান। ওইদিন সকালে গুলি-রামদাসহ আবদুর রহমানকে  আটক করে থানায় সোপর্দ করেছিল সেনাবাহিনী।

নিহত আবদুর রহমানের চাচাতো ভাই মো. হানিফ বলেন, ‘আমাদের ভাই অত্যন্ত ভদ্র ছেলে ছিল। তাকে মিস ইনফরমেশনে আটক করে আওয়ামী লীগের ইন্ধনে কন্ট্রাক্ট কিলিং করা হয়েছে। সেনাবাহিনী আটকের সময় আবদুর রহমানকে ব্যাপক মারধর করেছে। পরে থানায় নেওয়ার পর সে বাঁচার জন্য অনেক আকুতি করেছে। কিন্তু পুলিশ তাকে চিকিৎসা না দিয়ে সাতঘণ্টা খানায় রেখে বিকেলে চালান দেয়।’

আবদুর রহমানের বোন সালমা আক্তার বলেন, ‘তারা আমার নিরপরাধ ভাইকে মেরে ফেলেছে। আমি এর বিচার চাই।’

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ‘সোমবার ভোররাতে সোনাপুর ইউনিয়নের হীরাপুর গ্রামের হাওলাদার বাড়িতে অভিযান চালায় সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে যৌথবাহিনী। তারা আবদুর রহমান ও প্রতিবেশি যুবদল কর্মী হাবিবুর রহমানকে আটক করে বেদম মারধর করে। পরে তাদেরকে পানিতে নামিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে। এরপর দোকানের সামনে নিয়েও মারধর করে।’

নোয়াখালী সেনা ক্যাম্পের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. রিফাত আনোয়ার খবরের কাগজকে বলেন, ‘ভোরে দুই আসামিকে দুটি গুলি ও তিনটি রামদাসহ আটক করে সকাল সাড়ে সাতটার দিকে সোনাইমুড়ী থানায় সোপর্দ করা হয়। পরে পুলিশ মামলা করে। সন্ধ্যায় হাসপাতালে আবদুর রহমান মারা গেছেন।’
 
তিনি দাবি করেন, ‘কন্ট্রাক্ট কিলিংয়ের প্রশ্নই আসে না। ধরার সময় ধস্তাধস্তিতে সামান্য আহত হতে পারে। তবে সারাদিন তিনি থানা হেফাজতে ছিলেন। তেমন কিছু হলে চিকিৎসার প্রয়োজন হতো। বিকেলে আদালতে সোপর্দ করা হলে আবদুর রহমান অসুস্থ বোধ করেন। পরে তাকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে তার মৃত্যু হয়। বিষয়টি সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে তদন্ত চলছে। পরে বিস্তারিত জানানো হবে।’
 
নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক মো. আবদুল মান্নান শাকিল বলেন, ‘বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে পুলিশ আবদুর রহমানকে অসুস্থ অবস্থায় জরুরি বিভাগে নিয়ে আসে। তার গায়ে মারধরের চিহ্ন ছিল। আবদুর রহমানকে ভর্তির কিছুক্ষণ পর ওয়ার্ডে নেওয়া হলে তার মৃত্যু হয়। আহত আরেক আসামি হাবিবুর রহমানকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’
 
নোয়াখালী আদালতের পরিদর্শক (কোর্ট ইন্সপেক্টর) মো. শহীদুল ইসলাম খবরের কাগজকে বলেন, ‘সোনাইমুড়ি থানার অস্ত্র আইনের মামলায় দুই আসামিকে হাজির করলে তাদের শারীরিক অসুস্থতা দেখে চিকিৎসার নির্দেশ দেন বিচারক। পরে তাদের পুলিশি পাহারায় হাসপাতালে পাঠানো হয়। শুনেছি সেখানে আবদুর রহমান নামে একজন মারা গেছেন।’
 
সোনাইমুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোরশেদ আলম খবরের কাগজকে বলেন, ‘আমাদের কাছে আসামিদেরকে সোপর্দ করার পর সকালে হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে ডাক্তার দেখার পর আবার থানায় আনা হয়। বেশি অসুস্থ থাকলে ডাক্তার তাকে অন্য হাসপাতালে পাঠাতো। আমরা আসামি বুঝে পাওয়ার পর থেকে সিসিটিভি ফুটেজ আছে। বিকেলে উপ-পরিদর্শক (এসআই) কাওছারুজ্জামানের করা অস্ত্র মামলায় তাদেরকে আদালতে পাঠালে সেখানে তারা অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে হাসপাতালে নেওয়া হলে আবদুর রহমান মারা যান।’
 
ওসি আরও বলেন, ‘মরদেহের সুরতহাল তৈরি ও ময়নাতদন্তের কাজ চলছে। প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এ বিষয়ে জেলা যুবদলের সভাপতি মঞ্জুরুল আজিম সুমন খবরের কাগজকে বলেন, ‘খবর পেয়ে রাতে হাসপাতালে গিয়ে আবদুর রহমানের মরদেহ দেখতে যাই। সে আমাদের দলের একনিষ্ঠ কর্মী ছিল। তার এমন মৃত্যুতে আমরা শোকাহত। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দায়ীদের বিচার দাবি করছি।’
 
ইকবাল হোসেন/সুমন/