
বন্দরনগরী চট্টগ্রামে নানা আয়োজনে মহান বিজয় দিবস উদযাপিত হয়েছে।
সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) সূর্যোদয়ের পর নগরের কাট্টলীর মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিস্তম্ভে ৩১ বার তোপধ্বনি দেওয়া হয়। প্রথমে মহানগর পুলিশের একটি চৌকস দলের সশস্ত্র অভিবাদন জানানোর মধ্য দিয়ে শুরু হয় বিজয় দিবসের আনুষ্ঠানিকতা।
শুরুতে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিস্তম্ভে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।
পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে তিনি বলেন, ‘বিজয় দিবসের মূল শিক্ষা হলো আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকা। বিজয়ের ৫৩ বছরেও দেশের মানুষের মৌলিক অধিকার তথা খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসার অধিকার নিশ্চিত হয়নি। আমরা এখনো গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করছি। মানুষের মৌলিক অধিকার সুরক্ষিত হলে, আমরা আমাদের বিজয়ের প্রকৃত সুফল অর্জন করতে পারব।
মেয়রের পর একে একে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক, মহানগর পুলিশ কমিশনার, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ড।
এ সময় বিএনপির পক্ষ থেকে শহিদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। এরপর একে একে শ্রদ্ধা জানায় শতাধিক রাজনৈতিক দল, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন।
এদিকে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্র শিবির বিজয় র্যালির আয়োজন করে। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে নগরীর লালখানবাজার থেকে শুরু হয়ে র্যালিটি দুই নম্বর গেট এলাকায় গিয়ে শেষ হয়।
এ সময় বক্তব্য রাখেন ইসলামী ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি জেনারেল জাহিদুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় ছাত্র আন্দোলন সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট সম্পাদক ডা. উসামা রাইয়ান, চট্টগ্রাম মহানগর উত্তর সভাপতি ফখরুল ইসলাম এবং চট্টগ্রাম মহানগর দক্ষিণের সভাপতি শহিদুল ইসলাম।
বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান ও বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং শহিদ পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়।
বেলা ১২টা থেকে জেলার সিনেমা হলগুলোতে বিনা টিকেটে ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র প্রদর্শনী এবং দেশের সর্বত্র উম্মুক্ত স্থানে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক প্রামাণ্য চলচ্চিত্র প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করা হয়।
মুক্তিযুদ্ধে শহিদদের স্মরণে মসজিদ, মন্দির, গীর্জা ও প্যাগোডাসহ বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে দোয়া-মোনাজাত ও প্রার্থনার আয়োজন করা হয়।
দুপুরে নগরের হাসপাতাল, কারাগার, শিশু পরিবার, ভবঘুরে কেন্দ্র ও বৃদ্ধাশ্রমে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হয়।
বিকেলে জেলা ও উপজেলা সদরের স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রীদের সমাবেশ, ক্রীড়া অনুষ্ঠান, টি-টুয়েন্টি ক্রিকেট টুর্নামেন্ট, নৌকা বাইচ, ফুটবল, কাবাডি ও হাডুডু খেলার আয়োজন করা হয়।
এ ছাড়াও দিনব্যাপী শিশু পার্ক, ডিসি পার্ক, চিড়িয়াখানা, জাদুঘর শিশুদের জন্য উম্মুক্ত রাখা ও বিনা টিকেটে প্রদর্শনীর ব্যবস্থা ছিল।
নাবিল/