
গেল দুই দিনে কক্সবাজারে টেকনাফের বিভিন্ন স্থান থেকে অপহরণের শিকার হয়েছেন রোহিঙ্গা ও স্থানীয়সহ ২৪ জন।
সর্বশেষ মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) সকালে টেকনাফের হোয়াইক্যং শামলাপুর ঢালা থেকে ৪-৫ জন স্থানীয়কে অস্ত্রের মুখে অপহরণ করে পাহাড়ে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
বাহারছড়ার স্থানীয় সিএনজি অটোরিকশা চালক মো. আবদুর রহিম জানান, মঙ্গলবার সকালে টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং থেকে বাহারছড়া যাওয়ার পথে দুটি সিএনজিসহ ৪-৫ জনকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে হোয়াইক্যং ঢালা থেকে অপহরণ করে কুদুম গুহার পাশ্ববর্তী পাহাড়ে নিয়ে যায়।
বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক শোভন কুমার সাহা জানান, সকালে হোয়াইক্যং বাহারছড়া সড়কের ঢাকা নামক স্থান থেকে দুটি সিএনজি সহ ৪/৫ জন স্থানীয়কে অপহরণ করে পাহাড়ের দিকে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ এসেছে। বিষয়টি জানার সঙ্গে সঙ্গে ভিকটিমদের উদ্ধারের জন্য পাহাড়ে অভিযান পরিচালনা করা হয়। অপহৃত ভিকটিমের দুইটি সিএনজি উদ্ধার করা হয়।
একইদিনে, ৩০ ডিসেম্বর রাত ১১ টায় টেকনাফের বাহারছড়া একাধিক ফাঁকা গুলি বর্ষণ করে টেকনাফের বাহারছড়া বড় ডেইল ৮ নং ওয়ার্ড এলাকার বাসিন্দার নাজিম উদ্দিন মাস্টারের ছেলে মুদি ব্যবসায়ী জসিম উদ্দিনকে (৩৫) অপহরণ করে নিয়ে যায় একদল পাহাড়ী অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা।
স্থানীয় বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম জানান, বাহারছড়া দক্ষিণ বড় ডেইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পূর্ব পাশে তিনি প্রতিদিনের মত নিজের মালিকাধীন মুদির দোকানে ব্যস্ত ছিলেন। রাত ১১ টায় হঠাৎ ২০-৩০ জনের একটি অস্ত্রধারী পাহাড়ি সন্ত্রাসী দল অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে মুদির দোকান থেকে তাকে তুলে নিয়ে যাওয়ার সময় লোকজন বাঁধা দিলে একাধিক ফাঁকা গুলিবর্ষণ করে পাহাড়ের দিকে নিয়ে যায়।
অপহৃত ভিকটিমের বড় ভাই মৌলানা জামাল উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, রাতে হঠাৎ স্থানীয় ও রোহিঙ্গা অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী দোকানে এসে আমার ভাইকে ফাঁকা গুলিবর্ষণ করে তুলে নিয়ে যায়। প্রত্যেকের হাতে একটি করে অস্ত্র রয়েছে। বিষয়টি প্রশাসনকে অবগত করা হয়েছে।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, গতকাল ১৯ জন অপহৃত ভিকটিমদের উদ্ধারের জন্য পাহাড়ে অভিযান পরিচালনা করছে পুলিশ, র্যাব, এপিবিএন, বনবিভাগের লোকজন। শীঘ্রই যৌথভাবে অভিযান পরিচালনা করা হবে।
উল্লেখ্য, গত সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) সকালে টেকনাফের জাদিমুড়া সংলগ্ন পশ্চিমে বন বিভাগের পাহাড়ে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতে গিয়ে রোহিঙ্গা ও স্থানীয়সহ ২১ জন অপহরণের শিকার হয়েছে। তার মধ্যে দুই রোহিঙ্গা শ্রমিক পালিয়ে আসে। প্রত্যেকের পরিবারের কাছে এক লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করছে সন্ত্রাসীরা।