
পাবনায় চাঁদা না দেওয়ায় দুই মাস ধরে বাড়ি ছাড়া এক কলেজশিক্ষক। ভুক্তভোগীর অভিযোগ, দাবি পূরণ না করায় কয়েক দফা হামলায় বাড়ি-ঘর ভাঙচুর ও হত্যার হুমকি দিয়েছে চাঁদাবাজ চক্র। সন্ত্রাসীদের ভয়ে কর্মস্থলে নিয়মিত পাঠদানও করতে পারছেন না তিনি।
পরে গত শনিবার (১১ জানুয়ারি) তার নিরাপত্তা চেয়ে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছেন ওই কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
জানা গেছে, ভুক্তভোগী শহিদুল ইসলাম চাটমোহর উপজেলার সন্তোষপুর গ্রামের দবির উদ্দিনের ছেলে ও প্রফেসর বয়েন উদ্দিন ডিগ্রি (অনার্স) কলেজের সহকারী অধ্যাপক। চাঁদাবাজ চক্রের মূল হোতা মিনারুল ইসলাম একই গ্রামের বাসিন্দা। প্রায় দশ বছর আগে উপজেলার বোঁথর গ্রামের আব্দুর রউফের সঙ্গে প্রতিবেশী মিনারুলের ১২ লাখ টাকা লেনদেনের সাক্ষী ছিলেন তিনি। টাকা না দেওয়ায় মিনারুলের বিরুদ্ধে ২০১৭ সালে মামলা করেন আব্দুর রউফ। ওই মামলায় শহিদুল সাক্ষ্য দেওয়ায় ক্ষিপ্ত হন মিনারুল। ২০১৭ সালে আব্দুর রউফের পাঠানো লিগ্যাল নোটিশে বাদী-বিবাদীর নাম পরিবর্তন করে শহিদুলের কাছেই ১২ লাখ টাকা দাবি করে আসছেন মিনারুল।
এ বিষয়ে শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘মিনারুলের সঙ্গে আমার কখনোই কোনো লেনদেন হয়নি। অথচ ভুয়া ও জাল কাগজ বানিয়ে আমার থেকে টাকা দাবি করছেন। আমাকে ও আমার পরিবারকে ক্রমাগত হত্যার হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন মিনারুল। তার একটি জালিয়াতির মামলায় সাক্ষী হওয়ার কারণেই আমার ওপর চড়াও হয়েছেন তিনি। গত ৭, ১০ ও ১৯ নভেম্বর মধ্যরাতে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ওই সন্ত্রাসী দল আমার বাড়িতে হামলা চালায়। এ ঘটনায় চাটমোহর থানায় অভিযোগ করার পরেও পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। তাই আমি বাড়িতে থাকতে পারছি না।’
আব্দুর রউফের আইনজীবী আশরাফুজ্জামান হালিম বলেন, ‘যে লিগ্যাল নোটিশ দেখিয়ে মিনারুল শহিদুলের কাছে টাকা দাবি করছেন, সেটা সম্পূর্ণ ভুয়া। আমি আব্দুর রউফের পক্ষে ২০১৭ সালের অক্টোবরে ও ২০১৮ সালে ফেব্রুয়ারি মাসে মিনারুলকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠাই। ২০১৭ সালের এ নোটিশটিই কম্পিউটারে স্ক্যান করে বাদী-বিবাদীর নাম পরিবর্তন করেন তিনি। পরে একই চেক নং ও একই আইনজীবীর প্যাডে জাল নোটিশ পাঠিয়ে শহিদুলের কাছে ১২ লাখ টাকা দাবি করছেন মিনারুল। সে সুস্পষ্ট জালিয়াতি করেছে।’
তবে চাঁদা দাবি ও হুমকির অভিযোগ অস্বীকার করে মিনারুল বলেন, ‘কয়েক বছর আগে জোর করে শহিদুল আমার থেকে সাড়ে ৭ লাখ টাকা নিয়েছিলেন। আমি পাওনা টাকা চেয়েছি, কাউকে হুমকি বা বাড়িঘরে হামলা করিনি।’
চাটমোহর থানার ওসি মঞ্জুরুল আলম বলেন, ‘শহিদুল ইসলাম কয়েক মাস আগে থানায় সাধারণ ডায়েরি করছিলেন। কিন্তু কলেজে যেতে বাধা ও বাড়িতে থাকতে না দেওয়ার বিষয়ে আমাদের জানাননি। এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’