ঢাকা ২৬ মাঘ ১৪৩১, রোববার, ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
English
রোববার, ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৬ মাঘ ১৪৩১

ধনবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স স্বাস্থ্য কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ

প্রকাশ: ১৪ জানুয়ারি ২০২৫, ০৯:৪৩ এএম
আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০২৫, ১১:০৩ এএম
স্বাস্থ্য কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ
ফাহমিদা লস্কর

টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে উপজেলাবাসী মানববন্ধন করেছেন। কিন্তু কোনো প্রতিকার পাননি। তাকে অফিসে গিয়েও পাওয়া যায় না। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমওর অনুমতি ছাড়া ক্যামেরার সামনে কথা বলতে পারবেন না বলেও জানান তিনি। 

২০১২ সালে ৫০ শয্যার ধনবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স স্থাপিত হয়। ২০১৫ সালের ২৫ অক্টোবর নতুন ভবন পায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। শুরু থেকেই এখানে জনবল ও সরঞ্জামের সংকট রয়েছে। যে কারণে ভর্তি করা রোগীরাও ঠিকমতো সেবা পান না।

তবে খরচের খাতা পুরোদমে চালু রেখেছেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ফাহমিদা লস্কর। টাকার বিনিময়ে অস্থায়ীভাবে চাকরি দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। তার সঙ্গে বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানি ও অ্যাম্বুলেন্সচালকদের চুক্তি রয়েছে। হাসপাতালের সরকারি ওষুধ প্রায়ই উধাও হয়ে যায়। চিকিৎসকরা বিভিন্ন কোম্পানির ওষুধ লিখে দেন রোগীদের। হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহারের অভিযোগও আছে তার বিরুদ্ধে। কোম্পানি প্রতিনিধিদের টানাহেঁচড়ায় অতিষ্ঠ রোগী ও তাদের স্বজনরা। নানা অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনায় ধুঁকছে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি। 

স্থানীয়রা বলছেন, স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ফাহমিদা লস্কর ধনবাড়ী যোগদানের পর থেকে সাধারণ রোগীদের হয়রানি, কর্মচারীদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ, প্রশিক্ষণের ভাতার টাকা আত্মসাৎ ও আনুতোষিক ভাতা নয়ছয় করে আসছেন।

মাঠকর্মীদের সম্মানী ভাতা পর্যন্ত নিজের পকেটে পোরেন তিনি। যারা এসব অনিয়ম-দুর্নীতির প্রতিবাদ করেন, তাদের হয়রানি ও ভয়ভীতি দেখানো হয়। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তিনি কাউকে তোয়াক্কাও করেন না। তার আচরণে অতিষ্ঠ হয়ে সাধারণ মানুষ মানববন্ধনও করেছেন। কিন্তু প্রতিকার মেলেনি। 

মুসলেম নামে এক রোগী বলেন, ‘সেবা নেওয়ার জন্য হাসপাতালে গেলে আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করা হয়। যে ডাক্তাররা সেবা দেবেন তাদেরই পাই না আমরা।’ কুলসুম বেগম নামে আরেকজন রোগী বলেন, ‘টিকিটের জন্য গিয়ে দেখি আয়া দিয়ে টিকিট কাটাচ্ছে কর্তৃপক্ষ। আমরা প্রতিবাদ করার পর তাকে সরিয়ে দিয়ে টিকিট দেওয়াই বন্ধ করে দেওয়া হয়।’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন পরিচ্ছন্নতাকর্মী বলেন, ‘আমরা ১ থেকে ২ লাখ টাকা দিয়ে চাকরি নিয়েছি। চার থেকে পাঁচ মাস চাকরি করার আগেই আমাদের বের করে দিয়েছে টিএসও।’

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে বর্তমানে ছয়জন চিকিৎসক রয়েছেন। তার মধ্যে একজন ট্রেনিংয়ে ও তিনজন পালা করে দায়িত্ব পালন করেন। চিকিৎসকসংকটে ভুগছে হাসপাতালটি।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও ডা. এনামুল হক সোহেল খবরের কাগজকে বলেন, ‘ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া ক্যামেরার সামনে কথা বলা যাবে না।’ 
ফাহমিদা লস্কর খবরের কাগজকে বলেন, ‘আমার নামে যত অভিযোগ আছে সব মিথ্যা ও বানোয়াট। আমি হাসপাতালের সব নিয়ম মেনে চলি বলেই এসব অভিযোগ।’ 

জেলা সিভিল সার্জন ডা. মিনহাজ উদ্দিন মিয়া খবরের কাগজকে বলেন, যদি এ ধরনের কোনো অভিযোগ থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 

বিপিএল চ্যাম্পিয়ন বরিশালে বাঁধভাঙা উল্লাস বিজয় উদযাপন আজ

প্রকাশ: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০:৪৯ এএম
আপডেট: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১১:০৫ এএম
বরিশালে বাঁধভাঙা উল্লাস বিজয় উদযাপন আজ
ছবি : খবরের কাগজ

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) ১১তম আসরের চ্যাম্পিয়ন ‘ফরচুন বরিশাল’। প্রিয় দলের চ্যাম্পিয়নের খবরে গত শুক্রবার রাতে বরিশাল নগরীর বিভিন্ন সড়কে নেমে আসেন কয়েক হাজার মানুষ। এ সময় তারা নানা স্লোগান, নেচে-গেয়ে, ভেঁপু বাজিয়ে ও ঢাকঢোল পিটিয়ে আনন্দ প্রকাশ করেন। এ ছাড়া ক্রীড়াপ্রেমীদের একটা অংশ পিকআপ ও মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা নিয়ে নগরীর সদর রোডে আনন্দ মিছিল করেন।

এদিকে রবিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) নগরীর বেলস্ পার্কে ‘বিপিএল বিজয়’ উদযাপন করা হবে বলে জানিয়েছে ফরচুন বরিশাল কর্তৃপক্ষ।  

শনিবার রাতে নগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, নগরীর বিনোদন কেন্দ্র, বেলস্ পার্ক (বঙ্গবন্ধু উদ্যান), নতুন বাজার, টেম্পু স্ট্যান্ড, জিলা স্কুল মোড়, আমানতগঞ্জ, কাউনিয়া, আলেকান্দা, রূপাতলী, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়, ব্রজমোহন কলেজ, বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজসহ বিভিন্ন এলাকায় বড় পর্দায় বিপিএলের ফাইনাল খেলা দেখেন ক্রীড়াপ্রেমীরা। এর একপর্যায়ে প্রিয় দল ফরচুন বরিশালের জয়ের খবরে তারা ঢোল ও বাদ্যযন্ত্র নিয়ে উল্লাস প্রকাশ করেন। এ সময় শতাধিক ট্রাক নিয়ে মিছিল বের করেন বিভিন্ন বয়সের ক্রীড়াপ্রেমীরা। ট্রাকগুলো নিয়ে তারা নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করেন। 

এ সময় কথা হয় নগরীর মাইনুল ইসলাম সড়কের বাসিন্দা তুষার আহমেদের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘ফরচুন বরিশালের টানা দ্বিতীয় বিপিএল জয়ে আমরা বেশ খুশি। আমাদের প্রত্যাশা, ফরচুন বরিশাল জয়ের এ ধারাবাহিকতা ধরে রাখবে।’

ভাটিখানা এলাকার বাসিন্দা আদনান অলি বলেন, ‘বরিশালের বিজয়ে আমরা আনন্দিত। তবে গত আসরে ফাইনাল খেলার আগে ফরচুন বরিশালের মালিক মিজানুর রহমান ঘোষণা দিয়েছেন লঞ্চে করে ট্রফি বরিশালে নিয়ে আসবেন। কিন্তু তিনি সে কথা রাখেননি। এতে বরিশালের মানুষ আশাহত হয়েছিল। গতকাল খেলা শেষে ট্রফি বিতরণের সময় ফরচুন বরিশালের অধিনায়ক তামিম ইকবাল ঘোষণা দিয়েছেন, আজ রবিবার বরিশালের এসে বিজয় উদযাপন করবেন। তার ওপর আমাদের আস্থা আছে। তাই এবারের বিপিএল জয় আমরা ভালোভাবে উদযাপন করতে পারব। 

বিপিএল পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে তামিম ইকবাল সাংবাদিকদের বলেন, ‘গত বছর আমরা বরিশালে গিয়ে উদযাপন করতে পারিনি। এবার আমরা ঠিক করেছি বরিশাল যাব। আমরা ৯ তারিখ বরিশালে যাব। সবাইকে অনুরোধ করব, আপনারা ৯ তারিখ শিরোপা বিজয় উদযাপন অনুষ্ঠানে যোগ দিবেন।’

ফরচুন বরিশাল টিমের কর্মকর্তারা জানান, আজ বিপিএলের চ্যাম্পিয়ন ট্রফি নিয়ে ফরচুন বরিশাল টিমের খেলোয়াড় ও কর্মকর্তারা বরিশালে আসবেন। বেলা ৩টার মধ্যে কাপ নিয়ে তারা নগরীর বেলস্ পার্ক (বঙ্গবন্ধু উদ্যান) উপস্থিত হবেন। সেখানে বরিশালবাসীর সঙ্গে টানা দ্বিতীয়বার বিপিএল বিজয় উদযাপন করা হবে।

ভূঁইয়ার মাঠ খাল ভরাটে পানি চলাচল বন্ধ, পৌরবাসীর ভোগান্তি

প্রকাশ: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০:৩৩ এএম
আপডেট: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০:৫৫ এএম
ভূঁইয়ার মাঠ খাল ভরাটে পানি চলাচল বন্ধ, পৌরবাসীর ভোগান্তি
মাদারীপুর পৌরসভার 'ভুঁয়ার মাঠ' খলিটি কচুরিপানায় ভরাট হওয়ায় পানি চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। ছবি : খবরের কাগজ

মাদারীপুর পৌর শহরের ‘ভূঁইয়ার মাঠ’ খালটি কয়েক বছর ধরে ময়লা-আবর্জনা ফেলা ও কচুরিপানায় ভরাট হওয়ায় পানি চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে বৃষ্টির মৌসুমে তৈরি হয় জলাবদ্ধতা। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েন পৌরবাসী। স্থানীয়রা মনে করছেন, এই শীত মৌসুম থাকতেই খালটি খনন করতে হবে। এতে করে বর্ষার মৌসুমে নির্বিঘ্নে পানি চলাচলের পাশাপাশি জলাবদ্ধতা নিরসন ও মশার হাত থেকেও রক্ষা পাবেন তারা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, মাদারীপুর পৌর শহরের ২ নম্বর ওয়ার্ডের আমিরাবাদ জামে মসজিদ ভবনের নিচ থেকে উত্তর পাশে এবং শামসুননাহার উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের পূর্ব পাশে অবস্থিত ‘ভূইয়ার মাঠ’। মাঠের ভেতর দিয়ে প্রায় ৮০০ ফুট দৈর্ঘ্যের ছোট একটি খাল রয়েছে। খালটির পাশ দিয়ে গড়ে উঠেছে মাদারীপুরের বেশ কিছু ফার্নিচারের কারখানা। এই কারখানার বর্জ্য খালের ফেলার কারণে পুরো খালটির নাব্য কমে গেছে। ভরাট হয়ে গেছে খালের বিভিন্ন স্থান। এতে খালের গভীরতা আগের মতন না থাকায় সারা বছর এই খাল দিয়ে পানিপ্রবাহ বন্ধ থাকে। তবে বর্ষা মৌসুম এলে চারপাশের পানি এসে এই খালে পড়ায় পুরো খালটির পানি চারপাশে ছড়িয়ে পড়ে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি করে। এতে এখানকার মানুষ পড়েছেন চরম ভোগান্তিতে। খালের বিভিন্ন স্থানে পানি জমে থাকায় সারা বছরই এডিস মশার লার্ভা থেকে মশার উৎপাদন বৃদ্ধি পেতেই থাকে। এতে এলাকার মানুষ স্বাস্থ্যঝুঁকিতেও পড়েন। তাই স্থানীয়রা কর্তৃপক্ষের কাছে এই খালটি নতুন করে খনন করে সারা বছরই পানি চলাচলের ব্যবস্থার দাবি করছেন।

স্থানীয় বাসিন্দা সাগর হোসেন বলেন, ‘আমিরাবাদ মসজিদ থেকে উত্তর দিকে বয়ে যাওয়া খালটির পাশে অনেক ফার্নিচারের কারাখানা তৈরি হয়েছে। এতে কাঠের গুঁড়িগুলো এই খালে নিয়মিত ফেলার কারণে খালের এক পাশের মুখ ভরাট হয়ে গেছে। এখন আর খালে পানি চলাচল করে না। এই খালটি বেশি বড় নয়। সর্বোচ্চ ৮০০-৯০০ ফুট হতে পারে। এই খালটি যদি কর্তৃপক্ষ নতুন করে খনন করে দুই পাড় বেঁধে দেয়, তাহলে সারা বছরই এই খালের পানিপ্রবাহ থাকবে। এতে স্থানীয় বাসিন্দারা তাদের বাড়িঘরের ব্যবহৃত ময়লা পানিও ফেলতে পারবেন। নাগরিক জীবনযাপনে আসবে ইতিবাচক পরিবর্তন।’

আরেক বাসিন্দা অসীম দাস বলেন, “এই খালটি দিয়ে তো আগে দেখতাম সারা বছরই পানি নামত। এখন তো পানি বের হওয়ার সিস্টেম নেই। তা ছাড়া পানি বের না হওয়ার কারণে সারা বছরই এই খালে এডিস মশার লার্ভা থাকে। এতে এই এলাকায় ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বর্ষার সময়ে বেড়ে যায়। অনেকেই শুনেছি মশার কামড়ে ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। তাই এই ‘ভূইয়ার মাঠ’ খালটি খনন করা জরুরি।”

এদিকে নজরুল ইসলাম নামের স্থানীয় একজন বলেন, ‘আগে দলীয় সরকার ক্ষমতায় ছিল। তখন তো খাল খনন করতে গেলেই বাধা আসত। এখন তো দেশে অন্তর্বর্তী সরকার। এখন তো কর্তৃপক্ষের খাল খনন ও উদ্ধার কার্যক্রম করা খুব সহজ। এখন যদি এসব খাল উদ্ধার ও পুনর্খনন করা না হয়, তাহলে আর কোনো দিনই করা সম্ভব হবে না।’

এই বিষয়ে মাদারীপুর উন্নয়ন সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অ্যাডভোকেট মাসুদ পারভেজ বলেন, “ ‘ভূঁইয়া মাঠ’ খালটিতে এখন আগের মতন নাব্য নেই। ফলে পানি চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এখন এই খালটি নতুন করে খনন করে দুই পাশে খনন করা মাটি দিয়ে ভালো করে পাড় বেঁধে দিলে খাল দিয়ে সারা বছরই পানি চলাচল করতে পারবে। এতে স্থানীয় বাসিন্দারা খালটি ব্যবহার করে যেমন নাগরিক সুবিধা পাবেন, তেমনই জলাবদ্ধতার দুর্ভোগ থেকেও মুক্তি পাবে। মশার উৎপাদনও বন্ধ হবে। তাই খালটি জরুরি ভিত্তিতে খনন করে খালের প্রাণ ফিরিয়ে আনার দাবি করছি।”

আমিরাবাদ ‘ভূইয়ার মাঠ’ খাল উদ্ধার ও খনন কার্যক্রম বিষয়ে মাদারীপুর পৌরসভার পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা খন্দকার আবু আহমদ ফিরোজ ইলিয়াস বলেন, ‘খালটি ইতোমধ্যে আমরা দেখে এসেছি। খালটি দিয়ে যাতে সারা বছর পানিপ্রবাহ থাকে সেই  উদ্যোগ আমরা শিগগিরই গ্রহণ করব।’

অপারেশন ডেভিল হান্ট: হাতিয়ায় ইউপি চেয়ারম্যানসহ ৭ আ.লীগ নেতা আটক

প্রকাশ: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০:৩০ এএম
আপডেট: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০:৪৫ এএম
অপারেশন ডেভিল হান্ট: হাতিয়ায় ইউপি চেয়ারম্যানসহ ৭ আ.লীগ নেতা আটক
ছবি: খবরের কাগজ

অপারেশন ‘ডেভিল হান্টের’ প্রথমদিনে নোয়াখালী হাতিয়ায় যৌথবাহিনী অভিযান চালিয়ে সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতিসহ সাতজনকে আটক করেছে।

শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) রাতে হাতিয়ার বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। 

আটকরা হলেন- হাতিয়া উপজেলার চরঈশ্বর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন আজাদ (৬৪), হাতিয়া পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের সাদ্দাম হোসেন (২৬), ৩নং ওয়ার্ডের আবুল কালাম বিটু (৪৪), নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়নের আদর্শগ্রামের আজিম উদ্দিন (৩১), তমরুদ্দি ইউনিয়নের সিরাজুল ইসলাম প্রকাশ রাকছান (২৪), আবদুল মাজেদ পলাশ (৪৩) ও আব্দুল জাহের (৩৯)।

অভিযান সূত্রে জানা গেছে, নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলায় নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড, নৌ পুলিশ ও পুলিশের সদস্যরা যৌথ অভিযান চালিয়ে ৫নং চরঈশ্বর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আজাদকে ওছখালী পুরাতন বাজারের ২নং ওয়ার্ড থেকে আটক করে। পরবর্তীতে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে আরও ৬ জনকে আটক করে যৌথবাহিনী। অভিযানে একটি প্লাস্টিকের হাতলযুক্ত ধারালো ছুরি, একটি ধারালো কুড়াল, দুটি কাঠের হাতলযুক্ত ধারালো ছুরি ও তিনটি লম্বা তলোয়ার উদ্ধার করা হয়। 

হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম আজমল হুদা খবরের কাগজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। 

তিনি বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ ঘোষণার পর হাতিয়া থানার এটি প্রথম অভিযান ছিল। আটকদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। একইসঙ্গে নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড, নৌ পুলিশ ও পুলিশের যৌথ অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

মেহেদী/

খালে আবর্জনা ফেললে আইনের আওতায় আনার হুঁশিয়ারি

প্রকাশ: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০:২১ এএম
আপডেট: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০:৩৩ এএম
খালে আবর্জনা ফেললে আইনের আওতায় আনার হুঁশিয়ারি
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক ই আজম বীর প্রতীক। ছবি: সংগৃহীত

খালে আবর্জনা নিক্ষেপকারীকে প্রয়োজনে আইনের আওতায় আনার হুঁশিয়ারি দিয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক ই আজম বীর প্রতীক বলেছেন, ‘পুরোনো লেপ, তোশক, কম্বল, পলিথিন, আসবাবপত্র কোনোভাবেই খালে আসার কথা না। কিন্তু খাল থেকে এসবও পরিষ্কার করতে হচ্ছে। ‘খাল পাড়ের বাসিন্দাদের সচেতন হতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘এলাকার সব আবর্জনা এক জায়গায় রাখলে সিটি করপোরেশন সেখান থেকে নিয়ে যাবে। সবার সহযোগিতা পেলে চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসন করা সম্ভব।’

শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) নগরের আগ্রাবাদ এলাকায় খাল পরিদর্শনকালে তিনি এসব কথা বলেন। 

আগামী বর্ষা মৌসুমে দৃশ্যমান উন্নতি দেখানোর প্রত্যয় ব্যক্ত করে উপদেষ্টা বলেন, ‘চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনে আমরা অনেক রকমের প্রচেষ্টা চালাচ্ছি। কিন্তু খালে এমন অনেক আবর্জনা দেখা যাচ্ছে যা কোনোভাবেই খালে আসার কথা না। এই সমস্যা থেকে উদ্ধার হতে হলে, নিজেদেরকেই নিজের কাজ এবং দায়িত্ব পালন করতে হবে। এলাকায় যে কমিটিগুলো আছে তারা ঘরে ঘরে গিয়ে সতর্ক করেন। যাতে সবাই একস্থানে ময়লা রাখেন। সেখান থেকে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন আবর্জনা সংগ্রহ করবে। এই শহর আমাদের। এখানে বেঁচে থাকার অধিকার আমাদের সবার আছে। একজনের জন্য দশজন কষ্ট পাবে তা যেন না হয়।’ 

তিনি বলেন, ‘খালের মাটি সিটি করপোরেশন, সিডিএ পরিষ্কার করবে। কিন্তু আপনারা যারা খালে পলিথিন ফেলছেন, সেটা কেন ফেলবেন। রাষ্ট্রের এই উদ্যোগের সঙ্গে এলাকাবাসীর শতভাগ সহযোগিতা লাগবে। কোথায় সমস্যা আছে আপনারা আমাদের জানান। আমরা সমাধান করব। কিন্তু আপনারা নিজেরাই যদি সমস্যার উৎস হন, তাহলে তা সমাধান করা কারও পক্ষে সম্ভব নয়। 

এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ফরিদা খানমসহ প্রশাসন ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

পরে উপদেষ্টা চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে জলাবদ্ধতা প্রকল্প নিয়ে জেলার সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রধানদের সঙ্গে বৈঠক করেন। এ সময় দুর্যোগ উপদেষ্টা বলেন, খালে যাতে আবর্জনা না পড়ে সেই লক্ষ্যে প্রথমে সচেতনতা কর্মসূচি, তারপর সতর্কতা এবং সর্বশেষ ধাপ হলো শাস্তি। কেউ খাল-নালায় আবর্জনা ফেললে তাকে এক-দুই দিনের জন্য জেলেও দেওয়া যেতে পারে। প্রকল্পটি সরকারের অগ্রাধিকার প্রকল্পের মধ্যে আছে উল্লেখ করে বলেন, এর জন্য পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ থাকবে।

চসিকের প্রধান সড়কে ময়লা, দুর্ভোগে নগরবাসী

প্রকাশ: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০:০৭ এএম
আপডেট: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০:১৪ এএম
চসিকের প্রধান সড়কে ময়লা, দুর্ভোগে নগরবাসী
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এলাকায় বাড়ি বাড়ি গিয়ে সংগ্রহ করা ময়লা ও ময়লা বহনকারী ভ্যান সড়কের উপর রাখা হয়েছে। আর্বজনার দুর্গন্ধের কারণে একজন পথচারী নাক মুখ ঢেকে হেটে যাচ্ছেন। গতকাল নয়াবাজার বিশ্বরোড থেকে তোলা। ছবি: মোহাম্মদ হানিফ

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) এলাকায় বাড়ি বাড়ি গিয়ে সংগ্রহ করা ময়লা রাখা হয় শহরের প্রধান সড়কের ওপর। এতে আশপাশের এলাকায় দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে। তখন পথচারীদের ভোগান্তি পোহাতে হয়। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা রয়েছেন স্বাস্থ্যঝুঁকিতে। দুর্গন্ধের কারণে যানবাহনের যাত্রীদের নাক-মুখ চেপে ওই স্থান পার হতে দেখা যায়। চসিকের তথ্যমতে, নগর থেকে প্রতিদিন ২ হাজার ৩০০ টন ময়লা সংগ্রহ করা হয়।

চট্টগ্রাম মহানগরের কালুরঘাট থেকে পতেঙ্গা সড়কের ষোলশহরসহ তিন থেকে চারটি স্থানে ময়লা রাখা হয়। অক্সিজেন মোড় সংলগ্ন হাটহাজারী সড়কের ওপর আবর্জনা রাখতে রাখতে ময়লার স্তূপে পরিণত হয়েছে। একই চিত্র দেখা গেছে চকবাজারের কাতালগঞ্জে। 

এদিকে, নিজের আইন নিজেই মেনে চলছে না চসিক। সিটি করপোরেশন আইন অনুযায়ী, ময়লা-আবর্জনার ট্রাক ত্রিপল দিয়ে ঢেকে ভাগাড়ে নিয়ে যাওয়ার নিয়ম থাকলেও সংস্থাটি সেই আইন মানছে না। খোলা ট্রাকে করে আবর্জনা নিতে গিয়ে পথে পথে সেগুলো পড়ে পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। এ ছাড়া যত্রতত্র ময়লা-আবর্জনা রাখার কারণে পথচারীদের নানা দুর্ভোগ পোহাতে হয়।  ময়লা বহনকারী ভ্যান ও গাড়ি ফুটপাতের পাশে সারি করে রাখা হয়। 
চট্টগ্রাম নগরের হালিশহরের বাংলাবাজার ও বায়জিদের আরেফিন নগরের সিটি করপোরেশনের দুটি ময়লার ডাম্পিং স্টেশন রয়েছে। পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের সংগ্রহ করা ময়লা-আবর্জনা ওই দুটি ডাম্পিং স্টেশনে ফেলা হয়। কিন্তু এ দুটি স্টেশনে ৩০০ থেকে ৩৫০ ফুট উঁচু আবর্জনার স্তূপ পড়ে থাকে। সাধারণ বর্জ্যের সঙ্গে মেডিকেল, শিল্প-কারখানা ও ই-বর্জ্যের মতো সংক্রামক এবং বিপজ্জনক বর্জ্য ব্যবস্থাপনাও চলছে সনাতন পদ্ধতিতে।

নগরের নাছিরাবাদ সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী অরিত্র মজুমদারের মা আনিতা দাশ বলেন, ‘প্রতিদিন সকালে ছেলেকে নিয়ে স্কুলে যেতে হয়। ষোলশহর পার হওয়ার সময় ময়লার দুর্গন্ধে নিঃশ্বাস বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়। মাঝে মাঝে বমি চলে আসে।’

চকবাজার এলাকার পথচারী সাব্বির রহমান বলেন, ‘সড়ক পরিষ্কার রাখা সিটি করপোরেশনের দায়িত্ব। অথচ তারাই সড়ক দখল করে ময়লার ডাম্পিং স্টেশন বানিয়ে রেখেছে। এ কারণে আমরা প্রায়ই অসুস্থ হয়ে যাচ্ছি।’ ষোলশহর এলাকায় বাসিন্দা মোহাম্মদ পারভেজ বলেন, ‘প্রতিদিন সকালে হেঁটে ব্যবসা প্রতিষ্ঠাতে যাই। কিন্তু ময়লা রাখার স্থানটি পার হওয়ার সময় মনে হয় নরকের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। এ স্থান দিয়ে যেতে ইচ্ছেই করে না। বাধ্য হয়ে পার হতে হয়।’ 

চসিকের পরিচ্ছন্নতাকর্মী অসীম দাস বলেন, ‘আমরা ভ্যানগাড়ি করে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ময়লা সংগ্রহ করি। আমরা দূরের ডাম্পিং স্টেশনে ময়লা রেখে আসতে পারি না। তাই আমরা কাছের সড়কের ওপর ময়লা রাখি।’ 

চসিকের উপপ্রধান পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তা প্রণব কুমার শর্মা খবরের কাগজকে বলেন, ‘চট্টগ্রাম শহরে দৈনিক ২ হাজার ৩০০ টন ময়লা-আবর্জনা জমা হয়। চসিক কর্মীরা রাত থেকে সেই ময়লা পরিষ্কার করেন। কিন্তু এরপরও কিছু কিছু ময়লা থেকে যায়। সড়কের ওপর থেকে ময়লার স্তূপ সরানোর জন্য চসিকের পরিকল্পনা রয়েছে। অন্য কোথাও জায়গা না পাওয়ায় বাধ্য হয়ে সড়কের ওপর রাখতে হচ্ছে। তবে সকালের আগেই সড়ক থেকে ময়লা সরানোর জন্য পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের নির্দেশনা দেওয়া আছে। এরপরও দিনে কেন সড়কে ময়লা থাকে তা খতিয়ে দেখা হবে।’ 

চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ‘ভ্যান গাড়ি দিয়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে সংগ্রহ করা ময়লা সড়কের ওপর রাখা হয়। মানুষের চলাচলের পথে ময়লার স্তূপ থাকা মোটেও স্বাস্থ্যসম্মত নয়। আমরা চেষ্টা করব যেন সড়কের ওপর থেকে অস্থায়ী ডাম্পিং স্টেশনগুলো সরানো যায়। প্রতিদিন যে পরিমাণ ময়লা সংগ্রহ হয় তা ভোরে স্থায়ী ডাম্পিং স্টেশনে পৌঁছে দেওয়া হয়। এর জন্য চসিকের ডাম্পিং গাড়ি কাজ করছে।’