ঢাকার বাড্ডায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত সিরাজুল ইসলাম ব্যাপারী। ছবি: সংগৃহীত
গত বছরের ৫ আগস্ট ঢাকার বাড্ডায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন ফরিদপুর সদর উপজেলার সিরাজুল ইসলাম ব্যাপারী (২৯)। তবে ঢাকায় নিহত হলেও ২৯ আগস্ট ঢাকায় করা মামলায় ফরিদপুরের ৫৯ জনকে হত্যা মামলার আসামি করা হয়েছে। তাদের অভিযোগ, তারা নানা রকমের হয়রানির শিকার হচ্ছেন।
নিহতের বাবা শফিকুল জানান, লাবলু তার পরিচিত কেউ নয়। লাবলুর বাড়ি ফরিদপুরের সালথা উপজেলার খলিশাডুবি গ্রামে। লাবলু তার সঙ্গে কথা না বলেই তিনি বাড্ডা থানায় মামলা করেছেন। মামলাটি প্রত্যাহারের জন্য শফিকুল গত বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছেন।
গত বছরের ১৯ সেপ্টেম্বর সম্প্রতি ফরিদপুরের সদর উপজেলার শিবরামপুর এলাকার পাট ব্যবসায়ী বিশ্বজিৎ ঘোষ দীপুকে গ্রেপ্তার করা হয়। জেলে গত বছরের ৪ ডিসেম্বর তিনি হার্ট অ্যাটাক করেন। পরে জামিন নিয়ে চিকিৎসা করাতে গত ১২ জানুয়ারি কলকাতা যান। শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) চিকিৎসারত অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
এ মামলার অপর আসামি বিশ্বজিৎ ঘোষ দীপুর মেজো ভাই চঞ্চল ঘোষ বলেন, ‘আমরা কখনো কোনো রাজনীতি করিনি। ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনা শেষ করে ব্যবসা শুরু করি। কিছু লোকজনের সঙ্গে আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়ে বিরোধ ছিল। তারা বিভিন্ন সময় টাকা-পয়সা চাইত। আমরা না দেওয়ার কারণে বিরোধ তৈরি হয়। আর এ কারণে ঢাকার একটি হত্যা মামলায় আমাদের পরিবারের চার ভাইকেই আসামি করা হয়েছে।’
ফরিদপুরের ব্যবসায়ী রাম দত্ত বলেন, ‘আমি ঘটনার দিন দোকানে ছিলাম। গণ্ডগোলের অবস্থা দেখে বাসায় গিয়ে ঘুমিয়ে পড়ি। এই মামলায় আমাকেও আসামি করা হয়েছে। আমাদের ফোন চেক করে ট্র্যাকিং করলে সব বেরিয়ে আসবে।’
এই মামলার অপর আসামি বিধান সাহা বলেন, ‘আমি ঘটনার দিন বাড়িতে অবস্থান করছিলাম। মামলায় আমাকেও আসামি করা হয়েছে। মামলার পর দেশে অনেক দিন পলাতক ছিলাম। পরে দেশ ছেড়ে পরিবার-পরিজন ফেলে বিদেশে চলে এসেছি।’
ফরিদপুর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সাবেক পরিচালক সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘আমি গত বছরের ৫ আগস্ট ফরিদপুরে ছিলাম। কিন্তু বাদী আমাকে আসামি করেছেন। আমার হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে মামলার সব কাগজপত্র পাঠিয়ে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।’
এ বিষয়ে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান বলেন, ‘এই মামলাটি বাড্ডা থানায় হয়েছে। বাড্ডা থানা ঘটনার তদন্ত করে দেখবে। আমরা শুধু এখানে মামলার আসামিদের নাম-ঠিকানাসহ সবকিছু অনুসন্ধান করে তাদের রিপোর্ট দেব। এ ছাড়া কোনোকিছুই আমাদের হাতে নেই। তবে এই মামলার আটকসহ বিভিন্ন বিষয়ে আমার কাছে আপাতত কোনো তথ্য নেই।’