ঢাকা ২৬ মাঘ ১৪৩১, রোববার, ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
English
রোববার, ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৬ মাঘ ১৪৩১

নোয়াখালীতে পুলিশ হেফাজতে যুবদল নেতার মৃত্যুর অভিযোগ

প্রকাশ: ১৪ জানুয়ারি ২০২৫, ০৩:১৬ পিএম
আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০২৫, ০৩:২০ পিএম
নোয়াখালীতে পুলিশ হেফাজতে যুবদল নেতার মৃত্যুর অভিযোগ
নোয়াখালীর সোনাইমুড়িতে নিহত যুবদল নেতা আবদুর রহমান । ছবি: খবরের কাগজ

নোয়াখালীর সোনাইমুড়িতে পুলিশ হেফাজতে আবদুর রহমান (৩৪) নামে এক যুবদল নেতার মৃত্যু হয়েছে।

মঙ্গলাবার (১৪ জানুয়ারি) সকালে পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

নিহত যুবদল নেতা সোনাপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক এবং বর্তমানে ইউনিয়ন যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক পদপ্রার্থী ছিলেন। তার পরিবারের দাবি, আবদুর রহমানকে ‘কন্ট্রাক্ট কিলিং’ করা হয়েছে।

এর আগে সোমবার (১৩ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় ২৫০ শয্যার নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান আবদুর রহমান। ওইদিন সকালে গুলি-রামদাসহ আবদুর রহমানকে  আটক করে থানায় সোপর্দ করেছিল সেনাবাহিনী।

নিহত আবদুর রহমানের চাচাতো ভাই মো. হানিফ বলেন, ‘আমাদের ভাই অত্যন্ত ভদ্র ছেলে ছিল। তাকে মিস ইনফরমেশনে আটক করে আওয়ামী লীগের ইন্ধনে কন্ট্রাক্ট কিলিং করা হয়েছে। সেনাবাহিনী আটকের সময় আবদুর রহমানকে ব্যাপক মারধর করেছে। পরে থানায় নেওয়ার পর সে বাঁচার জন্য অনেক আকুতি করেছে। কিন্তু পুলিশ তাকে চিকিৎসা না দিয়ে সাতঘণ্টা খানায় রেখে বিকেলে চালান দেয়।’

আবদুর রহমানের বোন সালমা আক্তার বলেন, ‘তারা আমার নিরপরাধ ভাইকে মেরে ফেলেছে। আমি এর বিচার চাই।’

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ‘সোমবার ভোররাতে সোনাপুর ইউনিয়নের হীরাপুর গ্রামের হাওলাদার বাড়িতে অভিযান চালায় সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে যৌথবাহিনী। তারা আবদুর রহমান ও প্রতিবেশি যুবদল কর্মী হাবিবুর রহমানকে আটক করে বেদম মারধর করে। পরে তাদেরকে পানিতে নামিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে। এরপর দোকানের সামনে নিয়েও মারধর করে।’

নোয়াখালী সেনা ক্যাম্পের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. রিফাত আনোয়ার খবরের কাগজকে বলেন, ‘ভোরে দুই আসামিকে দুটি গুলি ও তিনটি রামদাসহ আটক করে সকাল সাড়ে সাতটার দিকে সোনাইমুড়ী থানায় সোপর্দ করা হয়। পরে পুলিশ মামলা করে। সন্ধ্যায় হাসপাতালে আবদুর রহমান মারা গেছেন।’
 
তিনি দাবি করেন, ‘কন্ট্রাক্ট কিলিংয়ের প্রশ্নই আসে না। ধরার সময় ধস্তাধস্তিতে সামান্য আহত হতে পারে। তবে সারাদিন তিনি থানা হেফাজতে ছিলেন। তেমন কিছু হলে চিকিৎসার প্রয়োজন হতো। বিকেলে আদালতে সোপর্দ করা হলে আবদুর রহমান অসুস্থ বোধ করেন। পরে তাকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে তার মৃত্যু হয়। বিষয়টি সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে তদন্ত চলছে। পরে বিস্তারিত জানানো হবে।’
 
নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক মো. আবদুল মান্নান শাকিল বলেন, ‘বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে পুলিশ আবদুর রহমানকে অসুস্থ অবস্থায় জরুরি বিভাগে নিয়ে আসে। তার গায়ে মারধরের চিহ্ন ছিল। আবদুর রহমানকে ভর্তির কিছুক্ষণ পর ওয়ার্ডে নেওয়া হলে তার মৃত্যু হয়। আহত আরেক আসামি হাবিবুর রহমানকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’
 
নোয়াখালী আদালতের পরিদর্শক (কোর্ট ইন্সপেক্টর) মো. শহীদুল ইসলাম খবরের কাগজকে বলেন, ‘সোনাইমুড়ি থানার অস্ত্র আইনের মামলায় দুই আসামিকে হাজির করলে তাদের শারীরিক অসুস্থতা দেখে চিকিৎসার নির্দেশ দেন বিচারক। পরে তাদের পুলিশি পাহারায় হাসপাতালে পাঠানো হয়। শুনেছি সেখানে আবদুর রহমান নামে একজন মারা গেছেন।’
 
সোনাইমুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোরশেদ আলম খবরের কাগজকে বলেন, ‘আমাদের কাছে আসামিদেরকে সোপর্দ করার পর সকালে হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে ডাক্তার দেখার পর আবার থানায় আনা হয়। বেশি অসুস্থ থাকলে ডাক্তার তাকে অন্য হাসপাতালে পাঠাতো। আমরা আসামি বুঝে পাওয়ার পর থেকে সিসিটিভি ফুটেজ আছে। বিকেলে উপ-পরিদর্শক (এসআই) কাওছারুজ্জামানের করা অস্ত্র মামলায় তাদেরকে আদালতে পাঠালে সেখানে তারা অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে হাসপাতালে নেওয়া হলে আবদুর রহমান মারা যান।’
 
ওসি আরও বলেন, ‘মরদেহের সুরতহাল তৈরি ও ময়নাতদন্তের কাজ চলছে। প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এ বিষয়ে জেলা যুবদলের সভাপতি মঞ্জুরুল আজিম সুমন খবরের কাগজকে বলেন, ‘খবর পেয়ে রাতে হাসপাতালে গিয়ে আবদুর রহমানের মরদেহ দেখতে যাই। সে আমাদের দলের একনিষ্ঠ কর্মী ছিল। তার এমন মৃত্যুতে আমরা শোকাহত। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দায়ীদের বিচার দাবি করছি।’
 
ইকবাল হোসেন/সুমন/

বাগেরহাটে সাবেক এসপি, শেখ হেলাল, তন্ময়সহ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা

প্রকাশ: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১১:৪৯ এএম
বাগেরহাটে সাবেক এসপি, শেখ হেলাল, তন্ময়সহ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা
সাবেক পুলিশ সুপার আবুল হাসনাত খান

বাগেরহাটে ফকিরহাটে ছাত্রজনতাকে গুলি করা, বোমা বিস্ফোরণ ও স্থাপনা ধ্বংসের অভিযোগে বাগেরহাট-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দিন, বাগেরহাট-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শেখ তন্ময়, বাগেরহাটের সাবেক পুলিশ সুপার আবুল হাসনাত খানসহ আওয়ামী লীগের ৩৫ নেতাকর্মীর নামে মামলা করা হয়েছে।

শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) রফিকুল ইসলাম মিঠু নামের এক ব্যক্তি বাদী হয়ে ফকিরহাট থানায় এই মামলা করেন। এই মামলায় সাবেক পুলিশ সুপার আবুল হাসনাত খানকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

মামলার অন্যান্য আসামিরা হলেন, বাগেরহাট-২ আসনের আরেক সাবেক সদস্য সংসদ সদস্য মীর শওকত আলী বাদশা, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ কামরুজ্জামান টুকু, সাধারণ সম্পাদক ভুইয়া হেমায়েত উদ্দিন, যুগ্মসাধারণ সম্পাদক বাগেরহাট পৌরসভার মেয়র খান হাবিবুর রহমান, বাগেরহাট সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান যুবলীগ নেতা সরদার নাসির উদ্দিন, শেখ হেলাল উদ্দিনের একান্ত সচিব ফিরোজুল ইসলাম জোমাদ্দার, ফকিরহাট উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি স্বপন কুমার দাস, আওয়ামী লীগ নেতা আবুল কালাম আজাদ ওরফে সাহেব মল্লিক, ফকিরহাট উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান যুবলীগ নেতা ওয়াহিদুর রহমান বাবু, আওয়ামী লীগ নেতা ইমরুল হাসান, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি শিপন মিনা, জেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি রেজাউর রহমান মন্টু, সাধারণ সম্পাদক খান আবু বক্কর সিদ্দিক, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বসিরুল ইসলাম, অওয়ামী লীগ নেতা শামীম আহসান, মহিতুর রহমান পল্টন, জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মীর জায়েসী আশরাফী জেমস, বাগেরহাট জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাহিয়ান সুলতান ওশান, কচুয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মেহেদী হাসান বাবু, সাবেক চেয়ারম্যান নাজমা সারোয়ার, আওয়ামী লীগ নেতা লিয়াকত হোসেন লিটন।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ছাত্র জনতার ন্যায্য আন্দোলনকে নস্যাৎ করার উদ্দেশ্যে আসামীরা গেল ৪ আগস্ট দুপুরে ফকিরহাট উপজেলার কাটাখালি গোলচত্ত্বর এলাকায় জড়ো হয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ধ্বংস করে। ছাত্র জনতাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে তারা। আতঙ্ক সৃষ্টির উদ্দেশ্যে কয়েকটি বোমা বিস্ফোরণ করে এবং হত্যার উদ্দেশ্যে একাধিকগুলি ছোড়ে।

এছাড়া, বাগেরহাটের সাবেক পুলিশ সুপার আবুল হাসনাত খান উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা থাকায় ফ্যাসিস্ট সরকারকে টিকিয়ে রাখার জন্য বিভিন্ন সময় উস্কানিমূলক বক্তব্য দিয়েছেন। একটি ব্যালট- একটি বুলেটসহ নানা উস্কানিমূলক বক্তব্য দিয়ে তিনি আসামিদের ছাত্র জনতার আন্দোলনের বিরুদ্ধে কর্মকাণ্ডে উদ্বুদ্ধ করেছেন।

ফকিরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম আলমগীর কবির বলেন, 'ছাত্র জনতার আন্দোলনে গুলিবর্ষণ, বোমা বিস্ফোরণ, স্থাপনা ধ্বংসসহ কয়েকটি অভিযোগে ৩৫ জনের নামে মামলা হয়েছে। সাবেক পুলিশ সুপার আবুল হাসনাত খানকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।'

রিফাত মাহামুদ/জোবাইদা/

বিপিএল চ্যাম্পিয়ন বরিশালে বাঁধভাঙা উল্লাস বিজয় উদযাপন আজ

প্রকাশ: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০:৪৯ এএম
আপডেট: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১১:০৫ এএম
বরিশালে বাঁধভাঙা উল্লাস বিজয় উদযাপন আজ
ছবি : খবরের কাগজ

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) ১১তম আসরের চ্যাম্পিয়ন ‘ফরচুন বরিশাল’। প্রিয় দলের চ্যাম্পিয়নের খবরে গত শুক্রবার রাতে বরিশাল নগরীর বিভিন্ন সড়কে নেমে আসেন কয়েক হাজার মানুষ। এ সময় তারা নানা স্লোগান, নেচে-গেয়ে, ভেঁপু বাজিয়ে ও ঢাকঢোল পিটিয়ে আনন্দ প্রকাশ করেন। এ ছাড়া ক্রীড়াপ্রেমীদের একটা অংশ পিকআপ ও মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা নিয়ে নগরীর সদর রোডে আনন্দ মিছিল করেন।

এদিকে রবিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) নগরীর বেলস্ পার্কে ‘বিপিএল বিজয়’ উদযাপন করা হবে বলে জানিয়েছে ফরচুন বরিশাল কর্তৃপক্ষ।  

শনিবার রাতে নগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, নগরীর বিনোদন কেন্দ্র, বেলস্ পার্ক (বঙ্গবন্ধু উদ্যান), নতুন বাজার, টেম্পু স্ট্যান্ড, জিলা স্কুল মোড়, আমানতগঞ্জ, কাউনিয়া, আলেকান্দা, রূপাতলী, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়, ব্রজমোহন কলেজ, বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজসহ বিভিন্ন এলাকায় বড় পর্দায় বিপিএলের ফাইনাল খেলা দেখেন ক্রীড়াপ্রেমীরা। এর একপর্যায়ে প্রিয় দল ফরচুন বরিশালের জয়ের খবরে তারা ঢোল ও বাদ্যযন্ত্র নিয়ে উল্লাস প্রকাশ করেন। এ সময় শতাধিক ট্রাক নিয়ে মিছিল বের করেন বিভিন্ন বয়সের ক্রীড়াপ্রেমীরা। ট্রাকগুলো নিয়ে তারা নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করেন। 

এ সময় কথা হয় নগরীর মাইনুল ইসলাম সড়কের বাসিন্দা তুষার আহমেদের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘ফরচুন বরিশালের টানা দ্বিতীয় বিপিএল জয়ে আমরা বেশ খুশি। আমাদের প্রত্যাশা, ফরচুন বরিশাল জয়ের এ ধারাবাহিকতা ধরে রাখবে।’

ভাটিখানা এলাকার বাসিন্দা আদনান অলি বলেন, ‘বরিশালের বিজয়ে আমরা আনন্দিত। তবে গত আসরে ফাইনাল খেলার আগে ফরচুন বরিশালের মালিক মিজানুর রহমান ঘোষণা দিয়েছেন লঞ্চে করে ট্রফি বরিশালে নিয়ে আসবেন। কিন্তু তিনি সে কথা রাখেননি। এতে বরিশালের মানুষ আশাহত হয়েছিল। গতকাল খেলা শেষে ট্রফি বিতরণের সময় ফরচুন বরিশালের অধিনায়ক তামিম ইকবাল ঘোষণা দিয়েছেন, আজ রবিবার বরিশালের এসে বিজয় উদযাপন করবেন। তার ওপর আমাদের আস্থা আছে। তাই এবারের বিপিএল জয় আমরা ভালোভাবে উদযাপন করতে পারব। 

বিপিএল পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে তামিম ইকবাল সাংবাদিকদের বলেন, ‘গত বছর আমরা বরিশালে গিয়ে উদযাপন করতে পারিনি। এবার আমরা ঠিক করেছি বরিশাল যাব। আমরা ৯ তারিখ বরিশালে যাব। সবাইকে অনুরোধ করব, আপনারা ৯ তারিখ শিরোপা বিজয় উদযাপন অনুষ্ঠানে যোগ দিবেন।’

ফরচুন বরিশাল টিমের কর্মকর্তারা জানান, আজ বিপিএলের চ্যাম্পিয়ন ট্রফি নিয়ে ফরচুন বরিশাল টিমের খেলোয়াড় ও কর্মকর্তারা বরিশালে আসবেন। বেলা ৩টার মধ্যে কাপ নিয়ে তারা নগরীর বেলস্ পার্ক (বঙ্গবন্ধু উদ্যান) উপস্থিত হবেন। সেখানে বরিশালবাসীর সঙ্গে টানা দ্বিতীয়বার বিপিএল বিজয় উদযাপন করা হবে।

ভূঁইয়ার মাঠ খাল ভরাটে পানি চলাচল বন্ধ, পৌরবাসীর ভোগান্তি

প্রকাশ: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০:৩৩ এএম
আপডেট: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০:৫৫ এএম
ভূঁইয়ার মাঠ খাল ভরাটে পানি চলাচল বন্ধ, পৌরবাসীর ভোগান্তি
মাদারীপুর পৌরসভার 'ভুঁয়ার মাঠ' খলিটি কচুরিপানায় ভরাট হওয়ায় পানি চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। ছবি : খবরের কাগজ

মাদারীপুর পৌর শহরের ‘ভূঁইয়ার মাঠ’ খালটি কয়েক বছর ধরে ময়লা-আবর্জনা ফেলা ও কচুরিপানায় ভরাট হওয়ায় পানি চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে বৃষ্টির মৌসুমে তৈরি হয় জলাবদ্ধতা। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েন পৌরবাসী। স্থানীয়রা মনে করছেন, এই শীত মৌসুম থাকতেই খালটি খনন করতে হবে। এতে করে বর্ষার মৌসুমে নির্বিঘ্নে পানি চলাচলের পাশাপাশি জলাবদ্ধতা নিরসন ও মশার হাত থেকেও রক্ষা পাবেন তারা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, মাদারীপুর পৌর শহরের ২ নম্বর ওয়ার্ডের আমিরাবাদ জামে মসজিদ ভবনের নিচ থেকে উত্তর পাশে এবং শামসুননাহার উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের পূর্ব পাশে অবস্থিত ‘ভূইয়ার মাঠ’। মাঠের ভেতর দিয়ে প্রায় ৮০০ ফুট দৈর্ঘ্যের ছোট একটি খাল রয়েছে। খালটির পাশ দিয়ে গড়ে উঠেছে মাদারীপুরের বেশ কিছু ফার্নিচারের কারখানা। এই কারখানার বর্জ্য খালের ফেলার কারণে পুরো খালটির নাব্য কমে গেছে। ভরাট হয়ে গেছে খালের বিভিন্ন স্থান। এতে খালের গভীরতা আগের মতন না থাকায় সারা বছর এই খাল দিয়ে পানিপ্রবাহ বন্ধ থাকে। তবে বর্ষা মৌসুম এলে চারপাশের পানি এসে এই খালে পড়ায় পুরো খালটির পানি চারপাশে ছড়িয়ে পড়ে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি করে। এতে এখানকার মানুষ পড়েছেন চরম ভোগান্তিতে। খালের বিভিন্ন স্থানে পানি জমে থাকায় সারা বছরই এডিস মশার লার্ভা থেকে মশার উৎপাদন বৃদ্ধি পেতেই থাকে। এতে এলাকার মানুষ স্বাস্থ্যঝুঁকিতেও পড়েন। তাই স্থানীয়রা কর্তৃপক্ষের কাছে এই খালটি নতুন করে খনন করে সারা বছরই পানি চলাচলের ব্যবস্থার দাবি করছেন।

স্থানীয় বাসিন্দা সাগর হোসেন বলেন, ‘আমিরাবাদ মসজিদ থেকে উত্তর দিকে বয়ে যাওয়া খালটির পাশে অনেক ফার্নিচারের কারাখানা তৈরি হয়েছে। এতে কাঠের গুঁড়িগুলো এই খালে নিয়মিত ফেলার কারণে খালের এক পাশের মুখ ভরাট হয়ে গেছে। এখন আর খালে পানি চলাচল করে না। এই খালটি বেশি বড় নয়। সর্বোচ্চ ৮০০-৯০০ ফুট হতে পারে। এই খালটি যদি কর্তৃপক্ষ নতুন করে খনন করে দুই পাড় বেঁধে দেয়, তাহলে সারা বছরই এই খালের পানিপ্রবাহ থাকবে। এতে স্থানীয় বাসিন্দারা তাদের বাড়িঘরের ব্যবহৃত ময়লা পানিও ফেলতে পারবেন। নাগরিক জীবনযাপনে আসবে ইতিবাচক পরিবর্তন।’

আরেক বাসিন্দা অসীম দাস বলেন, “এই খালটি দিয়ে তো আগে দেখতাম সারা বছরই পানি নামত। এখন তো পানি বের হওয়ার সিস্টেম নেই। তা ছাড়া পানি বের না হওয়ার কারণে সারা বছরই এই খালে এডিস মশার লার্ভা থাকে। এতে এই এলাকায় ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বর্ষার সময়ে বেড়ে যায়। অনেকেই শুনেছি মশার কামড়ে ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। তাই এই ‘ভূইয়ার মাঠ’ খালটি খনন করা জরুরি।”

এদিকে নজরুল ইসলাম নামের স্থানীয় একজন বলেন, ‘আগে দলীয় সরকার ক্ষমতায় ছিল। তখন তো খাল খনন করতে গেলেই বাধা আসত। এখন তো দেশে অন্তর্বর্তী সরকার। এখন তো কর্তৃপক্ষের খাল খনন ও উদ্ধার কার্যক্রম করা খুব সহজ। এখন যদি এসব খাল উদ্ধার ও পুনর্খনন করা না হয়, তাহলে আর কোনো দিনই করা সম্ভব হবে না।’

এই বিষয়ে মাদারীপুর উন্নয়ন সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অ্যাডভোকেট মাসুদ পারভেজ বলেন, “ ‘ভূঁইয়া মাঠ’ খালটিতে এখন আগের মতন নাব্য নেই। ফলে পানি চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এখন এই খালটি নতুন করে খনন করে দুই পাশে খনন করা মাটি দিয়ে ভালো করে পাড় বেঁধে দিলে খাল দিয়ে সারা বছরই পানি চলাচল করতে পারবে। এতে স্থানীয় বাসিন্দারা খালটি ব্যবহার করে যেমন নাগরিক সুবিধা পাবেন, তেমনই জলাবদ্ধতার দুর্ভোগ থেকেও মুক্তি পাবে। মশার উৎপাদনও বন্ধ হবে। তাই খালটি জরুরি ভিত্তিতে খনন করে খালের প্রাণ ফিরিয়ে আনার দাবি করছি।”

আমিরাবাদ ‘ভূইয়ার মাঠ’ খাল উদ্ধার ও খনন কার্যক্রম বিষয়ে মাদারীপুর পৌরসভার পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা খন্দকার আবু আহমদ ফিরোজ ইলিয়াস বলেন, ‘খালটি ইতোমধ্যে আমরা দেখে এসেছি। খালটি দিয়ে যাতে সারা বছর পানিপ্রবাহ থাকে সেই  উদ্যোগ আমরা শিগগিরই গ্রহণ করব।’

অপারেশন ডেভিল হান্ট: হাতিয়ায় ইউপি চেয়ারম্যানসহ ৭ আ.লীগ নেতা আটক

প্রকাশ: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০:৩০ এএম
আপডেট: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০:৪৫ এএম
অপারেশন ডেভিল হান্ট: হাতিয়ায় ইউপি চেয়ারম্যানসহ ৭ আ.লীগ নেতা আটক
ছবি: খবরের কাগজ

অপারেশন ‘ডেভিল হান্টের’ প্রথমদিনে নোয়াখালী হাতিয়ায় যৌথবাহিনী অভিযান চালিয়ে সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতিসহ সাতজনকে আটক করেছে।

শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) রাতে হাতিয়ার বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। 

আটকরা হলেন- হাতিয়া উপজেলার চরঈশ্বর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন আজাদ (৬৪), হাতিয়া পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের সাদ্দাম হোসেন (২৬), ৩নং ওয়ার্ডের আবুল কালাম বিটু (৪৪), নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়নের আদর্শগ্রামের আজিম উদ্দিন (৩১), তমরুদ্দি ইউনিয়নের সিরাজুল ইসলাম প্রকাশ রাকছান (২৪), আবদুল মাজেদ পলাশ (৪৩) ও আব্দুল জাহের (৩৯)।

অভিযান সূত্রে জানা গেছে, নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলায় নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড, নৌ পুলিশ ও পুলিশের সদস্যরা যৌথ অভিযান চালিয়ে ৫নং চরঈশ্বর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আজাদকে ওছখালী পুরাতন বাজারের ২নং ওয়ার্ড থেকে আটক করে। পরবর্তীতে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে আরও ৬ জনকে আটক করে যৌথবাহিনী। অভিযানে একটি প্লাস্টিকের হাতলযুক্ত ধারালো ছুরি, একটি ধারালো কুড়াল, দুটি কাঠের হাতলযুক্ত ধারালো ছুরি ও তিনটি লম্বা তলোয়ার উদ্ধার করা হয়। 

হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম আজমল হুদা খবরের কাগজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। 

তিনি বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ ঘোষণার পর হাতিয়া থানার এটি প্রথম অভিযান ছিল। আটকদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। একইসঙ্গে নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড, নৌ পুলিশ ও পুলিশের যৌথ অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

মেহেদী/

খালে আবর্জনা ফেললে আইনের আওতায় আনার হুঁশিয়ারি

প্রকাশ: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০:২১ এএম
আপডেট: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০:৩৩ এএম
খালে আবর্জনা ফেললে আইনের আওতায় আনার হুঁশিয়ারি
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক ই আজম বীর প্রতীক। ছবি: সংগৃহীত

খালে আবর্জনা নিক্ষেপকারীকে প্রয়োজনে আইনের আওতায় আনার হুঁশিয়ারি দিয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক ই আজম বীর প্রতীক বলেছেন, ‘পুরোনো লেপ, তোশক, কম্বল, পলিথিন, আসবাবপত্র কোনোভাবেই খালে আসার কথা না। কিন্তু খাল থেকে এসবও পরিষ্কার করতে হচ্ছে। ‘খাল পাড়ের বাসিন্দাদের সচেতন হতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘এলাকার সব আবর্জনা এক জায়গায় রাখলে সিটি করপোরেশন সেখান থেকে নিয়ে যাবে। সবার সহযোগিতা পেলে চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসন করা সম্ভব।’

শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) নগরের আগ্রাবাদ এলাকায় খাল পরিদর্শনকালে তিনি এসব কথা বলেন। 

আগামী বর্ষা মৌসুমে দৃশ্যমান উন্নতি দেখানোর প্রত্যয় ব্যক্ত করে উপদেষ্টা বলেন, ‘চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনে আমরা অনেক রকমের প্রচেষ্টা চালাচ্ছি। কিন্তু খালে এমন অনেক আবর্জনা দেখা যাচ্ছে যা কোনোভাবেই খালে আসার কথা না। এই সমস্যা থেকে উদ্ধার হতে হলে, নিজেদেরকেই নিজের কাজ এবং দায়িত্ব পালন করতে হবে। এলাকায় যে কমিটিগুলো আছে তারা ঘরে ঘরে গিয়ে সতর্ক করেন। যাতে সবাই একস্থানে ময়লা রাখেন। সেখান থেকে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন আবর্জনা সংগ্রহ করবে। এই শহর আমাদের। এখানে বেঁচে থাকার অধিকার আমাদের সবার আছে। একজনের জন্য দশজন কষ্ট পাবে তা যেন না হয়।’ 

তিনি বলেন, ‘খালের মাটি সিটি করপোরেশন, সিডিএ পরিষ্কার করবে। কিন্তু আপনারা যারা খালে পলিথিন ফেলছেন, সেটা কেন ফেলবেন। রাষ্ট্রের এই উদ্যোগের সঙ্গে এলাকাবাসীর শতভাগ সহযোগিতা লাগবে। কোথায় সমস্যা আছে আপনারা আমাদের জানান। আমরা সমাধান করব। কিন্তু আপনারা নিজেরাই যদি সমস্যার উৎস হন, তাহলে তা সমাধান করা কারও পক্ষে সম্ভব নয়। 

এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ফরিদা খানমসহ প্রশাসন ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

পরে উপদেষ্টা চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে জলাবদ্ধতা প্রকল্প নিয়ে জেলার সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রধানদের সঙ্গে বৈঠক করেন। এ সময় দুর্যোগ উপদেষ্টা বলেন, খালে যাতে আবর্জনা না পড়ে সেই লক্ষ্যে প্রথমে সচেতনতা কর্মসূচি, তারপর সতর্কতা এবং সর্বশেষ ধাপ হলো শাস্তি। কেউ খাল-নালায় আবর্জনা ফেললে তাকে এক-দুই দিনের জন্য জেলেও দেওয়া যেতে পারে। প্রকল্পটি সরকারের অগ্রাধিকার প্রকল্পের মধ্যে আছে উল্লেখ করে বলেন, এর জন্য পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ থাকবে।