
ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেস ওয়ের মাদারীপুরের শিবচরে বাসের ধাক্কায় মো. শুক্কুর খান (৭০) নামে একজন নিহত হয়েছে।
শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা ৬টার দিকে এক্সপ্রেসওয়ের পাচ্চর গোল চক্করে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত শুক্কুর খান শিবচর উপজেলার চরজানাজাত ইউনিয়নের মলফত খার গ্রামের দানেস খানের ছেলে।
নিহতদের স্বজন ও পুলিশ জানায়, রাস্তা পারাপারের সময় ঢাকা থেকে আসা দ্রুতগতির একটি পরিবহন বাস শুক্কুরকে চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই মারা যান। শিবচর হাইওয়ে থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) তমালের নেতৃত্ব পুলিশের একটি দল মরদেহটি উদ্ধার করেন।
এসআই তমাল বলেন, 'মরদেহ মাদারীপুর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।'
রফিকুল ইসলাম/জোবাইদা/
চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে ৫০০ বছরের পুরোনো শাহ মনোহর (রা.)-এর মাজার ভাঙার চেষ্টা করা হয়েছে। গত শুক্রবার রাতে কয়েকটি মোটরসাইকেল নিয়ে দুর্বৃত্তরা মাজারে হামলা চালানোর জন্য আসে। পরে এলাকাবাসীর বাধার মুখে তারা পালিয়ে যায়। বিষয়টি নিশ্চিত করে হাটহাজারী থানার ওসি আবু মাহমুদ কাওসার বলেন, ‘দুর্বৃত্তদের চেনা গেলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হতো।’
ওই এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ মহিউদ্দিন খবরের কাগজকে বলেন, ‘শুক্রবার রাতে একদল দুর্বৃত্ত শাহ মনোহর (রা.) এর মাজারে হামলা চালাতে এসেছিল। কিন্তু মসজিদের খাদেম টের পেয়ে বিষয়টি মাইকে জানান। এরপর এলাকাবাসী চারদিক থেকে বাধা দেন।’
স্থানীয় বাসিন্দা অ্যাডভোকেট মোসাহেব উদ্দিন বখতিয়ার বলেন, ‘মাজারের গিলাপে আগুন দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল। এলাকাবাসীর তোপের মুখে দুর্বৃত্তরা পালাতে বাধ্য হয়। পরে এলাকার লোকজন রাতব্যাপী পাহারা দেয়। ধারণা করা হচ্ছে, মৌলবাদী লোকজন হামলা চালানোর জন্য মাজারে এসেছিল। তারা সুযোগ পেলে মাজারে আগুন ধরিয়ে দিত। কিন্তু এলাকাবাসী সজাগ থাকায় তা সম্ভব হয়নি।’
হাটহাজারী মডেল থানার ওসি আবু মাহমুদ কাওসার বলেন, ‘মাজার ভাঙতে আসার খবর শুনেছি। তবে তারা ভাঙতে পারেনি। এলাকাবাসী তাদের চিনতে পারেনি।’
জানা গেছে, প্রতি বছরের ২২ মাঘ বা ৫ ফেব্রুয়ারি হাটহাজারী পশ্চিম ধলই এলাকায় শাহ মনোহর (রা.) এর মাজার প্রাঙ্গণে বার্ষিক ওরস হয়ে থাকে। সেখানে তখন প্রচুর ভক্তের সমাগম হয়। গত কয়েক দিন আগে ওরস সম্পন্ন হয়েছিল।
ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায় ডাম্পট্রাকের ধাক্কায় মো. রুস্তম আলী (৪১) নামে এক পুলিশের উপ সহকারী পরিদর্শক (এএসআই) নিহত হয়েছেন।
শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) রাত আটটার দিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
নিহত মো. রুস্তম আলী ব্রাক্ষণবাড়িয়ার বাসিন্দা। তিনি মুক্তাগাছা থানায় কর্মরত ছিলেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে মুক্তাগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামাল হোসেন বলেন, রুস্তম আলী ডিউটি শেষ করে মোটরসাইকেলে থানার দিকে আসছিলেন। বিকেল সাড়ে চারটার দিকে উপজেলার সত্রাশিয়া এলাকা পর্যন্ত আসতেই বিপরীত দিক থেকে দ্রুত গতিতে আসা একটি ডাম্পট্রাক মোটরসাইকেলে ধাক্কা দেয়। এতে গুরুতর আহত হন রুস্তম। পরে আশপাশের লোকজন তাকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত আটটার দিকে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
ট্রাকটি জব্দসহ চালককে আটক করতে চেষ্টা চলছে। এ ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলে জানিয়েছেন পুলিশের এই কর্মকর্তা।
মিন্টু/মেহেদী/
জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে আগুন দেওয়ার পর ভেকু মেশিন দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। গত শুক্রবার রাতে মেলান্দহ উপজেলা পরিষদের বিপরীত দিকে থাকা দলীয় কার্যালয়টি বিক্ষুব্ধ জনতা গুঁড়িয়ে দেয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার রাতে বিক্ষুব্ধ জনতার একটি মিছিল উপজেলা পরিষদের সামনে থাকা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে আগুন ধরিয়ে দিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে। কিছুক্ষণ পর সেখানে ভেকু মেশিন নিয়ে গিয়ে তারা কার্যালয়টি গুঁড়িয়ে দেয়। এর আগে গত ৬ ফেব্রুয়ারি রাতেও বিক্ষুব্ধ জনতা উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে আগুন ধরিয়ে দিয়েছিল। কিন্তু কার্যালয়ে তেমন কিছু না থাকায় আগুন বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। সর্বশেষ গত শুক্রবার রাতে কার্যালয়ের পাকা ভবনটি ভেকু মেশিন দিয়ে ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জামালপুর জেলা শাখার আহ্বায়ক মীর ইসহাক হাসান ইখলাস বলেন, ‘মেলান্দহ উপজেলায় আমাদের কোনো কমিটি নেই। ফলে সেখানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেউ নেই। আমরা এসব কর্মকাণ্ড রোধ করার চেষ্টা করছি। যারা এসব করছে, তাদের সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কোনো সম্পর্ক নেই।’
মেলান্দহ ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের লিডার নাছির উদ্দিন খন্দকার বলেন, ‘উপজেলা আওয়ামী লীগের অফিসে আগুন লাগার বিষয়টি স্টেশনে কেউ জানায়নি, এ বিষয়ে কিছু জানি না।’
মেলান্দহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাসুদুজ্জামান জানান, উপজেলা আওয়ামী লীগের অফিস ভাঙার বিষয়টি নিয়ে কেউ অভিযোগ করেনি।
শেরপুরে বনভোজনের বাসে থাকা এক তরুণীকে উত্ত্যক্তের জেরে দুই গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে সংঘর্ষ, ভাঙচুর ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা ও শনিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) সকালে দফায় দফায় সংঘর্ষে কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছেন। পরবর্তী সময়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এ ঘটনায় পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার সন্ধ্যায় সদর উপজেলার কান্দাশেরীরচর এলাকায় শেরপুর-জামালপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে একটি সূর্যমুখীর বাগানে দর্শনার্থীদের ভিড়ের কারণে সড়কে যানজট সৃষ্টি হয়। এ সময় যানজটে আটকে থাকা বনভোজনের বাসে থাকা এক তরুণীকে সদর উপজেলার কৃষ্ণপুর দড়িপাড়া গ্রামের এক যুবক উত্ত্যক্ত করেন। সে জন্য কান্দাশেরীরচর গ্রামের কয়েকজন যুবক ওই উত্ত্যক্তকারীকে মারধর করেন।
এ ঘটনার জেরে কৃষ্ণপুর দড়িপাড়া গ্রামের বাসিন্দারা দল বেঁধে কান্দাশেরীরচর গ্রামে হামলা চালালে শুরু হয় ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হন। এ সময় কুসুমহাটি বাজারের বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর চলানো হয়। একটি মোবাইলের দোকানে লুটপাট করা হয়।
এদিকে শনিবার সকাল থেকে কান্দাশেরীরচর ও কৃষ্ণপুর দড়িপাড়া গ্রামের দুই পক্ষ কুসুমহাটি বাজারে শেরপুর-জামালপুর সড়কের দুই পাশে অবস্থান নেওয়া শুরু করলে আবারও পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
সদর থানার ওসি জুবায়দুল আলম বলেন, এ ঘটনায় পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ ও সেনাবাহিনী রয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। এখন পর্যন্ত কোনো পক্ষই লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জেলা পুলিশ সুপার আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই গ্রামবাসীর মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে সেনাবাহিনীর সহায়তায় পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনে আমরা কঠোর হব। কোনোভাবেই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হতে দেব না।’