
চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে দ্রুতগামী বাস চাপায় মোটরসাইকেলের তিন আরোহী নিহত হয়েছে। তিনজনই স্ব স্ব পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। তাদের হারিয়ে দিশেহারা পরিবারগুলো।
সরেজমিনে নিহতদের গ্রামের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, মায়ানী বড়ুয়া পাড়ার স্থানীয় বৌদ্ধ মন্দিরে নিহতদের শেষকৃত্য অনুষ্ঠানের জন্য সারিবদ্ধ করে রাখা হয়েছে তিন বন্ধুর লাশ। স্বজন হারানোর বেদনায় লাশের খাটিয়ার পাশে বসে বিলাপ করছেন আত্মীয়-স্বজনরা। পুরো মন্দির প্রাঙ্গণ শোকের আবহ বিরাজমান। একই গ্রামের সমবয়সী তিন তরুণ মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় একসঙ্গে মারা যাওয়ায় পরিবার স্বজনসহ পুরো গ্রামের মানুষের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে আসে।
দুর্ঘটনার খবর পেয়ে মায়ানী এলাকায় দ্রত ছুটে যান চট্টগ্রাম উত্তর জেলার বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক নুরুল আমিন, যুগ্ম আহবায়ক নুরুল আমিন চেয়ারম্যান, সদস্য আব্দুল আউয়াল চৌধুরী, মিরসরাই উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক শাহীদুল ইসলাম চৌধুরী, উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলমগীর।
এর আগে বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) দিবাগত রাত দেড়টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সুফিয়া রোড় এলাকার ইউটার্নে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
নিহতরা হলেন- মিরসরাইয়ের ১৩ নং মায়ানী ইউনিয়নের বড়ুয়া পাড়া এলাকার বাসিন্দা মৃত সভ্যরঞ্জন বড়ুয়ার ছেলে ও মায়ানী ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য রুবেল বড়ুয়া (৪৫), একই গ্রামের বাসিন্দা মেঘল বড়ুয়ার ছেলে নিপ্পু বড়ুয়া (৪৫) ও সুরেশ বড়ুয়ার ছেলে শুভ্রজিৎ বড়ুয়া সনি (৪০)।
নিহত সনি বড়ূয়ার চাচাতো ভাই অমিত বড়ূয়া জানান, মায়ানী ইউনিয়নের বড়ূয়া পাড়ার তিন বন্ধু মিলে মোটরসাইকেল নিয়ে আমার জেঠাত ভাই সনি বড়ুয়ার এক বন্ধুর বিয়েতে যান। বিয়ের অনুষ্ঠান শেষ করে বাড়ি ফেরার পথে দ্রুতগামী বাস ধাক্কা দিলে মোটরসাইকেল থেকে তারা ছিটকে পড়ে ঘটনাস্থলে তিনজন মারা যায়।
তিনি আরও বলেন, তিনজনই তাদের পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। একজন পেশায় মাছ ব্যবসায়ী, একজন কাঠ মিস্ত্রী ও একজন কাজ করেন স্থানীয় একটি দোকানে। তাদের হারিয়ে পরিবার এখন দিশেহারা।
জোরারগঞ্জ হাইওয়ে থানার উপ-পরিদর্শক বোরহান উদ্দিন বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে সুফিয়া রোড এলাকায় একটি বিয়ের অনুষ্ঠান শেষে মোটরসাইকেল যোগে তিনজন ফিরছিলেন। এ সময় চট্টগ্রামমুখী লেনের সুফিয়া রোড এলাকায় ইউটার্ন পার হওয়ার সময় একটি অজ্ঞাত গাড়ি তাদের ধাক্কা দেয়। এতে তিনজন সড়কের পাশে ছিটকে পড়ে। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। আবেদনের প্রেক্ষিতে লাশ পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।
সাফিন আহমেদ খান রুদ্র/মাহফুজ