
খাগড়াছড়ি সদরে প্রকাশ্যেই অবৈধভাবে বালু তুলছেন মংসাথোয়াই চৌধুরী নামে সাবেক এক পৌর কাউন্সিলর। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর পরই ওই এলাকায় হঠাৎ প্রভাবশালী হয়ে উঠেছেন তিনি।
পাঁচ আগস্ট থেকেই শুরু হয়েছে তার এই অবৈধ কর্মযজ্ঞ। খাগড়াছড়ি পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কালাঢেবা এলাকায় নিজ বাড়ির পাশেই চেঙ্গী নদীতে শ্যালো মেশিন বসিয়ে দিন-রাত সমানতালে বালু তুলে বিক্রি করছেন তিনি। সাবেক পৌর কাউন্সিলর মংসাথোয়াই চৌধুরী মারমা কল্যাণ সমিতি নামে একটি সংগঠনেরও কেন্দ্রীয় সভাপতি। আর সেই প্রভাবেই প্রশাসনকে কোনোরকম তোয়াক্কা করছেন না এই পাহাড়ি নেতা।
খাগড়াছড়ি সদরে জেলা প্রশাসনের ইজারা দেওয়া ৭টি বালু মহাল রয়েছে। এর বাইরে অন্য কোনো জায়গা থেকে বালু তোলার অনুমতি নেই। তবে প্রশাসনের বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে কালাঢেবা এলাকায় বালুর অবৈধ সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছেন মংসাথোয়াই চৌধুরী। বালু তোলার ফলে ইতোমধ্যে ওই জায়গার চেঙ্গী নদীর পাড়ের বেশ কিছু অংশে ভাঙন ধরেছে।
এতে একদিকে যেমন হুমকিতে পড়েছে পার্শ্ববর্তী অনেক বসতবাড়িসহ ফসলি জমি, তেমনি ক্ষতি হচ্ছে পরিবেশের। সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে অবৈধভাবে বালু তোলা অব্যাহত রাখলেও এ নিয়ে প্রশাসনের কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই। প্রভাবশালী হওয়ায় স্থানীয়রাও ভয়ে মংসাথোয়াই চৌধুরী বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ করছেন না।
বালু তোলা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মংসাথোয়াই চৌধুরী বলেন, ‘পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানিয়ে আমি বালু তুলছি। এ বিষয়ে সংবাদ প্রকাশ না করে আমাকে একটু সহায়তা করুন।’ খাগড়াছড়ি পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আরিফুর রহমান বলেন, ‘পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানানোর বিষয়টি একেবারেই মিথ্যা। নদী থেকে বালু তোলার অনুমতি দেওয়ার এখতিয়ার আমাদের নেই। জেলা প্রশাসন থেকে বালু তোলার পয়েন্ট নির্ধারণে আমাদের কাছ থেকে ক্লিয়ারেন্স চাওয়া হয়। আমরা কেবল স্থান নির্ধারণে জেলা প্রশাসনকে সহায়তা করি।’
পরিবেশ অধিদপ্তরের খাগড়াছড়ি জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক হাসান আহমদ বলেন, ‘নদীর যেখানে-সেখানে বালু তোলার ফলে পরিবেশ মারাত্মভাবে হুমকিতে পড়ে। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসনের ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।’
খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসনের সিনিয়র সহকারী কমিশনার (রাজস্ব শাখা) শাহিন মিয়া বলেন, ‘আমি কয়েক দিন হলো দায়িত্ব নিয়েছি। এ বিষয়ে আমি এখনো অবগত নই। আপনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানান।’ তবে ফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও খাগড়াছড়ি সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুজন চন্দ্র রায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।