
ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার জাউনিয়া গ্রামের নহনা খালের স্লুইসগেটটি বর্তমানে অচল অবস্থায় পড়ে আছে।
২০১৫-১৬ অর্থবছরে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) প্রায় ২ কোটি ৩০ হাজার টাকা ব্যয়ে এটি তৈরি করে। উদ্দেশ্য ছিল, খরা মৌসুমে কৃষকদের সেচ সুবিধা নিশ্চিত করা। কিন্তু তৈরির কয়েক বছর পরই এটি কার্যকারিতা হারায়।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, চারপাশে বিস্তৃত ফসলি মাঠ। ধান, ভুট্টা, আলুসহ বিভিন্ন ফসলের চাষাবাদ হয় এ মাঠে। অচল স্লুইসগেটটি তাদের কৃষিকাজে কোনো সহায়তা করতে পারছে না।
এটি দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় খালের পানি অবাধে প্রবাহিত হচ্ছে। কিন্তু সেচের জন্য প্রয়োজনীয় পানি মাঠে পৌঁছাচ্ছে না। স্থানীয় কৃষকরা অভিযোগ করে বলেন, স্লুইসগেটটি এখন মাদকসেবীদের আড্ডায় পরিণত হয়েছে। গেটের লোহার বেশির ভাগ অংশ চুরি হয়ে গেছে।
স্থানীয় কৃষক রুহুল ইসলাম বলেন, ‘প্রথম দিকে গেটটি চালু থাকায় সেচকাজে উপকার হচ্ছিল। তবে গত পাঁচ বছর ধরে এটি পুরোপুরি অচল। এতে সেচের জন্য বাড়তি খরচ করতে হচ্ছে। আমরা চাই, গেটটি দ্রুত সংস্কার করা হোক।’
স্থানীয় কলেজ শিক্ষার্থী রিপন শর্মা বলেন, ‘সন্ধ্যার পর এখানে মাদকসেবীদের আসর বসে। তারা গেটের বাকি মালামালও চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে। সংশ্লিষ্টদের দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।’
উপজেলার ছোট সিংগিয়া পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির বলেন, ‘স্লুইসগেটটি আমাদের সমিতির তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হতো। শুরুতে এটি খুবই উপকারী ছিল। কিন্তু বর্তমানে গেটটি সম্পূর্ণ অকেজো। আমরা দুই বছর ধরে এলজিইডির সঙ্গে যোগাযোগ করছি। কিন্তু এখনো কোনো সমাধান পাইনি।’
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী মাইনুল ইসলাম বলেন, ‘গেটটি সংস্কারের জন্য আমরা ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরে প্রাক্কলন (সম্ভাব্য ব্যয়ের হিসাব) পাঠিয়েছি। চলতি অর্থবছরের মধ্যেই সংস্কারকাজ শুরু হবে বলে আশা করছি।’
এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন বিশ্বাস বলেন, ‘নহনা খালের স্লুইসগেটের বিষয়ে আমরা অবগত আছি। এটি আবার কার্যকর করতে দ্রুত কাজ শুরু করব। গেটটি সংস্কার হলে স্থানীয় কৃষকদের সেচ সুবিধা নিশ্চিত হবে। এতে তাদের সেচ খরচ কমে যাবে এবং ফসল উৎপাদনও বাড়বে।’