ঢাকা ৩ ফাল্গুন ১৪৩১, রোববার, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
English
রোববার, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ৩ ফাল্গুন ১৪৩১

ঠাকুরগাঁওয়ে কাজে আসছে না কোটি টাকার স্লুইসগেট

প্রকাশ: ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ১০:১৬ এএম
ঠাকুরগাঁওয়ে কাজে আসছে না কোটি টাকার স্লুইসগেট
ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গীর অচল স্লুইসগেট। ছবি: সংগৃহীত

ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার জাউনিয়া গ্রামের নহনা খালের স্লুইসগেটটি বর্তমানে অচল অবস্থায় পড়ে আছে।

২০১৫-১৬ অর্থবছরে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) প্রায় ২ কোটি ৩০ হাজার টাকা ব্যয়ে এটি তৈরি করে। উদ্দেশ্য ছিল, খরা মৌসুমে কৃষকদের সেচ সুবিধা নিশ্চিত করা। কিন্তু তৈরির কয়েক বছর পরই এটি কার্যকারিতা হারায়।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, চারপাশে বিস্তৃত ফসলি মাঠ। ধান, ভুট্টা, আলুসহ বিভিন্ন ফসলের চাষাবাদ হয় এ মাঠে। অচল স্লুইসগেটটি তাদের কৃষিকাজে কোনো সহায়তা করতে পারছে না।

এটি দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় খালের পানি অবাধে প্রবাহিত হচ্ছে। কিন্তু সেচের জন্য প্রয়োজনীয় পানি মাঠে পৌঁছাচ্ছে না। স্থানীয় কৃষকরা অভিযোগ করে বলেন, স্লুইসগেটটি এখন মাদকসেবীদের আড্ডায় পরিণত হয়েছে। গেটের লোহার বেশির ভাগ অংশ চুরি হয়ে গেছে।

স্থানীয় কৃষক রুহুল ইসলাম বলেন, ‘প্রথম দিকে গেটটি চালু থাকায় সেচকাজে উপকার হচ্ছিল। তবে গত পাঁচ বছর ধরে এটি পুরোপুরি অচল। এতে সেচের জন্য বাড়তি খরচ করতে হচ্ছে। আমরা চাই, গেটটি দ্রুত সংস্কার করা হোক।’
স্থানীয় কলেজ শিক্ষার্থী রিপন শর্মা বলেন, ‘সন্ধ্যার পর এখানে মাদকসেবীদের আসর বসে। তারা গেটের বাকি মালামালও চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে। সংশ্লিষ্টদের দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।’

উপজেলার ছোট সিংগিয়া পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির বলেন, ‘স্লুইসগেটটি আমাদের সমিতির তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হতো। শুরুতে এটি খুবই উপকারী ছিল। কিন্তু বর্তমানে গেটটি সম্পূর্ণ অকেজো। আমরা দুই বছর ধরে এলজিইডির সঙ্গে যোগাযোগ করছি। কিন্তু এখনো কোনো সমাধান পাইনি।’

এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী মাইনুল ইসলাম বলেন, ‘গেটটি সংস্কারের জন্য আমরা ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরে প্রাক্কলন (সম্ভাব্য ব্যয়ের হিসাব) পাঠিয়েছি। চলতি অর্থবছরের মধ্যেই সংস্কারকাজ শুরু হবে বলে আশা করছি।’

এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন বিশ্বাস বলেন, ‘নহনা খালের স্লুইসগেটের বিষয়ে আমরা অবগত আছি। এটি আবার কার্যকর করতে দ্রুত কাজ শুরু করব। গেটটি সংস্কার হলে স্থানীয় কৃষকদের সেচ সুবিধা নিশ্চিত হবে। এতে তাদের সেচ খরচ কমে যাবে এবং ফসল উৎপাদনও বাড়বে।’

খবরের কাগজের প্রতিবেদনের পর ১৩ মাস পর যমুনা সার কারখানায় গ্যাস সংযোগ

প্রকাশ: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৮:৫০ এএম
আপডেট: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৯:০৬ এএম
১৩ মাস পর যমুনা সার কারখানায় গ্যাস সংযোগ
জামালপুরের যমুনা সার কারখানা। ছবি: খবরের কাগজ

গ্যাস সংকটের কারণে দীর্ঘ ১৩ মাস বন্ধ থাকার পর পুনরায় গ্যাস সরবরাহ পাওয়ায় আবার উৎপাদন শুরু হয়েছে দেশের দ্বিতীয় বৃহৎ ইউরিয়া সার উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান জামালপুরের যমুনা সার কারখানায়।

শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে ফায়ারিংয়ের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে উৎপাদনে ফেরে কারখানাটি। ওই দিন দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন যমুনা সার কারখানার মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) দেলোয়ার হোসেন। এদিকে, এক বছরেরও বেশি সময় পর কারখানা চালু হওয়ায় কারখানা সংশ্লিষ্টসহ স্থানীয়দের মাঝে উচ্ছ্বাস বিরাজ করছে। 

গত ২ ফেব্রুয়ারি খবরের কাগজে ‘গ্যাস সংকটে বন্ধ যমুনা সার কারখানা’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদন প্রকাশের পর সার কারখানা সংশ্লিষ্ট শ্রমিক, কর্মচারী, সার ডিলার ও স্থানীয়দের মধ্যে কারখানা চালুর দাবি তীব্র হয়ে ওঠে। তখন বিষয়টি সরকারের নজরে আসে। 

কারখানা সূত্রে জানা গেছে, যমুনা সার কারখানায় নিরবচ্ছিন্ন সার উৎপাদনের জন্য দৈনিক ৪২ থেকে ৪৩ পিএসআই গ্যাসের চাপের প্রয়োজন হয়। কিন্তু সার কারখানায় গ্যাস সরবরাহের দায়িত্বে থাকা তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি সংকটের কারণে পর্যাপ্ত গ্যাস সরবরাহ দিতে না পারায় ২০২৪ সালের ১৫ জানুয়ারি গ্যাসের চাপ কমিয়ে দেয়। 

সেদিন থেকেই সার উৎপাদন বন্ধ করে দেয় কারখানা কর্তৃপক্ষ। এতে করে বেকার হয়ে পড়েন কারখানা সংশ্লিষ্ট শ্রমিক, কর্মচারী, পরিবহনের মালিক, চালক, কর্মচারী, কারখানার আশপাশের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, হোটেল, রেস্টুরেন্টের মালিকরা। 

কারখানা বন্ধ থাকাকালে দেশের বাইরে থেকে আমদানি করে ও দেশের অভ্যন্তরের অন্য সার কারখানায় উৎপাদিত ইউরিয়া সার ডিলারদের মাধ্যমে সরবরাহ করা হতো। তবে কৃষকদের মাঝে এসব সারের চাহিদা কম থাকায় ডিলাররা পড়েন বিপাকে। গত এক বছরে কারখানাটি চালুর দাবিতে বেশ কয়েক দফা বিক্ষোভ ও আন্দোলন কর্মসূচি পালন করেন কারখানা সংশ্লিষ্ট ও স্থানীয়রা। 

দৈনিক ১ হাজার ৭০০ টন সার উৎপাদনের সক্ষমতা নিয়ে ১৯৯১ সালে কারখানাটি যাত্রা শুরু করে। বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের (বিসিআইসি) তালিকাভুক্ত ১ হাজার ৯০০ ডিলারের মাধ্যমে জামালপুর, শেরপুর, টাঙ্গাইল, উত্তরাঞ্চলের কমান্ড এরিয়াসহ ২১টি জেলার ১৬২ উপজেলায় কৃষকদের কাছে কারখানাটি সার সরবরাহ করে আসছিল। কিন্তু বেশ কয়েক বছর ধরে গ্যাসের চাপের স্বল্পতা এবং কারখানার বিভিন্ন কারিগরি ত্রুটির কারণে সার উৎপাদন নেমে আসে দৈনিক ১ হাজার ২০০ টনে। 

যমুনা সার কারখানার শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের (সিবিএ) সভাপতি শফিকুল ইসলাম বলেন, যমুনা সার কারখানায় গ্যাস সংযোগ দেওয়ায় এ এলাকার সর্বস্তরের মানুষ খুশি হয়েছে। আমরাও গ্যাস সংযোগ দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি। সার কারখানায় গ্যাস সংযোগ দেওয়ায় সার আমদানি নির্ভরতা থেকে সরে দেশীয় শিল্পকে সচল রাখলে রাজস্ব বৃদ্ধি পাবে। 

যমুনা সার কারখানার মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) দেলোয়ার হোসেন জানান, গ্যাস সংকটের কারণে গত বছরের ১৫ জানুয়ারি থেকে কারখানায় ইউরিয়া সার উৎপাদন বন্ধ ছিল। গত বৃহস্পতিবার তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি পর্যাপ্ত গ্যাস সরবরাহ শুরু করে। গত শুক্রবার বেলা ১১টায় কারখানার সার উৎপাদন প্লান্টের চুল্লিতে গ্যাস সংযোগ দেওয়া হয়, যাকে ‘ফায়ারিং’ বলে। এর মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে সার উৎপাদন শুরু হয়েছে। 

তিনি আরও বলেন, উৎপাদন স্বাভাবিক রাখতে প্রতিদিন ৪২ থেকে ৪৩ পিএসআই গ্যাসের প্রয়োজন হয়। সার উৎপাদন প্রক্রিয়ায় কোনো যান্ত্রিক বা কারিগরি ত্রুটি দেখা না দিলে এবং নিরবচ্ছিন্নভাবে গ্যাস সরবরাহ থাকলে পুরোদমে সার উৎপাদন শুরু হতে আগামী ১০ থেকে ১২ দিন সময় লাগবে।

যমুনা সার কারখানা প্রতিষ্ঠার পর এবারই প্রথম এত দীর্ঘসময় ধরে বৃহৎ এই কারখানাটি বন্ধ ছিল। সর্বশেষ কারখানাটি ২০২৩ সালে একটানা ৭২ দিন বন্ধ থাকার পর ওই বছরের ১৭ নভেম্বর চালু হয়েছিল। কিন্তু উৎপাদনে থাকা অবস্থায় ৬০ দিনের মাথায় অর্থাৎ ২০২৪ সালের ১৫ জানুয়ারি গ্যাস সংকটে কারখানাটির উৎপাদন বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। 

নদীবক্ষে ভিন্নরকম পাঠচক্র

প্রকাশ: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৮:৩৭ এএম
নদীবক্ষে ভিন্নরকম পাঠচক্র
যশোরের ঝিকরগাছার কাটাখালের কপোতাক্ষ নদের মাঝে গত শুক্রবার নৌকায় ভিন্নধর্মী এক পাঠচক্রের আয়োজন করা হয়। ছবি: খবরের কাগজ

বিভিন্ন পাখির কিচিরমিচির ডাক শোনা যাচ্ছে। দেখা যাচ্ছে পানকৌড়ির ডানা ঝাপটানো ছুটে চলা। কানে বাজছে কপোতাক্ষ নদের কলকল জলরাশির মৃদু শব্দ। সঙ্গে রয়েছে নদের দুই পাশের সবুজ প্রকৃতির স্নিগ্ধময় আবেশ।

এমনই এক মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয় কথাসাহিত্যিক তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘কবি’ উপন্যাস নিয়ে পাঠচক্র।

শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) পড়ন্ত দুপুরে যশোরের ঝিকরগাছার কাটাখালের কপোতাক্ষ নদের মাঝে নৌকায় ভিন্নধর্মী এ পাঠচক্রের আয়োজন করে ‘সপ্তাহে একটি বই পড়ি’ নামে সাহিত্য চর্চা সংগঠন।

পাঠচক্রে অংশগ্রহণকারীরা জানান, ‘কবি’ বইটির পাঠ চলাকালে সদস্যদের মধ্যে উপন্যাসের তিনটি চরিত্র নিতাই, ঠাকুরঝি ও বসন্তের ভালোবাসা নিয়ে নানা মত প্রকাশ পায়। বইয়ের চরিত্রকেন্দ্রিক যুক্তি-আশ্রয়ী রোমান্টিক আলোচনায় উপভোগ্যময় হয়ে ওঠে পাঠচক্র। এ ধরনের উদ্যোগে সংশ্লিষ্ট বইয়ের বিষয়বস্তু জানা ও পাঠে আনন্দের সুযোগ সৃষ্টি হয়।

সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি যশোর সরকারি মাইকেল মধুসূদন কলেজের ইতিহাস বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শাহ্জাহান কবীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয় পাঠচক্র। পাঠ-প্রতিক্রিয়া পর্বে অংশগ্রহণ করেন অভিজিৎ কুমার তরফদার, খাদিজা একরাম এষা, সোনিয়া আফরিন, অপু দেবনাথ, জান্নাতুল ফেরদৌস ইলা, হামিদা হিমু, আনিকা প্রমুখ। প্রতিবেশ অধ্যয়ন সঞ্চালনা করেন মুরাদ হোসেন। 

সালেহা সুলতানা ঊষার কণ্ঠে সংগীত দিয়ে শুরু হয় অনুষ্ঠান। আর শেষ হয় ৫ মিনিটের মেডিটেশন দিয়ে। আলোচনার মাঝে মাঝে রুবাই পাঠ করেন কবি মামুন আজাদ। কবিতা শোনান মনিরা খাতুন এবং লোকোজ গান পরিবেশন করেন স্থানীয় বাউলশিল্পী সোহরাব হোসেন।

‘কবি’ উপন্যাস নিয়ে মনোজ্ঞ আলোচনা এবং প্রশ্নোত্তর পর্বে অংশগ্রহণ করেন যশোর সরকারি মহিলা কলেজের বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোফাজ্জেল হোসেন ও পাঠচক্রের সভাপতি সহকারী অধ্যাপক শাহ্জাহান কবীর।

আলোচনার একপর্যায়ে ‘কবি’ উপন্যাসকেন্দ্রিক রম্য বিতর্কে অংশগ্রহণ করেন পাঠচক্র সদস্যরা। বিতর্কের বিষয় ছিল ‘বসন্ত নয়, ঠাকুরঝিই ছিল নিতাইয়ের প্রকৃত ভালোবাসা’। পক্ষ দলে অংশগ্রহণ করেন মুরাদ হোসেন, সায়মা আক্তার তৌফা, অভিজিৎ তরফদার ও সোনিয়া আফরিন এবং বিপক্ষ দলে অপু দেবনাথ, সালেহা সুলতানা ঊষা, খাদিজা একরাম এশা ও জান্নাতুল ফেরদৌস ইলা। 

বিতর্ক প্রতিযোগিতায় বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন কবি মামুন আজাদ, সাংবাদিক সালমান হাসান রাজীব ও সংগঠনের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক ও কবি সুমন রেজা। বিতর্কে পক্ষ দল বিজয়ী হন এবং শ্রেষ্ঠ বক্তা হন অভিজিৎ তরফদার।

ভিন্নতর আয়োজন নিয়ে সংগঠনের সভাপতি শাহ্জাহান কবীর বলেন, ‘পাঠচক্রের গতানুগতিক ধারা থেকে বেরিয়ে নতুনত্ব আনার চেষ্টা করে যাচ্ছি। এর মধ্যে অনন্য আয়োজন হচ্ছে ‘প্রতিবেশ অধ্যয়ন’। বইয়ের বিষয়ের সঙ্গে মিল রেখে আবহ সৃষ্টির মাধ্যমে পাঠচক্র করার নামই ‘প্রতিবেশ অধ্যয়ন’। সাধারণত ১০টি সাপ্তাহিক পাঠচক্র সম্পন্ন করার পর ‘প্রতিবেশ অধ্যয়ন’র আয়োজন করে সংগঠনটি।’

তিনি আরও বলেন, ‘পাঠচক্রে বই আলোচনার পাশাপাশি থাকে গান, কবিতা আবৃত্তি, স্বরচিত কবিতা পাঠসহ নানা সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। উপস্থিত সবাই পাঠচক্রে পূর্বনির্ধারিত বইয়ের ওপর পাঠ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করার সুযোগ পান। কোনো কোনো বইয়ের জন্য প্রধান আলোচকও রাখা হয়। বইটির ওপর বিশদ আলোচনার পাশাপাশি প্রধান আলোচক বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।’

শাহজাহান কবীর বলেন, ‘সপ্তাহে একটি বই পড়ি’ বই পড়ার একটি নিত্য আন্দোলনের নাম। উন্নত, কল্যাণকর, নান্দনিক ও উদার চিন্তা-চেতনাসমৃদ্ধ মানুষের সমাজ বিনির্মাণে বই পাঠের বিকল্প নেই। মানবিক ও নান্দনিক মানুষের সমাজ গঠনে কাজ করছি আমরা।’

ফরিদপুরে কুকুরের মাংস বিক্রির অভিযোগ

প্রকাশ: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৯:৫৩ পিএম
আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৯:৫৮ পিএম
ফরিদপুরে কুকুরের মাংস বিক্রির অভিযোগ
অভিযুুক্ত সুুজন। ছবি: খবরের কাগজ

ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় এক যুবকের বিরুদ্ধে কুকুর জবাই করে মাংস বিক্রি অভিযোগ উঠেছে। 

ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলা বুড়াইচ ইউনিয়নের হেলেঞ্চা গ্রামে সুজন (২৩) নামে এক যুবকের বিরুদ্ধে কুকুর জবাই করে মাংস বিক্রির অভিযোগ উঠেছে।

গত শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) বেলা দুইটার দিকে তাকে হেলেঞ্চা বাজারের পাশে ঘাসখেতে বসে কুকুরের মাংস কাটতে দেখতে পায় স্থানীয়রা। 

অভিযুক্ত সুজন হেলেঞ্চা গ্রামের পূর্বপাড়া আবু বক্কর শেখের ছেলে।

ওই এলাকায় গিয়ে জানা গেছে, সুজন এর আগেও কুকুর জবাই করে অন্য এলাকায় মাংস বিক্রি করেছে। তিনি একজন মাদকাসক্ত ও মাদক বিক্রিতা। বিগত সরকারের আমলে পুলিশের সোর্স হয়ে বহু নিরীহ যুবকদের পকেটে মাদক ঢুকিয়ে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে নগদ অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে।

এলাকায় মোবাইল, টিউবওয়েলের মাথা, ছাগল, বাড়িঘরের আসবাবপত্র চুরির সঙ্গে জড়িত ছিল এমন অভিযোগও তুলছে স্থানীয়রা।

পোল্ট্রি ব্যবসায়ী লাভলু মিয়া বলেন, মুরগির নাড়ি-ভূড়ি নিয়মিত কয়েকটি কুকুরকে খেতে দেই কিন্তু কয়েকদিন হলো এদের মধ্যে একটি কুকুরকে দেখতে পাইনা। ধারণা করা হচ্ছে সুজন হয়তো ওই কুকুরটি জবাই করেছে।
 
এ বিষয়ে সুজন শেখের বক্তব্য নিতে তার বাড়িতে গেলে কাউকে পাওয়া যায়নি এবং প্রতিবেশীরা মুখ খুলতে রাজি হয়নি।

স্থানীয় ইউপি সদস্য আবুল বাসার বলেন, 'ঘটনাটি সত্যি' আমি মাঠে গেলে শব্দ শুনতে পাই। খোঁজ করে দূর থেকে দেখতে পাই সুজন ধারালো ছুরি দিয়ে মাংস কাটছে। সে মাদকাসক্ত হওয়ায় হাফিজুর গাজিকে ফোন করে আসতে বলি। সে টের পেয়ে পালিয়ে যায়। সেখানে গিয়ে কুকুরের মাংস, মাথা, পা দেখতে পাই। পরে তার স্ত্রীকে খবর দিয়ে নাড়ি-ভুড়ি সরাতে বলি।

এ বিষয়ে বুড়াইচ ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল ওহাব পান্নু বলেন, বিষয়টি শুনেছি। বাজারেও এ নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। সুজন গাঁজা খায়, বাড়ির কাউকে মানে না, কথাও শুনে না। পুলিশ ওকে একবার ধরেছিল। আমাদের সামনে আসে না আর দেখতেই তো মাদকাসক্ত লাগে।

সঞ্জিব/মেহেদী/ 

ভারতের জনগণ নয়, আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান: মাহমুদুর রহমান

প্রকাশ: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৯:৪৮ পিএম
আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৯:৪৯ পিএম
ভারতের জনগণ নয়, আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান: মাহমুদুর রহমান
সিলেট প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন ড. মাহমুদুর রহমান। ছবি: খবরের কাগজ

দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান বলেছেন, একুশে পদক অর্জন আমার একার নয়, দৈনিক আমার দেশের সকল সাংবাদিকের এবং ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে যারা লড়াই করেছিলেন তাদের সকলের। সিলেটের প্রতি আমার দুর্বলতা রয়েছে। কারণ, সিলেটের মানুষ সবসময়ই আমার দেশ পত্রিকাকে ভালবেসেছেন। সিলেটবাসীর এ সমর্থন অব্যাহত থাকবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে সিলেট প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন। 

তিনি বলেন, দৈনিক আমার দেশের লড়াই ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের পক্ষে। আমাদের ঘাড়ের ওপর যে ফ্যাসিবাদ চেপে বসেছিল এবং ভারতের পুতুল সরকারের ভূমিকা পালন করেছিল তাদের বিরুদ্ধে। একই সঙ্গে ভারতীয় আধিপত্যবাদ এবং এদেশে থাকা তাদের এজেন্টদের বিরুদ্ধে। 

তিনি আরও বলেন, ভারতের জনগণের প্রতি আমাদের কোনো অভিযোগ নেই। কিন্তু ভারত সরকারের আধিপত্যবাদী পলিসির বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান। ১৯৪৭ সালে এই সিলেটবাসীই গণভোট দিয়ে পাকিস্তানের অংশ হয়েছিল। কাজেই স্বাধীনতার জন্য সিলেটবাসীর ঐতিহাসিক যে ভূমিকা এটি রক্ষা করে যেতে হবে। 

জুলাই অভ্যুত্থানে শহিদ সাংবাদিক এটিএম তুরাবকে স্মরণ করে তিনি বলেন, দেশ ফ্যাসিবাদমুক্ত হওয়ার পেছনে তার অবদান স্মরণীয় হয়ে থাকবে। 

সিলেট প্রেসক্লাব সভাপতি ইকরামুল কবিরের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন ক্লাবের সিনিয়র সহসভাপতি খালেদ আহমদ।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন সিলেট প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ইকবাল সিদ্দিকী, সাবেক সহসভাপতি এনামুল হক জুবের, মোহাম্মদ বদরুদ্দোজা বদর, মুহাম্মদ আমজাদ হোসাইন, আবদুল কাদের তাপাদার, হুমায়ূন রশিদ চৌধুরী ও এম এ হান্নান, সহসাধারণ সম্পাদক শুয়াইবুল ইসলাম, কোষাধ্যক্ষ আনিস রহমান, ক্রীড়া ও সংস্কৃতি সম্পাদক শেখ আব্দুল মজিদ, নির্বাহী কমিটির সদস্য মো. আব্দুল রাজ্জাক, সদস্য কামকামুর রাজ্জাক রুনু, জিয়াউস-শামস-শাহীন, চৌধুরী দেলওয়ার হোসেন জিলন, মো. ফয়ছল আলম, মো. আমিরুল ইসলাম চৌধুরী এহিয়া, আনাস হাবিব কলিন্স, এম এ মতিন, ফয়সাল আমীন, নাজমুল কবীর পাভেল, সজল ছত্রী, দিগেন সিংহ, সিন্টু রঞ্জন চন্দ, গোলজার আহমেদ, খালেদ আহমদ, মো. দুলাল হোসেন, মো. মারুফ হাসান, শফিক আহমদ শফি প্রমূখ। 
   
শাকিলা ববি/মাহফুজ

 

বাংলাদেশি ৫ কৃষককে মারধরের ঘটনায় বিএসএফের দুঃখ প্রকাশ

প্রকাশ: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৯:১৭ পিএম
বাংলাদেশি ৫ কৃষককে মারধরের ঘটনায় বিএসএফের দুঃখ প্রকাশ
বিজিবি-বিএসএফের বৈঠক। ছবি: সংগৃহীত

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী সীমান্তে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে ৫ বাংলাদেশি কৃষককে মারধরের ঘটনায় বিজিবি-বিএসএফের মধ্যে পতাকা বৈঠকে দুঃখ প্রকাশ করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ। এ ঘটনায় অভিযুক্ত বিএসএফ সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ারও আশ্বাস দেওয়া হয়েছে ওই বৈঠকে। 

বিজিবির প্রতিবাদের পর শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বিজিবি-বিএসএফ ব্যাটালিয়ন কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠক করে বিএসএফ। 

পতাকা বৈঠক ও দুঃখ প্রকাশের বিষয়টি নিশ্চিত করে তথ্য দিয়েছেন লালমনিরহাট বিজিবি ১৫ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল শাহ মো. শাকিল আলম।

বিজিবি তথ্য বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, শনিবার বিকেল ৪টার দিকে ফুলবাড়ী উপজেলার নাওডাঙা ইউনিয়নের গোরকমন্ডপ সীমান্তের আন্তর্জাতিক সীমানা পিলার ৯২৯-এর সাব পিলার ৪ এসের কাছে বাংলাদেশি নাগরিক আব্দুল্লাহ নামে এক ব্যক্তির উঠানে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে বিজিবির পক্ষে নেতৃত্ব দেন ১৫ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল শাহ্ মো. শাকিল আলম। ভারতের বিএসএফর পক্ষে নেতৃত্ব দেন বিএসএফ এর ৩ ব্যাটালিয়নের কমান্ডার অমিত কুমার। 

প্রসঙ্গত, গতকাল শুক্রবার দুপুরে ফুলবাড়ীর নাওডাঙা ইউনিয়নের পশ্চিম বালাতারী সীমান্তের সীমান্ত পিলার ৯৩০-এর ৮ এস পিলারের কাছ দিয়ে বাংলাদেশ ভূখণ্ডে প্রবেশ করেন বিএসএফের ১০ থেকে ১২ জন সদস্য। বারোমাসিয়া নদীর ধারে বাংলাদেশের পশ্চিম বালাতারী গ্রামে প্রবেশ করে পাঁচ বাংলাদেশিকে মারধর করে। একজনের হাতে জখম হয়। এ ঘটনায় সীমান্তবাসীরা উপস্থিত হয়ে প্রতিবাদ জানালে তোপের মুখে তারা ফিরে যায় বিএসএফ সদস্যরা। এরপরও ওই সীমান্ত এলাকায় উত্তেজনা ছিল। পরে বিজিবির টহল দল ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে। এরপরের দিন (আজ) বিকেলে বৈঠকটি হলো।

বিজিবি জানায়, বৈঠকে বিজিবির পক্ষ থেকে ঘটনার কড়া প্রতিবাদ জানানো হয়। পরে সার্বিক ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে বিএসএফ। ঘটনা প্রসঙ্গে বিএসএফ জানিয়েছে, বাংলাদেশে প্রবেশ করা বিএসএফ জওয়ানরা কাশ্মির ফ্রন্ট থেকে এ অঞ্চলে নতুন যোগ দিয়েছে। তারা সীমান্ত এলাকা দেখতে বের হয়ে বাংলাদেশে ঢুকে পড়ে। এ বিষয়টি তারা বুঝতে পারেননি। ফলে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাটি ঘটে। অভিযুক্ত বিএসএফ সদস্যদের বিরুদ্ধে নিজস্ব আইনে ব্যবস্থা নেওয়ারও আশ্বাস দেয় বিএসএফ। ভবিষ্যতে এমন ঘটনা যাতে আর না ঘটে সে আশ্বাসও দেওয়া হয়েছে বিএসএফের পক্ষ থেকে। 

মওলা সিরাজ/মাহফুজ