
রাজশাহীতে অবসরপ্রাপ্ত এক সৈনিক জাল দলিল তৈরি করে অন্যের জমি দখলে নেওয়ার চেষ্টা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। শুধু তাই নয়, তিনি দাপট দেখিয়ে একাধিক ব্যক্তির কাছে মোটা অঙ্কের চাঁদাও দাবি করেছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে আদালতে এবং থানায় মামলাও হয়েছে।
অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম মো. সাইফুল ইসলাম। তিনি নগরীর শিরোইল কলোনি এলাকার বাসিন্দা। সাইফুল ‘অবসরপ্রাপ্ত সশস্ত্র বাহিনী ঐক্যজোট’ নামে একটি সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা এবং এর বর্তমান সাধারণ সম্পাদক।
জানা গেছে, সাইফুল ইসলাম ১৯২৭ সালের একটি ‘জাল দলিল’ দেখিয়ে নগরীর দড়িখরবোনা এলাকায় কিছু জমি নিজের পৈতৃক সম্পত্তি বলে দাবি করেন। সেই জাল দলিলে লেখা আছে, ‘মাত্র ১০০ টাকায় ৩৮ শতাংশ জমি জসিম উদ্দিন শেখ (সাইফুলের দাদা) কিনেছেন।’ অথচ খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১৯২৭ সালে এই দলিল নম্বরে সদর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী এ আর এন তানজিমুল হক জিতু বলেন, ‘সম্প্রতি সাইফুল ইসলাম নগরীর দড়িখরবোনা এলাকায় আমার শ্বশুরের বসতভিটা জোর করে দখলে নিতে আসেন। তার দাবি করা বসতভিটার পাশের একটি জমিতে আমি ডেভেলপার হিসেবে কাজ করছি। সেই জমির মালিকও আমার শ্বশুর আব্দুল মমিন ও তার ভাই মবিন বাবুর।
কয়েক দিন আগে অতর্কিতভাবে কিছু লোকজনকে নিয়ে এসে আমার কাছে ৩০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন তিনি। সেই টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় সাইফুল ইসলাম আমার নির্মাণাধীন ভবনের কাজও বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দেন। পরে ওই প্রজেক্টের প্রকৌশলী প্রতিবাদ করলে তাকে ধাক্কা দেন এবং নির্মাণ শ্রমিকদের মারধর করে যন্ত্রপাতি কেড়ে নেন। এ সময় চাঁদা দাবি করায় বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ওই ব্যক্তিকে গণধোলাই দেয়।’
দড়িখরবোনা এলাকার আরেক ভুক্তভোগী রোকেয়া বেগম বলেন, ‘গত ৯ জানুয়ারি সাইফুল ইসলাম কোনো কারণ ছাড়াই আমার বাড়িতে এসে মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবি করেন। কিন্তু চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে সে আমাদের অকথ্য গালিগালাজ করে ও আমার ছেলেকে মারধর করে। পরে এ ব্যাপারে নগরীর বোয়ালিয়া থানায় তার বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ করেছি।’
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘পৈতৃক সম্পত্তির জন্য আমি সেখানে গিয়েছিলাম। কোনো চাঁদাও দাবি করিনি। আমি অবসরপ্রাপ্ত সশস্ত্র বাহিনী ঐক্যজোটের প্রতিষ্ঠাতা এবং বর্তমানে সংগঠনটির রাজশাহী জেলার সাধারণ সম্পাদক। অথচ হত্যার উদ্দেশে আমার ওপর হামলা করা হয়েছে।’
এ বিষয়ে বোয়ালিয়া থানার ওসি মেহেদি মাসুদ বলেন, ‘সাইফুল ইসলামের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’