ঢাকা ৩ ফাল্গুন ১৪৩১, রোববার, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
English
রোববার, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ৩ ফাল্গুন ১৪৩১

ভোলার হাসপাতাল নিজেই রুগ্ন

প্রকাশ: ২২ জানুয়ারি ২০২৫, ১১:৪১ এএম
আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০২৫, ১১:৪৫ এএম
ভোলার হাসপাতাল নিজেই রুগ্ন
ভোলা জেনারেল হাসপাাল। ছবি : খবরের কাগজ

দ্বীপজেলা ভোলার ২০ লাখ মানুষের চিকিৎসার একমাত্র ভরসাস্থল ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালটি অন্তহীন সমস্যায় জর্জরিত। নেই প্রয়োজনীয় চিকিৎসক। যন্ত্রপাতি থাকলেও রোগীদের পরীক্ষার-নিরীক্ষা করতে হচ্ছে বেসরকারি ক্লিনিকে।

রয়েছে খাবার ও আসবাবপত্রসংকট। যে কজন ডাক্তার আছেন তারাও অফিস করেন নিজেদের ইচ্ছামতো। এদিকে প্রায় ৫ বছর আগে নতুন বহুতল ভবনের নির্মাণ কাজ শেষ হলেও আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন না হওয়ায় অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে আছে। ১০০ শয্যার জনবল, আসবাবপত্র ও খাবার দিয়ে ২৫০ শয্যার কার্যক্রম পরিচালনা করায় সঠিক সেবা পাচ্ছেন না রোগীরা। বেড আর আসবাবপত্রের অভাবে  হাসপাতালের বারান্দার মেঝেতে রেখে রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এতে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে চিকিৎসা কার্যক্রম। 

জেলার সাত উপজেলার ২১ লাখ মানুষের উন্নত চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে জেলা সদরের ১০০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালটি আধুনিকায়নের মাধ্যমে ২৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয় ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে। কিন্তু গত দুই বছরেও হাসপাতালটির শূন্যপদে প্রয়োজনীয় চিকিৎসক, নার্স ও টেকনিশিয়ান নিয়োগ না হওয়ায় যথাযথ চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন এ জেলার মানুষ। ফলে হাসপাতালে এসে কাঙ্ক্ষিত সেবা পাচ্ছেন না রোগীরা। সরকারি হাসপাতালে যথাযথ চিকিৎসা না পেয়ে অনেকেই ছুটছেন বেসরকারি ক্লিনিকগুলোতে। 

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, মেডিসিন, সার্জারি, শিশু, গাইনি, ডায়রিয়াসহ ১৮টি ওয়ার্ড রয়েছে। হাসপাতালে ৬০ জন চিকিৎসকের বিপরীতে বর্তমানে কর্মরত রয়েছেন মাত্র ১৭ জন। এর মধ্যে প্রশাসনিক কর্মকর্তা আছেন ২ জন। বাকি ৪৩টি চিকিৎসকের পদই শূন্য। চিকিৎসকদের ৬০টি পদের মধ্যে সিনিয়র কনসালট্যান্ট ১০ জনের ৭টি পদ শূন্য, জুনিয়র কনসালট্যান্ট ১৩ জনের মধ্যে ১০ জন, আরএমও ৪ জনের মধ্যে ৩ জন এবং অ্যানেসথেটিস্ট ৪টি পদের মধ্যে ৪টিই শূন্য।

এ ছাড়া একটি রেডিওলজিস্ট পদের মধ্যে একটিই শূন্য। চারজন মেডিকেল অফিসার পদের মধ্যে একজন, ইমার্জেন্সি মেডিকেল অফিসার তিনজনের মধ্যে দুজন, সহকারী সার্জন ছয়টি পদের মধ্যে পাঁচজন, রেজিস্ট্রার ১০টি পদের মধ্যে ৯ জন এবং আয়ুর্বেদিক একটি পদের একটি পদই শূন্য রয়েছে।

এ ছাড়া ৯০ জন নার্সের বিপরীতে কর্মরত আছেন ৫৪ জন। বাকি পদগুলো দীর্ঘদিন ধরে শূন্য অবস্থায় রয়েছে। নার্সের ৩৬টি শূন্য পদের মধ্যে সেবা তত্ত্বাবধায়ক একজন, উপসেবা তত্ত্বাবধায়ক একজন, চারজন নার্সিং সুপারভাইজার পদের চারটি পদই শূন্য, সিনিয়র স্টাফ নার্সের ২০টি এবং মিডওয়াইফ ৬টি পদের সবগুলোই শূন্য।

এ ছাড়া ভোলা সদর হাসপাতাল ২৫০ শষ্যার হাসপাতাল হলেও প্রতিদিন হাসপাতালটিতে রোগী আসেন ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ জন। অথচ রোগীদের খাদ্য বরাদ্দ আছে সেই আগের ১০০ শয্যা অনুযায়ী। এতে অন্তত ১ হাজারেরও বেশি রোগী খাবার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

২০১৩ সালে ৪৪ কোটি ৮০ লাখ টাকা ব্যয়ে ২৫০ শয্যার ভোলা সদর জেনারেল হাসপাতালে আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসহ সাত তলাবিশিষ্ট ভবনটির নির্মাণকাজ শুরু হয়। কাজ শেষ হয় ২০১৯ সালের জুলাই মাসে। ২০২৩ সালের ১৯ জানুয়ারি ভার্চুয়ালি ২৫০ শয্যার এই হাসপাতাল আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন তৎকালীন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী জাহিদ মালেক। তবে উদ্বোধনের পর থেকেই নানা জটিলতায় ২৫০ শয্যার হাসপাতালটি চলছে ১০০ শয্যার জনবল দিয়ে। আর এতেই ২৫০ শয্যার হাসপাতালটির আধুনিক সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন এ জেলার বাসিন্দারা।

সরেজমিনে গত ১৮ জানুয়ারি হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায়, ধারণক্ষমতার প্রায় আড়াই গুণ রোগী ভর্তি আছেন ২৫০ শয্যার এ হাসপাতালটিতে। রোগীদের চাপ সামলাতে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসক ও নার্সরা। এ ছাড়া দুপুর ২টার পরে শুধু জরুরি বিভাগে একজন চিকিৎসক ছাড়া অন্য কোনো চিকিৎসকের দেখা মেলেনি। রোগীদের চাপে ওয়ার্ডে যথাযথ চিকিৎসাসেবা দিতে পারছিলেন না নার্সরা।

অন্যদিকে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের জন্য স্বল্পমূল্যে সরকারিভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষার ব্যবস্থা থাকলেও জনবলসংকটের কারণে দুপুর ১টার পর হাসপাতালে আর কোনো পরীক্ষা করানো যায় না। বাধ্য হয়েই দুই থেকে তিন গুণ বেশি টাকা খরচ করে বেসরকারি ক্লিনিকে গিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতে হয় রোগীদের। এতে বিড়ম্বনায় পড়েন চিকিৎসাসেবা নিতে আসা রোগী ও তাদের স্বজনরা, যা মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্তদের জন্য মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ভোলা সদর হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার আশায় আসা দৌলতখান উপজেলার সৈয়দপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা বৃদ্ধ ওমর ফারুক ও মো. জাহাঙ্গীর বলেন, ‘গতকাল দুপুরে ও বিকেলের দিকে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। আজ দুপুরে ওয়ার্ডে ডাক্তার আসছে। যদি ২৪ ঘণ্টা ডাক্তার পেতাম, তাহলে আমাদের জন্য অনেক ভালো হতো।’

ভোলা সদর উপজেলার উত্তর দিঘলদি ইউনিয়নের বাসিন্দা আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের শেষ ভরসা ভোলা সদর হাসপাতাল। ডাক্তার ঠিকমতো আসেন না। এতে আমরা ভোগান্তির শিকার হচ্ছি। এ ছাড়া সব পরীক্ষা-নিরীক্ষা যদি হাসপাতালেই করাতে পারতাম, তাহলে অনেক উপকার হতো। ডাক্তার ওয়ার্ডে এসে শুধু টেস্ট লিখে দিচ্ছেন। এখন প্রাইভেট ক্লিনিকে টেস্ট করাতে হবে।’

হাসপাতালে ভর্তি দৌলতখান উপজেলার চরপাতা ইউনিয়নের মো. লাইজু বেগম বলেন, ‘আমার ছেলেরে হাসপাতালে ভর্তি করাইছি। ডাক্তার টেস্ট লিখে দিছে। হাসপাতালে টেস্ট করাইতে পারি নাই, বাইরে থেকে ৩ গুণ বেশি টাকা দিয়ে টেস্ট করাই নিয়ে আসছি।’

রোগীর স্বজন আবদুল ওয়াদুদ বলেন, ‘এক দিন আগে আমার আব্বারে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করাই। তাৎক্ষণিক ইমার্জেন্সিতে একজন ডাক্তার পাই। অত্যধিক ভিড় ছিল। শেষমেশ অনেক পরে ডাক্তার দেখাতে পেরেছি।’

জানতে চাইলে হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স সালমা আক্তার  নিজেদের অসহায়ত্বের কথা বললেন, ‘এখানে নার্সসংকট তীব্র। যদি নার্সসংকট কাটানো যেত, তাহলে রোগীদের সেবাটা আরও ভালোভাবে দিতে পারতাম। আমরা আসলে দুর্বিষহ অবস্থার মধ্যে আছি। এখানে রোগীর চাপ অনেক বেশি।’

সালমা আক্তার আরও বলেন, ‘আমরা বারবার কর্তৃপক্ষের কাছে সংকট কাটানোর জন্য আবেদন করেছি। কিন্তু সংকট নিরসনের ব্যবস্থা দেখছি না।’

হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্সসংকট নিরসনের বিষয়ে জানতে চাইলে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক (ভারপ্রাপ্ত) ডা. শেখ সুফিয়ান রুস্তম বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে হাসপাতালে ডাক্তার ও নার্সের সংকট চলছে। সম্প্রতি এই সংকট জটিল আকার ধারণ করেছে। এর মধ্যে গত কয়েক মাসে স্বাস্থ্য বিভাগ ও মন্ত্রণালয়ে হাসপাতালের বেশ কয়েকজন চিকিৎসককে উঠিয়ে গিয়ে গেছে। নতুন কোনো চিকিৎসক দেয়নি। হাসপাতালে নার্সের সংকট প্রকট।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করছি সমস্যা দূর করার। বিষয়টি বারবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে আনার চেষ্টা করছি। আশা করছি, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এ দিকটির প্রতি নজর দেবে এবং ভোলা সদর হাসপাতালের স্বাস্থ্যসেবার মান উন্নয়নে সহায়তা করবে।’

এদিকে এসব সমস্যা ছাড়াও কর্তব্যরত ডাক্তারদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা না দিয়ে অপেশাদারি আচরণের অভিযোগ রয়েছে। ডাক্তার-নার্সদের অভাবে এটা ঘটছে। জনবলসংকট দূর করে রোগীদের সেবা উন্নত করার দাবি সচেতন মহলের।

ফরিদপুরে কুকুরের মাংস বিক্রির অভিযোগ

প্রকাশ: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৯:৫৩ পিএম
আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৯:৫৮ পিএম
ফরিদপুরে কুকুরের মাংস বিক্রির অভিযোগ
অভিযুুক্ত সুুজন। ছবি: খবরের কাগজ

ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় এক যুবকের বিরুদ্ধে কুকুর জবাই করে মাংস বিক্রি অভিযোগ উঠেছে। 

ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলা বুড়াইচ ইউনিয়নের হেলেঞ্চা গ্রামে সুজন (২৩) নামে এক যুবকের বিরুদ্ধে কুকুর জবাই করে মাংস বিক্রির অভিযোগ উঠেছে।

গত শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) বেলা দুইটার দিকে তাকে হেলেঞ্চা বাজারের পাশে ঘাসখেতে বসে কুকুরের মাংস কাটতে দেখতে পায় স্থানীয়রা। 

অভিযুক্ত সুজন হেলেঞ্চা গ্রামের পূর্বপাড়া আবু বক্কর শেখের ছেলে।

ওই এলাকায় গিয়ে জানা গেছে, সুজন এর আগেও কুকুর জবাই করে অন্য এলাকায় মাংস বিক্রি করেছে। তিনি একজন মাদকাসক্ত ও মাদক বিক্রিতা। বিগত সরকারের আমলে পুলিশের সোর্স হয়ে বহু নিরীহ যুবকদের পকেটে মাদক ঢুকিয়ে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে নগদ অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে।

এলাকায় মোবাইল, টিউবওয়েলের মাথা, ছাগল, বাড়িঘরের আসবাবপত্র চুরির সঙ্গে জড়িত ছিল এমন অভিযোগও তুলছে স্থানীয়রা।

পোল্ট্রি ব্যবসায়ী লাভলু মিয়া বলেন, মুরগির নাড়ি-ভূড়ি নিয়মিত কয়েকটি কুকুরকে খেতে দেই কিন্তু কয়েকদিন হলো এদের মধ্যে একটি কুকুরকে দেখতে পাইনা। ধারণা করা হচ্ছে সুজন হয়তো ওই কুকুরটি জবাই করেছে।
 
এ বিষয়ে সুজন শেখের বক্তব্য নিতে তার বাড়িতে গেলে কাউকে পাওয়া যায়নি এবং প্রতিবেশীরা মুখ খুলতে রাজি হয়নি।

স্থানীয় ইউপি সদস্য আবুল বাসার বলেন, 'ঘটনাটি সত্যি' আমি মাঠে গেলে শব্দ শুনতে পাই। খোঁজ করে দূর থেকে দেখতে পাই সুজন ধারালো ছুরি দিয়ে মাংস কাটছে। সে মাদকাসক্ত হওয়ায় হাফিজুর গাজিকে ফোন করে আসতে বলি। সে টের পেয়ে পালিয়ে যায়। সেখানে গিয়ে কুকুরের মাংস, মাথা, পা দেখতে পাই। পরে তার স্ত্রীকে খবর দিয়ে নাড়ি-ভুড়ি সরাতে বলি।

এ বিষয়ে বুড়াইচ ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল ওহাব পান্নু বলেন, বিষয়টি শুনেছি। বাজারেও এ নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। সুজন গাঁজা খায়, বাড়ির কাউকে মানে না, কথাও শুনে না। পুলিশ ওকে একবার ধরেছিল। আমাদের সামনে আসে না আর দেখতেই তো মাদকাসক্ত লাগে।

সঞ্জিব/মেহেদী/ 

ভারতের জনগণ নয়, আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান: মাহমুদুর রহমান

প্রকাশ: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৯:৪৮ পিএম
আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৯:৪৯ পিএম
ভারতের জনগণ নয়, আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান: মাহমুদুর রহমান
সিলেট প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন ড. মাহমুদুর রহমান। ছবি: খবরের কাগজ

দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান বলেছেন, একুশে পদক অর্জন আমার একার নয়, দৈনিক আমার দেশের সকল সাংবাদিকের এবং ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে যারা লড়াই করেছিলেন তাদের সকলের। সিলেটের প্রতি আমার দুর্বলতা রয়েছে। কারণ, সিলেটের মানুষ সবসময়ই আমার দেশ পত্রিকাকে ভালবেসেছেন। সিলেটবাসীর এ সমর্থন অব্যাহত থাকবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে সিলেট প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন। 

তিনি বলেন, দৈনিক আমার দেশের লড়াই ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের পক্ষে। আমাদের ঘাড়ের ওপর যে ফ্যাসিবাদ চেপে বসেছিল এবং ভারতের পুতুল সরকারের ভূমিকা পালন করেছিল তাদের বিরুদ্ধে। একই সঙ্গে ভারতীয় আধিপত্যবাদ এবং এদেশে থাকা তাদের এজেন্টদের বিরুদ্ধে। 

তিনি আরও বলেন, ভারতের জনগণের প্রতি আমাদের কোনো অভিযোগ নেই। কিন্তু ভারত সরকারের আধিপত্যবাদী পলিসির বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান। ১৯৪৭ সালে এই সিলেটবাসীই গণভোট দিয়ে পাকিস্তানের অংশ হয়েছিল। কাজেই স্বাধীনতার জন্য সিলেটবাসীর ঐতিহাসিক যে ভূমিকা এটি রক্ষা করে যেতে হবে। 

জুলাই অভ্যুত্থানে শহিদ সাংবাদিক এটিএম তুরাবকে স্মরণ করে তিনি বলেন, দেশ ফ্যাসিবাদমুক্ত হওয়ার পেছনে তার অবদান স্মরণীয় হয়ে থাকবে। 

সিলেট প্রেসক্লাব সভাপতি ইকরামুল কবিরের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন ক্লাবের সিনিয়র সহসভাপতি খালেদ আহমদ।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন সিলেট প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ইকবাল সিদ্দিকী, সাবেক সহসভাপতি এনামুল হক জুবের, মোহাম্মদ বদরুদ্দোজা বদর, মুহাম্মদ আমজাদ হোসাইন, আবদুল কাদের তাপাদার, হুমায়ূন রশিদ চৌধুরী ও এম এ হান্নান, সহসাধারণ সম্পাদক শুয়াইবুল ইসলাম, কোষাধ্যক্ষ আনিস রহমান, ক্রীড়া ও সংস্কৃতি সম্পাদক শেখ আব্দুল মজিদ, নির্বাহী কমিটির সদস্য মো. আব্দুল রাজ্জাক, সদস্য কামকামুর রাজ্জাক রুনু, জিয়াউস-শামস-শাহীন, চৌধুরী দেলওয়ার হোসেন জিলন, মো. ফয়ছল আলম, মো. আমিরুল ইসলাম চৌধুরী এহিয়া, আনাস হাবিব কলিন্স, এম এ মতিন, ফয়সাল আমীন, নাজমুল কবীর পাভেল, সজল ছত্রী, দিগেন সিংহ, সিন্টু রঞ্জন চন্দ, গোলজার আহমেদ, খালেদ আহমদ, মো. দুলাল হোসেন, মো. মারুফ হাসান, শফিক আহমদ শফি প্রমূখ। 
   
শাকিলা ববি/মাহফুজ

 

বাংলাদেশি ৫ কৃষককে মারধরের ঘটনায় বিএসএফের দুঃখ প্রকাশ

প্রকাশ: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৯:১৭ পিএম
বাংলাদেশি ৫ কৃষককে মারধরের ঘটনায় বিএসএফের দুঃখ প্রকাশ
বিজিবি-বিএসএফের বৈঠক। ছবি: সংগৃহীত

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী সীমান্তে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে ৫ বাংলাদেশি কৃষককে মারধরের ঘটনায় বিজিবি-বিএসএফের মধ্যে পতাকা বৈঠকে দুঃখ প্রকাশ করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ। এ ঘটনায় অভিযুক্ত বিএসএফ সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ারও আশ্বাস দেওয়া হয়েছে ওই বৈঠকে। 

বিজিবির প্রতিবাদের পর শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বিজিবি-বিএসএফ ব্যাটালিয়ন কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠক করে বিএসএফ। 

পতাকা বৈঠক ও দুঃখ প্রকাশের বিষয়টি নিশ্চিত করে তথ্য দিয়েছেন লালমনিরহাট বিজিবি ১৫ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল শাহ মো. শাকিল আলম।

বিজিবি তথ্য বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, শনিবার বিকেল ৪টার দিকে ফুলবাড়ী উপজেলার নাওডাঙা ইউনিয়নের গোরকমন্ডপ সীমান্তের আন্তর্জাতিক সীমানা পিলার ৯২৯-এর সাব পিলার ৪ এসের কাছে বাংলাদেশি নাগরিক আব্দুল্লাহ নামে এক ব্যক্তির উঠানে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে বিজিবির পক্ষে নেতৃত্ব দেন ১৫ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল শাহ্ মো. শাকিল আলম। ভারতের বিএসএফর পক্ষে নেতৃত্ব দেন বিএসএফ এর ৩ ব্যাটালিয়নের কমান্ডার অমিত কুমার। 

প্রসঙ্গত, গতকাল শুক্রবার দুপুরে ফুলবাড়ীর নাওডাঙা ইউনিয়নের পশ্চিম বালাতারী সীমান্তের সীমান্ত পিলার ৯৩০-এর ৮ এস পিলারের কাছ দিয়ে বাংলাদেশ ভূখণ্ডে প্রবেশ করেন বিএসএফের ১০ থেকে ১২ জন সদস্য। বারোমাসিয়া নদীর ধারে বাংলাদেশের পশ্চিম বালাতারী গ্রামে প্রবেশ করে পাঁচ বাংলাদেশিকে মারধর করে। একজনের হাতে জখম হয়। এ ঘটনায় সীমান্তবাসীরা উপস্থিত হয়ে প্রতিবাদ জানালে তোপের মুখে তারা ফিরে যায় বিএসএফ সদস্যরা। এরপরও ওই সীমান্ত এলাকায় উত্তেজনা ছিল। পরে বিজিবির টহল দল ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে। এরপরের দিন (আজ) বিকেলে বৈঠকটি হলো।

বিজিবি জানায়, বৈঠকে বিজিবির পক্ষ থেকে ঘটনার কড়া প্রতিবাদ জানানো হয়। পরে সার্বিক ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে বিএসএফ। ঘটনা প্রসঙ্গে বিএসএফ জানিয়েছে, বাংলাদেশে প্রবেশ করা বিএসএফ জওয়ানরা কাশ্মির ফ্রন্ট থেকে এ অঞ্চলে নতুন যোগ দিয়েছে। তারা সীমান্ত এলাকা দেখতে বের হয়ে বাংলাদেশে ঢুকে পড়ে। এ বিষয়টি তারা বুঝতে পারেননি। ফলে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাটি ঘটে। অভিযুক্ত বিএসএফ সদস্যদের বিরুদ্ধে নিজস্ব আইনে ব্যবস্থা নেওয়ারও আশ্বাস দেয় বিএসএফ। ভবিষ্যতে এমন ঘটনা যাতে আর না ঘটে সে আশ্বাসও দেওয়া হয়েছে বিএসএফের পক্ষ থেকে। 

মওলা সিরাজ/মাহফুজ

 

পঞ্চগড়ে ভারতীয় নারী আটক

প্রকাশ: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৯:০৪ পিএম
পঞ্চগড়ে ভারতীয় নারী আটক
ছবি: খবরের কাগজ

পঞ্চগড়ের সদর উপজেলায় বাংলাদেশ সীমান্তে ঢোকার দায়ে এক ভারতীয় নারীকে (৪২) আটক করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।

শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টার দিকে নীলফামারী ৫৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের জয়ধরভাঙ্গা ক্যাম্পের সদস্যরা তাকে আটক করে ক্যাম্পে নিয়ে যায়।

জিজ্ঞাসাবাদে ওই ভারতীয় নারী হিন্দিতে কথা বলছিলেন। নিজের নাম  কখনো শান্তি আবার কখনও বাসন্তী এবং ঠিকানা দিল্লী ও শ্বশুর বাড়ি বাংলাদেশের বগুড়া জেলায় বলে জানান। তবে তার আচার-আচরণ মানসিক ভারসম্যহীনের মত বলে জানিয়েছে বিজিবি।

শনিবার সন্ধ্যায় নীলফামারী ৫৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, শনিবার সকাল ১০টার দিকে বাংলাদেশ ভারত সীমান্তের মেইন পিলার ৭৬০ এর ৬০ নম্বর সাব পিলার এলাকা দিয়ে ওই নারীকে বাংলাদেশের ১৫০ গজ ভিতরে দেখতে পান স্থানীয়রা। পরে স্থানীয় বিজিবি ক্যাম্পের টহল দল বিষয়টি জানতে পেরে তাকে আটক করে। পরে বিজিবি বিষয়টি ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) ৯৩ ব্যাটালিয়নের শ্যাম ক্যাম্পের কমান্ডারকে জানায়। এর পর দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে ক্যাম্প কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠক হয়। বৈঠকে বিএসএস ওই নারী ভারতীয় মর্মে নিশ্চিত হয়ে ফেরত নিতে চায়। পরে আইনি প্রক্রিয়া শেষে বিএসএফের কাছে ওই ভারতীয় নারীকে হস্তান্তর করে বিজিবির জয়ধরভাঙ্গা ক্যাম্পের সদস্যরা। 

ভারতীয় নাগরিককে ফেরত দেওয়ায় বিজিবিকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানায় বিএসএফ।

বিজিবির জয়ধরভাঙ্গা ক্যাম্পের কমান্ডার নায়েব সুবেদার শহিদুল ইসলাম বলেন, ভারতীয় এক নারীকে বাংলাদেশে ঢোকার পর আমাদের টহল দল আটক করে। নারীকে মানসিক ভারসমস্যহীন বলে মনে হয়েছে। পরে আমরা বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাই। এরই প্রেক্ষিতে বিএসএফের সঙ্গে যোগাযোগ হলে তারা পতাকা বৈঠকে এসে ভারতীয় নাগরিক নিশ্চিত করেন। পরে তাকে ফেরত নিতে চাইলে আমরা আইনি প্রক্রিয়ায় হস্তান্তর করেছি।

নীলফামারী ৫৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক শেখ মো. বদরুদ্দোজা বলেন, বিজিবি সীমান্তে অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের আইনের আওতায় আনার লক্ষ্যে সদা তৎপর। বিজিবি সদর দপ্তরের নির্দেশনা অনুযায়ী সীমান্তে অবৈধ অনুপ্রবেশ ও চোরাচালান প্রতিরোধে বিজিবির অভিযানিক কার্যক্রম ও গোয়েন্দা তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। সীমান্ত এলাকা দিয়ে পার্শবর্তী দেশে অবৈধ অনুপ্রবেশ প্রতিরোধে বিজিবি শক্ত অবস্থানে রয়েছে। যে কোন মূল্যে অবৈধ অনুপ্রবেশ রোধে ৫৬ বিজিবি কঠোর নজরদারি নিশ্চিতের পাশাপাশি অনুপ্রবেশ বন্ধে সদা প্রস্তুত।

রনি/মেহেদী/

এমন বাংলাদেশ চাই যেখানে সবাই ধর্ম পালন করতে পারবেন: হাসনাত আবদুল্লাহ

প্রকাশ: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৮:৫৭ পিএম
এমন বাংলাদেশ চাই যেখানে সবাই ধর্ম পালন করতে পারবেন: হাসনাত আবদুল্লাহ
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ। ছবি: খবরের কাগজ

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন, ‘আমরা এমন বাংলাদেশ আর চাই না, যে বাংলাদেশে আলেম-ওলামাদের সামনে থেকে মাইক কেড়ে নেওয়া হয়, দাড়ি ধরে ধরে জেলে ঢুকানো হয়। আমরা এমন বাংলাদেশ আর চাই না, যে বাংলাদেশে কোরআন-হাদিস থেকে বয়ান করলে সে মাহফিল বন্ধ করে দেওয়া হয়। আমরা এমন বাংলাদেশ চাই, যে বাংলাদেশে দুর্নীতি, রাহাজানি, হানাহানি, গুম এবং হত্যা থাকবে না। আমরা এমন বাংলাদেশ চাই, যে বাংলাদেশে প্রত্যেক মানুষ তার ধর্মকে স্বাধীনভাবে পালন করতে পারবেন।’

গত শুক্রবার রাতে কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার ধামতী ইসলামিয়া কামিল মাদ্রাসার দুই দিনব্যাপী ৭৭তম বার্ষিক ইছালে ছাওয়াবের মাহফিলের বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। মাহফিলে হাজার হাজার মুসল্লির সমাগম হয়।

ধামতী দরবার শরিফের পীর মাওলানা বাহাউদ্দীন আহমাদের সভাপতিত্বে মাহফিলে হাসনাত আবদুল্লাহ আরও বলেন, ‘রাষ্ট্র, প্রশাসন, পুলিশ কখনোই আমাদের ঠিক করতে পারবে না, যদি না আমরা নিজেরা নিজ থেকে ঠিক না হই। আমি ইসলাম নিয়ে বেশি কিছু জানি না, এখানে যারা উপস্থিত রয়েছেন তারা বেশি জানেন। তবে বাস্তবিক অভিজ্ঞতা থেকে বলব, আপনারা ঘুষ থেকে দূরে থাকুন, কাউকে ঘুষ দেওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। তদবির করা ভালো না। আপনার যদি মনে হয় আপনার পরিচিত একজন ক্ষমতাধর রয়েছেন তার থেকে আপনি বিশেষ সুবিধা নেবেন, এটাও এক ধরনের অপরাধ। ঘুষ ও সুদ এগুলো থেকে দূরে থাকুন।’

তিনি বলেন, ‘মনে রাখতে হবে আপনাদের যারা প্রতিনিধিত্ব করছে তারা আপনাদের কর্মচারী। এই কর্মচারীদের কাছে যদি আপনারা বিশেষ একটি দিনে (ভোটের দিন) দুই হাজার এক হাজার টাকায় বিক্রি হয়ে যান, তাহলে এই আমানতের খেয়ানত আপনারা করবেন। আমরা পাঁচ বছর, দশ বছর নেতাকে গালাগাল করতে পারব কিন্তু আপনার হাতে যে এক দিনের ক্ষমতা ছিল ওই এক দিনের ক্ষমতা যদি আপনি অপব্যবহার করে থাকেন তাহলে ওই পাঁচ বছরের অপশাসনের দায়ভার আপনাকেই নিতে হবে। নেতাকে দোষ দেওয়ার আগে নিজের কাছে আগে দায়বদ্ধ হবেন। আমি আপনাদের কাছে অনুরোধ করব, আপনারা কর্মচারীর কাছে কখনই বিক্রি হবেন না। অত্যাচারী শাসক, সুদ ও ঘুষের কাছে কখনই মাথা নত করবেন না।’ 

মাহফিলে আরও বক্তব্য রাখেন, মাওলানা আবুল কালাম আজাদ বাসার, ব্যারিস্টার রেজভি-উল আহসান মুন্সি, সাইফুল ইসলাম শহীদ প্রমুখ।

জহির শান্ত/এমএ/