
বরিশালের বাবুগঞ্জে নিখোঁজ হওয়ার ৪ দিন পরে রাব্বি খান (১৮) নামে এক এসএসসি পরীক্ষার্থীর ক্ষতবিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বুধবার (২২ জানুয়ারি) সকালে উপজেলার পূর্ব রহমতপুর রহমতপুর-মোহনগঞ্জ সড়ক এলাকার একটি পরিত্যক্ত গোডাউনের পাশ থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।
গত ১৮ জানুয়ারি (শনিবার) রাত ১২ টার পর থেকে নিখোঁজ ছিলেন রাব্বি। এ ঘটনায় পরের দিন রবিবার বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের বিমানবন্দর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছিল তার পরিবার। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিমান বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাকির হোসেন শিকদার।
রাব্বি খান বাবুগঞ্জ উপজেলার পূর্ব রহমতপুর গ্রামের বাচ্চু খানের ছেলে। বরিশাল জেলা ছাত্রদলের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সাব্বির রহমানের ছোট ভাই। সে উপজেলার মোহনগঞ্জ স্কুল এন্ড কলেজের এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিল। পাশাপাশি ছাত্রদলের একজন সক্রিয় কর্মী ছিল।
নিহতের পরিবারের অভিযোগ, পূর্ব শত্রুতার জেরে পরিকল্পিতভাবে তাকে অপহরণের পরে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। শনিবার রাতে তিনি নিখোঁজ হওয়ার পরদিন থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছিল তার পরিবার। নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বরিশাল শেবাচিম হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে বিমান বন্দর থানা পুলিশ।
নিহতের বড়ভাই সাব্বির রহমান জানান, রাজনৈতিক কারণে নিজ দলীয় একটি গ্রুপের সঙ্গে তাদের বিরোধ চলে আসছিল। ওই বিরোধের জের ধরেই শনিবার রাতে রাব্বিকে ফোন করে ডেকে নিয়ে অপহরণ করা হয়। ৩ দিন অজ্ঞাত জায়গায় আটকে নির্মম নির্যাতন করার পরে তাকে নৃশংসভাবে খুন করা হয়।
নাম-পরিচয় গোপন রাখার শর্তে স্থানীয় এক ব্যক্তি জানান, শনিবার রাত ১২টার দিকে রাব্বিকে রহমতপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে দুই যুবক ডেকে নিয়ে যায়। রাব্বি তাদের সঙ্গে দক্ষিণ দিকে চলে যায়। এরপরে আর তাকে দেখা যায়নি।
নিহত রাব্বির বাবা বাচ্চু খান বিলাপ করে বলেন, ‘আমার ছোট ছেলেকে ওরা পরিকল্পিতভাবে খুন করেছে। হত্যার আগে আমার ছেলের ওপরে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন চালিয়েছে। তার দুই চোখ তুলে নিয়েছে। হাত ভেঙে সারা শরীর জখম করেছে। কতটা কষ্ট দিয়ে মেরেছে আমার ছেলেকে। আমি খুনিদের সর্বোচ্চ শাস্তি চাই।’
এয়ারপোর্ট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জাকির শিকদার বলেন, রাব্বির পা বাঁধা, হাত ভাঙা এবং দু'চোখ উপড়ানো অবস্থায় আমরা তার মরদেহ উদ্ধার করি। মাথায় ধারালো অস্ত্রের জখম রয়েছে। লাশ ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।
তিনি বলেন, পূর্ব বিরোধের জের ধরে হত্যার পরে তার লাশ পরিত্যক্ত একটি গোডাউনের পাশে ফেলে রাখা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পেলে বিস্তারিত জানা যাবে। এ ঘটনায় যুক্ত থাকতে পারে এমন কয়েকজনের নাম নিহতর পরিবারের ও আশপাশ এলাকার মানুষের কাছ থেকে এসেছে। তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। এ ঘটনায় হত্যা মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে।
মঈনুল ইসলাম সবুজ/মাহফুজ