ঢাকা ৬ ফাল্গুন ১৪৩১, বুধবার, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
English
বুধবার, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ৬ ফাল্গুন ১৪৩১

প্রতারক চক্রের ফাঁদে জিম্মি মেয়ে, বিধবা মায়ের আকুতি

প্রকাশ: ২২ জানুয়ারি ২০২৫, ০৬:১৪ পিএম
আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০২৫, ০৬:১৫ পিএম
প্রতারক চক্রের ফাঁদে জিম্মি মেয়ে, বিধবা মায়ের আকুতি
প্রতারক চক্রের হাত থেকে বাঁচাতে সংবাদ সম্মেলনে মায়ের কান্না। ছবি: খবরের কাগজ

কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় একটি চক্র ফাঁদে ফেলে মোছা. ফরিদা পারভীন নামে এক বিধবার সরকারি চাকরিজীবী মেয়েকে জিম্মি করে রেখেছে বলে অভিযোগ ওঠেছে। এছাড়া চক্রটি পরিবারকে ছাড়াই ওই মেয়েটিকে বিয়ে দেওয়াসহ বিভিন্নভাবে বিপুল পরিমাণ টাকা-পয়সা হাতিয়ে নিয়েছে। এরপরও বিধবা ওই নারী ও তার পরিবারের সদস্যরা চক্রটির রোষানল থেকে মুক্তি পাচ্ছে না। 

এ রকম পরিস্থিতিতে সংবাদ সম্মেলন করে চক্রের হাতে জিম্মি মেয়েকে ফিরে পাওয়ার পাশাপাশি স্বাভাবিক জীবনের নিশ্চয়তা চেয়ে আকুতি জানিয়েছেন ভুক্তভোগী বিধবা ফরিদা পারভীন। 

বুধবার (২২ জানুয়ারি) দুপুরে জেলা শহরের গৌরাঙ্গবাজারে অনলাইন নিউজ পোর্টাল কিশোরগঞ্জ নিউজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি চক্রটির কবল থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। ভুক্তভোগী ফরিদা পারভীন পাকুন্দিয়া উপজেলার ঘাগড়া গ্রামের মৃত মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকীর স্ত্রী।

সংবাদ সম্মেলনে ফরিদা পারভীন জানান, তার স্বামী মৃত মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকী প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরে চাকুরি করতেন। তাদের দুই সন্তানের দুইজনই মেয়ে। বড় মেয়ের নাম মাহিয়া আক্তার রোকাইয়া (৩০) ও ছোট মেয়ের নাম মারিয়া আক্তার সুরাইয়া (২৮)। দুই মেয়েই পাকুন্দিয়া উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ে অফিস সহায়ক পদে চাকরি করে। ফলে অর্থনৈতিকভাবে স্বচ্ছল তার পরিবারটি। 

অন্যদিকে ঘাগড়া গ্রামেরই ইকবাল ভূঞার স্ত্রী আকলিমা খাতুন শুভা (৩৬) একই অফিসে অফিস সহকারী হিসেবে চাকরি করেন। ফরিদা পারভীনের অভিযোগ, একই গ্রামের বাসিন্দা হওয়ার সুবাদে আকলিমা খাতুন শুভা তার এবং তার দুই মেয়ের সঙ্গে নানা কৌশলে সখ্য গড়ে তুলে। এই সুযোগে ফরিদা পারভীনের বড় মেয়ে মাহিয়া আক্তার রোকাইয়ার কাছ থেকে কিস্তি চালানোর শর্তে সোনালী ব্যাংক থেকে ঋণের মাধ্যমে ৩ লাখ টাকা নেয়। এছাড়া ছোট মেয়ে মারিয়া আক্তার সুরাইয়ার কাছ থেকে চাকরিতে পদোন্নতির কথা বলে ৬ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। 

এসব টাকা ফেরৎ চাইতে গেলে আকলিমা খাতুন শুভার সঙ্গে ফরিদা পারভীনের সম্পর্কে ফাটল ধরে। এ রকম পরিস্থিতিতে আকলিমা খাতুন শুভা ফাঁদে ফেলে ফরিদা পারভীনের ছোট মেয়ে মারিয়া আক্তার সুরাইয়াকে আকলিমা খাতুন শুভার জিম্মায় নিয়ে যায়। জিম্মায় নিয়ে মা ও বোন কাউকেই না জানিয়ে সুরাইয়াকে বিয়েও দিয়ে দেন শুভা।

এসব বিষয়ে পরিবার পরিকল্পনা বিভাগীয় অফিসে ফরিদা পারভীন একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এর প্রেক্ষিতে গত ১ জানুয়ারি পাকুন্দিয়া পরিবার পরিকল্পনা অফিসে বিভাগীয় তদন্ত আসে। তদন্তের দিন ফরিদা পারভীন সাক্ষীসহ হাজির হলে তাদের ওপর শুভার নেতৃত্বাধীন চক্রটি হামলা চালায়। তাতেও থেমে না থেকে চক্রটি কৌশলে গত ৬ জানুয়ারি রাতে ফরিদা পারভীনের বাড়ির রান্না করা খাবারে বিষ মিশিয়ে দেয়। এই খাবার খেয়ে ফরিদা পারভীন, তার বড় মেয়ে মাহিয়া আক্তার রোকাইয়া, নাতি মেহেম্মদ ও জাহানারা ওরফে টুনী নামে এক আত্মীয়সহ চারজন অজ্ঞান হয়ে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন।

তারা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ফরিদা পারভীনের বাড়ির গেটের তালা ভেঙ্গে স্বর্ণালঙ্কারসহ দামি অনেক জিনিসপত্র নিয়ে যায় চক্রটি। ছোট মেয়ের জিম্মিদশা এবং নিজের অসহায় পরিস্থিতির বর্ণনা দিতে গিয়ে সংবাদ সম্মেলনের এক পর্যায়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন ফরিদা পারভীন।

তিনি বলেন, আমার সহায়-সম্পত্তির ওপর চক্রটির নজর পড়েছে। তারা যেকোনো উপায়ে আমার এবং আমার পরিবারের সর্বনাশ করতে চায়। আমি আমার মেয়েটাকে আমার কাছে ফেরৎ চাই এবং মেয়েদের নিয়ে সুস্থ-স্বাভাবিকভাবে বাঁচতে চাই।

তাসলিমা আক্তার মিতু/মাহফুজ 

 

অস্ত্রের মুখে গৃহবধূকে ধর্ষণ, গ্রেপ্তার ভাড়াটিয়া

প্রকাশ: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৭:৪৭ পিএম
অস্ত্রের মুখে গৃহবধূকে ধর্ষণ, গ্রেপ্তার ভাড়াটিয়া
পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার অভিযুক্ত হৃদয় বিশ্বাস। ছবি: সংগৃহীত

মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলায় এক গৃহবধূকে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠেছে। অভিযুক্ত ব্যক্তি স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতার বাড়ির ভাড়াটিয়া বলে জানা গেছে। ঘটনার পর ভুক্তভোগীর স্বামী থানায় অভিযোগ করলে পুলিশ অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত হৃদয় বিশ্বাসকে (২৭) গ্রেপ্তার করে।

বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে আদালতের মাধ্যমে তাকে মানিকগঞ্জ জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। গ্রেপ্তার হৃদয় বিশ্বাস মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার তরা এলাকার বাসিন্দা।

এর আগে, মঙ্গলবার রাতে চাঁদপুর জেলার একটি ইটভাটা থেকে হৃদয় বিশ্বাসকে গ্রেপ্তার করা হয়।

পুলিশ ও এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ জানুয়ারি ভোরে শিবালয় উপজেলার শাকরাইল মিয়াপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। ফজরের নামাজ পড়তে গৃহবধূর স্বামী মসজিদে গেলে অভিযুক্ত হৃদয় বিশ্বাস মুখোশ পরে বাড়ির বাউন্ডারি টপকে ঘরে প্রবেশ করে। দরজায় নক করলে গৃহবধূ স্বামী এসেছে ভেবে দরজা খুলে দেন এবং পুনরায় ঘুমিয়ে পড়েন। এ সময় হৃদয় বিশ্বাস ঘরে ঢুকে তার মুখ চেপে ধরে ভয়ভীতি দেখায়। পরে পরিবারের সদস্যদের হত্যার হুমকি দিয়ে অস্ত্রের মুখে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে পালিয়ে যায়।

পরে গৃহবধূ তার শাশুড়িকে ঘটনা জানালে তিনি স্বামীকে খবর দেন। স্বামী বাড়ি ফিরে এলে পুরো ঘটনা জানতে পেরে থানায় মামলা করেন।

শিবালয় থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এ.আর.এম আল-মামুন জানান, অভিযোগ পাওয়ার পর আমরা গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে চাঁদপুর জেলার একটি ইটভাটায় অভিযান চালিয়ে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করি। পরে তাকে আদালতে পাঠানো হলে বিচারক কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন।

আসাদ জামান/মাহফুজ

 

অন্যের স্ত্রীর ঘরে পুলিশ কর্মকর্তা, লাঠিপেটা

প্রকাশ: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৭:১৭ পিএম
আপডেট: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৭:৩০ পিএম
অন্যের স্ত্রীর ঘরে পুলিশ কর্মকর্তা, লাঠিপেটা

রাজশাহীতে অন্যের স্ত্রীর ঘরে সোহেল রানা নামে পুলিশের এক সহকারী উপপরিদর্শকের (এএসআই) রাত্রীযাপনের খবর পেয়ে লাঠিপেটা করেছেন স্থানীয় লোকজন।

মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ১০টার দিকে নগরীর মতিহার থানাধীন সাতবাড়িয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরে খবর পেয়ে পুলিশ গভীর রাতে ওই এএসআইকে উদ্ধার করে থানা হেফাজতে নিয়েছে।

অন্যের স্ত্রীর ঘরে ধরা পড়া এএসআই সোহেল রানা রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) চন্দ্রিমা থানায় কর্মরত। তার গ্রামের বাড়ি বগুড়ায়।

জানা গেছে, মঙ্গলবার রাতে নগরের সাতবাড়িয়া মহল্লার এক নারীর ঘরে পেয়ে স্থানীয় লোকজন তাকে আটক করে। পরে ঘরের দরজা বন্ধ করে তাকে লাঠিপেটা করা হয়। মারধর করা হয় ওই নারীকেও। এসময় ওই এএসআই বলেন, তিনি কালেমা পড়ে বিয়ে করেছেন। এর ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে ফেসবুকে।

ভিডিওতে দেখা যায়, স্থানীয়রা ওই নারী এবং এএসআইকে নানা জেরা করছে। জেরার ফাঁকে ফাঁকে লাঠি দিয়ে পেটানোও হচ্ছে। ওই নারীকে এ সময় বলতে শোনা যায়, ‘প্রচুর মেরেছে, প্রচুর।’ আর এএসআই সোহেল রানা বলেন, ‘আমি কালেমা পড়ে বিয়ে করেছি।’

জেরার মুখে তিনি জানান, তার গ্রামের বাড়ি বগুড়া। সেখানে তার স্ত্রী-সন্তান আছে। এই নারীকে তিনি ‘কালেমা পড়ে’ বিয়ে করেছেন। তবে ঘরে উপস্থিত ওই নারীর স্বামী বলতে থাকেন, স্ত্রীর সঙ্গে তার বিবাহ বিচ্ছেদই হয়নি। এসময় ওই নারী বলেন, স্বামীকে তিনি মুখে মুখে তালাক দিয়েছেন।

স্থানীয়দের অভিযোগ, এই নারীর সঙ্গে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক চালিয়ে যাচ্ছিলেন এএসআই সোহেল রানা। ফলে মঙ্গলবার রাতে তাকে ওই নারীর ঘরে পেয়ে আটকে রেখে থানায় খবর দেওয়া হয়। পুলিশ আসার আগে কয়েকজন লাঠি দিয়ে তাকে পেটায়। পরে রাত সাড়ে ১২টার দিকে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চন্দ্রিমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মতিয়ার রহমান বলেন, এএসআই সোহেল রানা মঙ্গলবার রাতে ডিউটি থাকায় একটি গ্রেপ্তারি পরোয়ানার দায়িত্ব পালন করতে মতিহার থানা এলাকায় গিয়েছিলেন। তারপর রাত ১টার দিকে তিনি মতিহার থানা পুলিশের হাতে আটক হন বলে জানতে পেরেছি। এরচেয়ে বেশি কিছু আমার জানা নেই।

পরে মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল মালেকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ওই নারীর স্বামী মাদক কারবারি। তার বাড়ি নগরের ডাসমারী মধ্যপাড়ায়। তিনি মাদক মামলায় বছর দেড়েক জেলে ছিলেন। এই সময়ে ওই নারী বাবার বাড়ি চলে যান। স্বামী জামিনে বের হলেও তিনি তার বাড়ি আসছিলেন না। তবে ওই নারীর সঙ্গে এএসআইয়ের বিয়ে কিংবা বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক চালানোর বিষয়ে ওসি কোনো তথ্য দিতে পারেননি।

এ বিষয়ে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (মিডিয়া) সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, ঘটনাস্থল মতিহার থানা এলাকায় হওয়ায় ওই এএসআইকে সংশ্লিষ্ট থানা হেফাজতেই রাখা হয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ ধরনের ভিডিও ছড়িয়ে পড়ায় পুলিশের ভাবমূর্তিও ক্ষুণ্ন হয়েছে।

তিনি বলেন, ওই এএসআই ও নারীর ভাষ্য অনুযায়ী এএসআই সোহেল রানা তাকে (নারীকে) তিনটি অটোরিকশা কিনে দেয়। সোহেল মাঝে মাঝে ওই নারীর কাছ থেকে ভাড়ার টাকা নিতে যেতেন। মঙ্গলবার রাতেও নাকি তিনি ভাড়ার টাকা আনতেই গিয়েছিলেন। তবে বিষয়টি নিয়ে আমাদের তদন্ত কাজ চলছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। যদিও তার বিরুদ্ধে কোনো ফৌজদারি অপরাধের তথ্য কিংবা কেউ অভিযোগ করেনি। আমাদের ডিপার্টমেন্টাল যে আইন-কানুন রয়েছে সেই অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  

এনায়েত করিম/মাহফুজ

ফের সড়কে আলু ফেলে কৃষকদের বিক্ষোভ

প্রকাশ: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৬:২৮ পিএম
ফের সড়কে আলু ফেলে কৃষকদের বিক্ষোভ
ছবি: খবরের কাগজ

আলু সংরক্ষণের হিমাগারগুলোতে ভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদে রাজশাহীতে আবারও সড়কে আলু ফেলে বিক্ষোভ করেছেন কৃষকরা। এতে যানবাহন চলাচল বিঘ্নিত হয়।

বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টায় জেলার পবা উপজেলার বায়া এলাকায় সরকার কোল্ড স্টোরেজের সামনে রাজশাহী-নওগাঁ মহাসড়কে কৃষকরা বিক্ষোভ করেন।

বিক্ষুব্ধ কৃষকরা জানান, প্রতি কেজি আলু সংক্ষণের জন্য আগে রাজশাহীর হিমাগারগুলোকে চার টাকা ভাড়া দিতে হতো। এবার তা বাড়িয়ে আট টাকা করা হয়েছে। ভাড়া দ্বিগুণ হয়ে যাওয়ায় তাদের ব্যাপক ক্ষতি হবে। তাই তারা দ্রুত আগের ভাড়া নির্ধারণের দাবি জানান। হিমাগার ভাড়া না কমালে এবার তারা প্রয়োজনে আলু ফেলে দেবেন, কিন্তু হিমাগারে রাখবেন না বলে হুঁশিয়ারি দেন।

বিক্ষোভ মিছিল শেষে কৃষকরা ওই এলাকায় পথসভাও করেন। এসময় স্থানীয় বিএনপি তাদের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে। দলটির কেন্দ্রীয় কমিটির ত্রাণ ও পুনর্বাসনবিষয়ক সম্পাদক শফিকুল হক মিলন বলেন, হিমাগার মালিকেরা সিন্ডিকেট করে আলু সংরক্ষণের ভাড়া বাড়িয়েছেন। এ ভাড়া কার্যকর হলে বাজারে আলুর দাম বাড়বে। এটি হতে দেওয়া হবে না। প্রয়োজনে হিমাগার মালিকদের সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়া হবে।

এদিকে, আগের বছরগুলোতে আলু সংরক্ষণ করা হতো বস্তা হিসেবে। ৫০ কেজির প্রতি বস্তার জন্য ভাড়া নেওয়া হতো ৩৪০ টাকা। হিমাগার মালিকরা ৫০ কেজির বস্তাতেই আলু দেওয়ার কথা বললেও ফড়িয়ারা ৮০ কেজির বস্তাতেও আলু রাখতেন। এতে হিমাগার মালিকরা ক্ষতিগ্রস্ত হতেন। তাই তারা এবার নতুন নিয়ম করেছেন। এবার কেজি হিসাবে সংরক্ষণ ভাড়া নেওয়া হবে।

হিমাগার মালিকরা জানান, ৫০ কেজির বস্তার জন্য আগে ৩৪০ টাকা নেওয়া হলে ভাড়া পড়তো ৬ টাকা ৮০ পয়সা। কিন্তু ফড়িয়ারা বস্তায় এত বেশি আলু দিতেন যে, ভাড়া পড়ত ৪ টাকা। অথচ বস্তায় ৫০ কেজির বেশি আলু না ঢোকানোর জন্য সরকারের নির্দেশনাও আছে। তা প্রতিপালন না করায় বাধ্য হয়েই তারা কেজি হিসেবে ৮ টাকা করে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

রাজশাহী কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ফজলুর রহমান বলেন, ভাড়া কেন্দ্রীয়ভাবেই নির্ধারণ হয়। এবারও সেটাই হয়েছে। ৫০ কেজির বস্তার ব্যবহার নিশ্চিতের জন্য তারা এবার কেজি হিসেবে গিয়েছেন। কারণ বেশি ওজনের বস্তা টানা হিমাগারের শ্রমিকদের জন্যও ঝুঁকিপূর্ণ। কেজি হিসাবে গেলেও এটা বলছেন না যে, ৮ টাকাই দিতে হবে। হিমাগার মালিকরা যে যার সক্ষমতা অনুযায়ী এ ব্যাপারে ছাড় দেবে।

এর আগে, গত ২ ফেব্রুয়ারি একই ঘটনায় জেলার মোহনপুর পরিষদ চত্বরে রাজশাহী-নওগাঁ মহাসড়কে অবস্থান কর্মসূচি ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেন কৃষকেরা। এসময় তারা সড়কে আলু ফেলে দিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

এনায়েত/সিফাত/

কমপ্লিট শাটডাউনে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ

প্রকাশ: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৬:২৫ পিএম
কমপ্লিট শাটডাউনে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ
কমপ্লিট শাটডাউনের ফলে অধ্যক্ষসহ শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা কলেজের প্রধান ফটকের বাহিরে অবস্থান নিয়েছে। ছবি: খবরের কাগজ
শিক্ষক সংকট নিরসনের দাবিতে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজে (শেবামেক) শিক্ষার্থীদের ডাকা কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচির তৃতীয় দিন অতিবাহিত হয়েছে। এতে করে তিনদিন ধরে শেবামেকের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড বন্ধ রয়েছে। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, শিক্ষক সংকট যৌক্তিকভাবে নিরসন না হওয়া পর্যন্ত এই কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। 
 
বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সকালে কলেজের গিয়ে প্রধান ফটকগুলো তালাবদ্ধ দেখা গেছে। ফলে অধ্যক্ষসহ শিক্ষকরা কার্যালয়ের বাহিরে অবস্থান নিয়েছে। 
 
নিউনেটোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. বিধান চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কারণে সকালে কলেজে গিয়ে হাজিরা দিতে পারিনি। বাহিরে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে। শিক্ষার্থীদের দাবি যৌক্তিক। আমরা আশা করি দ্রুত শিক্ষক সংকট নিরসনে উদ্যোগ নিবে সরকার।
 
এদিকে শিক্ষার্থীরা বেলা সাড়ে ১১ টায় কলেজের একাডেমিক ভবনের প্রশাসনিক শাখার গেটের সামনে থেকে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে হাসপাতালের সামনে বান্দরোডে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন। 
 
এসময় শিক্ষার্থীরা বলেন, দেশের অন্যতম প্রধান চিকিৎসা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। কিন্তু ৬০ শতাংশের ওপরে শিক্ষকের পদ শূন্য থাকায় শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবায় বড় চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে। একাডেমিক কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটছে। শিক্ষার্থীরা মানসম্মত ক্লাস ও প্রশিক্ষণ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, যা ভবিষ্যতে চিকিৎসা ব্যবস্থার ওপরও নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। 
তারা বলেন, মেডিসিন, মাইক্রোবায়োলজি, প্যাথোলজি, ফিজিওলজি, সিসিইউ, গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজি ডিপার্টমেন্টসহ ডেন্টাল ইউনিটেরও অধিকাংশ ডিপার্টমেন্টে শিক্ষক সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে। আমরা চাই দ্রুত শূন্য পদে শিক্ষকদের পদায়ন হোক এবং সাম্প্রতিক সময়ে বিনা কারণে বদলিকরা শিক্ষকদের ফিরিয়ে আনা হোক।
 
মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী নাইমুর রহমান নাঈম বলেন, শিক্ষক সংকট ইস্যুতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের কর্মসূচির কারণে মেডিকেল কলেজে ক্লাশ, পরীক্ষাসহ সকল একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। গত ১৭ ফেব্রুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে স্মারকলিপি দিয়ে কলেজ প্রশাসন ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে দাবির কথা জানিয়েছে শিক্ষার্থীরা। কিন্তু এ অবধি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডিজি কোনো উদ্যোগ নেয়নি।
 
তিনি বলেন, আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারি ডেন্টাল অনুষদের প্রফেশনাল পরীক্ষা ও ২৮ ফেব্রুয়ারি ওই অনুষদের ভর্তি পরীক্ষার কার্যক্রম ব্যাহত হলে এর দায়ও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে নিতে হবে। দাবি না মানা হলে আমাদের অবস্থান থেকে সরে দাঁড়াব না। ঘোষিত কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি চলবে।
 
শিক্ষক সংকটের কথা স্বীকার করে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ফয়জুল বাশার বলেছেন, শিক্ষার্থীদের এই দাবি যৌক্তিক এবং তাদের দাবিদাওয়াগুলো নিয়ে মন্ত্রণালয়ে কথা বলেছি। দ্রুত সমস্যা সমাধান করার চেষ্টা চলছে। কলেজে শিক্ষকদের ৩৩৪ টি পদের মধ্যে ১৪৬ টি পদে শিক্ষক রয়েছে, বাকি ১৮৮ পদ শূন্য রয়েছে। 
 
মঈনুল ইসলাম সবুজ/মাহফুজ

 

চা শ্রমিকদের নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত কর্মপরিবেশ সৃষ্টিতে করনীয় শীর্ষক সভা

প্রকাশ: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৬:০৫ পিএম
চা শ্রমিকদের নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত কর্মপরিবেশ সৃষ্টিতে করনীয় শীর্ষক সভা
সিলেটের চা বাগানের নারী শ্রমিকদের নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত কর্মপরিবেশ সৃষ্টিতে করনীয় নিয়ে সভা করেছে এথনিক কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশনের (একডো)। ছবি: খবরের কাগজ

সিলেটের চা বাগানের নারী শ্রমিকদের নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত কর্মপরিবেশ সৃষ্টিতে করনীয় নিয়ে সভা করেছে এথনিক কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশনের (একডো)। বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টায় সিলেট নগরীর মির্জাজাঙ্গালস্থ নির্ভানা ইন হোটেলে অনুষ্ঠিত সভায় চা বাগান মালিক পক্ষ, চা শ্রমিক ও সামাজিক, সাংস্কৃতিক বিভিন্ন সেক্টরের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও অক্সফামের অর্থায়নে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় চা শ্রমিকরা নিজেদের সমস্যাগুলো তুলে ধরেন। বিশেষ করে নারী চা শ্রমিকরা কর্মক্ষেত্রে তাদের বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরেন। সমস্যাগুলোর মধ্যে চা বাগানে স্যানিটেশন সুবিধা না থাকা, বাচ্চা রাখার জন্য ডে কেয়ার সেন্টার না থাকা, গর্ভকালীন ছুটি কম পাওয়া, স্বল্প ও বকেয়া মজুরির সমস্যা নিয়ে বিস্তর বর্ণনা দেন চা শ্রমিকরা। 

হিলুয়াছড়া চা বাগানের সর্দার রাধামনি বলেন, ‘আমার অধীনে চা বাগানে পাতা তুলে প্রায় ২০০ নারী। তাদের মধ্যে যারা গর্ভবতী তারা অনেক সময় নির্ধারিত পাতা তুলতে পারেন না। নির্ধারিত পাতা না তুললে বাবুরা হাজিরা নেয় না। এরকম হরহামেশাই হয়। বাগানের সেকশনে কোনো ল্যাট্রিন নেই। তাই প্রস্রাব করার সুবিধা পর্যন্ত নেই আমাদের।’ 

আলোচনায় অংশ নেওয়া নারী চা শ্রমিকরা। ছবি: খবরের কাগজ

চা শ্রমিকদের সমস্যাগুলোর সঙ্গে একমত পোষণ করে সভায় উপস্থিত চা বাগানের মালিক কর্তৃপক্ষও। লাক্কাতুরা চা বাগানের অ্যাসিসেন্ট ম্যানেজার নূর মোহাম্মাদ ফারুকি সিয়াম বলেন, চা শ্রমিকদের নানা সমস্যা আছে আমরা জানি। আমরা চেষ্টা করি তাদের সমস্যাগুলো সমাধান করার। কিন্তু নানা কারণে সব সমস্যা সমাধান করা যায় না। ৫ আগস্টের পর থেকে চা বাগানগুলো লোকসানে আছে। পাতা বিক্রি করতে পারছি না। যা বিক্রি হচ্ছে সেটাও খুব নগণ্য দামে। ব্যাংক থেকে লোন দিচ্ছে না। আমরা সব্বোচ্চ চেষ্টা করছি চা শ্রমিকদের বকেয়া বেতন পরিশোধ করার। আশা করি মাস দুয়েকের মধ্যে বেতনের সমস্যা আর থাকবে না। 

মালিনীছড়া চা বাগানের অ্যাসিসেন্ট ম্যানেজার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, চা শ্রমিকদের সমস্যাগুলো শুধু আমাদের একার পক্ষে সমাধান করা সম্ভব না। এজন্য সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে। বিভিন্ন এনজিও আছে তাদেরকেও কাজ করতে হবে। চা শ্রমিকদের সমস্যাগুলো নীতিনির্ধারকদের কাছে পৌঁছাতে মিডিয়া, এনজিওসহ অন্যান্য সংস্থাগুলোকে কাজ করতে হবে। 

একডোর নির্বাহী পরিচালক লক্ষ্মীকান্ত সিংহের সভাপতিত্বে সভায় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সুশাসনের জন্য নাগরিক সুজনের সভাপতি ফারুক মাহমুদ চৌধুরী, লাক্কাতুরা চা বাগানের অ্যাসিসেন্ট ম্যানেজার নূর মোহাম্মাদ ফারুকি সিয়াম, মালিনীছড়া চা বাগানের অ্যাসিসেন্ট ম্যানেজার মোস্তাফিজুর রহমান। সভায় প্রধান বক্তা ছিলেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পলিটিক্যাল স্টাডিজ বিভাগের প্রফেসর ড. জায়েদা শারমিন।
 
শাকিলা ববি/মাহফুজ