ঢাকা ২ ফাল্গুন ১৪৩১, শনিবার, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
English
শনিবার, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২ ফাল্গুন ১৪৩১

শেরপুরে খামারিরা পান না সরকারি সেবা

প্রকাশ: ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ০৮:৪৫ এএম
আপডেট: ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ০৮:৪৬ এএম
শেরপুরে খামারিরা পান না সরকারি সেবা
শেরপুরের ঝিনাইগাতীর মালিঝিকান্দা ইউনিয়নের আসামপাড়ার খামারি ওমর ফারুক তার গরুর পরিচর্যা করছেন। ছবি: খবরের কাগজ

শেরপুরের প্রত্যন্ত অঞ্চলের খামারিরা প্রাণিসম্পদ বিভাগের বিনামূল্যের চিকিৎসাসেবা পাচ্ছেন না। সরকারি সেবা পেতে হলে তাদের বাড়তি টাকা গুনতে হয়। বাধ্য হয়ে তারা স্থানীয় পল্লী চিকিৎসকের কাছ থেকে সেবা নিচ্ছেন। দীর্ঘদিন ধরে সরকারি সেবা না পাওয়ায় তাদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।

শুধু তা-ই নয়, সঠিক পরামর্শ ও সহযোগিতার অভাবে অনেক নতুন খামারি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। কেউ কেউ আবার খামার বন্ধ করে দিয়েছেন। রয়েছে ভ্যাকসিনেরও সংকট। তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ভবিষ্যতে এমন ঘটনা যেন না ঘটে, সে জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

ঝিনাইগাতী উপজেলার আকলিমা খাতুন। স্বামীর মৃত্যুর পর সাত ছেলে-মেয়ের সংসারের হাল ধরতে কী করবেন ভেবে পাচ্ছিলেন না। সিদ্ধান্ত নেন গবাদিপশু পালন করবেন। পরে গরু-ছাগল ও হাঁস-মুরগি লালন-পালন শুরু করেন। ছোট পরিসরে শুরু করলেও আজ তার শতাধিক হাঁস ও কিছু গরু-ছাগল আছে। কিন্তু এই দীর্ঘসময়ে অনেক পশু ও হাঁস-মুরগি অসুস্থ হলে চিকিৎসা করাতে তাকে রীতিমতো হিমশিম খেতে হয়েছে। কিন্তু কেন হিমশিম খেয়েছেন আকলিমা, এ বিষয়ে কথা হয় তার সঙ্গে। 

তিনি বলেন, ‘বর্তমানে আমার একশর বেশি হাঁস আছে। এগুলোর পাশাপাশি ১০টি ছাগল আর পাঁচটি গরু পালন করি। কিন্তু এগুলো অসুস্থ হলে কখনো সরকারি চিকিৎসা পাইনি। সরকারি ডাক্তার কোনোদিন চোখেও দেখিনি। কোনো পশুর অসুখ হলে অন্তত দুই মাইল রাস্তা হেঁটে বাচ্চারা ওষুধ নিয়ে আসে। বিপদ যেহেতু আমাদের, আমাদেরকেই কিছু করতে হবে।’

শুধু আকলিমা খাতুন তা নয়, জেলার সীমান্তবর্তী অঞ্চলের প্রান্তিক খামারিদের প্রায় সবারই একই অভিযোগ। খামারিরা জানান, সরকারি সেবা নিতে গেলে তাদের নানা ধরনের হয়রানি পোহাতে হয়। পশু হাসপাতালে ভ্যাকসিনের জন্য গিয়ে ভোগান্তিতে পড়তে হয়। কোনো সময় ডাক্তারকে হাসপাতাল থেকে বাড়ি কিংবা খামারে আনতে গেলে বাড়তি টাকা গুনতে হয়। 

ঝিনাইগাতী উপজেলার খামারি জাকির মিয়া বলেন, ‘প্রয়োজনীয় ভ্যাকসিনগুলো সঠিক সময়ে পাওয়া যায় না। কিছুদিন আগে পশু চিকিৎসকদের বলছিলাম, আমাদের এলাকায় গরুর বাতনা রোগ বাড়ছে। ভ্যাকসিন দেওয়া প্রয়োজন। পরে ডাক্তাররা বললেন, ১৫ দিন পর ভ্যাকসিন আসবে। এর পর দুই মাসের বেশি সময় হয়েছে, ভ্যাকসিন আর আসেনি। আমাদের গরুগুলো ভ্যাকসিন ছাড়াই থাকল।’

তিনি বলেন, ‘কিছুদিন আগে এই রোগে আমাদের এলাকায় তিনটি গরু মারা গেছে। যদি ভ্যাকসিনগুলো দিত, তা হলে হয়তো গরুগুলো মারা যেত না।’

রুবেল মিয়া নামে ওই এলাকার আরেক খামারি বলেন, ‘আমাদের গৃহপালিত পশু নিয়ে সরকারিভাবে কোনো তদারকি করা হয় না। পল্লী চিকিৎসক ছাড়া যদি প্রাণিসম্পদ বা ওই অফিসের কোনো লোকজনকে আমরা আনতে যাই, তাদের বাড়তি টাকা দিতে হয়। কমপক্ষে ১৫০০, কখনো তিন হাজার টাকাও দিতে হয়। তারা এসে বলেন, আমরা সরকারি ডাক্তার। তাই এভাবেই দিতে হবে।’

শ্রীবরদী উপজেলার খামারি আবু মিয়া বলেন, ‘আমরা গ্রাম্য মানুষ। সাধারণত হাঁস-মুরগি, গরু-ছাগল লালন-পালন করি। কিন্তু এগুলো অসুস্থ হলে আমরা সরকারি কোনো ডাক্তার পাই না। সরকারিভাবে কোনো সহায়তাও পাই না। অসুস্থ হলে স্থানীয় বাজারের পল্লী চিকিৎসকের কাছেই যেতে হয়।’

শ্রীবরদী উপজেলার হারিয়াকোনা এলাকার খামারি রহমান মিয়া বলেন, ‘আমার একটি মুরগির খামার ছিল। সেখানে কয়েক প্রজাতির মুরগি পালন করেছি। কিন্তু ভ্যাকসিন নিতে না পারায় অনেক মুরগি মারা যায়। এর কিছুদিন পর খামারটি বন্ধ করে দিয়েছি।’ 

খামারি আব্দুল আওয়াল বলেন, ‘আমার খামার থেকে প্রাণিসম্পদ অফিস ১৪ কিলোমিটার দূরে। ভেবে দেখুন, অসুস্থ গরু নিয়ে ওই অফিসে যেতে আমার কত টাকা ভাড়া লাগবে? আমার মতো ছোট খামারির পক্ষে এত টাকা খরচ করা সম্ভব নয়।’ 

শেরপুর জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. এবিএম আব্দুর রউফ বলেন, ‘কোনো ইউনিয়নের ওয়ার্ড পর্যায়েও যদি পশু অসুস্থ হয়, তা হলে আমাদের ভেটেরিনারি টিম যেতে বাধ্য। আমার এমনই নির্দেশনা দেওয়া আছে। বিশেষ করে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ফিল্ডে যদি নাও যান, ভেটেরিনারি সার্জন অবশ্যই ফিল্ডে যাবেন। জনগণের জন্য ভেটেরিনারি সার্জন সার্বক্ষণিক প্রস্তুত থাকবেন। সেটা হোক অফিস কিংবা বাইরে। ভবিষ্যতে এ ধরনের সমস্যা যেন না হয়, সে জন্য আমি প্রতিটি উপজেলায় দিকনির্দেশনা দিয়েছি।’

তিস্তা মহাপরিকল্পনাসহ পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ে ৪৮ ঘণ্টার কর্মসূচি

প্রকাশ: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৭:৪২ পিএম
তিস্তা মহাপরিকল্পনাসহ পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ে ৪৮ ঘণ্টার কর্মসূচি
ছবি: খবরের কাগজ

বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী আসাদুল হাবিব দুলু বলেছেন, বিগত ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার সরকারের কাছে উত্তরাঞ্চলের মানুষ তিস্তা পানি চুক্তির বিষয়ে দাবি জানিয়ে আসছে। কিন্তু সেই সরকারের নতজানু পররাষ্ট্র নীতির কারণে জনআকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন হয়নি। 

তাই তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নসহ পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ের দাবিতে টানা ৪৮ ঘণ্টার কর্মসূটি পালন করবে তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন।

শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রংপুর নগরীর এক মিলনায়তনে আসাদুল হাবিব দুলু এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন। 

সাবেক এই উপমন্ত্রী জানান, দীর্ঘদিন ধরে তিস্তা নদী বেষ্টিত লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, রংপুর ও গাইবান্ধা জেলার মানুষেরা তিস্তা নদীর পানি বৈষম্যের শিকার হয়েছে। ভারত সরকার আওয়ামী লীগকে তিস্তা পানি চুক্তি, নাকি ক্ষমতায় থাকবে, তা বেছে নিতে বললে তারা ক্ষমতাকে প্রাধান্য দিয়েছে।

দুলু আরও বলেন, বাংলাদেশের বন্ধুপ্রতীম রাষ্ট্র চীন ২০১৬ সালে তিস্তা মহাপরিকল্পনা নিয়ে নকশা প্রণয়ন করেছে। ৮ কিলোমিটার প্রস্থ তিস্তা নদীকে দেড় কিলোমিটার করা হবে। নদীর দু’ধারে প্রশস্ত রাস্তা, গাইড বাঁধ, স্যাটেলাইট শহর, অর্থনৈতিক অঞ্চল, হাউজিং ও পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলা হবে। অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে লাখ লাখ বেকারের কর্মসংস্থান হবে। রংপুরের মানুষ আশাবাদী ছিল এক সময়ের প্রমত্তা তিস্তা নদী তার যৌবন ফিরে পাবে। তিস্তা মহাপরিকল্পনা হবে নদীপাড়ের মানুষের জীবন রক্ষার প্রকল্প। কিন্তু সেই প্রকল্প পতিত আওয়ামী লীগ সরকার বাস্তবায়ন করেনি।
 
বিএনপির এই নেতা বলেন, জুলাই বিপ্লবের মধ্য দিয়ে আমরা বাক স্বাধীনতা পেয়েছি। রংপুরের মানুষ তিস্তা মহাপরিকল্পনা নিয়ে জেগে ওঠেছে। এ লক্ষ্যে তিস্তা নদীর পানি চুক্তি ও মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে ‘জাগো বাহে তিস্তা বাঁচাই’ শ্লোগানে ১৭ ও ১৮ ফেব্রুয়ারি রংপুরের ৫ জেলার তিস্তা নদীর ১১টি পয়েন্টে লক্ষাধিক মানুষ নিয়ে টানা ৪৮ ঘণ্টার কর্মসূচি পালন করা হবে। এ কর্মসূচির মাধ্যমে তিস্তা পানি নিয়ে বৈষম্যের বিষয়টি গোটা বিশ্ববাসীকে জানিয়ে দেওয়া হবে।

আসাদুল হাবীব দুলু বলেন, সম্প্রতি সরকারের দু’জন উপদেষ্টা রংপুরে তিস্তা নদী গণশুনানীতে বলে গেছেন। তারা এবছর তিস্তা নদীতে কিছু কাজ করতে চান। এ বিষয়ে তিস্তাপাড়ের মানুষের মাঝে আপত্তি রয়েছে। মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের আগে তিস্তায় বিক্ষিপ্ত কাজ করে জনগণের ট্যাক্সের টাকা অপচয় করার প্রয়োজনীয়তা নেই। তিস্তাপাড়ের মানুষ অনেক কষ্ট স্বীকার করেছে। বিলম্ব হলেও পরিকল্পিতভাবে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন চাওয়া সকলের।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সামসুজ্জামান সামু, সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট মাহফুজ-উন-নবী ডন, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আনিছুর রহমান লাকু, সদস্য এমদাদুল হক ভরসা, সালেকুজ্জামান সালেকসহ অন্যরা।

সেলিম সরকার/মাহফুজ 

 

রাউজানে ছাত্রদল নেতা গুলিবিদ্ধ

প্রকাশ: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৭:২৭ পিএম
আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৭:২৭ পিএম
রাউজানে ছাত্রদল নেতা গুলিবিদ্ধ
গুলিবিদ্ধ পিয়ার মোহাম্মদ চৌধুরী বাবু। ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রামের রাউজানে আবারও গুলির ঘটনা ঘটেছে। শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে রাউজানের পূর্ব গুজরা ইউনিয়নে ছাত্রদলের সাবেক এক নেতাকে গুলি করে পুকুর পাড়ে ফেলে গেছে সন্ত্রাসীরা। গুলিবিদ্ধ পিয়ার মোহাম্মদ চৌধুরী বাবুকে (৩৮) চট্টগ্রাম শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। 

পিয়ার মোহাম্মদ রাউজান সদর ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের খানখানাবাদ গ্রামের হাফেজ মাওলানা নুর মোহাম্মদের পুত্র এবং রাউজান কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক বলে জানা গেছে। 

পিয়ার মোহাম্মদের মা মোরশেদা বেগম সাংবাদিকদের বলেন, তার ছেলে রোজা রেখে পুকুর সেচের কাজ দেখতে বের হয়। ১১টার পর খবর পান তার ছেলেকে কে বা কারা গুলি করে ফেলে গেছে। 

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রাউজান উপজেলার পূর্ব গুজরা ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের উত্তর গুজরা গ্রামের শ্রী শ্রী অন্নদা ঠাকুর আদ্যপীঠ রামকৃষ্ণ সংঘ মন্দির সংলগ্ন পুকুর পাড়ে এই গুলির ঘটনা ঘটে। ঠিকাদারি কাজের চাঁদাবাজি নিয়ে এই ঘটনা ঘটতে পারে স্থানীয়দের কেউ কেউ মন্তব্য করেছেন। আবার কেউ কেউ ধারণা করছেন, গত ১৩ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হওয়া হযরত চাঁদ শাহ (রা.) এর বার্ষিক ওরসকে কেন্দ্র করে এই ঘটনা ঘটতে পারে। 

অন্নদা ঠাকুর আদ্যপীঠ রামকৃষ্ণ সংঘ মন্দিরের পুরোহিত তপন চক্রবর্তী সাংবাদিকদের বলেন, মন্দিরের সামনের পুকুরে ঘাট নির্মাণে সরকারি বরাদ্দ এসেছে। উপ-ঠিকাদার হিসেবে পিয়ার মোহাম্মদ কাজটি করার জন্য পুকুরের পানি সেচের কাজ তদারক করতে পুকুর পাড়ে আসার আসার পথে তাকে গুলি করে ফেলে দিয়ে গেছে। ঘটনার সময় তারা সেখানে ছিলেন না। তবে মন্দিরের ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার ভিডিও পুলিশ নিয়ে গেছে।  

রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, ঘটনাস্থল থেকে ৫-৬ রাউন্ড গুলির খোসা উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে।

এর আগে গত ২৪ জানুয়ারি মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম নামে এক ব্যবসায়ীকে গুলি করে হত্যা করা হয়। ওই ঘটনায় কোনো আসামিকে ধরতে পারেনি পুলিশ।

মাহফুজ

ঠাকুরগাঁওয়ের হারিয়ে যাওয়া ১৩ নদীর সন্ধান, পুনঃখননের দাবি

প্রকাশ: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৭:১৭ পিএম
ঠাকুরগাঁওয়ের হারিয়ে যাওয়া ১৩ নদীর সন্ধান, পুনঃখননের দাবি
ছবি: খবরের কাগজ

একসময় ঠাকুরগাঁও জেলার বুক চিরে বয়ে যাওয়া নদ-নদীগুলো ছিল প্রাণচাঞ্চল্যের প্রতীক। লঞ্চ, ট্রলার আর মাছ ধরার নৌকার কোলাহলে মুখরিত এসব নদী এখন শুধুই স্মৃতি। গত ৫০ বছরে অন্তত ১৩টি নদ-নদী মানচিত্র থেকে হারিয়ে গেছে। সম্প্রতি পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) এক অনুসন্ধানে এই হারিয়ে যাওয়া নদীগুলোর অস্তিত্বের চিহ্ন পাওয়া গেছে।

ঠাকুরগাঁও পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. গোলাম যাকারিয়া জানান, বর্তমানে জেলার চিহ্নিত নদীর সংখ্যা মাত্র ১৪টি। নতুন করে পাওয়া ১৩টি নদীর তথ্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। তিনি বলেন, ‘যদি প্রকল্প অনুমোদন হয়, তবে নদীগুলো দখলমুক্ত করে পুনঃখনন করা হবে।’

জেলার বিভিন্ন এলাকায় হারিয়ে যাওয়া নদীগুলোর মধ্যে রয়েছে- রশিয়া, হাতুরি, জলই, পুনর্ভবা, মরা গোগরা, চাড়াল বান্দ, নহনা, আমান-ধামান, কাহালাই, বাগমারা, সারডুবি, মরাটাঙ্গন ও ভক্তি নদ। অধিকাংশ নদী শুকিয়ে ফসলি জমিতে পরিণত হয়েছে, কোথাও আবার সংকীর্ণ খালে পরিণত হয়েছে।

সদর উপজেলার ভেলাজান এলাকার প্রবীণ শিক্ষক রফিকুল ইসলাম (৬৫) বলেন, ‘ছোটবেলায় দেখেছি, এই নদীতে লঞ্চ চলত। এখন শুধু স্মৃতিতে রয়ে গেছে।’
সদর উপজেলার শুখানপুকুরী ও বালিয়া ইউনিয়নের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ সারডুবি নদ এখন প্রায় মৃত। পাউবোর সদর উপজেলার কার্য সহকারী শফিউজ্জামান জানান, এই নদীর ৭০ শতাংশ জমিতে এখন চাষাবাদ হয়, বাকি অংশ সংকীর্ণ খালে রূপ নিয়েছে।

পীরগঞ্জ উপজেলার কাহালাই নদ প্রায় পুরোপুরি শুকিয়ে গেছে। পাউবোর পীরগঞ্জ কার্যালয়ের সহকারী কর্মকর্তা শারাফাত হোসেন বলেন, নদীর ৭৫ শতাংশ জায়গায় চাষাবাদ হচ্ছে।

স্থানীয় কৃষক আব্দুল হামিদ (৫০) বলেন, আগে এই নদীর পানি সেচের জন্য ব্যবহার করা হতো। এখন নদী না থাকায় চাষাবাদেও সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।

পরিবেশবাদী সংগঠন ‘সৃজন’-এর সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, দখল, দূষণ এবং প্রশাসনিক উদাসীনতার কারণে নদীগুলো বিলীন হয়েছে। অনুসন্ধান করলে এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক ইশরাত ফারজানা জানান, কৃষিনির্ভর অর্থনীতির কথা বিবেচনা করে ১৩টি নদীর পুনরুদ্ধারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

একসময় এসব নদী ঠাকুরগাঁওয়ের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও স্থানীয় মানুষের জীবন-জীবিকার অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিল। যদি নদীগুলো পুনরুদ্ধার করা যায়, তাহলে শুধু পরিবেশ নয়, মানুষের জীবনও ফিরে পাবে তার হারানো প্রাণচাঞ্চল্য।

নবীন হাসান/মাহফুজ 

 

পাংশায় প্রাইভেট কারের ধাক্কায় শিশু নিহত, আহত ২

প্রকাশ: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৭:১৬ পিএম
পাংশায় প্রাইভেট কারের ধাক্কায় শিশু নিহত, আহত ২
খবরের কাগজ গ্রাফিকস

রাজবাড়ীর পাংশায় প্রাইভেট কারের ধাক্কায় ভ্যানযাত্রী ইসরাত (৪) নামের এক শিশু নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় তার বড় বোন সুমাইয়া (১৮) ও ভ্যানচালক হেলাল গুরুতর আহত হয়েছেন।

শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৪টার দিকে রাজবাড়ী-কু‌ষ্টিয়া আঞ্চ‌লিক সড়‌কের পাংশা মৈশালা বাসস্ট্যান্ডের অদূরে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত ইসরাত উপজেলার বাবুপাড়া ইউনিয়নের সুজানগর গ্রামের দুলাল মাস্টারের মেয়ে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সুমাইয়া ও তার ছোট বোন ইসরাত মৈশালা বাসস্ট্যান্ড থেকে ভ্যানযোগে বাড়ি ফিরছিল। পথে রাজবাড়ী থেকে আসা একটি প্রাইভেট কার পেছন থেকে ভ্যানটিকে ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যায় ইসরাত। এ ছাড়া সুমাইয়া ও ভ্যানচালকও গুরুতর আহত হন।

পাংশা হাইওয়ে থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সাজ্জাদ বলেন, প্রাইভেটকারটি আটক করা হয়েছে। তবে চালক পালিয়ে গেছে।

পাংশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. তানসু সুমা বলেন, শিশুটিকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। গুরুতর আহত সুমাইয়াকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

সুমন/মেহেদী/

রাজশাহীতে গৃহবধূর অগ্নিদগ্ধ মরদেহ উদ্ধার, স্বামী পলাতক

প্রকাশ: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৬:৩৩ পিএম
রাজশাহীতে গৃহবধূর অগ্নিদগ্ধ মরদেহ উদ্ধার, স্বামী পলাতক
প্রতীকী ছবি: সংগৃহীত

রাজশাহী নগরীর একটি ভাড়া বাসা থেকে হেলেনা আক্তার (৩৫) নামে এক গৃহবধূর অগ্নিদগ্ধ মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে নগরীর চন্দ্রিমা থানার ভদ্রা রেললাইনের পাশের বস্তির ওই বাসা থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।  

নিহত হেলেনা আক্তার নগরীর নামো ভদ্রা রেল লাইন সংলগ্ন এলাকার নায়েক আলীর মেয়ে এবং আলমগীর হোসেন ওরফে রয়েলের স্ত্রী। পুলিশ ওই নারীর দগ্ধ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজের (রামেক) মর্গে পাঠিয়েছে।

জানা গেছে, হেলেনা রয়েলকে দ্বিতীয় বিয়ে করে বস্তির এক কক্ষের একটি বাসায় ভাড়া থাকতেন। এই বিয়ের পর থেকে পরিবারের সঙ্গে তার চলাচল ছিল না।

এদিকে হেলানাকে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন তার মা ও ভাই।

তারা পুলিশের কাছে অভিযোগ করে জানান, শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) রাতের কোনো এক সময় হেলেনাকে হত্যা করা হয়েছে। তবে পুলিশ বিষয়টি নিশ্চিত হতে পারেনি।

চন্দ্রিমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মতিয়ার রহমান বলেন, সকাল ৯টার দিকে বস্তির এক লোক থানায় ফোন করে ঘরে আগুনে পোড়া মরদেহ পড়ে থাকার কথা জানান। এরপর পুলিশ গিয়ে মরদেহটি উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়। নিহতের ঘরে তেমন আসবাবপত্র নেই। মেঝেতেই ঘুমাতেন ওই নারী। আগুনে পুরো শরীর ঝলসে গেছে। পাশে শুধু একটা মশারিতে পোড়া চিহ্ন দেখা গেছে। আর কিছু পোড়েনি।

রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) সাবিনা ইয়াসমিন জানান, হেলেনার আগের স্বামীর এক ছেলে আছে। সে একটি মাদরাসার আবাসিকে থাকে। দ্বিতীয় স্বামীকে নিয়ে হেলেনা একটি ঘর ভাড়া নিয়ে থাকতেন। যে ঘরে তারা থাকতেন তার পাশের ঘরে আরেক প্রতিবন্ধী নারী থাকেন। তিনি পুলিশকে জানিয়েছেন আগুন লাগলে হেলেনার চিৎকার করার কথা। এ রকম কোনো চিৎকার তিনি শোনেননি। হেলেনার মা ও ভাইয়ের সঙ্গে পুলিশের কথা হয়েছে। তারা দাবি করছেন হেলেনাকে হত্যা করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেলেনার স্বামীকে খুঁজছি। কিন্তু তাকে পাওয়া যাচ্ছে না। তাই মনে করা হচ্ছে তিনি পালিয়েছেন। এ ব্যাপারে নিহত হেলেনার স্বজনেরা যদি হত্যা মামলা করতে চাইলে মামলা নেওয়া হবে। তবে মৃত্যু কীভাবে হয়েছে তা পুলিশি তদন্ত ও ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর বলা যাবে।

মেহেদী/