পরীক্ষায় ফেল করায় ইনচার্জকে হুমকি দেওয়া সমন্বয়ক মিজান রহমান। ছবি: সংগৃহীত
পিরোজপুরে নার্সিং পরীক্ষায় ফেল করায় পিরোজপুর নার্সিং ইনস্টিটিউটের ইনচার্জের নামে মামলার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগ থেকে ভোল পাল্টে সমন্বয়ক হওয়া মিজান রহমান নামের এক ছাত্রের বিরুদ্ধে।
মঙ্গলবার (১১ মার্চ) বাংলাদেশ নার্সিং ও মিডওয়াইফারি কাউন্সিলের অধীনে অনুষ্ঠিত পাবলিক পরীক্ষার ফলাফলে এক বিষয় অকৃতকার্য হওয়ার পর ইনচার্জ বেবী রায়ের নামে মামলার হুমকিসহ ওই ইন্সটিটিউটের অনেক ইনস্ট্রাক্টরকে বিভিন্নভাবে হয়রানির অভিযোগ উঠছে ওই ছাত্রের বিরুদ্ধে।
অভিযুক্ত মিজান রহমাস সিরাজগঞ্জ জেলার তারাস উপজেলার আবু তালেবের পুত্র এবং পিরোজপুর নার্সিং ইন্সটিটিউটের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
পিরোজপুর নার্সিং ইনস্টিটিউে ইনস্ট্রাক্টর ইনচার্জ বেবী রায় জানান, মিজান ৫ আগস্টের পূর্বে এই প্রতিষ্ঠানে আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটিয়ে চলেছে। এখনো প্রভাব খাটাচ্ছে। কোনো এক অদৃশ্য হাত তার পিছনে কাজ করছে। পরীক্ষার আগে মিজান দলবলসহ এসে পরীক্ষার হল ছেড়ে দেওয়াসহ তাকে পাশ করাতে হুমকি দেন। পরে পরীক্ষায় ফেল করলে আমার নামে মিথ্যাচার ও মামলাসহ বিভিন্ন রকম হুমকি দিচ্ছে। আমরা এর বিচার চাই।
নার্সিং ইনস্টিটিউট সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশ নার্সিং ও মিডওয়াইফারি কাউন্সিলের অধীনে গত নভেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত পাবলিক পরীক্ষার ফলাফল গত মঙ্গলবার (১১ মার্চ) প্রকাশিত হয়। তাতে সমন্বয়ক মিজান এক বিষয় অকৃতকার্য হন। পরে তিনি প্রভাবশালী নার্স নেতা, কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক, স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের দিয়ে নার্সিং ইনস্টিটিউটের কর্তৃপক্ষকে ফোন দিয়ে পাশ করানোর জন্য চাপ দিতে থাকেন। তাতেও কাজ না হলে প্রতিষ্ঠানের ইনস্ট্রাক্টর ইনচার্জ বেবী রায়ের নামে মামলা করার হুমকি দেন।
এ বিষয়ে নার্সিং ইনস্টিটিউটটির ইনস্ট্রাকটর প্রভা রানী বড়াল বলেন, ‘মিজানুর রহমান আমাদের নার্সিং ইনস্টিটিউটের একজন শিক্ষার্থী। গত ১১ মার্চ বিএনএমসির রেজাল্ট দেওয়ার পর থেকে সে বিভিন্নভাবে সমন্বয়ক ও রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের দিয়ে ফোন দিয়ে পাশ করানোর ব্যাপারে হুমকি দেয়। সে যে বিষয়ে ফেল করেছে, সে বিষয়ে আমাদের কোনো টিচার পরীক্ষা নেয়নি। সাধারণ ঐ বিষয়ে বাইরের টিচার নিয়োগ দেওয়া হয়। আমরা টিচার হিসেবে কখনও কোনো শিক্ষার্থী ফেল করুক সেটা চাইনা।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘মিজান সব সময় সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী নাসিমের প্রভাব দেখাতো। সে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা নিতো। গত ৫ আগস্টের পর হঠাৎ তিনি সমন্বয়ক বনে যান। তিনি পরীক্ষায় ফেল করে আমাদের ইনস্ট্রাক্টরদের বিভিন্নভাবে হয়রানি করছে। পড়ালেখায় পাশ-ফেল তো থাকবেই এটা কেন মানতে পারবেনা, এখানে কেন প্রভাব দেখাতে হবে। অবিলম্বে তাকে এই প্রতিষ্ঠান থেকে বহিষ্কার করা উচিত এবং তার ছাত্রত্ব বাতিল করা উচিত।’
অভিযোগ অস্বীকার করে মিজানুর রহমান বলেন, ‘তারা আমার শিক্ষক। তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা তো দূরের কথা কোনো খারাপ কথাও আমি বলিনি। তিনি এর চেয়ে বেশি কিছু ফোনে বলবেন না বলে কল কেটে দেন।’
হাসিবুল ইসলাম/সুমন/