
দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে গত ২০২৩ সালের ২১ জুন আওয়ামী লীগের অধীনে সিলেট সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করায় আজীবন বহিষ্কার করা হয় সিলেট মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক উসমান হারুন পনিরকে। এই বহিষ্কার আদেশ এখনো প্রত্যাহার না হলেও তাকে সাংগঠনিক দল প্রধান করে থানা কমিটি করেছে মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দল। তবে সিলেট মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মাহবুবুল হক চৌধুরী দাবি করেছেন তার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে।
আওয়ামী লীগের অধীনে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করায় ২০২৩ সালের ৫ জুন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ায় ৪৩ নেতাকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়। আজীবন বহিষ্কার তালিকায় ছিল সিলেট মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক উসমান হারুন পনিরের নাম। কারণ তিনি সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ৩৮নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদের প্রার্থী ছিলেন। তবে তার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার না হলেও তাকে সাংগঠনিক দল প্রধান করে কমিটি করেছে সিলেট মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দল।
সিলেট মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দল সূত্রে জানা যায়, স্বেচ্ছাসেবক দল সিলেট শাখার অধীনে থানা কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া চলছে। সেজন্য ৬টি থানায় সাংগঠনিক টিম গঠন করে দিয়েছে মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দল। এই ৬ থানার একটি বিমানবন্দর থানা। এই বিমানবন্দর থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের টিম প্রধান করা হয়েছে উসমান হারুন পনিরকে। এ কমিটি গত বৃহস্পতিবার সিলেট নগরীতে আলোচনা সভার আয়োজন করে। উসমান হারুন পনিরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ আলোচনা সভায় অংশ নেন মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মাহবুবুল হক চৌধুরী ও সদস্য সচিব আফসর খান।
এদিকে আজীবন বহিষ্কৃত নেতা নিয়ে সিলেট মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীদের মাঝে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে সিলেট মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের এক যুগ্ম আহ্বায়ক খবরের কাগজকে বলেন, আজীবন বহিষ্কার করে, আবার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার না করে দায়িত্ব দেওয়া সাংগঠনিক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করবে। দুর্দিনে ব্যক্তিগত স্বার্থে যারা দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করেছেন তাদের পদায়ন করা দুঃখজনক। আর যদি তার বহিষ্কার আদেশ প্রত্যাহার করা হয় তাহলে সেটা কেন প্রকাশ করা হলো না।
সিলেট মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের আরও কয়েকজন কর্মী খবরের কাগজকে বলেন, উসমান হারুন পনিরের মত সুবিধাবাদী নেতারা সবসময় নিজের স্বার্থ বুঝেন। তিনি কখনোই দল বা দলের তৃণমূলের নেতাকর্মীদের জন্য কাজ করবেন না। দলে আবার দুঃসময় আসলে দেখা যাবে তিনি আবার নিজের খোলস পরিবর্তন করেছেন। তিনি আজীবন বহিষ্কৃত হওয়ার পরও মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের দায়িত্বশীলরা তাকে কমিটির প্রধান পদ দিলেন। বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভি তাকে বহিষ্কার করেছেন। যদি আমাদের নেতা তার বহিষ্কার আদেশ প্রত্যাহার করে থাকেন তাহলে আমরা তৃণমূলের নেতা কর্মীরা কেন সেটা জানি না।
এ বিষয়ে সিলেট মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মাহবুবুল হক চৌধুরী খবরের কাগজকে বলেন, তার বহিষ্কার আদেশ প্রত্যাহার হয়েছে। এটা প্রকাশ হয়নি কারণ এটা আমাদের সংগঠনের ভিতরের খবর। আমরা জানি উনার বহিষ্কার আদেশ কেন্দ্রীয় কমিটি প্রত্যাহার করেছে। কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব আমাদেরকে জানিয়েছেন তার বহিষ্কার আদেশ প্রত্যাহার হয়েছে। এরপরই আমরা তাকে সাংগঠনিক দায়িত্ব দিয়েছি।
শাকিলা ববি/এমএ