ঢাকা ৯ চৈত্র ১৪৩১, রোববার, ২৩ মার্চ ২০২৫
English

গাজীপুর জেলা কারাগারে কয়েদির আত্মহত্যা, তদন্ত কমিটি গঠন

প্রকাশ: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৯:৪০ পিএম
গাজীপুর জেলা কারাগারে কয়েদির আত্মহত্যা, তদন্ত কমিটি গঠন
খবরের কাগজ গ্রাফিকস

গাজীপুর জেলা কারাগারের ভেতর দুই বছরের সাজাপ্রাপ্ত কয়েদি ওমর ফারুক (৩৩) গলায় কম্বল পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। এঘটনায় জেল কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে তিন কার্য দিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।

সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাতে গাজীপুর জেলা কারাগারের ভেতর গলায় কম্বল পেঁচিয়ে কয়েদী ওমর ফারুক আত্মহত্যা করেন বলে জানান কারাগারের জেল সুপার মোহাম্মদ রফিকুল কাদের।

জেল সুপার জানান, সোমবার রাত আড়াইটা থেকে তিনটার মধ্যে দক্ষিণ পাশে ১নং সেলের গরাদের সঙ্গে কম্বল পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা চালায়। কর্তব্যরত কারাগারের কর্মচারীরা ঘটনাটি দেখার সঙ্গে সঙ্গে সেলের তালা খুলে তাকে গলার ফাঁস মুক্ত করে প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য ফার্মাসিস্টকে খবর দেয়। তার শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাৎক্ষণিকভাবে ভোর সাড়ে ৩টার দিকে চিকিৎসার জন্য শহিদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হলে চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে কয়েদি ওমর ফারুককে মৃত ঘোষণা করেন। মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করা হবে।’ 

তিনি জানান, চলতি বছরের ২৫ জানুয়ারি ওমর ফারুককে এ কারাগারে আনা হয়। গত ৩ ফেব্রুয়ারি তাকে ২ বছর সশ্রম কারাদণ্ড, ৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড ও অনাদায়ে দুই মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডাদেশের আদেশ দেন গাজীপুর চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। গত ২৯ জানুয়ারি কয়েদি ওমর ফারুক গাজীপুর জেলা কারাগারের সার্জেন্ট ইন্সট্রাকটর মো. ফয়েজ উদ্দিনকে কেইস টেবিলে মারধর করে রক্তাক্ত করে। পরে তার বিরুদ্ধে গাজীপুর মেট্টোপলিটন পুলিশ সদর মেট্টো থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়।

এঘটনায় কারা কর্তৃপক্ষ তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। কারা উপমহাপরিদর্শক মো: জাহাঙ্গীর কবির স্বাক্ষরিত এক পত্রে তথ্য জানা হয়েছে। তদন্ত কমিটির সদস্যরা হলেন, গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২ এর জেল সুপার আল মামুন, কিশোরগঞ্জ জেলা কারাগারের জেলার সর্বোত্তম দেওয়ান ও কাশিমপুর হাই-সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের ডেপুটি জেলার মোহাম্মদ ইব্রাহীম। গঠিত তদন্ত কমিটিকে আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

পলাশ প্রধান/মাহফুজ

 

ফতুল্লায় সিলিন্ডার বিস্ফোরণে একই পরিবারের ৩ জন দগ্ধ

প্রকাশ: ২৩ মার্চ ২০২৫, ০১:৩২ পিএম
আপডেট: ২৩ মার্চ ২০২৫, ০১:৪৬ পিএম
ফতুল্লায় সিলিন্ডার বিস্ফোরণে একই পরিবারের ৩ জন দগ্ধ
ছবি: খবরের কাগজ

নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় একটি বাড়িতে জমে থাকা সিলিন্ডারের গ্যাসে আগুন লেগে বিস্ফোরণে নারীসহ একই পরিবারের তিনজন দগ্ধ হয়েছেন।

শনিবার (২২ মার্চ) রাতে তল্লা এলাকার মামুন মিয়ার বাড়িতে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

দগ্ধরা হলেন- হারুন অর রশিদ, তার স্ত্রী রুনা আক্তার ও মেয়ে মিম আক্তার। তাদের বাড়ি বরগুনার আমতলী উপজেলা চাউরা গ্রামে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, তল্লা এলাকায় মামুন মিয়ার বাড়িতে রাতে সাহরির রান্না করার জন্য রুনা চুলা জ্বালাতে গেলে শরীরে আগুন ধরে যায়। এ সময় তার স্বামী ও মেয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করলে তারাও দগ্ধ হন। পরে প্রতিবেশীরা তাদেরকে রাজধানীর জাতীয় বার্ণ অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করেন।

হাসপাতালের আবাসিক সার্জন শাওন বিন রহমান জানান, রুনা আক্তারের শরীরের ৬২ শতাংশ, হারুন অর রশিদের ১ শতাংশ ও মেয়ে মিমের শরীরের ১ শতাংশ পুড়ে গেছে। তাদের ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল আরেফিন জানান, ধারণা করা হচ্ছে সিলিন্ডার গ্যাসের পাইপের লিকেজ থেকে গ্যাস জমে এই বিস্ফোরণ ঘটেছে।

বিল্লাল/মেহেদী/

চট্টগ্রামে কোটি টাকার ভারতীয় সিগারেট জব্দ, গ্রেপ্তার ২

প্রকাশ: ২৩ মার্চ ২০২৫, ০১:২৭ পিএম
আপডেট: ২৩ মার্চ ২০২৫, ০১:৩৩ পিএম
চট্টগ্রামে কোটি টাকার ভারতীয় সিগারেট জব্দ, গ্রেপ্তার ২
চট্টগ্রামে কোটি টাকার ভারতীয় সিগারেট জব্দ এবং এর সঙ্গে জড়িত দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ছবি: খবরের কাগজ

চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) বিশেষ অভিযানে ৬ হাজার ৩৮০ কার্টন ভারতীয় সিগারেট জব্দ করা হয়েছে। যার বাজার মূল্য আনুমানিক এক কোটি টাকা। এ সময় একটি পিকআপসহ দুই জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

রবিবার (২৩ মার্চ) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে হাটহাজারী উপজেলার চিকনদন্ডী ইউনিয়নের আমান বাজার এলাকায় চট্টগ্রামগামী আঞ্চলিক মহাসড়কে অভিযান চালিয়ে এসব সিগারেট জব্দ করা হয়। উদ্ধার সিগারেটগুলো ওরিস ও মন্ড ব্র্যান্ডের ছিল এবং এতে মোট ৬৩ হাজার ৮০০ প্যাকেট সিগারেট রয়েছে।

গ্রেপ্তারদের মধ্যে একজন হলেন মো. শওকত আকবর (৩৪) এবং অপরজন পিকআপ চালক মো. বাদশা (২৬)। তারা দুজনেই রাঙ্গামাটি জেলার কোতোয়ালী থানার বাসিন্দা।

চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শিল্পাঞ্চল ও ডিবি) মো. রাসেল জানিয়েছেন, বিশেষ তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে এই সিগারেট ও অপরাধীদের গ্রেপ্তার করা হয়। উদ্ধার সিগারেট ও পিকআপ হাটহাজারী থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে এবং গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

তাওফিক/ 

সাতকানিয়ায় প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে যুবকের মৃত্যু

প্রকাশ: ২৩ মার্চ ২০২৫, ০১:০৭ পিএম
সাতকানিয়ায় প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে যুবকের মৃত্যু
নিহত সুবীর চক্রবর্তী। ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলায় জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে এবং তার বড়ভাই আহত অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। 

শুক্রবার (২১ মার্চ) রাত সাড়ে ১০ টার দিকে উপজেলার পুরানগড় ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ফকিরখীল গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত যুবকের নাম সুবীর চক্রবর্তী (৩৪)। তার বড়ভাই পল্লী চিকিৎসক প্রবীর চক্রবর্তী। তাদের পিতা মৃত অরুণ চক্রবর্তী। 

অভিযুক্তরা হলেন, একই এলাকার মৃত অরুন দাসের পুত্র রূপক দাস (৫০), দীপক দাস (৫২), অলক দাস (৪৫) এবং দীপক দাসের ছেলে অমিত দাস (২০) ও দীপ্ত দাস (১৮)।

জানা যায়, নিহত সুবীর চক্রবর্তীর পরিবারের সঙ্গে রূপক দাসের পরিবারের দীর্ঘ সময় জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল এবং প্রায় দুই বছর আগে এ নিয়ে তাদের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে। যার প্রেক্ষিতে একটি মামলা হয়। বর্তমানে মামলাটি আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।

সর্বশেষ গত শুক্রবার প্রতিপক্ষ রূপক দাস ও তার পরিবারের সদস্যরা নিহত সুবীরের স্ত্রী জয়শ্রী চক্রবর্তী ও প্রবীরের স্ত্রী সোমা ভট্টাচার্যকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে পুনরায় বিরোধ সৃষ্টি হয়। একইদিন রাতে স্থানীয় সমাজপতি সুশীল দাস সুবীর ও তার বড়ভাইকে পূজার বিষয়ে আলাপচারিতার জন্য ডাকেন। সেখানে যাওয়ার পথে তাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায় প্রতিপক্ষ গ্রুপ এবং সুবীরকে ছুরিকাঘাত করে। তার বড়ভাই বাঁধা দিতে গেলে তাকেও ছুরিকাঘাত করা হয়।

নিহত সুবীর চক্রবর্তীর স্ত্রী জয়শ্রী চক্রবর্তী খবরের কাগজকে বলেন, ‘আমার স্বামী দোকান থেকে ফিরে সুশীল দাসের সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার পথে রূপক দাসের পরিবার তার ওপর হামলা চালায় এবং তাকে হত্যার উদ্দেশে ছুরিকাঘাত করে। স্থানীয়রা তাকে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। আমি আমার স্বামীর হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবি জানাচ্ছি।’

সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাহেদুল ইসলাম জানান, সংবাদ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তবে এ ঘটনায় অভিযুক্তদের বাড়িতে পাওয়া যায়নি। নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য চমেক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। 

এদিকে শনিবার (২২ মার্চ) প্রবীর চক্রবর্তী বাদী হয়ে সাতকানিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।  মামলায় ১২ জনকে আসামি করা হয়েছে। আসামিদের মধ্যে দীপক দাসের স্ত্রী ঝুমুর দাস, রূপক দাসের স্ত্রী স্বপ্না দাস ও মেয়ে অন্তরা দাসকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানান ওসি মো. জাহেদুল ইসলাম।

মামলার অন্য আসামিরা হলেন, রূপক দাস, দীপ্ত দাস, অলক দাস, দীপক দাস, প্রিয়ম দাস কালু ও সুদীপ্ত দাস। 

আরিফুল/তাওফিক/ 

দাউদকান্দি মডেল থানায় নষ্ট হচ্ছে কোটি টাকার গাড়ি

প্রকাশ: ২৩ মার্চ ২০২৫, ১২:৪৫ পিএম
আপডেট: ২৩ মার্চ ২০২৫, ১২:৪৮ পিএম
দাউদকান্দি মডেল থানায় নষ্ট হচ্ছে কোটি টাকার গাড়ি
ছবি : খবরের কাগজ

কুমিল্লার দাউদকান্দি মডেল থানার ভিতরে অযত্ন-অবহেলা আর যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে খোলা আকাশের নিচে পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের নামী-দামি মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন যানবাহন। রোদবৃষ্টি আর ধুলা-ময়লায় মরিচা পড়ে নষ্ট হচ্ছে কোটি টাকার এসব যানবাহন। বিভিন্ন জটিলতায় দীর্ঘদিন ধরে অযত্ন-অবহেলায় যানবাহনগুলো পড়ে থেকে হারিয়ে ফেলছে চলাচলের ক্ষমতা। 

জানা যায়, সড়ক দুর্ঘটনা, চুরি, চোরাই পণ্য পরিবহন, মাদকদ্রব্য বহনসহ বিভিন্ন অভিযোগে পুলিশ ও ট্রাফিক পুলিশের জব্দ করা মোটরসাইকেল, মাইক্রোবাস, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, প্রাইভেট কার, পিকআপ ভ্যান, ট্রাক আটক করার পর মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত এসব যানবাহন অযত্নে পড়ে থাকছে থানার ভিতরে খোলা আকাশের নিচে। দিনের পর দিন সঠিক রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে নষ্ট হচ্ছে যানবাহনগুলো। একটা সময় পরে এগুলো ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। এতে করে সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে। 

জানা যায়, মূলত তিনটি কারণে থানায় জব্দ যানবাহন নষ্ট হচ্ছে। গাড়ি ছাড়িয়ে নিতে মালিকের না আসা, আদালতের নির্দেশনা ছাড়া এসব যানবাহন নিলামে বিক্রি করতে না পারা এবং থানা কর্তৃপক্ষও জব্দ যানবাহন সম্পর্কে আদালতকে অবগত না করায় কোটি টাকার সম্পদ অনায়াসে ধ্বংস স্তুপে পরিণত হচ্ছে। এতে করে সরকার মোটা অংকের রাজস্ব হারাচ্ছে। 

মামলার আলামত হিসেবে এসব যানবাহন জব্দ করা হলেও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে খোলা আকাশের নিচে মাসের পর মাস পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে। দিনে দিনে যানবাহনগুলো বিকল হয়ে পড়লেও সংরক্ষণের উদ্যোগ নেই কর্তৃপক্ষের।  

কবি সাহিত্যিক ও সাংবাদিক হোসাইন মোহাম্মদ দিদার খবরের কাগজকে বলেন, 'মডেল থানায়  অনেক গাড়ি পড়ে আছে। এসব গাড়ি বিক্রি করে দিলে যেমন থানার পরিবেশ সুন্দর হয়, তেমনি সরকার কোটি কোটি টাকা রাজস্ব পাবে। এমন কোনো উদ্যোগ নেই কর্তৃপক্ষের। আমি আশা করব দ্রুত কতৃপক্ষ এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিবে। 

দাউদকান্দি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জুনায়েত চৌধুরী বলেন, 'গাড়িগুলো বিভিন্ন মামলার আলামত। আদালত নির্দেশনা না দিলে আমাদের কিছু করার নেই। কাগজপত্র না থাকলে কিংবা আদালতে মামলা থাকলে নিষ্পত্তির জটিলতায় বেশিরভাগ মালিক যোগাযোগ করেন না। আদালতের নির্দেশনা না আসায় গাড়িগুলো মালিককে ফেরত দেওয়া যাচ্ছে না।'

লিটন সরকার বাদল/জোবাইদা/

সাতক্ষীরায় ছয় হাজার মানুষের সম্মিলন

প্রকাশ: ২৩ মার্চ ২০২৫, ১২:৩০ পিএম
সাতক্ষীরায় ছয় হাজার মানুষের সম্মিলন
সাতক্ষীরার কালীগঞ্জের নলতায় খান বাহাদুর আহ্ছান উল্লাহ (রহ.)-এর রওজা শরিফে ইফতার করছেন রোজাদাররা। ছবি: খবরের কাগজ

সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলার নলতায় খান বাহাদুর আহ্ছান উল্লাহ (রহ.)-এর রওজা শরিফে একসঙ্গে ইফতার করেন প্রায় ছয় হাজার মানুষ। এ ছাড়া আশপাশের এলাকায় আরও চার হাজার মানুষের ইফতারি পাঠানো হয় রওজা শরিফ থেকে। 

সম্প্রতি সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় ইফতারি প্রস্তুতের বিশাল কর্মযজ্ঞ। কেউ শিঙাড়া ভাজছেন, কেউ ভাজছেন পেঁয়াজু, কেউ  ব্যস্ত প্লেট সাজাতে। শিঙাড়া ভাজতে ব্যস্ত মোক্তার হোসেন জানান, তিনি ৩০ বছর ধরে নলতা রওজা শরিফের ইফতার আয়োজনে নিয়োজিত রয়েছেন। তার মতোই ২২-২৫ জন ফজরের নামাজের পরপরই ইফতারি তৈরির কাজ শুরু করেন।

প্রায় ছয় হাজার মানুষের ইফতারি তৈরিতে সময় লেগে যায় আসরের নামাজ পর্যন্ত। তারপর শুরু হয় ইফতারি সাজানোর কাজ। দিন গড়িয়ে ইফতারের সময় যতই ঘনিয়ে আসে, ততই ভরতে থাকে ইফতারের জন্য প্যান্ডেল খাটানো বিশাল মাঠ। এই মাঠে বসেই ইফতারে অংশ নেন দূর-দূরান্ত থেকে আসা মানুষ।

নলতা রওজা শরিফের ঐতিহ্যবাহী ইফতারে অংশ নিতে সাতক্ষীরার তালা উপজেলার খলিষখালী থেকে গাড়িভর্তি করে এসেছিলেন অনেকে। এদের মধ্যে মেহেদী হাসান বলেন, ‘খান বাহাদুর আহ্ছান উল্লাহ (রহ.)-এর পাক রওজা শরিফ একটি পবিত্র স্থান হিসেবে সমাদৃত। এখানেই দেশের সবচেয়ে বড় ইফতার মাহফিল বসে। প্রতিবছরের মতো এবারও ইফতার করতে নলতায় এসেছি।’

নলতা রওজা শরিফ সূত্রে জানা যায়, ১৯৫০ সাল থেকে প্রতিবছর রমজানে রওজা চত্বরে বিশাল ছাউনি তৈরি করে ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হয়। তখন এ ইফতার মাহফিলের আয়োজন করতেন হজরত শাহ্ ছুফী খান বাহাদুর আহ্ছান উল্লাহ (রহ.)। তিনি ছিলেন একজন প্রখ্যাত শিক্ষাবিদ, শিক্ষা সংস্কারক ও সমাজহিতৈষী। তার মৃত্যুর পরও এ ধারাবাহিকতা বজায় রয়েছে। 

রোজাদারদের জন্য এখানে প্রতিদিন ৬০০ কেজি দুধ দিয়ে তৈরি করা হয় ফিরনি। সেদ্ধ করা হয় ১০ হাজার ডিম। এ ছাড়া ছোলা ভুনা, কলা, খেজুর, শিঙাড়া ও চিড়ার ব্যবস্থা থাকে।

স্থানীয়রা জানান, প্রতিবছর রমজানে ইফতার, তারাবিহ ও ইতিকাফ উপলক্ষে নলতা রওজা শরিফে ৮ লক্ষাধিক টাকা ব্যয়ে বাঁশ-খুঁটি দিয়ে টিনের ছাউনি তৈরি করা হয়। দৈনিক ইফতারিতে খরচ হয় গড়ে প্রায় তিন লাখ টাকা। দিনে দিনে এর ব্যাপ্তি আরও বাড়ছে।

তারা বলেন, আসরের নামাজের পরপরই ইফতারি দিয়ে শুরু হয় প্লেট সাজানোর কাজ। এলাকার ছোট-বড় সব মিলিয়ে ২০০ জন যুবক প্রতিদিন স্বেচ্ছাশ্রমে এসব কাজ করে যাচ্ছেন।

স্বেচ্ছাসেবক রাকিব হোসেন বলেন, ‘প্রতিবছর রমজান মাসে এখানে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করতে খুবই ভালো লাগে। আমরা রমজান মাসের অপেক্ষায় থাকি। একসঙ্গে প্রায় ১০ হাজার মানুষ ইফতার করেন। আমাদের সৌভাগ্য যে এতগুলো রোজাদারের খেদমত করতে পারছি।’

এ ব্যাপারে নলতা কেদ্রীয় আহ্ছানিয়া মিশনের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম বলেন, নলতা পাক রওজা শরিফে প্রতিদিন ১০ হাজার মানুষের ইফতারের আয়োজন করা হয়। এর মধ্যে ৬ হাজার মুসল্লি রওজা শরিফ প্রাঙ্গণে একই ছাউনির নিচে বসে একত্রে ইফতার করেন। আর বাকি ৪ হাজার মানুষের ইফতারি এলাকার বিভিন্ন মসজিদ, মিশন ও বাড়িতে বাড়িতে পাঠানো হয়।