
বগুড়ার গাবতলী উপজেলার মহিষাবান ইউনিয়নের ২০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী পোড়াদহ মেলার দ্বিতীয় দিনে বসেছে ‘বউ মেলা’। এ মেলায় কেনাকাটা করেন মেয়েরা, বিক্রেতাও মেয়েরা। ছোটবড় সব বয়সী মেয়েরাই এখানে বেচাকেনা করেন। এ জন্য মেলার নাম দেওয়া হয়েছে ‘বউ মেলা’।
বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকেই এলাকার নানা বয়সী মেয়েরা কেনাকাটার জন্য আসতে থাকেন। দুপুরের দিকে মেলা পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে ক্রেতাদের পদভারে।
মেলায় আসা আরশি, রোকেয়া, মায়মুনা বেগম জানান, তারা প্রতি বছর নিজেদের ব্যবহারের জন্য কসমেটিক্স ও ইমিটেশনের গয়না কেনেন এই মেলায়। এবারও এসেছেন। তবে এবার দাম কিছুটা বেশি। মেলায় চুড়ি, ফিতা, দুল, মালা, আংটিসহ সব ধরনের ইমিটেশন রয়েছে। বিক্রেতা আলেয়া এবং খাদিজা বেগম জানান, বেচাবিক্রি খুব ভালো।
প্রতিটি বাড়িতে নতুন বউ-জামাই যেমন আসেন, তেমনি পুরোনো আত্মীয়স্বজনও কেউ বাদ পড়েন না। কিন্তু সেসব আত্মীয়স্বজনের মধ্যে শুধু পুরুষরাই পোড়াদহ মেলায় যাওয়ার সুযোগ পান। নিরাপত্তা এবং বিশৃঙ্খলার আশঙ্কায় মেলায় নারীরা ঢুকতে পারতেন না। এ কারণে ২০ বছর আগে নারীদের নিয়ে এ মেলার আয়োজন করা হয়। এরপর থেকেই পোড়াদহ মেলার পরের দিন এ মেলা বসে।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই ত্রিপল ও সামিয়ানা টানিয়ে পসরা সাজিয়ে বসেন দোকানিরা। মেয়েদের প্রসাধনসামগ্রীই মেলার প্রধান উপজীব্য হলেও এর সঙ্গে জায়গা পায় ছোটদের খেলনাসামগ্রী আর গৃহস্থালির প্রয়োজনীয় সামগ্রী।
বউ মেলায় প্রথমবার কেনাকাটা করতে এসে স্থানীয় জমিলা খাতুন বলেন, ‘মেলায় শুধু নারীরাই ক্রেতা, আবার অনেক দোকানে নারীরাই বিক্রেতা হওয়ায় নির্বিঘ্নে ঘুরে বেড়ানো যাচ্ছে, কেনাকাটা করা যাচ্ছে।’
মেলার আয়োজক আমিনুল ইসলাম জানান, পোড়াদহ মেলা উপলক্ষে এখানকার বাসিন্দাদের রেওয়াজ হয়ে উঠেছে আত্মীয়স্বজন, বন্ধু-বান্ধবদের নিমন্ত্রণ জানিয়ে খাওয়ানো। কিন্তু সেসব স্বজনের মধ্যে যারা নারী রয়েছেন, তারা মেলায় যেতে পারেন না বলে বিষয়টি খুবই পীড়াদায়ক ছিল। এ কারণেই মূলত বউ মেলার আয়োজন করা। এখানে যেসব পুরুষ নারীদের সঙ্গে আসছেন, তারা নিজেদের ইচ্ছাতেই মেলার ভেতরে আসেন না।