ঢাকা ৩ বৈশাখ ১৪৩২, বুধবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৫
English

রমজান উপলক্ষে সিলেটে সার্বিক আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে সমন্বয় সভা

প্রকাশ: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৫:৪৫ পিএম
রমজান উপলক্ষে সিলেটে সার্বিক আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে সমন্বয় সভা
সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের সদর দপ্তর কনফারেন্স রুমে সার্বিক আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে সমন্বয় সভা। ছবি: খবরের কাগজ

আসন্ন মাহে রমজান উপলক্ষে যানজট নিরসনে যানবাহন চলাচলের মূল সড়ক হকারমুক্ত রাখা এবং সার্বিক আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) রাতে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের (এসএমপি) সদর দপ্তর কনফারেন্স রুমে সভা অনুষ্ঠিত হয়। 

বৃহস্পতিবার রাত ১২টায় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানায় সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ।

সভায় সিলেট মেট্রোপলিটন এলাকার সার্বিক নিরাপত্তা, ব্যাংক ও শপিংমলের নিরাপত্তা, সড়ক ব্যবস্থাপনা, ভেজাল খাদ্যদ্রব্য ও দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, নগরীর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা নিয়ে আলোচনা করা হয়।

সভায় এসএমপি’র পুলিশ কমিশনার মো. রেজাউল করিম বলেন, আসন্ন রমজান মাসে ছিনতাই, চাঁদাবাজি, অজ্ঞান পার্টি ও মলম পার্টির অপতৎপরতা রোধে পুলিশি টহল বৃদ্ধি অব্যাহত আছে। অবৈধ পার্কিং বন্ধে সকলকে সচেতন থাকতে হবে। নাগরিকদের অবশ্যই ট্রাফিক আইন মেনে চলতে হবে এবং সকলের আন্তরিক সহযোগিতায় রমজান মাস সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হবে বলে আমি মনে করি।

পুলিশ কমিশনার হকার উচ্ছেদ প্রসঙ্গে বলেন, পুলিশ সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে, তবে এ বিষয়ে নগরবাসীর সহযোগিতা প্রয়োজন। শপিংমলগুলোর সামনে এবং আশপাশে পর্যাপ্ত স্বেচ্ছাসেবক মোতায়েন প্রয়োজন।

এসএমপি’র পুলিশ কমিশনার মো. রেজাউল করিমের সভাপতিত্বে সভায় সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি মো. মুশফেকুর রহমান উপস্থিত ছিলেন। সভায় সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের বিভিন্ন পদমর্যাদার কর্মকর্তাগণ, ডিজিএফআই সিলেট, র‌্যাব-৯, ৩৪ বীর, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সিলেট, সিলেট সিটি করপোরেশন, সিলেট সিভিল সার্জন প্রতিনিধি, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, উপজেলা আনসার ভিডিপি, বিআরটিএ, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, কনজুমার এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ, দোকান মালিক সমিতি সিলেট, সিলেট মহানগর ব্যবসায়ী ঐক্য কল্যাণ সমিতি, কালিঘাট ও মহাজনপট্টি ব্যবসায়ী সমিতি, বন্দর বাজার রাজা জিসি মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতি, লালদিঘী হকার্স মার্কেট, লালবাজার কাচা মার্কেট, কাজীরবাজার মাছ বাজার, নোয়াব আলী মার্কেট কাঁচাবাজার সোবাহীঘাট, ট্রেড সেন্টার ভেজিটেবল মার্কেট সোবহানীঘাট, বাস মালিক সমিতি কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল, বাস, মিনিবাস, মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়ন সিলেট, ট্রাক, কাভার্ডভ্যান, মালিক সমিতি, ট্রাক, পিকআপ শ্রমিক ইউনিয়ন, সিএনজি শ্রমিক ইউনিয়ন , সিলেট জেলা সিএনজি অটোরিকশা, অটোটেম্পু, ট্যাক্সি, টেক্সিকার, মালিক সমিতি, লেগুনা, ইউম্যান হুলার চালক, শ্রমিক ইউনিয়ন সমিতি, ব্যবসায়ী সমিতি লালদিঘীরপাড়, সিলেট জেলা বাস, মিনিবাস, সিএনজি মালিক সমিতি , এলিগেন্ট শপিং মল জিন্দাবাজার, মহানগর ব্যবসায়ী ঐক্য কল্যাণ, নয়া সড়ক বিজনেস এসোসিয়েশন, কুমারপাড়া ব্যবসায়ী সমিতির প্রতিনিধি এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অতিথিরা উপস্থিত ছিলেন।

শাকিলা ববি/মাহফুজ

 

রাজশাহীতে চাঞ্চল্যকর সুরুজ হত্যায় বোনসহ ২ ভাগ্নে গ্রেপ্তার

প্রকাশ: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ১০:১৩ এএম
রাজশাহীতে চাঞ্চল্যকর সুরুজ হত্যায় বোনসহ ২ ভাগ্নে গ্রেপ্তার
ছবি: খবরের কাগজ

রাজশাহী নগরীর বিলশিমলা এলাকায় চাঞ্চল্যকর মো. সুরুজ (৪৫) হত্যা মামলায় তার বোনসহ দুই ভাগ্নেকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব।

মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) দুপুরে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে র‌্যাব এ তথ্য জানায়। 

এর আগে সোমবার (১৪ এপ্রিল) দুপুরে মাদারীপুর সদর উপজেলার মোস্তফাপুর গ্রামে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে র‌্যাব রাজশাহীর একটি দল।

নিহত সুরুজ নগরের বিলশিমলা এলাকার বাসিন্দা ছিলেন।

গ্রেপ্তার তিনজন হলেন- সুরুজের বোন বহরমপুর ব্যাংক কলোনি এলাকার বাসিন্দা জাহানারা বেগম (৫০), তার ছেলে মো. হিরা (৪০) ও আশরাফ আলী (৪৫)। তাদের বাবার নাম মৃত আনিচুর রহমান।

র‌্যাব জানায়, গত ১১ এপ্রিল জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে নগরের সিটি বাইপাস এলাকায় আসামিরা সুরুজকে মারধর করেন। হিরা ইট দিয়ে তার মামা সুরুজের মাথায় আঘাত করেন। পরে হাসপাতালে নেওয়া হলে সুরুজ মারা যান।

এ ঘটনায় নিহত সুরুজের ছেলে নগরের রাজপাড়া থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। ঘটনার পর থেকেই আসামিরা পলাতক ছিলেন। র‌্যাব তাদের গ্রেপ্তার করে থানায় হস্তান্তর করেছে।

মেহেদী/

শরীয়তপুরে ৪ দশক ধরে আধিপত্যের লড়াই

প্রকাশ: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:৫৮ এএম
শরীয়তপুরে ৪ দশক ধরে আধিপত্যের লড়াই
শরীয়তপুর

সম্প্রতি শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার বিলাসপুর ইউনিয়নে বালতির পর বালতিভর্তি ককটেল ফাটিয়ে আলোচনায় আসে এই এলাকা। কিছু হলেই এখানে বিস্ফোরণ ঘটে। আধিপত্য নিয়ে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের দ্বন্দ্ব চলছে ২২ বছর ধরে। এই সময়ে ককটেল বিস্ফোরণে প্রাণ হারিয়েছেন আটজন। আহত হয়েছেন অন্তত ৫০০ জন। অঙ্গহানি হয়েছে শতাধিক মানুষের।  

রাজনৈতিক প্রভাবে এতদিন বিরোধ থামানো যায়নি। পুলিশ জানিয়েছে, সন্ত্রাসীদের আটক এবং বোমা উদ্ধারে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  

গত ৫ এপ্রিল দুই পক্ষের সংঘর্ষে শতাধিক হাতবোমা বিস্ফোরণ হয়। একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। তাতে দেখা যায়, গ্রামের লোকজন একে অপরের দিকে হাতবোমা ছুড়ছে। দেখে মনে হয়, যুদ্ধ চলছে।  

এই সংঘর্ষ কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। বিলাসপুরে আধিপত্যের লড়াই চলছে ৪১ বছর ধরে। কেবল বোমার আঘাতে প্রাণ গেছে আটজনের।  

গত বছরের ২৭ এপ্রিল বোমার আঘাতে নিহত হয় ১৫ বছর বয়সী স্কুল শিক্ষার্থী সৈকত মুন্সী। তার মা শাহনাজ আক্তার প্রিয় সন্তান হারিয়ে এখনো শোকে পাগলপ্রায়। সৈকতের বাড়িতেও এরপর বোমা হামলা হয়। বিচার না পেয়ে হতাশ পরিবার। একই বছর ২৭ মার্চ বোমার আঘাতে মারা যায় ২৫ বছর বয়সী যুবক সজীব।  

সজীবের মা জানান, ছেলের পেট থেকে ৩৭টি তারকাটা বের করা হয়। আরও ১১টি রয়ে যায় শরীরে। সাত দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে মারা যায় সে।  

সজীবের স্ত্রী সোনিয়া আক্তার বলেন, ‘দুই বছরের সন্তান রেখে সজীব মারা যান। সবাই বাবাকে নিয়ে ঈদ করে, আমার সন্তান করেছে বাবাহীন ঈদ। স্বামী ছাড়া ঈদ কতটা কষ্টের, আমি জানি। বিচার এখনো পাইনি।’  

গত ১০ বছরে বোমার আঘাতে প্রাণ হারিয়েছেন আটজন। আহত হয়েছেন শত শত মানুষ। গ্রামজুড়ে আতঙ্ক বিরাজ করছে।  
বিরোধ শুরু ১৯৮৪ সালে। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন ঘিরে শুরু হয় দ্বন্দ্ব। মেছের মাস্টার ও আনোয়ার হোসেনের মধ্যে বিরোধে শুরু হয় বোমাবাজি। ২০০১ সাল পর্যন্ত তারা এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করে।  

এরপর নেতৃত্বে আসেন আওয়ামী লীগ নেতা ও বর্তমান চেয়ারম্যান কুদ্দুস ব্যাপারী। তার প্রতিপক্ষ স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা জলিল মাদবর। এই দুপক্ষের মধ্যে গত ২২ বছরে শতাধিক সংঘর্ষ হয়েছে। এতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে এলাকার ব্যবসা ও সামাজিক অনুষ্ঠানে।  

স্থানীয়রা জানান, এক পক্ষকে নেতৃত্ব দিতেন সাবেক এমপি ও আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক। অন্যপক্ষকে নেতৃত্ব দিতেন সাবেক এমপি ইকবাল হোসেন অপু। তারা কখনো সমঝোতার চেষ্টা করেননি।  

কেন নিজেরা নিজেদের মারছেন? এর উত্তর খুঁজতে গিয়ে উঠে আসে দুই নাম-বোকা কুদ্দুস’ ও ‘বোমা জলিল’।  

কুদ্দুস বিলাসপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি। তিনি ২০০১ সালে প্রথম বোমাবাজি শুরু করেন। চরের জমি দখল, নদীপথ, বালু ও মাছ শিকারের নিয়ন্ত্রণ ছিল তার হাতে।  

জলিল মাদবর ছিলেন কুদ্দুসের প্রতিদ্বন্দ্বী। তিনিও বোমাবাজিতে জড়িয়ে পড়েন।  কুদ্দুস সরদার বলেন, ‘ক্ষমতা আর আদম ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ নিয়ে মারামারি হয়। কেউ দলে যেতে না চাইলেও জোর করে নিয়ে যাওয়া হয়।’  

মন্নান শিকদার, আক্কাস সিকদার ও রোজীনা বেগম বলেন, ‘আমরা শান্তি চাই। মারামারি চাই না। সন্তানদের লেখাপড়া করাতে পারি না।’  অনেক পরিবার বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছে। অনেকে বলছে, ‘সুযোগ পেলে বাড়ি বিক্রি করে চলে যাব।’  

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন জানান, ঢাকা থেকে চাঁদপুর হয়ে নৌপথে আসে বোমা তৈরির উপকরণ। শত শত বোমা তৈরি হয় চরে কিংবা নৌকায় বসে।  প্রতি ১০০টি বোমা বানিয়ে পাওয়া যায় ৪০ হাজার টাকা। একটি বোমা বানাতে সময় লাগে ৪-৫ মিনিট।  
জাজিরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দুলাল আখন্দ জানান, ‘রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের কারণে এতদিন সংঘর্ষ থামানো যায়নি। এখন কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’ পুলিশ সুপার নজরুল ইসলাম বলেন, ‘অনেকে আইনের ফাঁক গলে বেরিয়ে যায়। পরে আবার সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।’  

পুলিশের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইউপি চেয়ারম্যান কুদ্দুস ব্যাপারীর বিরুদ্ধে ৪৭টি ও জলিল মাদবরের বিরুদ্ধে ৫০টি মামলা রয়েছে। বর্তমানে তারা দুজনই কারাগারে আছেন।

আগুন লাগার খবরে সন্তানসহ ট্রেন থেকে লাফ দিলেন দম্পতি

প্রকাশ: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:৫৪ এএম
আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ১০:০৭ এএম
আগুন লাগার খবরে সন্তানসহ ট্রেন থেকে লাফ দিলেন দম্পতি
ছবি: খবরের কাগজ

চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজারগামী প্রবাল এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুন লাগার খবরে আতঙ্কিত হয়ে ৮ মাসের শিশুকে নিয়ে এক দম্পতি চলন্ত ট্রেন থেকে লাফ দিয়ে গুরুতর আহত হয়ে বেঁচে গেলেও শিশুটি মারা গেছে।

মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) রাত ৮টার দিকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেললাইনের লোহাগাড়া উপজেলাধীন সদর ইউনিয়নের রশিদার পাড়ার পশ্চিমে এ ঘটনা ঘটে। 

নিহত শিশুটির নাম হামদান। এ ঘটনায় শিশুটির পিতা আবদুর রাজ্জাক (২৫) ও মাতা লিজা আকতার (২০) গুরুতর আহত হয়েছেন। 

আবদুর রাজ্জাক কক্সবাজার সদর উপজেলার পিএমখালী ইউনিয়নের সোলতান আহমদের ছেলে।

জানা গেছে, আবদুর রাজ্জাক ১২ দিন আগে কক্সবাজার সদর উপজেলার পিএমখালী ইউনিয়নের নিজ বাড়ি থেকে চট্টগ্রাম জেলার বাঁশখালী উপজেলার কালীপুর ইউনিয়নের গুনাগরী গ্রামে তার শ্বশুরবাড়িতে স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে বেড়াতে গিয়েছিলেন। পরে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় শ্বশুরবাড়ি থেকে ফেরার জন্য সাতকানিয়া রেলওয়ে স্টেশন থেকে স্ত্রী-সন্তানসহ প্রবাল এক্সপ্রেস ট্রেনে করে কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেন। ট্রেনটি লোহাগাড়া উপজেলার সদর ইউনিয়নের রশিদার পাড়া এলাকায় পৌঁছালে হঠাৎ করে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিটের কারণে ইঞ্জিনের পিছনের একটি বগিতে আগুনের সূত্রপাত হয়। আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গেই বগিটি ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে যায়। যার ফলে যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় আতঙ্কিত হয়ে চলন্ত ট্রেন থেকে শিশুসহ লাফ দেন রাজ্জাক-লিজা দম্পতি। পরে স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা তাদেরকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, রেললাইনের পাশের একটি চায়ের দোকানে বসে আমরা বেশ কয়েকজন গল্প করছিলাম। তখন কান্নাজড়িত কণ্ঠে বাঁচাও বাঁচাও আওয়াজ শুনতে পাই। তাৎক্ষণিকভাবে আমরা দৌড়ে গিয়ে তাদেরকে রক্তাক্ত অবস্থায় রেললাইনের পাশ থেকে উদ্ধার করে স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাই। পরে সেখান থেকে তাদেরকে লোহাগাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ছাড়াও  চিকিৎসক শিশুটির মা-বাবাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে পাঠান।

লোহাগাড়া রেলওয়ে স্টেশনের সহকারী স্টেশন মাস্টার দিদার হোসেন বলেন, বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে ট্রেনের একটি বগিতে আগুন লেগে ধোঁয়ার সৃষ্টি হয়েছিল। পরে দ্রুত সময়ের মধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। এ সময় বগিতে থাকা যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

লোহাগাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরিফুর রহমান বলেন, কক্সবাজারগামী ট্রেন থেকে এক দম্পতি শিশুসহ লাফ দিয়েছে। এ ঘটনায় ওই দম্পতি গুরুতর আহত হয়েছেন এবং তাদের শিশুটির মৃত্যু হয়েছে।

আরিফুল/মেহেদী/

গজারিয়ায় শিশুকে ধর্ষণচেষ্টা, পিটুনির পর পুলিশে দিল জনতা

প্রকাশ: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:৪৬ এএম
গজারিয়ায় শিশুকে ধর্ষণচেষ্টা, পিটুনির পর পুলিশে দিল জনতা
শিশুকে ধর্ষণচেষ্টায় অভিযুক্ত বাদশা মিয়া। ছবি: খবরের কাগজ

মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় পাঁচ বছরের এক শিশুকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে বাদশা মিয়া (৪৩) নামে এক শ্রমিককে উত্তমমধ্যম দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেছে উত্তেজিত জনতা।

মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) বিকেলে গজারিয়া উপজেলার বালুয়াকান্দি ইউনিয়নের মুদারকান্দি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

বাদশা মিয়া গজারিয়া উপজেলার বালুয়াকান্দি ইউনিয়নের মুদারকান্দি গ্রামের মৃত সুরুজ মিয়ার ছেলে।

খবর নিয়ে জানা গেছে, মঙ্গলবার বিকেলে শিশুটি তার বাড়ির পাশে খেলা করছিল। এ সময় বাদশা শিশুটিকে বসত ঘরে ডেকে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করে। এ সময় শিশুটি কান্নাকাটি শুরু করলে সে শিশুটিকে ছেড়ে দেয়। ছাড়া পেয়ে শিশুটি বাড়িতে গিয়ে বিষয়টি তার মা-বাবাকে জানালে তারা স্থানীয় কয়েকজনকে বিষয়টি জানায়। এই ঘটনায় এলাকাবাসী উত্তেজিত হয়ে বাদশা নিয়াকে অবরুদ্ধ করে রাখে। এতে গোটা গ্রামে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরে অভিযুক্তকে উত্তমমধ্যম দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে উত্তেজিত জনতা।

ভুক্তভোগী শিশুটি বলে, 'আমাকে ডেকে তিনি তার ঘরে নিয়ে যায়। আমাকে টাকা দিবে বলে জামাকাপড় খুলতে বলে। আমি কষ্ট পেয়ে কান্নাকাটি শুরু করলে তিনি আমাকে ছেড়ে দেয়।'

এ বিষয়ে গজারিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনোয়ার আলম বলেন, 'খবর পাওয়া মাত্রই পুলিশ পাঠানো হয়েছে। উত্তেজিত জনতা বাদশা মিয়াকে অবরুদ্ধ করে রেখেছিল। আমরা তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে এসেছি। আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।'

মেহেদী/

নড়াইলে ২ লাখ টাকায় ধর্ষণের অভিযোগ ধামাচাপার চেষ্টা

প্রকাশ: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:১৮ এএম
নড়াইলে ২ লাখ টাকায় ধর্ষণের অভিযোগ ধামাচাপার চেষ্টা
প্রতীকী ছবি

নড়াইলের লোহাগড়ায় এক শ্রবণ প্রতিবন্ধী তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। গত রবিবার বিকেলে নোয়াগ্রাম ইউনিয়নের হান্দলা গ্রামের ব্রামনডাঙ্গা বাজারে উলফাত স্টোরের ভেতরে এ ঘটনা ঘটে। প্রভাবশালী মাতব্বররা সালিশ বৈঠক করে  ২ লাখ টাকায় ঘটনাটি  ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করে। অভিযুক্ত ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ। তবে ঘটনায় এখনো কোনো মামলা হয়নি। অভিযুক্ত উলফাত মোল্লাকে একই ইউনিয়নের চর ব্রামনডাঙ্গা গ্রামের শামসু মোল্লার ছেলে। 

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত রবিবার বিকেলে ভুক্তভোগী ব্রামনডাঙ্গা বাজারে উলফাত স্টোরে কেনাকাটায় যান। এ সময় দোকানদার উলফাত তাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে ধর্ষণ করেন। বিষয়টি জানাজানি হলে বাজারের ব্যবসায়ীরা ভুক্তভোগীর মাকে উপযুক্ত বিচার পাইয়ে দেওয়ার আশ্বাস দেন। তবে পরবর্তী সময়ে প্রভাবশালী একটি মহল ওই পরিবারকে আইনি পদক্ষেপ না নিয়ে বিষয়টি ধামাচাপা দিতে চাপ দিতে থাকে।

গত রবিবার রাতেই অভিযুক্ত উলফাত মোল্লাকে নিয়ে ব্রামনডাঙ্গা বাজারের সভাপতি কামরুল ইসলাম সাবু ও স্থানীয় লাভলু, নাজির, তাইজেল, জাকিরসহ ১০-১২ জন মাতব্বর একটি সালিশ বৈঠক বসান। সেখানে অভিযুক্ত উলফাত মোল্লাকে ২ লাখ টাকা জরিমানা করে বিষয়টি মীমাংসা করার চেষ্টা করা হয়।

ভুক্তভোগীর চাচা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘ওই সালিশ বৈঠকে আমাদের কাউকে ডাকা হয়নি। ইজ্জত তো চলে গেছে, টাকা দিয়ে কী হবে? লজ্জায় মুখ দেখাতে পারছি না।’ অন্যদিকে, অভিযোগ অস্বীকার করে উলফাত মোল্লার ভাতিজি বলেন, ‘আমার চাচা নির্দোষ। মাতব্বররা তাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়েছেন। বাজারে সালিশের মাধ্যমে যদি সমাধান হয়ে থাকে, তাহলে আমাদের বাড়িতে পুলিশ ও সাংবাদিকরা কেন এল?’

সালিশের মাধ্যমে মীমাংসা বিষয়ে জানতে চাইলে বাজারের মাতব্বর নাজির হোসেন ধর্ষণ ও সালিশ বৈঠকের অভিযোগ অস্বীকার করেন।

এ বিষয়ে লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশিকুর রহমান বলেন, ‘ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়ার পরপরই গত সোমবার সন্ধ্যায় আমরা অভিযুক্ত উলফাতকে আটক করেছি। তবে ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো লিখিত অভিযোগ না থাকায়, তাকে ৫৪ ধারায় আদালতে পাঠানো হয়েছে।’