ঢাকা ১৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, সোমবার, ০২ জুন ২০২৫
English

সিরাজগঞ্জে ট্রানজিট পাসের নামে চাঁদাবাজি

প্রকাশ: ০৯ মার্চ ২০২৫, ০৮:৩৫ এএম
আপডেট: ০৯ মার্চ ২০২৫, ০৮:৩৭ এএম
সিরাজগঞ্জে ট্রানজিট পাসের নামে চাঁদাবাজি
গাড়িচালককে ট্রানজিট পাস দিচ্ছেন বন বিভাগের কর্মচারী আলতাব হোসেনের ছেলে প্রান্ত। ছবি: খবরের কাগজ

সিরাজগঞ্জ বন বিভাগের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিরুদ্ধে ট্রানজিট পাসের নামে ‘চাঁদাবাজির’ অভিযোগ উঠেছে। জেলার কাঠ-ফার্নিচার ব্যবসায়ী ও পরিবহন মালিকদের অভিযোগ, মহাসড়কে চলাচলকারী ফার্নিচারভর্তি গাড়ি থেকে ট্রানজিট পাসের (টিপি) নামে বন বিভাগের কর্মকর্তারা তাদের কাছ থেকে টাকা নিচ্ছেন। অথচ টাকা নেওয়ার সরকারি কোনো নিয়ম নেই। টাকা না দিলে নানা বাহানায় তাদের গাড়ি আটকে রাখা হয়। এতে তাদের ভোগান্তি পোহাতে হয়। শুধু সিরাজগঞ্জেই নয়, টাঙ্গাইলেও একই ধরনের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, সিরাজগঞ্জ সামাজিক বন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলামের নির্দেশে কর্মচারী (বোটম্যান) আলতাব হোসেন ও তার ছেলে প্রান্ত সরকার সদর উপজেলার কাঠেরপুল, কাজীপুর মোড়, বাজার স্টেশন, ফকিরতোলাসহ কয়েকটি সড়ক থেকে বন বিভাগের অনুমোদনপত্রের নামে প্রতি মাসে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। 

সরকারি নিয়ম অনুযায়ী এক জেলা থেকে অন্য জেলায় কাঠের ফার্নিচার নিতে বন বিভাগ থেকে ট্রানজিট পাস (টিপি) নিতে হয়। তবে এক্ষেত্রে কোনো ফি দেওয়ার নিয়ম নেই। অথচ টিপির নাম করে দুই বাপ-ছেলে চালকদের কাছ থেকে ট্রাকপ্রতি ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। টাকা না দিলে জরিমানা দেওয়ার পাশাপাশি ভোগান্তি পোহাতে হয়। ফলে চালক ও ব্যবসায়ীরা বাধ্য হয়ে দীর্ঘদিন ধরে চাঁদা দিয়ে ফার্নিচার পরিবহন করছেন। 

এ বিষয়ে গাড়িচালক আসমত আলী বলেন, ‘আলতাব হোসেন টিপি দেওয়ার নামে প্রতি ট্রাক থেকে ৮০০ টাকা নেন। তিনি না এলে টিপির স্লিপ লিখে তার ছেলে প্রান্তকে টাকা নেওয়ার জন্য পাঠিয়ে দেন। যদি টাকা না দেওয়া হয়, তা হলে মালামাল বাজেয়াপ্ত ও বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখায়। তাই আমাদের বাধ্য হয়ে টাকা দিতে হয়।’ 

কাঠ ব্যবসায়ী আসলাম বলেন, ‘ট্রানজিট পাসে সিরাজগঞ্জে বন বিভাগ নেয় ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকা। এখানে না নিলে টাঙ্গইলে বন বিভাগকে ৩০০ টাকা দিতে হয়। আবার গাজীপুরে দিতে হয় ৬০০ টাকা। আমাদের এই ভোগান্তি থেকে রেহাই পাওয়া খুব প্রয়োজন।’ 

এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ বন বিভাগের কর্মচারী (বোটম্যান) আলতাব হোসেন বলেন, ‘ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার নির্দেশে আমার ছেলে প্রান্ত গাড়িতে টিপি দেয়। তবে টাকা নেয় না। আমি এর চেয়ে বেশি কিছু বলতে পারব না। সিরাজগঞ্জ বন বিভাগের যে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আছেন, তিনি এ বিষয়ে সবই জানেন। আপনি তার কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করেন।’ 

আলতাব হোসেনের ছেলে প্রান্ত সরকার বলেন, ‘আমার বাবা অসুস্থ থাকায় অফিসের নির্দেশে আমি টিপির স্লিপগুলো ট্রাক ড্রাইভারদের কাছে পৌঁছে দেই। গত জানুয়ারি থেকে এ কাজ করে আসছি। টাকার হিসাব আমি দিতে পারব না।’ 

সিরাজগঞ্জ সামাজিক বন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘নিয়মের বাইরে শুধু মোবাইলে কল পেলেই সেই অনুযায়ী ট্রানজিট পাস প্রস্তুত করা হয়। আলতাব বা তার ছেলে প্রান্তর মাধ্যমে সেগুলো সরবরাহ করা হয়। তবে তারা টাকা নেন না।’ 

অন্যদিকে টাঙ্গাইলের ঢাকা-টাঙ্গাইল রুটের যমুনা সেতু মহাসড়কের আগবিক্রমহাটি ও মির্জাপুরে গোড়াই-সখীপুর সড়কের বাঁশতৈল তালতলা এলাকায় বন বিভাগের কর্মচারীরা চেকিংয়ের নামে যানবাহন থেকে টাকা তুলছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বাঁশতৈল রেঞ্জ কর্মকর্তার সহযোগিতায় রেঞ্জ অফিসের সামনে বাঁশতৈল সদর বিটের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রতিদিন কাঠ চেকিংয়ের নামে চাঁদা তোলেন। তাদের সহযোগিতা করছেন বাঁশতৈল নয়াপাড়া গ্রামের মোস্তফা মিয়া। 

টমটমচালক ফারুক মিয়া জানান, প্রতি মঙ্গলবার গাছ নিয়ে হাঁটুভাঙ্গা হাটে যাওয়ার সময় তালতলা এলাকায় বন বিভাগের লোকদের ২০০ টাকা দিতে হয়। টাঙ্গাইলের সখীপুর থেকে আসা ট্রাকচালক আজাহার মিয়া জানান, গোড়াই-সখীপুর সড়কের তালতলা এলাকায় চেকপোস্টে ৫০০ টাকা দিতে হয়। টাকা না দিলে মামলার ভয় দেখানো হয়। এ ছাড়া উত্তরাঞ্চল থেকে কাঠবাহী কোনো ট্রাক এলে বন বিভাগের কর্মকর্তাদের ১ থেকে ২ হাজার টাকা চাঁদা দিতে হয়। 

টাঙ্গাইল বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ড. আবু নাসের মোহসিন হোসেন জানান, হাঁটুভাঙ্গা ও আগবিক্রমহাটি এলাকায় বন বিভাগের চেকপোস্ট রয়েছে। তবে কোনো টাকা লেনদেন হয় না। এ ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় শাস্তির মুখে ৭ শিক্ষক

প্রকাশ: ০২ জুন ২০২৫, ১০:২৮ পিএম
শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় শাস্তির মুখে ৭ শিক্ষক
ছবি: খবরের কাগজ

গাজীপুরের শ্রীপুরে সাবেক উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দায়ের করা অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় অভিযোগকারী সাত শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তির সুপারিশ করেছেন তদন্ত কমিটি।

সোমবার (২ জুন) দুপুরে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন গাজীপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মাসুদ ভূঁইয়া।

গত ১৯ মে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মাহফুজা খাতুন স্বাক্ষরিত পত্রে সাত শিক্ষককের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দিয়ে অধিদপ্তরকে অবহিত করার নির্দেশ দিয়েছেন।

বিভাগীয় শাস্তি পাওয়া সহকারী শিক্ষকরা হলেন- মুলাইদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মো. লুৎফর রহমান ফরহাদ, মাওনা ১নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জহিরুল হক, টেপিরবাড়ি দেওচালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মো. আনিছুর রহমান, ধনুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আবু কাইয়ুম, বেলতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আবুল কালাম ফকির, সিংগারদিঘী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মো. আনোয়ার হোসেন, পূর্ব নিজ মাওনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. জসিম উদ্দিন।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মাহফুজা খাতুন স্বাক্ষরিত পত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার শ্রীপুর, গাজীপুর (বর্তমানে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ডেমরা, ঢাকা) ও সিকদার মো. হারুন অর রশিদ, সহকারী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার, শ্রীপুর, গাজীপুর (বর্তমানে সহকারী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার, সদর, ময়মনসিংহ) গণের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগসমূহের কোনোটিরই সত্যতা সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত না হওয়ায় তদন্ত কর্মকর্তা মতামত এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমোদনের প্রেক্ষিতে অভিযোগ উত্থাপনকারী সাতজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। ওই সাত শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে গৃহীত ব্যবস্থা অত্র অধিদপ্তরকে অবহিত করার জন্য নির্দেশও দেওয়া হয়েছে ওই পত্রে।

এ বিষয়ে গাজীপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মাসুদ ভূঁইয়া বলেন, বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আমরা অধিদপ্তর থেকে একটি চিঠি পেয়েছি, চিঠির আলোকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


পলাশ প্রধান/মাহফুজ

 

মোটরসাইকেলে মদ নিয়ে যাওয়ার সময় ট্রাকের ধাক্কায় যুবকের মৃত্যু

প্রকাশ: ০২ জুন ২০২৫, ১০:২৩ পিএম
মোটরসাইকেলে মদ নিয়ে যাওয়ার সময় ট্রাকের ধাক্কায় যুবকের মৃত্যু
প্রতীকী ছবি

পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলায় মোটরসাইকেলে করে বিদেশি মদ বহনের সময় ট্রাকের ধাক্কায় আফরোজ হোসেন (২৩) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া আহত হয়েছেন মোজাম্মেল হক (২৪) নামে এক যুবক।

রবিবার (১ জুন) রাতে দেবীগঞ্জ উপজেলার ভাউলাগঞ্জ-দেবীগঞ্জ আঞ্চলিক সড়কের রামগঞ্জ বিলাসী চর তিস্তার পাড়া মোড়ে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় তাদের সঙ্গে ব্যাগে থাকা বিদেশি মদের কয়েকটি বোতল ভেঙে যায়, তবে একটি বোতল অক্ষত ছিল।

নিহত আফরোজ হোসেন নীলফামারীর সৈয়দপুর পৌরসভার বাসিন্দা। তিনি সৈয়দপুর প্লাজার ২য় তলায় ‘লোটো’ শোরুমের সামনে মোবাইল ও ইলেকট্রনিকস পণ্যের ব্যবসা করতেন। আহত মোজাম্মেল হক একই পৌরসভার পুরাতন বাবু পাড়া এলাকার বাসিন্দা।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বোদা উপজেলার বড়শশী ইউনিয়ন থেকে মোটরসাইকেলে করে বিদেশি মদ নিয়ে যাচ্ছিলেন আফরোজ ও মোজাম্মেল। তারা রামগঞ্জ বিলাসী চর তিস্তার পাড়া মোড়ে পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ট্রাক তাদের ধাক্কা দেয়। এতে তারা সড়কে ছিটকে পড়েন এবং সঙ্গে থাকা মদের বোতল ভেঙে যায়। আহত অবস্থায় স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে দেবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। পরে আফরোজের শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।

দেবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোয়েল রানা বলেন, 'দুর্ঘটনার শিকার দুই যুবকের ব্যাগে বিদেশি মদের বোতল পাওয়া গেছে, যার বেশিরভাগই ভেঙে গেছে। তাদের একজন ঘটনাস্থলে গুরুতর আহত হন এবং পরে মারা যান। এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু (ইউডি) মামলা করা হয়েছে। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

রনি/মেহেদী/

কুলিয়ারচর আইএফআইসি ব্যাংকের ৬ কর্মী অসুস্থ, নেপথ্যে কী?

প্রকাশ: ০২ জুন ২০২৫, ১০:১৪ পিএম
আপডেট: ০২ জুন ২০২৫, ১০:২৪ পিএম
কুলিয়ারচর আইএফআইসি ব্যাংকের ৬ কর্মী অসুস্থ, নেপথ্যে কী?
ছবি: খবরের কাগজ

কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর উপজেলার আইএফআইসি ব্যাংকের ৬ কর্মকর্তা-কর্মচারী অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার সিসিটিভি ফুটেজ পুলিশ হাতে পেয়েছে। সোমবার (২ জুন) সকালে ব্যাংক এবং আশপাশের দোকান থেকে ঘটনার সময়ের ফুটেজ সংগ্রহ করেছে পুলিশ।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, প্রতিদিনের মতোই রবিবার (১ জুন) ব্যাংকের নিয়মিত কার্যক্রম চলছিল। কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে আইএফআইসি ব্যাংকের উপশাখাতে রবিবার দুপুর ১টার দিকে ব্যাংকের ম্যানেজার সৌমিক জামান খান-সহ ছয়জন হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে পড়েন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। পরে অজ্ঞান হয়ে যাওয়া ছয়জনকে বাজিতপুর জহুরুল ইসলাম মেডিকেলে পাঠানো হয়।

এই ঘটনার পর থেকে পুলিশ সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে। রবিবার দুপুর সাড়ে ১২ টা থেকে ১টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত সময়ের ফুটেজ পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, দুপুর ১টার কিছু সময় আগে ব্যাংকে কয়েকজন গ্রাহক আসে এবং কিছুক্ষণ পর কাজ শেষে ব্যাংক থেকে বেরিয়ে যান। এরপর বেশ কিছুক্ষণ সময় ব্যাংকে কোনো গ্রাহক প্রবেশ করেন নি। গ্রাহকশূন্য ব্যাংকে হঠাৎ হিসাব বিভাগে কর্মরত হোসনা রহমান ব্যাংকের দ্বিতীয় তলার মেঝেতে পড়ে যান এবং বমি করতে থাকেন। এরপর এক এক করে পাঁচজন কর্মকর্তা ও কর্মচারী ব্যাংকের মেঝেতে পরে যান। এদের পাঁচ জনের মধ্যে দুই নারী কর্মকর্তা ছিলেন। কেউ কেউ অর্ধ অচেতন অবস্থায় ব্যাংক থেকে বাইরে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন। তবে ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক সৌমিক জামান খান-সহ দু’জন চেয়ার ছেড়ে উঠতে পারেননি। তাদেরকেও হঠাৎ বমি করতে দেখা গেছে।

সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, আইএফআইসি ব্যাংকের নিরাপত্তা কর্মী কামাল হোসেন অন্যদের থেকে তুলনামূলক সুস্থ ছিলেন। ধীরে ধীরে তিনি ক্যাশ কাউন্টারের দিকে এগিয়ে যান এবং টেলিফোন ধরার চেষ্টা করেন। টেলিফোন ধরতে গিয়ে তিনি ব্যাংক কাউন্টারের কাচের গ্লাস ভেঙে ফেলেন কিন্তু টেলিফোন ধরতে সফল হননি। এমন অবস্থায় একজন গ্রাহক ব্যাংকে প্রবেশ করলে কামাল হোসেন ওই গ্রাহকের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেন। ওই গ্রাহক তাৎক্ষণিক নিচে নেমে যান। এরপর ভবনের অন্য আরেক নিরাপত্তা কর্মী জুয়েল মিয়া এসে অন্যদের সহযোগিতায় অসুস্থ হয়ে যাওয়া ব্যক্তিদের বাইরে বের করে আনেন।

ভৈরব-কুলিয়ারচর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মো. নাজমুস সাকিব সিসিটিভি ফুটেজের এসব তথ্য সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন। সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে পুলিশ প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয়েছে যে, ঘটনাটি নাশকতা কিংবা ডাকাতির কোনো ঘটনা নয়। ব্যাংকের ভল্ট ও ক্যাশবাক্স থেকে কোনো টাকা-পয়সা এদিক সেদিক হয়নি। সবকিছু অক্ষত অবস্থায় থাকতে দেখা গেছে।

তবে পুলিশের সন্দেহ জেনারেটরকে ঘিরে। একটি বন্ধ ঘরে জেনারেটর রাখা ছিল। দুর্ঘটনার দিন বিদ্যুৎ না থাকায় সকাল ১০টা থেকে দুপুর পর্যন্ত দীর্ঘ চার ঘণ্টা জেনারেটর চালু ছিল। ধারণা করা হচ্ছে, একটানা বেশি সময় ধরে জেনারেটর চালু রাখার ফলেই সেই বন্ধ রুম থেকে বিষাক্ত গ্যাস নিঃসরণ হয়ে থাকতে পারে।

তিনি আরও জানান, বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। খাবারের সঙ্গে কোনো চেতনানাশক ছিল কি না তা সিআইডি খতিয়ে দেখছে। জেনারেটরের ঘরের গ্যাস থেকে বিষক্রিয়া বা গ্যাসের ধরন কী তা নিয়ে ফায়ার সার্ভিস কাজ করছে।

কুলিয়ারচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হেলাল উদ্দিন খবরের কাগজকে বলেন, অসুস্থ হয়ে যাওয়া ছয় জনের সঙ্গে কথা বলেছি। সবাই মোটামুটি সুস্থ হয়ে ওঠছেন। সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিট ঘটনাস্থল থেকে খাবার, পানি, চা ও বমির নমুনা সংগ্রহ করেছে। পরীক্ষার পর নিশ্চিত হওয়া যাবে অজ্ঞান হওয়ার কারণ।

ঘটনার পরপরই ব্যাংকে কার্যক্রম স্থগিত করা হয়। এরপর বাজিতপুর মূল শাখা থেকে কর্মকর্তারা এসে ব্যাংক নিয়ন্ত্রণ নেন। সোমবার সারাদিন বিকল্প কর্মকর্তা কর্মচারী দিয়ে ব্যাংকের কার্যক্রম চালু করা হয়। কুলিয়ারচর থানা সড়কের হাবিব কমপ্লেক্সের দ্বিতীয় তলায় আইএফআইসি ব্যাংকের উপশাখাটি অবস্থিত। 

তাসলিমা আক্তার মিতু/মাহফুজ 

 

চাঁদপুরে যৌথবাহিনীর অভিযানে ২২ মোটরসাইকেল জব্দ, লাখ টাকা জরিমানা

প্রকাশ: ০২ জুন ২০২৫, ০৯:৫৮ পিএম
চাঁদপুরে যৌথবাহিনীর অভিযানে ২২ মোটরসাইকেল জব্দ, লাখ টাকা জরিমানা
ছবি: খবরের কাগজ

চাঁদপুর সদর, ফরিদগঞ্জ ও শাহরাস্তিতে যৌথবাহিনী ভ্রাম্যমাণ চেকপোস্ট বসিয়ে ৪৫৬ গাড়ি তল্লাশি, ট্র্যাফিক আইনে ৩৪ বাহন মালিককে ১ লাখ ৮২ হাজার টাকা জরিমানা এবং ২২ মোটরসাইকেল জব্দ করে থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

সোমবার (২ জুন) সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত সদরের বাবুরহাট, ফরিদগঞ্জের চরকুমিরা ও শাহরাস্তি উপজেলার দোয়াভাঙ্গা এলাকায় পৃথক অভিযান পরিচালিত হয়।

পরে রাতে চাঁদপুর আর্মি ক্যাম্প থেকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন অপারেশনাল অফিসার লেফটেন্যান্ট জাবিদ হাসান।

তিনি বলেন, লাইসেন্সবিহীন চালক, ফিটনেসবিহীন গাড়ি, অধিক গতিতে গাড়ি চালানো, হেলমেটবিহীন মোটরসাইকেল চালানোর বিরুদ্ধে সদর উপজেলার বাবুরহাট এলাকায় পুলিশের সঙ্গে সমন্বয়পূর্বক ভ্রাম্যমাণ অভিযান চালানো হয়। এ সময় ২২৯টি যানবাহনে তল্লাশি করা হয়। ২২ মোটরসাইকেল আরোহীর কাছ থেকে জরিমানা আদায় করা হয় ১ লাখ ১০হাজার টাকা এবং লাইসেন্স না থাকায় ১৫টি মোটর সাইকেল জব্দ করা হয়।
ফরিদগঞ্জে চরকুমিরা এলাকায় অভিযান চালানো হয়। সেখানে তল্লাশি করা হয় ১০২টি যানবাহন। লাইসেন্স না থাকায় ৩টি মোটর সাইকেল আরোহির কাছ থেকে জরিমানা আদায় করা হয় ৩৩ হাজার টাকা। বাহনের লাইসেন্স না থাকায় ৪টি মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়।
শাহরাস্তি উপজেলার দোয়াভাঙ্গা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তল্লাশি করা হয় ১২৫টি যানবাহন। লাইসেন্স না থাকায় ৯টি মোটর সাইকেল আরোহির কাছ থেকে জরিমানা আদায় করা হয় ৩৯ হাজার টাকা। বাহনের লাইসেন্স না থাকায় ৩টি মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়।

জব্দ করা ২২টি মোটরসাইকেল স্ব স্ব থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। দেশের চলমান পরিস্থিতিতে ট্র্যাফিক আইনের পরিপন্থি সব প্রকার অবৈধ কার্যক্রম দমনসহ আইনের শাসন সমুন্নত রাখার লক্ষ্যে সেনাবাহিনীর কঠোর অবস্থান অব্যাহত থাকবে বলে জানান এ কর্মকর্তা।

মেহেদী/

বিকেল ৫টার মধ্যে কোরবানির বর্জ্য পরিষ্কারের লক্ষ্য চসিকের

প্রকাশ: ০২ জুন ২০২৫, ০৯:৫০ পিএম
আপডেট: ০২ জুন ২০২৫, ০৯:৫৯ পিএম
বিকেল ৫টার মধ্যে কোরবানির বর্জ্য পরিষ্কারের লক্ষ্য চসিকের
ছবি: খবরের কাগজ

ঈদুল আজহার দিন নগরীতে তৈরি হওয়া বর্জ্য ঈদের দিন বিকেল ৫টার মধ্যেই পরিষ্কার করার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক)। 

সোমবার (২ জুন) দুপুরে চসিক কার্যালয়ে চসিকের পরিচ্ছন্ন বিভাগের সঙ্গে প্রস্তুতি সভায় মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন এ বিষয়ে দিক নির্দেশনা দেন। 

ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, ঈদুল আজহা পবিত্র একটি দিন। আমরা মহান আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে কোরবানি করি। কোরবানির মাধ্যমে অন্তরের পাপ, অহংকার, হিংসা, হিংস্রতাকে কোরবানি দিই। সেই মানসিকতা থেকে নগরবাসীর সেবায় আমাদের কাজ করতে হবে। আমাদের টার্গেট ঈদের দিন ৫টার মধ্যে পুরো নগরী পরিষ্কার করে একটি পরিচ্ছন্ন শহরে রূপান্তর করা।

তিনি বলেন, আমরা ৬ থেকে ৮ ঘণ্টার মধ্যে অর্থাৎ বিকেল পাঁচটার মধ্যে নগরী থেকে কোরবানির বর্জ্য অপসারণ করব। এ লক্ষ্যে আমাদের প্রায় ৪ হাজার ২০০ কর্মী কাজ করবে। নগরীর ৪১টি ওয়ার্ডে মোট ৩৬৯টি গাড়ি বর্জ্য অপসারণে কাজ করবে। বর্জ্য অপসারণের জন্য ডাম্প ট্রাক, কম্পেক্টর, পে-লোডার কাজ করবে। পানির ভাউজার থাকবে রক্ত পরিস্কার করার জন্য। কোনো কর্মী অসুস্থ হলে জরুরি চিকিৎসা সেবা দেওয়ার জন্য অ্যাম্বুলেন্সসহ মেডিকেল টিম প্রস্তুত থাকবে।

মেয়র বলেন, কোরবানির চামড়া নির্দিষ্ট স্থানে সংরক্ষণ করতে হবে। নগরীর বাহিরের চামড়া নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত নগরীতে প্রবশ করতে পারবে না। 

নগরবাসীর সহযোগিতা কামনা করে তিনি বলেন, পশু জবাইয়ের আগে পানি পান করানো, জবাইয়ের স্থান পরিষ্কার রাখা এবং রক্ত-পানি ড্রেনে পড়ে না যায় সে বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে। এসব অনিয়ম দুর্গন্ধ ছড়াতে পারে ও স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করতে পারে।

মেয়র আরও বলেন, চামড়ার সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার জন্য ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পর্যাপ্ত লবণ ও ইকো-ফ্রেন্ডলি পলিথিন ব্যবহারের ব্যবস্থাও থাকবে। প্রতিটি ওয়ার্ডে মনিটরিং টিম কাজ করবে।

পরিচ্ছন্নতা অভিযান তদারকির জন্য মেয়র নিজেই সেদিন সকালে মাঠে থাকবেন বলে জানান। এছাড়া নগর ভবনের দামপাড়ায় একটি নিয়ন্ত্রণকক্ষ (কন্ট্রোল রুম) খোলা থাকবে, যেখান থেকে সার্বক্ষণিক নজরদারি চালানো হবে। দুটি হটলাইন নম্বর ও সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে সাধারণ মানুষ অভিযোগ বা পরামর্শ জানাতে পারবেন।

সভায় উপস্থিত ছিলেন চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, সচিব মো. আশরাফুল আমিন, প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা কমান্ডার ইখতিয়ার উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, ম্যালেরিয়া ও মশক নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা মো. শরফুল ইসলাম মাহি, উপ-প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা প্রণব কুমার শর্মা প্রমুখ।