ঢাকা ৪ বৈশাখ ১৪৩২, বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫
English
বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ৪ বৈশাখ ১৪৩২

মেহেরপুরে ধর্ষকের ব্ল্যাকমেইলের প্রতিবাদে থানায় অবস্থান কর্মসূচি ছাত্র-জনতার

প্রকাশ: ১৪ মার্চ ২০২৫, ১২:৩৯ পিএম
আপডেট: ১৪ মার্চ ২০২৫, ০১:৩০ পিএম
মেহেরপুরে ধর্ষকের ব্ল্যাকমেইলের প্রতিবাদে থানায় অবস্থান কর্মসূচি ছাত্র-জনতার
ছবি : খবরের কাগজ

মেহেরপুরে ৯ বছর বয়সী শিশু ধর্ষণ মামলার আসামি জামিন পেয়ে বাদীকে ব্লাকমেইল করে। প্রতিকার চেয়ে বাদী থানায় অভিযোগ দিলে পুলিশের এক এসআই অভিযুক্ত ধর্ষককে বাঁচাতে পক্ষপাত্বি করেছেন। এ অভিযোগে থানা ঘেরায় করে বিক্ষোভ মিছিল করেছে ছাত্র-জনতা। এ ঘটনায় অভিযুক্ত এক পুলিশ সদস্যকে ক্লোজড করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) রাতে সদর থানায় এ ঘটনা ঘটে। 

জানা গেছে, মেহেরপুর সদর উপজেলার একটি আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরে বসবাসকারী ৯ বছরের শিশুকে ধর্ষণ করে মদনাডাঙ্গা গ্রামের বায়েজিদ নামের এক যুবক। ধর্ষণের ঘটনার ভিডিও ধারণ করে বায়েজিদ সঙ্গীয় আলামিন হোসেন। এ ঘটনায় শিশুটির মা বাদী হয়ে গেল ৯ সেপ্টেম্বর বায়েজিদ, আলামিন ও বরকত আলীর নামে মেহেরপুর আদালতে ধর্ষণ মামলা করেন। আসামিরা গ্রেপ্তারের কয়েক মাস হাজতবাসের পর জামিনে মুক্ত হয়। ধর্ষণের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশের হুমকি দিয়ে বাদীকে মামলা তুলে নিতে বলে আসামিরা। এতে বাদী প্রতিকার চেয়ে মেহেরপুর সদর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন। বিষয়টি মীমাংসার জন্য বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সদর থানার এসআই সুজয় কুমার উভয় পক্ষকে নিয়ে থানায় বসেন। এ সময় এসআই সুজয় কুমার ধর্ষণ মামলার আসামিদের পক্ষ থেকে বাদীকে চাপ দিতে থাকেন। খবর পেয়ে থানায় গিয়ে প্রতিবাদ করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র ও জনতা।

এ ঘটনায় পুলিশের লাঠি পেটায় আহত হন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থী তুষার ও সিয়াম। তাদের অভিযোগ, ধর্ষণকারী ও তার সহযোগীদের বিচার চাইলে ক্ষিপ্ত হয়ে এসআই সুজয় কুমার থানার মধ্যেই তাদেরকে লাঠিপেটা করেন। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে ছাত্র-জনতা ঐক্যবদ্ধ হয়ে থানা ঘেরাও করে প্রতিবাদ করেন। এসআই সুজয় কুমার ও ধর্ষকদের দৃষ্টান্তমূলক সাজার দাবিতে থানা ও থানার আশপাশের এলাকায় অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করে ছাত্র-জনতা।

এদিকে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে সেনাবাহিনীর একটি দল থানায় গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। তখন মেহেরপুর পুলিশ সুপার মাকছুদা খানম পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন। 

ধর্ষিতার পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ছয় মাস আগে তাদের শিশুকন্যাকে ধর্ষণ করে বাইজিদ ভিডিও ধারণ করে ছড়িয়ে দেওয়া হয় বিভিন্ন জনের মুঠোফোনে। বাইজিদসহ কয়েকজনকে আসামি করে আদালতে মামলা করেন ধর্ষিতার মা। এই মামলায় সম্প্রতি জামিনে বেরিয়ে এসে পরিবারের সদস্যদের হুমকি দেন। এমনকি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার নাম করে অর্থ আদায় করে পরিবারের কাছ থেকে। গেল রবিবার রাতে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আবারও পরিবারের সদস্যদের হুমকি দিলে থানায় জানান বিষয়টি। বৃহস্পতিবার রাতে উভয় পক্ষকে নিয়ে সদর থানায় বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা করা হয়। এ সময় দুই পক্ষই বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক আনতে চেষ্টা করে পুলিশ।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক ইমতিয়াজ আহমেদ জানান, পুলিশ ধর্ষকের পক্ষ হয়ে এক সময় ছাত্র-জনতার ওপর লাঠিচার্জ শুরু করে। এতে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের কর্মী সিয়াম ও তুষার আলতুফান আহত হন। পরে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী সাধারণ জনতা থানা চত্বরে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করে। ঘটনার একপর্যায়ে তারা থানার মূল ফটোকে তালা লাগিয়ে দেয়। পুরো থানা চত্বর ঘিরে রাখে। দাবি তোলেন অভিযুক্ত হামলাকারী পুলিশ সদস্যদের শাস্তির। এ ছাড়াও ধর্ষণকারী বাইজিদ ও তার সহযোগীদের গ্রেপ্তার। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন। রাত ১০টার পর ঘটনাস্থলে আসেন পুলিশ সুপার মাহমুদা আক্তার খানম। উভয় পক্ষের মধ্যে সমঝোতার চেষ্টা করেন তিনি। একপর্যায়ে তারা রুদ্ধদ্বার বৈঠকে বসেন। রাত সাড়ে ১১টার দিকে ঘোষণা দেন অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যকে ক্লোজড করা হয়েছে। 

বিক্ষুব্ধ ছাত্রদের দাবির প্রেক্ষিতে গেল রাত সাড়ে ১২টার দিকে সদর থানা পুলিশের এক সদস্যকে ক্লোজড করা হয়েছে। দোষী পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা এবং ধর্ষক ও তাদের পক্ষের লোকজনকে গ্রেপ্তার করতে রাত থেকে শুরু হয়েছে যৌথ বাহিনীর অভিযান। রাত সাড়ে ১২টায়  পুলিশ সুপারের এমন আশ্বাসে থানা ত্যাগ করেন বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা।

বেনি আমিন/জোবাইদা/

মুন্সীগঞ্জে ১ম ধাপে স্বাস্থ্যকার্ড পেলেন ৩২ আহত জুলাইযোদ্ধা

প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৭:০০ পিএম
মুন্সীগঞ্জে ১ম ধাপে স্বাস্থ্যকার্ড পেলেন ৩২ আহত জুলাইযোদ্ধা
আহত জুলাইযোদ্ধাদের হাতে স্বাস্থ্যকার্ড তুলে দেন জেলা প্রশাসক ফাতেমা তুল জান্নাত। ছবি: খবরের কাগজ

মুন্সীগঞ্জে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আহত জুলাইযোদ্ধাদের মাঝে স্বাস্থ্যকার্ড বিতরণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) দুপুরে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে এ উপলক্ষে অনুষ্ঠানে প্রথমে আলোচনা ও একার্ড বিতরণ অনুষ্ঠিত হয়। প্রথমধাপের জেলা ৩২ জন আহতের হাতে কার্ড তোলে দেওয়া হয়। 

এদিকে অনুষ্ঠানে আন্দোলনের বিভিন্ন অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন আহতরা।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক ফাতেমা তুল জান্নাত, সিভিল সার্জন ডাক্তার মঞ্জুরুল আলম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজী হুমায়ুন রশীদসহ সংশ্লিষ্টরা।

সংশ্লিষ্টরা জানান, পর্যায়ক্রমে তালিকাভুক্ত বাকি আহতদের মাঝে স্বাস্থ্যকার্ড প্রদান করা হবে। আর স্বাস্থ্যকার্ডের মাধ্যমে দেশের সরকারি সকল চিকিৎসাকেন্দ্রে বিনামূল্যে চিকিৎসা নেওয়ার সুযোগ থাকবে আহতদের।

মঈনউদ্দিন সুমন/মাহফুজ

 

ঘুষ ছাড়া কাজ করেন না গোয়াইনঘাটের সাব-রেজিস্ট্রার মাসুদ পারভেজ

প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৬:৩৩ পিএম
আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৭:১৬ পিএম
ঘুষ ছাড়া কাজ করেন না গোয়াইনঘাটের সাব-রেজিস্ট্রার মাসুদ পারভেজ
ছবি: খবরের কাগজ

সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে সপ্তাহে দুই দিন (মঙ্গলবার ও বুধবার) দলিল রেজিস্ট্রেশন করা হয়ে থাকে। এই অফিসে আবাসিক ভূমি রেজিস্ট্রেশনের করতে প্রতি শতকে ১ হাজার টাকা, নকল তোলতে প্রতি দলিলে ১ হাজার টাকা ঘুষ প্রদান করা হচ্ছে ওপেন সিক্রেট। এছাড়া যদি কোনো জমির কাগজপত্রে সমস্যা থাকে তাহলে মোটা অঙ্কের ঘুষ প্রদান না করলে কোনো কাজই হয় না। জমিজমা সংক্রান্ত বিষয়ে ঘুষ নেওয়া নিয়মে রূপান্তরিত করেছিলেন গোয়াইনঘাটের সাব রেজিস্টার মাসুদ পারভেজ। 

বুধবার (১৭ এপ্রিল) দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) এনফোর্সমেন্ট অভিযানে তারই প্রমাণ পাওয়া গেছে। 

দুদক প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক জুয়েল মজুমদারের নেতৃত্বে কোর্ট পরিদর্শক মো. জাহিদুল ইসলাম এবং উপসহকারী পরিচালক নিঝুম রায় প্রান্তর সমন্বয়ে এই এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করা হয়। এই অভিযানে গোয়াইনঘাট উপজেলা সাব-রেজিস্টারের কার্যালয়ে দলিল রেজিস্ট্রেশন, তল্লাশি, নকল উত্তোলনসহ অন্যান্য কাজে সেবা প্রার্থীদের হয়রানি এবং ঘুষ দাবিসহ নানাবিধ অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়।

অভিযান পরিচালনাকালে দলিল লেখক মো. নাসির উদ্দিন, মো. আব্দুল হান্নান, মো. জালালউদ্দিনসহ প্রায় ২০ জনের বক্তব্য গ্রহণ করা হয়। তারা তাদের বক্তব্যে বলেন, গোয়াইনঘাটে আবাসিক ভূমি রেজিস্ট্রেশনের ক্ষেত্রে প্রতি শতকে ১ হাজার টাকা, নকল তোলার ক্ষেত্রে প্রতি দলিলে ১ হাজার টাকা ঘুষ প্রদান করতে হয়। যদি কোনো জমির কাগজপত্র সম্পর্কিত সমস্যা থাকে সেক্ষেত্রে মোটা অঙ্কের ঘুষ প্রদান করতে হয়। উক্ত কাজগুলো সাব রেজিস্টার মাসুদ পারভেজের নির্দেশে মোহরার মো. আব্দুল মালেক ও দালাল সবুজ আহমদ সম্পন্ন করে থাকেন। 

অভিযানকালে নলজুরি গ্রামের বাসিন্দা ভুক্তভোগী মো আব্দুল হান্নান জানান, তার একটি দলিল সম্পন্ন করার জন্য তিনি গোয়াইনঘাট সাব রেজিস্টার অফিসের নকল নবীশ মনি দাসের মাধ্যমে দালাল সবুজ আহমদকে ৪০ হাজার টাকা প্রদান করেন। এ ব্যাপারে এনফোর্সমেন্ট টিম মনি দাসকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি লিখিতভাবে জানান যে, সাব-রেজিস্টার মাসুদ পারভেজ এবং তার পার্সোনাল এজেন্ট সবুজ আহমদ পরস্পর যোগসাজশে প্রতিটি দলিলে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করে। তারা ঘুষ ছাড়া রেজিস্ট্রেশন ও কোনো কাজই করেন না। পাশাপাশি সবার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন।

প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানান দুদক প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক জুয়েল মজুমদার। 

শাকিলা ববি/মাহফুজ

ভারতে অনুপ্রবেশকালে বকশীগঞ্জে ২ বাংলাদেশি যুবক আটক

প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৬:১৪ পিএম
ভারতে অনুপ্রবেশকালে বকশীগঞ্জে ২ বাংলাদেশি যুবক আটক
ছবি: সংগৃহীত

জামালপুরের বকশীগঞ্জে সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতে অনুপ্রবেশের সময় দুই বাংলাদেশি যুবককে আটক করা হয়েছে। বুধবার (১৬ এপ্রিল) রাতে উপজেলার ধানুয়া কামালপুর ইউনিয়নের মাজারটিলা এলাকার সীমান্তবর্তী পিলারের নিকট তাদের আটক করেছে জামালপুর ৩৫ বিজিবির সাতানী পাড়া সীমান্ত ফাঁড়ির সদস্যরা।

বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) দুপুরে জামালপুর ৩৫ বিজিবির পক্ষ থেকে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এই তথ্য জানানো হয়। 

বিজিবির হাতে আটকরা হলেন- ভোলা জেলার সদর উপজেলার বেদুরিয়া গ্রামের লিটন গাজীর ছেলে খোকন গাজী (৩১) ও ময়মনসিংহ জেলার ত্রিশাল উপজেলার এলংজানী গ্রামের আব্দুল জব্বারের ছেলে সোহেল রানা (৩২)। 

প্রেস বিজ্ঞপ্তি সূত্রে জানা গেছে, কাজের উদ্দেশ্যে ওই দুই বাংলাদেশি যুবক বুধবার রাতে বকশীগঞ্জ উপজেলার সীমান্তবর্তী ১০৮৬ পিলারের কাছে মাজারটিলা এলাকা দিয়ে ভারতে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করে। এ সময় জামালপুর ৩৫ বিজিবির সাতানী পাড়া বিওপির টহলরত সদস্যদের সন্দেহ হলে তাদেরকে আটক করা হয়। পরে জিজ্ঞাসাবাদে কাজের উদ্দেশ্যে ভারতে যাচ্ছিলেন বলে স্বীকার করেন ওই দুই যুবক। আটকের সময় তাদের কাছ থেকে ভারতীয় ২টি আধার কার্ড, ৩টি মোবাইল, ৫টি সিম কার্ড, ২টি চার্জার ও কিছু নগদ টাকা উদ্ধার করা হয়। পরে বকশীগঞ্জ থানায় ওই দুইজনকে হস্তান্তর করা হয়েছে।

বকশীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার শাকের আহমেদ জানান, ভারতে অনুপ্রবেশের চেষ্টাকালে বিজিবির হাতে আটক দুই বাংলাদেশি যুবকের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে তাদের জামালপুর আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। 

আসমাউল আসিফ/মাহফুজ

 

 

চিত্রশিল্পীর ঘরে আগুন, পাশে দাঁড়াল সরকার

প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:৪১ পিএম
চিত্রশিল্পীর ঘরে আগুন, পাশে দাঁড়াল সরকার
ছবি: খবরের কাগজ

পহেলা বৈশাখের আনন্দ শোভাযাত্রার মোটিফ নির্মাণের জেরে চিত্রশিল্পী মানবেন্দ্র ঘোষের বাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনাটি দেশজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। ঘটনাটি সরকার অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে। পুড়ে যাওয়া ঘরটি সরকারিভাবে মানবেন্দ্র ঘোষের ইচ্ছা অনুযায়ী পুনর্নির্মাণ করে দেওয়া হবে।

বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) দুপুরে শিল্পীর বাড়িতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসক ড. মানোয়ার হোসেন মোল্লা।

চিত্রশিল্পী মানবেন্দ্র ঘোষ বলেন, এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে যেন কোনো রাজনৈতিক বা ধর্মীয় রূপ না দেওয়া হয় সে বিষয়ে সরকারকে অনুরোধ করেন। সেই সঙ্গে মানবেন্দ্র ঘোষ ও তার পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বিষয়টিও জানান।

মানবেন্দ্র ঘোষ বলেন, আমি চাই, এই বিষয়টা যেন শিল্প-সংস্কৃতির দৃষ্টিভঙ্গি থেকে দেখা হয়। এখানে কোনো ধর্ম বা রাজনীতির বিষয় নেই।

এদিকে, ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এসেছেন ক্রাইম ম্যানেজমেন্ট ঢাকার অতিরিক্ত ডিআইজি মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি জানান, বিষয়টি নিয়ে খুবই সতর্কভাবে তদন্ত চলছে।

আগুন লাগানোর ঘটনায় মানবেন্দ্র ঘোষ নিজেই বাদী হয়ে মানিকগঞ্জ সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশ জানায়, ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে বিভিন্ন সময়ে অভিযান চালিয়ে এখন পর্যন্ত সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা স্থানীয়ভাবে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। আজ তাদেরকে আদালতে পাঠানো হবে।
 
আসাদ জামান/মাহফুজ

 

প্রধান উপদেষ্টার নাম ভাঙিয়ে মৎস্য অফিস সহকারীর কোটি টাকা লোপাট

প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:৩২ পিএম
আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:৩২ পিএম
প্রধান উপদেষ্টার নাম ভাঙিয়ে মৎস্য অফিস সহকারীর কোটি টাকা লোপাট
অভিযুক্ত সোনারগাঁয়ে মৎস্য কার্যালয়ের অফিস সহকারী মাহবুব আলম সুমন। ছবি: সংগৃহীত

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে মৎস্য কার্যালয়ের অফিস সহকারী মাহবুব আলম সুমনের বিরুদ্ধে প্রধান উপদেষ্টার নাম ভাঙিয়ে প্রায় কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ ওঠেছে। 

বুধবার (১৬ এপ্রিল) সকালে ভুক্তভোগীরা সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা রহমানের নিকট পৃথকভাবে কয়েকটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। 

অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, উপজেলার মৎস্য কার্যালয়ের অফিস সহকারী মাহবুব আলম সুমন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস প্রত্যেক দরিদ্র অসহায়দের নগদ দুই লাখ টাকা দিবে বলে জানিয়েছেন। এর জন্য দারিদ্রবিমোচন কর্মসংস্থান ব্যাংকে জমা দেওয়ার জন্য তাকে দিতে হবে ছয় হাজার টাকা। শতাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে জন প্রতি ছয় হাজার টাকার বিনিময়ে দিয়েছেন একটি করে ম্যাসেজ। সে ম্যাসেজে লেখা হয়েছে আপনার একাউন্টে পাঁচ হাজার টাকা জমা হয়েছে। পরে ভুক্তভোগীরা খোঁজ নিয়ে জানতে পারে ঐ ব্যাংকে তাদের কোনো একাউন্ট নেই। যে মোবাইল নম্বর দিয়ে মেসেজ দেওয়া হয়েছে সেটাও ব্যাংক কর্তৃপক্ষের নয়। এভাবে তিনি একটি ইউনিয়ন থেকেই হাতিয়ে নিয়েছেন প্রায় ১০ লাখ টাকা। এমন করে বিভিন্ন ইউনিয়ন মিলিয়ে প্রায় কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন তিনি। 

আরেকটি পৃথক অভিযোগ থেকে জানা যায়, পাঁচ লাখ টাকার সরকারি ঘর দিবে বলে জনপ্রতি নিয়েছে দেড় লাখ টাকা। গাভী দেওয়ার কথা বলে নিয়েছেন জনপ্রতি ৫০ হাজার টাকা। একই সঙ্গে মাতৃকালীন ভাতা, বিধবা ভাতা, বয়স্ক ভাতার জন্য নিয়েছেন জন প্রতি ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা। এ বিষয়ে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মাহমুদা আক্তার একাধিক ভুক্তভোগীর অভিযোগ পেলেও তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। 

ভুক্তভোগী স্বর্ণা জানান, আমরা গরীব মানুষ। মাহবুব আলম সুমন মৎস্য কর্মকর্তার পরিচয়ে প্রধান উপদেষ্টার অনুদান দেওয়ার কথা বলে আমাদের থেকে টাকা-পয়সা হাতিয়ে নেন। আমরা তাকে বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই। 

সনমান্দী ইউনিউনের আরেক ভুক্তভোগী তাছলিমা বেগম জানান, আমিসহ আমাদের এলাকার অনেকের থেকেই বাড়ি ও গাভী দিবে বলে প্রত্যেকের থেকে দেড় লাখ টাকা থেকে শুরু করে পঁচিশ হাজার করে টাকা নেয়। এখন অফিসে এসে জানতে পেরেছি। তিনি আমাদের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। এ বিষয়ে আমরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট লিখিত অভিযোগ করেছি। তিনি আমাদের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিবেন বলে আশ্বাস প্রদান করেছেন। 

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মাহমুদা আক্তার জানান, ভুক্তভোগীরা আমার কাছে পূর্বেও একাধিকবার অভিযোগ নিয়ে এসেছেন। সুমনকে ৪ বার শোকজ করা হয়েছে। কিন্তু সে বিভিন্ন অজুহাত দিয়ে রমজান মাস থেকেই অফিসে অনুপস্থিত। এ কারণে আমি নিজেই ভুক্তভোগীদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে নিয়ে গিয়েছি।  

এ বিষয়ে সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা রহমান বলেন, ভুক্তভোগী গ্রাহকদের নিকট থেকে অভিযোগ পেয়েছি সংশ্লিস্ট কর্মকর্তার মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ইমরান হোসেন/মাহফুজ