ঢাকা ৩ বৈশাখ ১৪৩২, বুধবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৫
English

ভাবনায় নতুন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর

প্রকাশ: ১৫ মার্চ ২০২৫, ০৬:৫০ এএম
আপডেট: ১৫ মার্চ ২০২৫, ১২:০৪ এএম
ভাবনায় নতুন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর
ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বর্তমানে বছরে প্রায় ৯০ লাখ যাত্রী যাতায়াত করলেও তৃতীয় টার্মিনালটি চালুর পর যাত্রী ধারণক্ষমতা দুই কোটি ছাড়িয়ে যাবে। আর ২০৩০ সাল নাগাদ বছরে প্রায় দুই লাখ উড়োজাহাজ ওঠানামার চাহিদা সৃষ্টি হবে। তবে এ জন্য দ্বিতীয় স্বাধীন রানওয়ে প্রয়োজন বলে মনে করেন এভিয়েশন বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু জায়গার সংকুলান না হওয়ায় সেখানে দ্বিতীয় রানওয়ে করা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানিয়েছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। এ অবস্থায় ঢাকার অদূরে নতুন একটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর করার কথা ভাবছেন সংশ্লিষ্টরা।

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রতিবছর ৮ শতাংশ হারে যাত্রী বাড়ছে বলে জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থার (জাইকা) জরিপে তথ্য পাওয়া গেছে। এতে আরও বলা হয়েছে, বর্তমানে বছরে প্রায় ৯০ লাখ যাত্রী যাতায়াত করলেও তৃতীয় টার্মিনালটি চালুর পর ধারণক্ষমতা বছরে দুই কোটি ছাড়িয়ে যাবে। ২০৩০ সাল নাগাদ বছরে প্রায় দুই লাখ উড়োজাহাজ ওঠানামার চাহিদা তৈরি হবে। যদিও বিদ্যমান রানওয়ে দিয়ে বছরে সর্বোচ্চ ১ লাখ ৭০ হাজার উড়োজাহাজ ওঠানামা করা সম্ভব। ফলে বাড়তি যাত্রী সামাল দিতে প্রয়োজন হবে বাড়তি ফ্লাইটের। যার জন্য প্রয়োজন আরেকটি স্বাধীন রানওয়ে।

এ বিষয়ে এভিয়েশন বিশেষজ্ঞ কাজী ওয়াহিদুল আলম খবরের কাগজকে বলেন, ‘টার্মিনাল-৩ নির্মাণ করায় যাত্রীদের স্বাচ্ছন্দ্যের বিষয়টি নিশ্চিত হবে। কিন্তু আমাদের এখানে সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো রানওয়ে। যখন পিক টাইম থাকে, ডমিস্টিক ও ইন্টারন্যাশনাল ফ্লাইট ওঠানামা করে, তখন দেখা যায় প্লেনগুলো রানওয়েতে দাঁড়িয়ে থাকে। একটা উড়লে আরেকটা পারছে না। আবার একটা ল্যান্ডিং করলে আরেকটা করতে পারছে না। এর ফলে প্রায় দেখা যায় যাত্রীদের প্লেনের মধ্যে অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে। অনেক সময় দেখা যায়, প্লেন ঢাকার আকাশে ঢুকে গেছে, কিন্তু ক্লিয়ারেন্স পাচ্ছে না ল্যান্ডিং করার। আবার রানওয়েতে যদি কোনো দুর্ঘটনা ঘটে, তাহলে ১-২ ঘণ্টা ওঠানামা বন্ধ থাকছে। এ সমস্যা সমাধানে শাহজালালে নতুন একটি স্বাধীন রানওয়ের খুব দরকার। কিন্তু বর্তমান প্রেক্ষাপটে তা হয়তো আর সম্ভব নয়, কারণ এখন শাহজালালে সেই পরিমাণ জায়গা নেই।’

বেবিচক সূত্র বলছে, বাড়তি ফ্লাইটের চাপ সামাল দিতে আরেকটি বিকল্প রানওয়ে নির্মাণের সম্ভাব্যতা সমীক্ষা করেছিল বেবিচক। তবে জায়গার সংকট থাকায় সে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করা হয়। কারণ ইন্টারন্যাশনাল সিভিল এভিয়েশন অর্গানাইজেশনের (আইকাও) নির্দেশনা অনুযায়ী, পাশাপাশি দুটি রানওয়ের মধ্যে অন্তত ৭৫০ ফুট দূরত্ব থাকার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মঞ্জুর কবীর ভূঁইয়া খবরের কাগজকে বলেন, ‘দ্বিতীয় স্বাধীন রানওয়ে নির্মাণের সুযোগ নেই শাহজালাল বিমানবন্দরে। কারণ জায়গাস্বল্পতা। এ ছাড়া এটি নির্মাণে যে ব্যয় হবে, তার তুলনায় সুবিধা পাওয়া যাবে অনেক কম। জরিপ অনুযায়ী বর্তমান রানওয়েতে ১ কোটি ৭০ লাখ যাত্রী পরিবহন করা যাবে। বাকি থাকছে ৩০ লাখ যাত্রী। এতে যে রাজস্ব আসবে তার থেকে অনেক গুণ বেশি খচর হবে নতুন একটি স্বাধীন রানওয়ে করতে। এ অবস্থায় বিদ্যমান রানওয়ের পূর্ণ ব্যবহার করতে এটিএম ও স্লট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম উন্নত করার দিকে আমরা বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি।’

এদিকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের বিদ্যমান রানওয়ে চালু হয় ১৯৮০ সালে। ১৯৯৬ সালে প্রথম দফায় শাহজালাল বিমানবন্দরের রানওয়ের মেরামতের কাজ করা হয়, যার আয়ু শেষ হয় ২০০৬ সালে। এরপর দীর্ঘ সময় মেরামতের উদ্যোগ না থাকায় রানওয়ে সারফেসে লম্বালম্বি ও আড়াআড়িভাবে ফাটলের সৃষ্টি হয়। আয়ুষ্কাল পার হওয়ার পাঁচ বছর পর ২০১৩ সালে আরেক দফায় রানওয়েটি মেরামত করা হয়। ২০২৬ সালের পরই শেষ হচ্ছে বিদ্যমান রানওয়ের সেই আয়ুষ্কাল। ফলে এর পরই নিরাপদ উড্ডয়নের জন্য বড় ধরনের সংস্কার করতে হবে।

বেবিচক সূত্রে জানা গেছে, নিয়ম অনুযায়ী প্রতি ১০ বছর পর রানওয়ের বড় ধরনের সংস্কার করতে হয়। এ ধরনের সংস্কারে বিদ্যমান রানওয়ের ওপর ২০ সেন্টিমিটার অ্যাসফল্ট কংক্রিট আস্তরণ দেওয়া হয়। রানওয়ের শক্তি বৃদ্ধির জন্য অ্যাসফল্ট কংক্রিটের আস্তরণ দেওয়া হয়। মেরামতের কাজ শেষ করতে প্রায় এক বছর সময় লাগে। এ সময় ব্যাহত হয় নিরবচ্ছিন্ন ফ্লাইট কার্যক্রম। এ অবস্থায় বিকল্প রানওয়ে না থাকায় বিদ্যমান এই রানওয়ে দিয়ে কীভাবে যাত্রী সামলাবে শাহজালাল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।

এ বিষয়ে বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মঞ্জুর কবীর ভূঁইয়া খবরের কাগজকে বলেন, প্রায়ই সংস্কারকাজ চলে রানওয়েতে। সংস্কারকাজ চলার সময় ফ্লাইট সূচিও সেভাবে সাজানো হয়। ভবিষ্যতে বড় ধরনের সংস্কার হলেও ফ্লাইট পরিচালনায় বড় ধরনের সমস্যা হবে না।

এদিকে এভিয়েশন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশের ক্রমবর্ধমান যাত্রীর সংখ্যায় ধারণা করা যায় ২০৩৫ সালের মধ্যে প্যাসেঞ্জার ১৬০ শতাংশ বাড়বে। এটা বিশাল প্রবৃদ্ধি। এই গ্রোথ ধরে রাখতে প্রয়োজন নতুন একটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর।

এ বিষয়ে কাজী ওয়াহিদুল আলম খবরের কাগজকে বলেন, এই প্রবৃদ্ধি যদি ধরে রাখতে হয় তাহলে আমাদের ওই ধরনের সুযোগ-সুবিধা সৃষ্টি করতে হবে। এ ছাড়া দেশের এয়ারলাইনসগুলো বড় হচ্ছে। নতুন নতুন এয়ারক্রাফট আসছে। এই প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে প্রয়োজন নতুন একটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। প্রচুর অবকাঠামোগত উন্নয়ন করতে হবে। হিউম্যান রিসোর্সেস থাকতে হবে, কানেক্টিভিটি বাড়াতে হবে। এটা খুব জরুরি ভিত্তিতে দরকার। কারণ একটা বিমানবন্দর গড়ে তুলতে ন্যূনতম ১০-১২ বছর সময় লাগে।

বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মঞ্জুর কবীর ভূঁইয়া খবরের কাগজকে আরও বলেন, ‘এখন সরকার শাহজালালে থার্ড টার্মিনাল কত দ্রুত চালু করা যায় সেদিকে নজর দিচ্ছে। এটা চালু করলে বিমানবন্দরের সক্ষমতা কিছুটা বাড়বে। তবে এভিয়েশন খাতে এখন বাংলাদেশের যে প্রবৃদ্ধি, তাতে আগামী ১০ বছর পর অর্থাৎ ২০৩৫ সালের পর রাজধানীর পাশে আরও একটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের প্রয়োজনীয়তা জরুরি হয়ে উঠবে। এ জন্য নতুন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর তৈরির বিষয়টি আমাদের চিন্তায় আছে।’ 

বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলী নিখোঁজের এক যুগ পার

প্রকাশ: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ০৭:৫৪ পিএম
আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:০৪ পিএম
বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলী নিখোঁজের এক যুগ পার
নিখোঁজ বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলী। ছবি: সংগৃহীত

কেন্দ্রীয় বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও সিলেট ২ আসনের সাবেক এমপি এম ইলিয়াস আলী নিখোঁজের এক যুগ পার হলো আজ বুধবার (১৬ এপ্রিল)। ১৩ বছর পূর্বে ১৭ এপ্রিল রাতে ঢাকা থেকে নিজের গাড়িচালকসহ নিখোঁজ হন তিনি। এই ১৩ বছরেও সাবেক এই সংসদ সদস্যের নিখোঁজ হওয়ার রহস্য উদঘাটন হয়নি। তিনি ফিরে আসবেন বলে এখনও আশায় আছেন তার পরিবারের সদস্য ও বিএনপির নেতা-কর্মীরা। তিনি নিখোঁজের পর থেকে বিএনপি অভিযোগ করছে তৎকালীন আওয়ামী সরকার তাকে ‘গুম’ করে রেখেছে। তবে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকারের পতনের পরও কোনো খোঁজ মেলেনি ইলিয়াস আলীর।

ইলিয়াস আলীর পরিবার ও জেলা বিএনপি সূত্রে জানা যায়, ইলিয়াসের গ্রামের বাড়ি সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলায়। তৎকালীন বিশ্বনাথ বালাগঞ্জ (বর্তমান বিশ্বনাথ-ওসমানীনগর নিয়ে গঠিত সিলেট-২) আসনের এমপি ছিলেন তিনি। ২০১২ সালের ১৭ এপ্রিল রাতে গাড়িতে করে নিজের বনানীর বাসা থেকে বের হন বিএনপির তৎকালীন সাংগঠনিক সম্পাদক এম ইলিয়াস আলী। এসময় তার সঙ্গে ছিলেন গাড়িচালক আনসার আলী। রাত ১২টার পর মহাখালী থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় ইলিয়াস আলীর প্রাইভেটকার উদ্ধার করে পুলিশ। তখন গাড়িতে ছিলেন না ইলিয়াস ও তার গাড়িচালক। বনানী থানার তৎকালীন এসআই সাইদুর রহমান সে সময় সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, মধ্যরাতে ইলিয়াস আলীর প্রাইভেট কারটি মহাখালী সাউথ পয়েন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনে থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ। গাড়ির ভেতরে পাওয়া চালক আনসারের মোবাইল ফোন সূত্রে জানা যায়, গাড়িটি ইলিয়াস আলীর।

বিএনপির এই প্রভাবশালী নেতা নিখোঁজ হওয়ার পর থেকেই সিলেট বিএনপি নেতারা নানা প্রতিবাদ কর্মসূচি করে আসছেন। ইলিয়াস আলীকে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে প্রতিবছরই প্রতিবাদ মিছিল নিয়ে সিলেটের জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দেন সিলেট জেলা বিএনপির নেতারা। বিগত বছরগুলোর ন্যায় এবারও প্রতিবাদ কর্মসূচি করবে সিলেট জেলা বিএনপি। ইলিয়াস আলী ও তার গাড়ি চালককে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে কর্মসূচি ঘোষণা করেছে সিলেট জেলা বিএনপি।

এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সিলেট জেলা বিএনপির সহ-দফতর সম্পাদক মাহবুব আলম এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১১টায় সিলেট নগরীর কোর্ট পয়েন্ট মানববন্ধন ও বেলা ১২টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে প্রধান উপদেষ্টা বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান।

এই দুই কর্মসূচিতে বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের সকলস্তরের নেতা-কর্মীদের যথাসময়ে উপস্থিত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী।

শাকিলা ববি/মাহফুজ

চবির ৫ শিক্ষার্থীসহ খাগড়াছড়িতে ৬ জনকে অপহরণ

প্রকাশ: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ০৭:৩৯ পিএম
চবির ৫ শিক্ষার্থীসহ খাগড়াছড়িতে ৬ জনকে অপহরণ
অপহৃত ৫ শিক্ষার্থী। ছবি: খবরের কাগজ

অস্ত্রের মুখে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ শিক্ষার্থীসহ ছয়জনকে খাগড়াছড়ি থেকে অপহরণের অভিযোগ ওঠেছে প্রসিত খীসার নেতৃত্বাধীন পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বিরোধী আঞ্চলিক সংগঠন ইউনাইডেট পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের (ইউপিডিএফ) বিরুদ্ধে। 

বুধবার (১৬ এপ্রিল) সকাল আনুমানিক সাড়ে ৬টার দিকে খাগড়াছড়ি সদরের গিরিফুল এলাকা থেকে তাদের অপহরণ করা হয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। 

অপহৃত শিক্ষার্থীরা হলেন- চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী অলড্রিন ত্রিপুরা ও মৈত্রীময় চাকমা, নাট্যকলা বিভাগের দিব্যি চাকমা, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের রিশন চাকমা এবং শিক্ষার্থী লংঙি ম্রো। তারা সকলেই ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তবে অপহৃত অটোরিকশা চালকের পরিচয় জানা যায়নি।

এ ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে অপহৃতদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের (পিসিপি) চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা। 

ফেসবুকে পাওয়া ওই বিবৃতিতে বলা হয়, ওই পাঁচ শিক্ষার্থী বিঝু উৎসব উপলক্ষে বন্ধুদের সঙ্গে রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়িতে বেড়াতে যায়। বিঝু শেষে মঙ্গলবার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ফেরার উদ্দেশে বাঘাইছড়ি থেকে দিঘীনালা হয়ে খাগড়াছড়ি সদরে আসে। ওইদিন চট্টগ্রামগামী বাসের টিকিট না পাওয়ার কারণে তারা পাঁচজন খাগড়াছড়ি শহরের অদূরে কুকিছড়া এলাকায় এক আত্মীয়ের বাড়িতে রাত্রি যাপন করেন। বুধবার সকাল আনুমানিক সাড়ে ৬টার দিকে কুকিছড়া থেকে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় করে খাগড়াছড়ি সদরে আসার পথে গিরিফুল এলাকায় একদল অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী অটোরিকশার চালকসহ ওই পাঁচ শিক্ষার্থীকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। 

বিবৃতিতে আরও অভিযোগ করা হয়, গত বছরের ৬ আগস্ট রাঙ্গামাটি সদর থেকে ইউপিডিএফের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা অস্ত্রের মুখে হিল উইমেন্স ফেডারেশনের দুই নেত্রীকে অপহরণ করে নিয়ে গিয়ে মারধর করে তিনদিন পর মুক্তি দিয়েছিল।

তবে ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে ইউপিডিএফ। প্রসিত খীসার ইউপিডিএফের অন্যতম সংগঠক অংগ্য মারমা বলেন, এই ঘটনার সঙ্গে ইউপিডিএফের কোনোরকম সংশ্লিষ্টতা নেই।

খাগড়াছড়ি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল বাতেন মৃধা জানান, ‘ঘটনাটি আমরাও শুনেছি। প্রাথমিকভাবে ঘটনাটি সত্য বলে ধারণা করছি আমরা। এ বিষয়ে আমরা খোঁজখবর নিচ্ছি। যদিও এখন পর্যন্ত থানায় কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। তবে অপহৃতদের উদ্ধারে পুলিশ তৎপর।’

দিদারুল আলম রাজু/মাহফুজ

 

চট্টগ্রাম থেকে উড়বে হজের ১৭ ফ্লাইট, শুরু ৩ মে

প্রকাশ: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ০৭:২৭ পিএম
চট্টগ্রাম থেকে উড়বে হজের ১৭ ফ্লাইট, শুরু ৩ মে
কাবা ঘর ঘিরে তাওয়াফ করছেন হাজিরা। ছবি: সংগৃহীত

চলতি মৌসুমে হজযাত্রীদের নিয়ে সৌদি আরবের উদ্দেশে চট্টগ্রাম থেকে প্রথম হজ ফ্লাইট রওনা দেবে আগামী ৩ মে। হাজীদের সহযোগিতা ও সেবা দিতে সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করছে চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। 

বুধবার (১৬ এপ্রিল) বিমানবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রকৌশলী মোহাম্মদ ইব্রাহীম খলিল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। 

তিনি খবরের কাগজকে বলেন, হজযাত্রাকে কেন্দ্র করে সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হচ্ছে। প্রতিবছর হজ ব্যবস্থাপনার জন্য আমাদের একটা টাস্কফোর্স কমিটি গঠন করা হবে। এবারও হজযাত্রা চালু হবার একসপ্তাহ আগে টাস্কফোর্স গঠিত হবে। পরে সেখান থেকে কয়েকটা উপকমিটি গঠন করা হয়, বাংলাদেশ বিমানের সঙ্গে সমন্বয় করার জন্য। বিমান বাংলাদেশ আমাদের একটা শিডিউল দিয়ে দেয়। আমরা সে মোতাবেক তাদের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করব। 

জানা গেছে, চট্টগ্রাম থেকে এবার মোট ১৭টি হজ ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে। এরমধ্যে ১৪টি ফ্লাইট যাবে জেদ্দায় ও বাকি তিনটি যাবে মদিনায়। চট্টগ্রাম থেকে এ বছর প্রায় ৭ হাজার ১০০ জন হজযাত্রী পরিবহনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। চট্টগ্রাম থেকে যাত্রী পরিবহনের ক্ষেত্রে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস এবারও এককভাবে দায়িত্ব পালন করছে। আগামী ৩ মে বিকাল ৫টায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বোয়িং-৭৭৭ উড়োজাহাজ মদিনার উদ্দেশে চট্টগ্রাম ছেড়ে যাবে। বিমানটিতে ৪১৯ জন হজযাত্রী চট্টগ্রাম ছেড়ে যাওয়ার কথা রয়েছে।   

অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশ (আটাব) চট্টগ্রাম জোনের সেক্রেটারি মোহাম্মদ ইদ্রিস মিয়া খবরের কাগজকে বলেন, গতবছরের তুলনায় এবার হজযাত্রীর সংখ্যা তুলনামূলক কম মনে হচ্ছে। কারণ গতবছর নারী-পুরুষ মিলে চট্টগ্রাম থেকে ৮ হাজার নারী-পুরুষ হজে গিয়েছিলেন। এবার প্রায় ৭ হাজার ১০০ যাত্রী হজে অংশ নিতে সৌদি আরব যাচ্ছেন। আমরাও যাত্রীদের ভোগান্তি এড়াতে বাংলাদেশ বিমানের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করে যাচ্ছি। আশা করছি কোন ধরনের সমস্যা হবে না। 

উল্লেখ্য গতবছর (২০২৪ সালে) হজযাত্রী পরিবহনে চট্টগ্রাম থেকে সৌদি আরবে সরাসরি ২২টি ফ্লাইট পরিচালনা করা হয়। এরমধ্যে ২০টি যায় জেদ্দায়, দুটি যায় মদিনায়। ওই বছর হজ পালনের জন্য যায় ৮ হাজার হজ যাত্রী। অপরদিকে ২০২৩ সালে হজযাত্রীদের জন্য চট্টগ্রাম থেকে সৌদি আরবে সরাসরি ২৬টি ফ্লাইট পরিচালনা করে বাংলাদেশ বিমান। সেসময় চট্টগ্রাম থেকে ১০ হাজার হজ যাত্রী চট্টগ্রাম থেকে হজ পালন করতে যান। তার আগের বছর অর্থাৎ ২০২২ সালে হজযাত্রীর সংখ্যা ছিল প্রায় ১২ হাজার।

তারেক মাহমুদ/মাহফুজ

নবীনগরে বিধবাকে গণধর্ষণ, ছড়ানো হয় অশালীন ভিডিও

প্রকাশ: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ০৭:১৮ পিএম
আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ০৭:৩২ পিএম
নবীনগরে বিধবাকে গণধর্ষণ, ছড়ানো হয় অশালীন ভিডিও
খবরের কাগজ গ্রাফিকস

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে এক বিধবা নারীকে গণধর্ষণের ঘটনায় গোটা এলাকায় নেমে এসেছে স্তব্ধতা, আর শিউরে উঠেছে মানবিকতা। ধর্ষণের শিকার হওয়ার পর সাহস করে মামলা করতেই উল্টো তাকে খুনের হুমকি, সামাজিকভাবে হেয় করার অপচেষ্টা ও বিকৃত ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

জানা গেছে, গত ৪ এপ্রিল রাতে নবীনগর উপজেলার জিনোদপুর ইউনিয়নের বাঙ্গরা নয়া পাড়ায় একা থাকার সুযোগে ওই বিধবা নারীর ঘরে হানা দেয় স্থানীয় তিন দুর্বৃত্ত-মুসা মিয়া, কামাল মিয়া ও হৃদয় মিয়া। তারা মিলে নারীর ওপর পাশবিক নির্যাতন চালায়। নারীর চিৎকারে ছুটে আসেন আশপাশের মানুষ, তবে এর আগেই পালিয়ে যায় অভিযুক্তরা।

পরবর্তী সময়ে আহত অবস্থায় ওই নারীকে ভর্তি করা হয় ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে। তারপর ১০ এপ্রিল সকল ভয়-লজ্জা জয় করে ভুক্তভোগী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। আদালত নবীনগর থানা পুলিশকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

কিন্তু এখানেই শেষ নয়, মামলা করার পর শুরু হয় হুমকি-ধমকি আর ভয়ভীতি। ভুক্তভোগী নারীর কণ্ঠে কাঁপা স্বর, ‘আমাকে এবং আমার ছেলেকে খুন করে লাশ গুম করে ফেলার হুমকি দিচ্ছে। আমরা এখন জীবন বাঁচাতে ঘর ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছি’।

আশ্চর্যজনকভাবে, মামলার পরদিনই অভিযুক্ত মুসা মিয়ার পরিবার ‘মানববন্ধন’ নামক এক নাটক মঞ্চস্থ করে-যেখানে ভুক্তভোগী নারীর বিরুদ্ধে অশালীন ভাষায় বক্তব্য দেওয়া হয়। এরপর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয় একটি বিভ্রান্তিকর ভিডিও, যাতে দেখা যায় এক নগ্ন পুরুষ ভুক্তভোগীর ঘরে অবস্থান করছেন এবং এক নারী অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে সেই দৃশ্য ধারণ করছেন।

তবে ভিডিওতে স্পষ্ট দেখা যায়, ধর্ষণের শিকার নারী আতঙ্কিত অবস্থায় সবার কাছে আকুতি জানাচ্ছেন-‘আমাকে বাঁচান।’

নবীনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘ঘটনাটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা তদন্ত করছি। তদন্ত শেষে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

খান জাহান আলী চৌধুরী/মাহফুজ 

 

ঝিকরগাছায় পানিতে ডুবে চাচাতো ভাইবোনের মৃত্যু

প্রকাশ: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ০৭:০১ পিএম
ঝিকরগাছায় পানিতে ডুবে চাচাতো ভাইবোনের মৃত্যু
ছবি: খবরের কাগজ

যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার জয়কৃষ্ণপুর গ্রামে পুকুরের পানিতে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। নিহত দুই শিশু সম্পর্কে চাচাতো ভাইবোন। বুধবার (১৬ এপ্রিল) দুপুরে তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

নিহতরা হলো- ঝিকরগাছা উপজেলার জয়কৃষ্ণপুর গ্রামের সাইফুল ইসলাম বাচ্চুর ছেলে তিন বছরের শাফিন এবং বাচ্চুর ভাই জহির উদ্দিনের মেয়ে একই বয়সের মেহেরিনি। 

নিহত শাফিনের পিতা সাইফুল ইসলাম বাচ্চু জানান, শাফিন ও মেহেরিন সকাল ১১টার দিকে বাড়ির উঠানে খেলা করছিল। হঠাৎ তাদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে আশেপাশের বাড়িতেও তাদের খোঁজা হয়। সর্বশেষ সন্দেহবশত বাড়ির পাশের পুকুরে নেমে তল্লাশি করা হয়। এসময় ডুবন্ত অবস্থায় তাদের মরদেহ পাওয়া যায়। 

তিনি আরও জানান, নিষ্পাপ দুটি শিশুর অকাল মৃত্যুতে তাদের পরিবারের লোকজন শোকে ভেঙে পড়েছেন।

ঝিকরগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাবলুর রহমান খান বলেন, ঘটনাটি শুনেছি। এটি একটি মর্মান্তিক ঘটনা। 

এইচ আর তুহিন/মাহফুজ