
নীলফামারীর ডোমার উপজেলার ২৫ কিলোমিটার রাস্তার সংস্কারকাজ বন্ধ হয়ে গেছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান প্রায় ১৫ কিলোমিটার রাস্তার কাজ করার পর বাকি কাজ করতে অপারগতা প্রকাশ করে। স্থানীয়রা চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। বসুনিয়া বাজার, ডোমার গ্রোথ সেন্টার, আলসিয়ার বাজারসহ গুরুত্বপূর্ণ বাজারগুলোর সঙ্গে সংযোগকারী এই রাস্তা খানাখন্দে ভরা। রিকশাচালক থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ সবাই প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। উপজেলা প্রশাসন জানিয়েছে, শিগগিরই সংস্কার কাজ আবার শুরু হবে।
ডোমার উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ডোমার উপজেলার ডোমার সদর বাজার থেকে বসুনিয়া বাজার, ডোমার গ্রোথ সেন্টার থেকে আলসিয়ার বাজার ও বোড়াগাড়ি বাজার থেকে পাঙ্গা চৌপথী পর্যন্ত ২৫ কিলোমিটার রাস্তাটি সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ২০২০-২১ অর্থবছরে রাস্তাটি সংস্কারের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়। সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে ১৯ কোটি টাকায় ঝিনাইদহের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মোজাহার এন্টারপ্রাইজ অ্যান্ড ইউনিক কনস্ট্রাকশনের সঙ্গে চুক্তি করা হয়। ২০২১ সালের ২০ জুলাই তাদের কার্যাদেশ দেওয়া হলে ২০২২ সালের অক্টোবরে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি কাজ শুরু করে।
স্থানীয়রা জানান, এই রাস্তাগুলোর সঙ্গে ডোমার উপজেলার সবচেয়ে বড় বসুনিয়া হাট, দেশের বৃহত্তম দুটি বীজ গবেষণাকেন্দ্র ও কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ কয়েকটি উপজেলার সংযোগ রয়েছে। রাস্তার পাথর-সুরকি উঠে বড় বড় খানাখন্দ সৃষ্টি হয়েছে।
এলাকাবাসীকে কয়েক বছর ধরে বর্ষার সময় কাদা পানিতে চলাচল করতে হচ্ছে। এতে তাদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। খানাখন্দ আর বড় বড় গর্তে ভরা সড়কগুলো দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন চলাচল করছে হাজারও মানুষ ও যানবাহন। যেকোনো সময় ঘটতে পারে দুর্ঘটনা। ফলে স্থানীয়দের পাশাপাশি আশপাশ উপজেলার কয়েক লাখ মানুষ চরম বিপাকে পড়েছেন।
রিকশাচালক নারায়ণ চন্দ্র জানান, ‘এ রাস্তায় রিকশা চালাতে খুব কষ্ট হয়। প্রতিদিন রিকশার যন্ত্রাংশ নষ্ট হয়ে যায়। আগের চেয়ে আয় রোজগার কম হয়। প্রতিদিন দুর্ঘটনা লেগেই আছে।’
স্থানীয় বাসিন্দা দবির উদ্দিন বলেন, ‘কোনো রোগীকে এই রাস্তা দিয়ে গাড়িতে করে নিয়ে যাওয়া যায় না। সবচেয়ে বেশি ভোগান্তির শিকার হন বয়স্করা। রাস্তায় ধুলোবালি ও ভাঙার কারণে চলাচলের অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে।’
স্থানীয় ব্যবসায়ী শাহিন শাহ বলেন, ‘যতদিন যাচ্ছে ততই বাড়ছে খানাখন্দ। দুর্ভোগ বাড়ছে মানুষের। ঠিকাদার যতটুকু কাজ শেষ করেছিল। সে অংশটুকুও এখন নষ্ট হওয়ার পথে। আগে এ রাস্তা দিয়ে চলাচল করা যেত। আমাদের দাবি, খুব দ্রুত এই রাস্তাটির নির্মাণকাজ শুরু করা হোক।’
উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী ফিরোজ আলম বলেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ করার অপারগতা প্রকাশ করায় কাজগুলো বন্ধ হয়ে গেছে। তবে নতুন ইস্টিমেট করে পাঠানো হয়েছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ শেষ না করায় তাদের প্রায় ২ কোটি টাকার জরিমানা করা হয়েছে।’