
চট্টগ্রামের পটিয়ার শেভরণ হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় চার মাস বয়সী এক শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ ওঠেছে। নিহত শিশুর নাম নুর আফসা। শিশুটির বয়স তিন মাস। এ ঘটনায় হাসপাতালে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে।
শুক্রবার (১৪ মার্চ) সকাল ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এর আগে সকাল ৯টায় ওই শিশুটিকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শিশুটির কানে সমস্যা ছিল, একই সঙ্গে নিউমোনিয়া আক্রান্ত ছিল।
ভুল চিকিৎসায় মৃত্যুর অভিযোগ করে শিশু আফসার চাচা মো. কাদের খবরের কাগজকে বলেন, ‘আমার ভাতিজির নিউমোনিয়া ও হালকা কানের সমস্যা ছিল। তাই তাকে শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে পটিয়া পৌরসভার পটিয়া শেভরণ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ সময় তাকে একটি ইনজেকশন দিতে হবে জানিয়ে ডাক্তার দেলোয়ার লিখে দেন। আমরা সেই অনুযায়ী পটিয়া শেভরণ হাসপাতালের ফার্মেসি থেকেই সেটি কিনে নিই। এরপর নার্স সেটি পুশ করার পর পরই আমার ভাতিজি মারা যায়। অন্য চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে জেনেছি ইনজেকশনটি ছিল বয়স্ক মানুষের। আমরা থানায় অভিযোগ দিয়েছি। তারা তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেবে বলেছে। আমরা এখন শিশুটির ময়নাতদন্ত করতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে এসেছি।’
জানা গেছে, নিহত শিশু নুর আফসা উপজেলার বড়লিয়া ইউনিয়নের সাকিব আল হাসানের মেয়ে। এ ঘটনায় শিশুটির বিক্ষুব্ধ স্বজনরা হাসপাতাল ভাঙচুর করেছে বলে জানা গেছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অভিযোগ করে বলে, শিশুটির মৃত্যুর পর হাসপাতালে ভাঙচুর চালান রোগীর স্বজনরা। তারা হাসপাতালের বিভিন্ন কক্ষের গ্লাস, জানালা ও চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর করেন। পরে পটিয়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
শেভরণ হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ওয়াহিদ হাসান বলেন, ‘শিশুটিকে ডা. দেলোয়ার দেখছিলেন। নিউমোনিয়া আক্রান্ত রোগীকে কোনো কিছু খাওয়ানোর নিয়ম নেই। কিন্তু রোগীর মা চিকিৎসা চলাকালে বাচ্চাটিকে বুকের দুধ খাওয়ালে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। এ অবস্থায় চিকিৎসক ইনজেকশন পুশ করেন। পরে বাচ্চাটি মারা যায়।’
এ সময় তিনি শিশু মৃত্যুর ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ‘রোগীর স্বজনদের অভিযোগ তদন্ত করা হবে। তদন্তে কারও গাফিলতির প্রমাণ পেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুন নুর বলেন, ‘হাসপাতালে হট্টগোল হচ্ছে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। মরদেহ সুরুহাল রিপোর্ট করে ময়নাতদন্তের জন্য চমেক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তবে এ ঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবারের কেউ লিখিত অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’