ঢাকা ৩ বৈশাখ ১৪৩২, বুধবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৫
English

গোপালগঞ্জে দরিদ্র মানুষের পাশে শিক্ষার্থীরা

প্রকাশ: ১৫ মার্চ ২০২৫, ০১:২৩ পিএম
গোপালগঞ্জে দরিদ্র মানুষের পাশে শিক্ষার্থীরা
স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন প্রজ্জ্বলিত গোপালগঞ্জের উদ্যোগে ইফতারি বিতরণ করা হচ্ছে। ছবি: খবরের কাগজ

‘সংসারে বুড়া মা-বাবা, স্ত্রী-ছেলেমেয়ে রয়েছেন। সারা দিন রিকশা চালাই। কোনো দিন ৫০০ বা কোনো দিন ৬০০ টাকা কামাই হয়। রিকশার ভাড়া ২৫০ টাকা জমা দিয়ে থাকে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা। তা দিয়ে সংসার চালামু নাকি ইফতার করুম। সারা দিন বাইরে থাইকা রিকশা চালাই। তাই বাসায় যাইতে পারি না। এইখানে ইফতার করায় তাই চইল্যা আসি।’

গোপালগঞ্জে শহরের পৌর পার্কে ইফতার করতে এসে এ কথাগুলোই বলছিলেন রিকশাচালক মো. রনি গাজী। শুধু তিনিই নন এমন কথা বলেন, ইফতার করতে আসা আরও অনেক রোজাদার।

ইফতারি নিয়ে এমন সব মানুষের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘প্রজ্জ্বলিত গোপালগঞ্জ’। প্রতিদিন দরিদ্র ও কর্মহীন মানুষের মাঝে ইফতারি বিতরণ করছে সংগঠনটি।

গোপালগঞ্জ শহরের লঞ্চঘাট এলাকার শেখ রাসেল উচ্চবিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে, প্রতিদিন দুপুর থেকে ইফতার তৈরির কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েন প্রজ্জ্বলিত গোপালগঞ্জের একদল সদস্য। এর মধ্যে কেউ স্কুল, আবার কেউবা কলেজে পড়ছেন। এসব সদস্য নিজেদের হাতখরচ, পরিবার আর পরিচিতজনদের কাছ থেকে সহযোগিতা নিয়ে প্রতিদিন শতাধিক মানুষের মুখে ইফতারসামগ্রী তুলে দিচ্ছেন। এসব ইফতারির মধ্যে কোনো দিন থাকে ছোলা-মুড়ি-বেগুনি, কোনো দিন দই-চিড়া, কোনো দিন খিচুড়ি আবার কোনো দিন থাকে বিরিয়ানি। যেদিন যেমন আর্থিক সাহায্য পান সে অনুযায়ী খাবার তৈরি করেন তারা।

ইফতারের আগে আগে খাবারগুলো নিয়ে আসা হয় গোপালগঞ্জ শহরের পৌর পার্ক চত্বরে। পরে সেখানে বসিয়ে এসব অসহায় ও দিনমজুর মানুষকে ইফতারি করানো হয়।

ইফতার করতে আসা কোটালীপাড়া উপজেলার হিরণ গ্রামের বাসিন্দা রিকশাচালক আব্দুস সাত্তার শেখ বলেন, ‘প্রতিদিন ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা রোজগার করি। রিকশার ভাড়া জমা দিয়ে পরিবারের জন্য ইফতারি কিনতে পারি না। এখান থেকে নিয়ে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে প্রতিদিন ইফতারি করি।’

অপর রিকশাচালক লিটন মোল্লা বলেন, ‘আগের মতো তেমন একটা আয়-রোজগার নেই। পরিবারের জন্য ভালো কোনো ইফতারি কিনতেও পারি না। প্রতিদিন চলতি পথে তাদের থেকে ইফতারি নিয়ে যাই। কোনো দিন বাসায় যেতে না পারলে এখানে বসেই ইফতারি করি।’

স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন প্রজ্জ্বলিত গোপালগঞ্জের সদস্য মো. নূর নবী, আসিফ করিম বলেন, ‘আমরা নিজেদের হাতখরচ, পরিবার ও প্রতিবেশী এবং পরিচিতজনদের কাছ থেকে সাহায্য নিয়ে এসব খাবার বিতরণ করছি। নিজেদের মনের আনন্দ পেতে কষ্ট হলেও কিছুটা করার চেষ্টা করছি। বিত্তবানদের কাছে আমাদের আবেদন, তারা যেন এসব অসহায় মানুষের দিকে একটু সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন।’

সংগঠনের সদস্য আহম্মদ আলী, শীরিন আক্তার তানহা বলেন, ‘অনেক দুস্থ, অসহায় গরিব মানুষ আর্থিক সমস্যার কারণে ঠিকমতো ইফতার করতে পারেন না। আমরা তাদের কথা বিবেচনা করে নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী রান্না করা ইফতারসামগ্রী বিতরণ করছি। প্রতিদিন শতাধিক মানুষের মাঝে এসব খাবার বিতরণ করে থাকি।’

প্রজ্জ্বলিত গোপালগঞ্জের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রেজোয়ান আহমাদ চৌধুরী বলেন, ‘২০১৭ সাল থেকে আমরা সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। প্রতিবারের মতো এবারের রমজান মাসেও কর্মহীন মানুষের মুখে একবেলা ইফতারি তুলে দিতে চেষ্টা করে যাচ্ছি। নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী ইফতারি তৈরি করে এসব মানুষের হাতে তুলে দিচ্ছি, যাতে অন্তত একবেলা তারা পেট ভরে খাবার খেতে পারেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘সমাজের বিত্তবানরাও এসব অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারেন। তারা আর্থিক বা বিভিন্ন উপকরণ দিয়ে এসব মানুষের একবেলার খাবারের জোগান দিতে পারেন। রমজান মাসজুড়ে আমাদের এ কার্যক্রম চলবে।’

নোয়াখালীতে বালুভর্তি দুই ট্রাকের সংঘর্ষ, নিহত ২

প্রকাশ: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ১২:৫৮ পিএম
নোয়াখালীতে বালুভর্তি দুই ট্রাকের সংঘর্ষ, নিহত ২
ছবি: খবরের কাগজ

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে বালুভর্তি দুই ট্রাকের সংঘর্ষে দুজন নিহত ও একজন আহত হয়েছেন।

বুধবার (১৬ এপ্রিল) ভোর সোয়া ৪টার দিকে নোয়াখালী-লক্ষ্মীপুর মহাসড়কের নাজিরপুর এলাকার জালালের গ্যারেজের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন- বেগমগঞ্জের গোপালপুর ইউনিয়নের ফাজিলপুর এলাকার জসিম উদ্দিনের ছেলে মো. সজিব (১৮) ও বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের কেন্দুর ভাগ এলাকার শাহ আলমের ছেলে সাকিব (২০)।

স্থানীয়রা জানান, লক্ষ্মীপুর থেকে বালু ভর্তি একটি ট্রাক নোয়াখালীর চৌমুহনী পৌরসভা এলাকায় যাওয়ার সময় সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা আরেকটি বালু ভর্তি ডাম্পট্রাককে পেছন থেকে ধাক্কা দিলে ট্রাকের সামনের অংশ দুমড়েমুচড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই ট্রাকের হেলপার সজিব ও চালকের বন্ধু সাকিব গুরুতর আহত হন। পরে তাদেরকে বেগমগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করে। 

বেগমগঞ্জ মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. হাবিবুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে খবরের কাগজকে বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা গিয়ে হতাহতদের উদ্ধার করেছে।

চন্দ্রগঞ্জ হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রুহুল আমিন খবরের কাগজকে বলেন, মরদেহ দুটি উদ্ধার করা হয়েছে। দুর্ঘটনার শিকার ট্রাকদুটি জব্দ করে আইনি প্রক্রিয়া চলছে।


মজনু/মেহেদী/

গাইবান্ধায় ডিউটিরত পুলিশ সদস্যের মৃত্যু

প্রকাশ: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ১২:৩৬ পিএম
গাইবান্ধায় ডিউটিরত পুলিশ সদস্যের মৃত্যু
নিহত পুলিশ সদস্য সাজু প্রধান

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে ডিউটিরত অবস্থায় সাজু প্রধান ওরফে বুলু (৫৬) নামে এক পুলিশ সদস্যের মৃত্যু হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১১টার দিকে হাসপাতাল নেওয়ার পথে তিনি মারা যান। 

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সাজু প্রধান গোবিন্দগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (চৌকি) আদালতে কর্মরত ছিলেন। রাতে ডিউটিরত অবস্থায় আদালত চত্বরে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে অ্যাম্বুলেন্সে বগুড়া হাসপাতাল নেওয়ার পথে তিনি মারা যান। 

সাজু প্রধান রংপুর জেলার পীরগাছা সদর উপজেলার তালুককৃষাণমাটেল গ্রামের বাসিন্দা। তার স্ত্রী ও দুই ছেলে ও দুই মেয়ে সন্তান রয়েছে। 
সাজু প্রধান ১৯৮৭ সালে বাংলাদেশ পুলিশে যোগ দেন। সম্প্রতি তিনি গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে যোগ দেন। সহকর্মীদের কাছে ছিলেন হাস্যোজ্জল পুলিশ হিসেবে পরিচিত।

বুধবার (১৬ এপ্রিল) সকালে গোবিন্দগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বুলবুল ইসলাম বলেন, আদালত চত্বরে দায়িত্ব পালনকালে রাত সাড়ে ১০ টার দিকে কনস্টেবল সাজু প্রধান হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন। আহত অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। 
 ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে সাজু মিয়ার মরদেহ তার পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং আর্থিকভাবে সহযোগিতা করা হয়েছে। সাজুর এমন মৃত্যুতে আমরা পুলিশ পরিবার শোকাহত। পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাই। মহান আল্লাহ যেন তাকে জান্নাতবাসী করেন। সকালে এখানে প্রথম জানাজা শেষে মরদেহ গ্রামের বাড়িতে পাঠানো হয়েছে।

মেহেদী/

চাঁদপুরে দেশীয় অস্ত্রসহ কিশোর গ্যাংয়ের ৩ লিডার গ্রেপ্তার

প্রকাশ: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ১২:৩৩ পিএম
চাঁদপুরে দেশীয় অস্ত্রসহ কিশোর গ্যাংয়ের ৩ লিডার গ্রেপ্তার
গ্রেপ্তার কিশোর গ্যাংকের তিন লিডার। ছবি: খবরের কাগজ

চাঁদপুরে যৌথ বাহিনীর অভিযানে দেশীয় অস্ত্রসহ বিজয় (১৯), জিসান (১৮) ও অভি (১৮) নামে কিশোর গ্যাংয়ের চিহ্নিত তিন লিডারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) রাত ২টার দিকে শহরের মুসলিম পাড়া এলাকা থেকে তাদেরকে গ্রেপ্তার করে যৌথ বাহিনী।

বুধবার (১৬ এপ্রিল) সকালে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন চাঁদপুর সদর আর্মি ক্যাম্পের অপারেশনাল অফিসার লেফটেন্যান্ট জাবিদ হাসান।

তিনি বলেন, ‘গোপন তথ্যের ভিত্তিতে চাঁদপুর আর্মি ক্যাম্প এবং সদর মডেল থানা পুলিশ তালিকাভুক্ত অপরাধী এবং কিশোর গ্যাংয়ের লিডারদের বিরুদ্ধে যৌথ অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানে শহরের মুসলিম পাড়া এলাকা থেকে চিহ্নিত কিশোর গ্যাংয়ের তিন লিডারকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে দুটি চাইনিজ কুড়াল, একটি চাপাতি, একটি ছুরি, একটি কাঁচি, দুটি মোবাইল ফোন এবং মাদক দ্রব্য সেবনের জন্য বিভিন্ন উপকরণ উদ্ধার করা হয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘পরবর্তী আইনিব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য উদ্ধারকৃত দ্রব্যসামগ্রী এবং গ্রেপ্তার কিশোর গ্যাংয়ের লিডারদের চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।’

ফয়েজ/সুমন/

বাঁশখালীতে স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগে স্বামীকে গণপিটুনি, হাসপাতালে মৃত্যু

প্রকাশ: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ১২:২৪ পিএম
আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ১২:৪৮ পিএম
বাঁশখালীতে স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগে স্বামীকে গণপিটুনি, হাসপাতালে মৃত্যু
নিহত ফরিদুল আলম। ছবি: খবরের কাগজ

বাঁশখালীতে গণপিটুনির শিকার স্ত্রী হত্যাকারী স্বামী ফরিদুল আলম মারা গেছেন।

বুধবার (১৬ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিনি মারা যান। 

এর আগে মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) বিকেলে বাঁশখালীর খানখানাবাদ এলাকায় গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেছিল উত্তেজিত জনতা।

পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার দুপুরে ফরিদুল আলমকে উপজেলার খানখানাবাদ ইউনিয়নের ডোংরা গ্রামের কালু ফকির বাড়ি থেকে হাতেনাতে আটক করে স্থানীয় জনতা। এ সময় তাকে ব্যাপক গণপিটুনি দেওয়া হয়। খবর পেয়ে বাহারছড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক মজনু মিয়ার নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল গুরুতর আহত অবস্থায় ফরিদুলকে হেফাজতে নেয়। পরে উত্তেজিত জনতা পুলিশের কাছ থেকে তাকে ছিনিয়ে নিয়ে আবার গণপিটুনি দিয়ে মেরে ফেলতে বাহারছড়া পুলিশ ফাঁড়ি ঘেরাও করে। পরে বাঁশখালী থানা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে ফরিদুলকে কড়া নিরাপত্তায় উপজেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়।

এর আগে শুক্রবার (১১ এপ্রিল) ভোরে শ্বশুর বাড়িতে গিয়ে ঘুমন্ত অবস্থায় স্ত্রী মিনু আক্তারকে (৪২) ছুরিকাঘাতে হত্যা করেন ফরিদুল আলম।সঙ্গে কলহের কারণে বাবার বাড়িতে অবস্থান করছিলেন মিনু আক্তার।

জানা গেছে, খানখানাবাদ ইউনিয়নের ডোংরা কালু ফকিরবাড়ির মৃত দুদু মিয়ার ছেলে ফরিদুল আলমের সঙ্গে বাহারছড়া ইউনিয়নের পশ্চিম ইলশার অজি আহমদের মেয়ে মিনু আক্তারের ১৫ বছর আগে বিয়ে হয়। তাদের সংসারে দুই মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে। জাদু টোনা করার অভিযোগে ফরিদুল আলম প্রায় সময় নানা অপবাদ দিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া করতেন। পরে গত শুক্রবার ভোরে ফরিদুল আলম ঘুমন্ত স্ত্রীকে হত্যা করে পালিয়ে যান।

বাঁশখালী থানার ওসি (তদন্ত) সুধাংশু শেখর হালদার জানান, আসামি ফরিদুল আলম বুধবার সকালে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। মঙ্গলবার তাকে স্থানীয় লোকজন গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেছিল। আমরা তাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে বাঁশখালী হাসপাতাল এবং অবস্থার অবনতি হলে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করি। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

শফকত/মেহেদী/

চাটমোহরে শিশুর ঝলসানো মরদেহ উদ্ধার

প্রকাশ: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ১১:৩৮ এএম
চাটমোহরে শিশুর ঝলসানো মরদেহ উদ্ধার
ছবি: খবরের কাগজ

চাটমোহরে জুই (৭) নামে এক শিশুর গলায় নিজের প্যান্ট প্যাঁচানো অবস্থায় ঝলসানো মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) বিকেলে চাটমোহর থানার ওসি (তদন্ত) নয়ন কুমার সরকার এ তথ্য জানান।

সংশ্লিষ্ট পরিবার সূত্রে জানা গেছে, নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার চান্দাই ইউনিয়নের গাড়ফা গ্রামের মালয়েশিয়া প্রবাসী জাহিদুল ইসলাম। তার বাবা প্রতিবন্ধী। মা দুইজন। দুই মা থাকেন পাশাপাশি বাড়িতে। ওই প্রবাসীর দুই মেয়ে-এক ছেলে। বেশ কিছু দিন থেকে জাহিদুলের আপন মা থাকেন চট্টগ্রামে। বড় মেয়ে আর ছোট ছেলেকে নিয়ে স্ত্রী থাকেন বাড়িতে। আর মেজো মেয়ে ও স্থানীয় হেফজখানার ১ম শ্রেণীর ছাত্রী জুঁই। নিজ বাড়ির ২শ গজ দূরে দ্বিতীয় দাদীর বাড়ি। ওই দাদীর কাছেই ছোটবেলা থেকে জুই বড় হচ্ছে। ঈদের আগে জাহিদুলের আপন মা তথা জুঁইয়ের আপন দাদি চট্টগ্রাম থেকে বাড়ি আসেন। পরে সোমবার (১৪ এপ্রিল) সন্ধ্যার কিছু আগে জুঁইকে তার দ্বিতীয় দাদি শেমাই রান্নার জন্য কিছুটা দুধ আনতে প্রথম দাদি ও মায়ের কাছে পাঠান। কিন্তু রাতে আর সেখানে যায়নি জুঁই। দ্বিতীয় দাদি মনে করেছেন, প্রথম দাদি আর তার মা হয়ত জুঁইকে  রেখে দিয়েছেন। এদিকে জুঁইয়ের মা আর দাদি জানেন, জুই দ্বিতীয় দাদীর কাছে আছে। এতে কেউই জুঁইয়ের খোঁজ করেননি। পরে মঙ্গলবার সকালে মাদ্রাসায় যেতে সহপাঠীরা জুঁইকে ডাকতে আসলে দ্বিতীয় দাদি তার মা ও প্রথম দাদীর কাছে জুঁইয়ের খোঁজ করলে জানতে পারেন সেখানে জুঁই যায়নি। বিষয়টি জানাজানি হলে শুরু হয় খোঁজ। এরই ধারাবাহিকতায় বাড়ির পাশেই পাবনা জেলার চাটমেহর এলাকার একটি ভুট্টার জমিতে পাওয়া যায় জুঁইয়ের মরদেহ।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় দফাদার শাহজাহান আলীর বলেন, মরদেহের গলায় প্যান্ট দিয়ে মোড়ানো ছিল। ঘাড়-মাথা এদিক-ওদিক গড়িয়ে পড়ছিল। হয়ত ওই প্যান্ট দিয়ে ঘাড় মচকিয়ে জুঁইকে হত্যা করা হতে পারে। এ ছাড়া জুঁইয়ের চোখ-মুখ ও শরীর ঝলসানোর মতো মনে হয়েছে। হয়ত অ্যাসিড জাতীয় পদার্থ দিয়ে ঝলসানো হয়েছে।

বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুবুর রহমান জানান, শিশুটির বাড়ি বড়াইগ্রাম উপজেলার হলেও মরদেহটি পাওয়া যায় চাটমোহর এলাকায়। ফলে মামলা হবে চাটমোহর থানায়। শিশুটির শরীর কোন দাহ্য পদার্থ দিয়ে পোড়ানো হয়েছে এমনই মনে হয়েছে।

চাটমোহর থানার ওসি নয়ন কুমার সরকার বলেন, 'ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পেলে জানা যাবে হত্যারহস্য। শিশুকে হত্যার আগে ধর্ষণ করা হয়েছে কিনা তাও জানা যাবে। এ ছাড়া শরীর ঝলসানো পদার্থ বিষয়ে তথ্য জানা যাবে।' এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন। মামলার পর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কামাল/মেহেদী/