ঢাকা ৪ বৈশাখ ১৪৩২, বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫
English
বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ৪ বৈশাখ ১৪৩২

টুঙ্গিপাড়ায় আগুনে পুড়ে সর্বস্বান্ত পরিবার পেল ঘর

প্রকাশ: ১৯ মার্চ ২০২৫, ০৮:৫৫ এএম
টুঙ্গিপাড়ায় আগুনে পুড়ে সর্বস্বান্ত পরিবার পেল ঘর
টুঙ্গিপাড়া উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বানিয়ে দেওয়া নতুন ঘরের সামনে নাতিকে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন শিপলু মোল্লার মা রেবা বেগম। ইনসেটে ৬ ফেব্রুয়ারি অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে যাওয়া ঘর। ছবি: খবরের কাগজ

গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ার বর্ণি ইউনিয়নের মৃত রুস্তম মোল্লার ছেলে শিপুল মোল্লা। মামাদের জমিতে একটি টিনের ঘর তৈরি করে তিন সন্তান, স্ত্রী ও মাকে নিয়ে বসবাস করতেন। অন্যের জমিতে দৈনিক মজুরির শ্রমিক হিসেবে কাজ করে চালান ছয় সদস্যের সংসার।

কিন্তু গত ৬ ফেব্রুয়ারি বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লেগে মাথা গোঁজার ঠাঁইটুকুসহ সর্বস্ব হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়ে দিনমজুর শিপুলের পরিবার। নতুন ঘর বানানোর সামর্থ্য না থাকায় প্রতিবেশীর বাড়িতে ওঠেন। শিপলু বুঝতে পারছিলেন না কী করবেন। তার চোখে ভর করে অনিশ্চয়তার কালো মেঘ। 

তখন দরিদ্র ও অসহায় পরিবারটির পাশে দাঁড়ান টুঙ্গিপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মঈনুল হক। শুকনো খাবার ও নগদ অর্থ সহায়তার পাশাপাশি নতুন একটি টিনশেড ঘর তৈরি করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। সেই প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী গত শুক্রবার থেকে ঘরের কাজ শুরু হয়ে সোমবার তা শেষ হয়। এখন শিপুলের পরিবার নতুন ঘরে বসবাস করছে। মাথা গোঁজার ঠাঁই পেয়ে তারা প্রশাসনের প্রতি কৃতজ্ঞ প্রকাশ করেছেন।

টুঙ্গীপাড়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস সূত্রে জানা গেছে, ১ লাখ ১৪ হাজার টাকা ব্যয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ কর্মসূচির আওতায় (টিআর) দিনমজুর শিপুল মোল্লাকে একটি ঘর তৈরি করে দেয় উপজেলা প্রশাসন।

শিপলু মোল্লা বলেন, ‘অনেক কষ্ট করে মামাদের জায়গায় একটি ঘর তৈরি করে মোট ছয়জন বসবাস করতাম। দিনমজুরের কাজ করে কিছু আসবাবপত্র কিনেছিলাম। জমিয়েছিলাম নগদ ৩৫ হাজার টাকা। কিন্তু গত ৬ ফেব্রুয়ারি বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লেগে আমাদের সব শেষ হয়ে যায়।

নতুন একটি ঘর তৈরির সামর্থ্য না থাকায় অন্যের বাড়িতে বসবাস করছিলাম। তখন আমাদের বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানতে পেরে শুকনো খাবার ও নগদ অর্থ সহায়তা দেন। পাশাপাশি একটি টিনের ঘর তৈরি করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। অবশেষে তিনি আমাদের একটি টিনশেড ঘর তৈরি করে দিয়েছেন। সোমবার থেকে নতুন ঘরে মাথা গোঁজার ঠাঁই পেয়েছি। প্রশাসনের প্রতি আমরা সারাজীবন কৃতজ্ঞ থাকব।’

শিপলু মোল্লা মা রেবা বেগম বলেন, ‘বসবাসের জায়গা না থাকায় আমার ভাইদের জায়গায় একটি ঘর তৈরি করে থাকতাম। কিন্তু আগুনে পুড়ে আমাদের মাথা গোঁজার ঠাঁইটুকু শেষ হয়ে যায়। ঘর ঠিক করার সামর্থ্য না থাকায় অন্যের বাড়িতে থাকতে হয়েছে। আমাদের দুর্দশার খবর শুনে ইউএনও একটা ঘর করে দিয়েছে। এখন আমরা নিশ্চিতে থাকতে পারব।’

প্রতিবেশী মিটু মোল্লা বলেন, ‘ওরা খুবই গরিব। বলতে গেলে নুন আনতে পান্তা ফুরানোর মতো অবস্থা। কিন্তু আগুনে পুড়ে ওদের সব শেষ হয়ে গেছে। তবে ইউএনও তাদের একটা ঘর করে দিয়েছে। এ জন্য আমি ইউএনওকে ধন্যবাদ জানাই।’

এ বিষয়ে টুঙ্গিপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মঈনুল হক বলেন, আগুন লেগে দিনমজুর শিপলু মোল্লা সর্বস্ব হারিয়েছেন বলে জানতে পারি। তখন সেখানে গিয়ে উপজেলা প্রশাসন থেকে শুকনো খাবার, নগদ কিছু অর্থ সহায়তা করি। এ ছাড়া তাদের একটি টিনশেড ঘর তৈরি করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিই। গত সোমবার নতুন ঘরটি শিপুল মোল্লার মায়ের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়। উপজেলা প্রশাসন সব সময় দরিদ্র ও অসহায় মানুষের পাশে থাকবে।

কুষ্টিয়ায় পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় ২ জনের মৃত্যু

প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ১২:২৮ পিএম
কুষ্টিয়ায় পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় ২ জনের মৃত্যু
ঘাতক ট্রাকটি আটক করেছে স্থানীয় জনতা। ছবি: সংগৃহীত

কুষ্টিয়া-পাবনা মহাসড়কের মিরপুর উপজেলার আটমাইল ও বহলবাড়ীয়ার মাঝামাঝি এলাকায় মালবাহী ট্রাকের চাপায় রেহেনা খাতুন (৬০) নামের এক নারীর মৃত্যু হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) সকালে মহাসড়কের পাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় পঞ্চগড় থেকে যশোরগামী একটি মালবাহী ট্রাক রেহেনাকে চাপা দেন। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।

এই ঘটনায় ঘাতক ট্রাকটিকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে স্থানীয় জনতা। নিহত রেহেনা খাতুন আটমাইল এলাকার মন্টু সর্দারের স্ত্রী।

অপর দিকে বুধবার (১৭ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১০ টার দিকে ভেড়ামারার গোলাপনগরে ব্যাটারিচালিত রিকশা থেকে  ছিটকে পড়ে বালুবাহী ট্রাকের চাপায় ফিরোজ আলম নামের এক ব্যাবসায়ীর মুত্যু হয়েছে। নিহত ফিরোজ বাহাদুরপুর গ্রামের কামাল হোসেনের ছেলে।

কুষ্টিয়া হাইওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ আল মামুন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, নিহতদের মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। দুটি ঘটনার মধ্যে একটি ট্রাক জব্দ করা হয়েছে, তবে চালক পালিয়ে গেছেন। অন্য ট্রাকটিকে চিহ্নিত করার কাজ চলছে। পাশাপাশি চালকদের গ্রেপ্তারের জন্য কাজ করছে পুলিশ।
 
মিলন/তাওফিক/ 

সীতাকুণ্ডে বিএনপি-কর্মীদের চাপে পদত্যাগে বাধ্য হলেন প্রধান শিক্ষক

প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ১১:৫৮ এএম
আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ১২:২৬ পিএম
সীতাকুণ্ডে বিএনপি-কর্মীদের চাপে পদত্যাগে বাধ্য হলেন প্রধান শিক্ষক
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক বিক্ষোভ মিছিল করে বিদ্যালয়ে এসে জোরপূর্বক প্রধান শিক্ষককে পদত্যাগে বাধ্য করেছে বিএনপির অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। ছবি: খবরের কাগজ
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারী হাজি তোবারক আলী চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক কান্তি লাল আশ্চার্য্যকে বাধ্য করে পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করিয়ে নিয়েছেন বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা।
 
বুধবার (১৬ এপ্রিল) দুপুরে প্রধান শিক্ষকের অফিসকক্ষে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় কান্নায় ভাসছিলেন ওই প্রধান শিক্ষক।
 
বুধবার বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা ভাটিয়ারীতে জড়ো হয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে বিক্ষোভ মিছিল করে বিদ্যালয়ে এসে জোরপূর্বক এই স্বাক্ষর নিয়েছে বলে জানিয়েছেন নবগঠিত বিদ্যালয়ের অ্যাডহক কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ মহিউদ্দিন। 
 
মিছিলে বিএনপির নেতা-কর্মীরা তার পদত্যাগ দাবি করেছেন। এ সময় ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তোলেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা।
 
জানা গেছে, ১৯৯১ সালের ১ মার্চ বিদ্যালয়টিতে সহকারী শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন কান্তি লাল আচার্য্য। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন দীর্ঘদিন ধরে সততার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন তিনি।
 
২০০০ সালে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের পদ খালি হলে তৎকালীন বিদ্যালয়ে পরিচালনা কমিটি জেষ্ঠ্যতার ভিত্তিতে তাকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেন। 
 
গত ৫ আগস্ট সরকারের পটপরিবর্তনের পর সাবেক শিক্ষার্থীসহ বিএনপি ও জামায়াত সমর্থকরা বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক কান্তি লাল আশ্চার্য্য ও সাবেক কমিটির বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের অর্থ আত্মসাৎসহ নানা অনিয়ম তুলে ধরে মিছিল-মিটিং করে।
 
এর পর গত সোমবার বিদ্যালয়ের নবগঠিত অ্যাডহক কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নেন জামায়াত সমর্থিত বিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী মোহাম্মদ মহিউদ্দিন। এর পর বিএনপিসহ দলের সমর্থিত সাবেক শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নেমে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের অপসারণের দাবি করেন।
 
বুধবার সকালে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কান্তি লাল আশ্চার্য্য ও অ্যাডহক কমিটির সভাপতিসহ সদস্যরা অফিসে বসে বিদ্যালয়ের কর্মপরিকল্পনা করছিলেন। এ সময় বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের বিভিন্ন নেতা ও সাবেক শিক্ষার্থীসহ কয়েকশ লোকজন বিদ্যালয়ে আসে।
 
এ সময় জামায়াত সমর্থিত কর্মীদের সঙ্গে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের কর্মীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। উভয় দলের কর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। হামলায় জামায়াতের কর্মী ফারুক আহত হন। 
 
এর পর বুধবার দুপুর ২টার সময় বাধ্যতামূলকভাবে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক কান্তি লাল আশ্চার্য্যকে  পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর দিতে বাধ্য করেন বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা।
 
বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, প্রধান শিক্ষককে জোর করে পদত্যাগে বাধ্য করে বিএনপির নেতা-কর্মীরা।
 
ভাটিয়ারী ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল আনোয়ার প্রধান শিক্ষককে তার গাড়িতে তুলে বাড়ি পৌঁছে দেন। এ সময় বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা তাকে নানাভাবে লাঞ্ছিত করেছে।
 
ভাটিয়ারী ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক খোরশেদ আলম বলেন, ‘বিদ্যালয়ের সাবেক কমিটিসহ প্রধান শিক্ষক নানা অনিয়ম ও দুর্নীতিতে জড়িত। তাদের শাস্তি ও পদত্যাগ দাবি করেছি। প্রধান শিক্ষক পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন বলেন জানান তিনি।
 
এ ছাড়া নবগঠিত অ্যাডহক কমিটির সভাপতি ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের পক্ষ নেওয়ায় তারও পদত্যাগ দাবি করেন তারা।
 
বিদ্যালয়ের নবগঠিত অ্যাডহক কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ মহিউদ্দিন বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক কান্তি লাল আশ্চার্য্যকে  নিজের শিক্ষক দাবি করে বলেন, ‘এভাবে অসম্মান করে একজন শিক্ষককে বিদ্যালয় থেকে বের করে দেওয়া কারও জন্য কাম্য নয়।’
 
এ সময় মোহাম্মদ মহিউদ্দিন নিজেকে জামায়াত সমর্থিত দাবি করে বলেন, ‘বিদ্যালয়ের অনিয়ম-দুর্নীতি হলে অবশ্যই নিয়মতান্ত্রিকভাবে বিচার হবে। কিন্তু বাধ্য করে পদত্যাগ পত্রে স্বাক্ষর নেওয়া কাম্য হতে পারে না।’
 
মঙ্গলবার নৈরাজ্য সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে সীতাকুণ্ড মডেল থানায় জিডি করেছেন বলেও জানান তিনি।
 
এ বিষয়ে ভাটিয়ারী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি নুরুল আনোয়ার বলেন, ‘বিএনপির অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগ দাবিতে মিছিল-মিটিং করেছে শুনেছি। তবে অপ্রীতিকর কোনো ঘটনা ঘটেনি। প্রধান শিক্ষক পরিস্থিতি বিবেচনা করে পদত্যাগ করেছেন। নিজ গাড়ি করে তাকে বাড়িতে পৌঁছে দিয়েছি।’ 
 
এ বিষয়ে পদত্যাগে বাধ্য হওয়া ওই প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘আমাকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়েছে। ২০২৮ সালে মার্চ মাসে আমার চাকরির মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল। তারা না চাইলে, নবগঠিত অ্যাডহক কমিটি মিটিং করে আমাকে বাদ দিতে পারত। কিন্তু আমাকে অসম্মান করে, জোর করে পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করিয়ে নেওয়ার কোনো প্রয়োজন ছিল না। যারা এ গর্হিত কাজ করেছে অধিকাংশ আমার ছাত্র ছিল। বলার কিছু নেই। বিচার সৃষ্টিকর্তার ওপর ছেড়ে দিলাম।’
 
সুমন/

পুলিশ ফাঁড়ির ভিতরেই ছাত্রনেতার ওপর বিএনপির হামলার অভিযোগ

প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ১১:৫২ এএম
পুলিশ ফাঁড়ির ভিতরেই ছাত্রনেতার ওপর বিএনপির হামলার অভিযোগ
ছাত্র অধিকার পরিষদের সম্মিলিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক কেন্দ্রীয় সহ-সমন্বয়ক মেহেদী হাসান খান বাবু। ছবি: সংগৃহীত

চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার শাহাপুর পুলিশ ফাঁড়ির ভিতরে বিএনপি নেতাকর্মীদের হামলার শিকার হয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক কেন্দ্রীয় সহ-সমন্বয়ক মেহেদী হাসান খান বাবু। হামলার পর আবেগ ধরে রাখতে না পেরে তিনি পুলিশ ফাঁড়ি থেকেই ফেসবুক লাইভে এসে কেঁদে ফেলেন, যা মুহূর্তেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

ভুক্তভোগী বাবু জানান, পুলিশের উপস্থিতিতেই তাকে মারধর করা হয়েছে। হামলার নেতৃত্ব দিয়েছেন গড়াইটুপি ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম।

বুধবার (১৬ এপ্রিল) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডি থেকে লাইভে এসে বাবু বলেন, ‘আমি এখন শাহাপুর ক্যাম্পে। পুলিশের সামনেই আমাকে মারধর করা হয়েছে। এসআই মামুন ছিলেন, তিনিও দেখেছেন। গড়াইটুপি ও আন্দুলবাড়িয়া ইউনিয়নের বিএনপি নেতা-কর্মীরাও এতে অংশ নেয়। এটা কোনো সাধারণ ঘটনা না, আমার রাজনীতি করার কারণে এই হামলা।’

ভুক্তভোগী মেহেদী হাসান খান বাবু গড়াইটুপি ইউনিয়নের সুজায়েতপুর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি বর্তমানে ছাত্র অধিকার পরিষদের সম্মিলিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

পরে আরেকটি লাইভে বাবুকে কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলতে শোনা যায়, ‘অনেকেই ফোন দিচ্ছেন, আমি ধরতে পারছি না। এখনো ক্যাম্পেই আছি। শুধুমাত্র রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকেই আমার ওপর হামলা করা হয়েছে। আমার যদি কিছু হয়ে যায়, যে কয়জনের নাম বলেছি, তারাই দায়ী হবেন।’

এ বিষয়ে শাহাপুর পুলিশ ফাঁড়ির সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মামুন বলেন, ‘জমি-জমা সংক্রান্ত একটি বিষয় নিয়ে দুই পক্ষকে নিয়ে বসেছিলাম। বিষয়টি মীমাংসাও হয়েছে। তবে ক্যাম্প থেকে বের হওয়ার সময় কয়েকজন তাকে চড়থাপ্পড় মারে।’

জীবননগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুন বিশ্বাস জানান, বিষয়টি ক্যাম্পের আইসি মীমাংসা করেছেন এবং বাবুকে নিরাপদে বাড়ি পৌঁছে দিয়েছেন। এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি।

এদিকে অভিযুক্ত বিএনপি নেতা শরিফুল ইসলামের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি সাড়া দেননি। 

মিজানুর/তাওফিক/ 

বেহাল রাস্তা মেরামতে অনীহা শাবিপ্রবি ও সিসিকের

প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ১০:৩৫ এএম
বেহাল রাস্তা মেরামতে অনীহা শাবিপ্রবি ও সিসিকের
শাবিপ্রবির গোল চত্বর থেকে ছাত্রহলে যাওয়ার রাস্তাটির বেহাল দশা। ছবি: খবরের কাগজ

দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়ায় শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) অভ্যন্তরীণ রাস্তার অবস্থা বেহাল হয়ে পড়েছে। এতে চলাচলে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের। বিশ্ববিদ্যালয়ের গোল চত্বর থেকে ছাত্রহল এবং ছাত্রীহলে যাওয়ার জন্য মাত্র একটি করে রাস্তা রয়েছে। 

গোল চত্বর থেকে শাহপরাণ হল পর্যন্ত রাস্তায় পাকা সড়কের অস্তিত্ব বোঝা গেলেও সৈয়দ মুজতবা আলী হলে যাওয়ার রাস্তায় পাকা সড়ক ভেঙে মাটিতেও তৈরি হয়েছে বড় বড় গর্ত। আসছে বর্ষায় এসব গর্তে পানি জমে মরণ ফাঁদে পরিণত হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামোগত উন্নয়নের অংশ হিসেবে নতুন ছাত্রহল, ছাত্রীহল, শিক্ষা ভবন, প্রশাসনিক ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হলেও নতুন এসব ভবনে যাওয়ার মতো নেই চলাচল উপযোগী রাস্তা। প্রশাসন থেকেও মেরামতের জন্য নেওয়া হচ্ছে না কোনো উদ্যোগ।

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা জানায়, এটা সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) দায়িত্ব। অন্যদিকে সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) জানায়, এটা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দায়িত্ব। দুই প্রতিষ্ঠানের অনীহার কারণে দিন দিন আরও দুরবস্থার দিকে যাচ্ছে সড়কগুলো।

বিশ্ববিদ্যালয়ের গোল চত্বর থেকে ছাত্রহলে যাওয়ার রাস্তায় গিয়ে দেখা যায়, রাস্তায় বড় বড় গর্ত হয়ে আছে। যানবাহন চলাচলের ক্ষেত্রে একটু অসাবধানতায় ঘটতে পারে দুর্ঘটনা। চলতে গিয়ে এসব গর্তে হোঁচট খাওয়া রোজকার ঘটনা। কয়েক দিন পরেই আসছে বর্ষা। বৃষ্টির পানিতে তখন ভোগান্তির পরিমাণ দ্বিগুণ বৃদ্ধি পাবে বলে জানান শিক্ষার্থীরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী জুনায়েদ আহমদ বলেন, ‘গোল চত্বর থেকে ছেলেদের হলের রাস্তার অবস্থা এতটাই খারাপ যে নিজে চলাচল না করলে বোঝা যাবে না। বিশেষ করে সৈয়দ মুজতবা আলী হলের রাস্তার অবস্থা খুবই ভয়াবহ। রাস্তায় গর্ত একেকটা ছোট খালের মতো হয়ে গেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন অবকাঠামোগত উন্নয়ন কার্যক্রম চলমান। আমরা আশা করি, সেসব কাজের পাশাপাশি খুব দ্রুততার সঙ্গে রাস্তা মেরামতের উদ্যোগ নেওয়া হবে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী নিশামনি সিনহা বলেন, ‘এই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করার সময় ঝাঁকুনিতে অসুস্থ হয়ে যাই। অন্যদিকে তৃতীয় হল নির্মাণের দুই বছর হতে চললেও এখনো পাকা রাস্তা নির্মাণ করা হয়নি। এর ফলে অটোরিকশার চালকরা সেদিকে যেতে চান না। তাই প্রশাসনের উচিত, যাতায়াতের এসব সমস্যা সমাধানে কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া।’

মেরামতের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হবে কি না জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাজেদুল করিম খবরের কাগজকে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরের রাস্তা মেরামতের দায়িত্ব সিটি করপোরেশনের। আমাদের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে লিখিতভাবে কয়েকবার কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। সিটি করপোরেশন থেকে পদক্ষেপ নিলে আশা করি দ্রুত মেরামত হবে।’ 

এদিকে সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমানের সঙ্গে কথা বললে তিনি খবরের কাগজকে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ অবকাঠামোগত উন্নয়নের দায়িত্ব সিটি করপোরেশনের নয়। আইনগতভাবে এটা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাজ। তবুও আমরা এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের গোল চত্বর পর্যন্ত রাস্তা ঠিক করে দিয়েছি। এখন পর্যাপ্ত ফান্ড না থাকায় করতে পারছি না। কিন্তু আমাদের পরিকল্পনা আছে সামনে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাকি রাস্তাগুলোও মেরামত করে দেওয়ার।’ 

বিয়ের রঙ মুছে গেল হালদার স্রোতে

প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ১০:২৯ এএম
আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ১০:৫৫ এএম
বিয়ের রঙ মুছে গেল হালদার স্রোতে
নুরুদ্দীন মঞ্জু। ছবি: সংগৃহীত

নতুন জীবনের শুরুতেই যেন এক নির্মম পরিসমাপ্তি। সদ্য বিবাহিত দুবাই প্রবাসী নুরুদ্দীন মঞ্জু হঠাৎই বিদায় নিলেন এই পৃথিবী থেকে। সুখের নতুন অধ্যায় শুরু হয়েছিল মাত্র কয়েক দিন আগে, কিন্তু হালদার স্রোতে তা ডুবে গেল চিরতরে।

গত সোমবার (১৪ এপ্রিল) ছিল মঞ্জুর ওয়ালিমা, আনন্দ-উৎসব আর অতিথি আপ্যায়নে মুখর ছিল বাড়ি। কিন্তু মাত্র দুই দিন পর (বুধবার ১৬ এপ্রিল) সন্ধ্যায় ক্রিকেট খেলা দেখে ফেরার পথে ঘটে যায় এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। বন্ধু তাজ উদ্দিনের সঙ্গে মোটরসাইকেলে করে ফিরছিলেন মঞ্জু। পথে সিদ্ধাশ্রম ঘাটে বাঁশের সাঁকো পার হওয়ার সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুজনেই পড়ে যান হালদা নদীতে।

তাজ উদ্দিন কোনোরকমে সাঁতরে উঠলেও মঞ্জু স্রোতে তলিয়ে যান। স্থানীয়দের চেষ্টায় দীর্ঘ ৮ ঘণ্টা পর রাত তিনটার দিকে নদী থেকে উদ্ধার করা হয় তার নিথর দেহ।

নিহত মঞ্জু চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার সুয়াবিল পাঁচপুকুরিয়া চন্দ্রঘোনা এলাকার আব্দুল ইসলামের ছেলে। সদা হাস্যোজ্জ্বল ও ভদ্রচরিত্রের অধিকারী হিসেবে এলাকাবাসীর কাছে পরিচিত ছিলেন তিনি। তার অকালমৃত্যুতে পরিবার ও এলাকাজুড়ে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।

তাওফিক/