ঢাকা ৪ বৈশাখ ১৪৩২, বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫
English
বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ৪ বৈশাখ ১৪৩২

সিলেটে বিজিবির অভিযানে অর্ধকোটি টাকার চোরাই চিনি জব্দ

প্রকাশ: ১৯ মার্চ ২০২৫, ১১:০০ এএম
সিলেটে বিজিবির অভিযানে অর্ধকোটি টাকার চোরাই চিনি জব্দ
জব্দ চোরাই চিনির সঙ্গে বিজিবির আভিযানিক দল। ছবি: খবরের কাগজ

সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার সীমান্ত এলাকায় বালু বোঝাই একটি ট্রাকে তল্লাশি চালিয়ে প্রায় অর্ধকোটি টাকার ভারতীয় চোরাই চিনি জব্দ করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের জকিগঞ্জের ব্যাটালিয়নের (১৯ বিজিবি) একটি দল। এসময় ৩১৯ বস্তায় ১৫ হাজার ৯৫০ কেজি চোরাই চিনি জব্দ করে আভিযানিক দল।

মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) সকালে সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার সীমান্ত এলাকায় এ অভিযান চালানো হয়। অভিযান শেষে বিকেলে বিজিবি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, ১৮ মার্চ সকাল ৮টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জকিগঞ্জ ব্যাটালিয়নের (১৯ বিজিবি) অধীনস্থ সুরাইঘাট বিওপি থেকে এ অভিযান পরিচালিত হয়। বিজিবির টহল দল সন্দেহভাজন বালু ভর্তি একটি ট্রাককে সিগন্যাল দিলে ট্রাকটি বিজিবির সংকেত উপেক্ষা করে পালানোর চেষ্টা করে। পরে বিজিবির টহলদল ধাওয়া করে সুরাইঘাট বিওপি থেকে আনুমানিক ৫ কি.মি দূরে ও সীমান্ত পিলার-১৩১৬ থেকে আনুমানিক ৬ কি.মি. বাংলাদেশের অভ্যন্তরে কানাইঘাট উপজেলার পল্লী বিদ্যুৎ অফিস সংলগ্ন সড়কে ট্রাকটি আটক করতে সক্ষম হয়। তবে ট্রাক ফেলে চালক ও সহকারী পালানোয় তাদের আটক করা সম্ভব হয়নি।

বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, বালির স্তরের নিচে অভিনব কৌশলে লুকানো ভারতীয় চিনির ৩১৯ বস্তা উদ্ধার করা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে জকিগঞ্জ ব্যাটালিয়ন (১৯ বিজিবি) অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্ণেল মোহাম্মদ জুবায়ের আনোয়ার বলেন, ‘সীমান্তের সুরক্ষা নিশ্চিতে গোয়েন্দা তৎপরতাসহ চোরাচালানবিরোধী অভিযান চলমান। এরই ধারাবাহিকতায় অভিযানটি পরিচালনা করা হয়েছে।’

এ ছাড়া সীমান্ত সুরক্ষায় বিজিবির অভিযান অব্যাহত থাকবে মন্তব্য করে জব্দ চিনি বিধিমতো শুল্ক অফিসে হস্তান্তর প্রক্রিয়াধীন বলে জানান তিনি।

নাইমুর/

রাজবাড়ীতে বৈশাখীতে লাঠিখেলায় মেতে উঠলেন স্থানীয়রা

প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:৫৪ এএম
রাজবাড়ীতে বৈশাখীতে লাঠিখেলায় মেতে উঠলেন স্থানীয়রা
বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে রাজবাড়ীতে অনুষ্ঠিত হলো বর্ণাঢ্য ও প্রাণবন্ত লাঠিখেলা। ছবি: খবরের কাগজ

বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে রাজবাড়ীতে অনুষ্ঠিত হলো বর্ণাঢ্য ও প্রাণবন্ত লাঠিখেলা। বুধবার (১৬ এপ্রিল) বিকেলে রাজবাড়ী শহিদ খুশি রেলওয়ে মাঠে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে এবং ডা. কামরুল হাসান লালী ও ডা. রেহেনা ফাউন্ডেশন এবং রাজবাড়ী প্রেসক্লাবের সহযোগিতায় এই ঐতিহ্যবাহী লাঠিখেলার আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন, রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসক সুলতানা আক্তার। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. ইমরুল হাসান, বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. কামরুল হাসান লালী, রাজবাড়ী প্রেসক্লাবের সভাপতি কাজী আব্দুল কুদ্দুস বাবু এবং ডা. রেহেনা ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম।

এদিকে আয়োজনটি দেখতে মাঠজুড়ে জড়ো হয় হাজারও দর্শক। গ্রামীণ ঐতিহ্যের এই খেলা উপভোগে নারী-পুরুষ-শিশু- সব বয়সের মানুষই সমান আগ্রহ নিয়ে অংশ নেয়। খেলোয়াড়রা রং-বেরঙের পোশাকে সজ্জিত হয়ে, ঢোলের তালে তালে মাঠে নেমে পড়েন। প্রতিটি দলের খেলোয়াড়রা তাদের কৌশলী লাঠি প্রদর্শনীর মাধ্যমে দর্শকদের মুগ্ধ করেন। দর্শকরা করতালির মাধ্যমে তাদের উৎসাহ দেন।

আয়োজকরা জানান, এই লাঠিখেলা ছিল প্রতিযোগিতামূলক নয়, বরং আনন্দনির্ভর। কোনো দল বেশি দর্শকদের মন জয় করতে পেরেছে, সেটিই ছিল ‘বিজয়ী’ হওয়ার প্রধান মাপকাঠি। এবারের খেলায় মোট তিনটি দল অংশ নেয়।

জেলা প্রশাসক সুলতানা আক্তার বলেন, ‘লাঠিখেলা আমাদের লোকজ সংস্কৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এ ধরনের আয়োজনের মাধ্যমে আমরা নতুন প্রজন্মের সামনে গ্রামীণ ঐতিহ্যকে তুলে ধরতে চাই। নববর্ষে রাজবাড়ীবাসীকে আনন্দ দিতে এই আয়োজন করা হয়েছে।’

আয়োজক ও স্থানীয়দের ভাষ্য অনুযায়ী, এ ধরনের লোকজ আয়োজনে শুধু বিনোদন নয়, বরং সমাজের ঐতিহ্যগত শিকড় সংরক্ষণের বার্তা নিহিত রয়েছে। এমন আয়োজন নিয়মিত করারও আহ্বান জানান স্থানীয় দর্শনার্থীরা।

এর আগে গত সোমবার বিকেলে বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে জেলা বিএনপির আয়োজনে লাঠিখেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। জেলা বিএনপির কার্যালয়ের সামনে এই খেলা দেখার জন্য ভিড় করেন কয়েক শ মানুষ। ঢাকঢোল আর সানাইয়ের বাজনার তালে তালে খেলোয়াড়রা লাঠি হাতে নাচ ও কসরত দেখিয়ে উপস্থিত দর্শকদের মুগ্ধ করেন।

ফেনীতে পানির জন্য হাহাকার

প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:৪৪ এএম
ফেনীতে পানির জন্য হাহাকার
জলাশয় থেকে সুপেয় পানি সংগ্রহ করছেন ফেনীর ফুলগাজী উপজেলার জিএম হাট ইউনিয়নের শরীফপুর গ্রামের কাজী বাড়ির নারীরা। ছবি: খবরের কাগজ

প্রচণ্ড দাবদাহ আর অনাবৃষ্টির কারণে ফেনীতে পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। জেলার ছয় উপজেলায় নলকূপ, পুকুর, খাল-বিলসহ কোথাও পর্যাপ্ত পানি নেই। প্রচণ্ড খরতাপে চারদিকে যেন ধু-ধু মরুভূমি। ফলে জেলার বাসিন্দারা চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। টানা কয়েক মাস অনাবৃষ্টির কারণে জেলার ৭০ ভাগ গভীর-অগভীর নলকূপে পানি উঠছে না বলে জানিয়েছে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর।

সংস্থাটির তথ্যমতে, ফেনী জেলায় সরকারি নলকূপের সংখ্যা ৩৬ হাজার ৮১১টি। এর মধ্যে ৯ হাজার ৮৭১টি দীর্ঘদিন ধরে অকেজো। চালু থাকা ২৬ হাজার ৯৪১টি নলকূপের তিন ভাগের দুই ভাগেই পানি উঠছে না। পাশাপাশি ব্যক্তি উদ্যোগে স্থাপিত দুই লক্ষাধিক অগভীর নলকূপেও পানি ওঠে না। 

অন্যদিকে সোনাগাজী ও দাগনভূঞা উপজেলা নদীপার্শ্ববর্তী হওয়ায় এসব এলাকার অধিকাংশ টিউবওয়েলে লবণাক্ত পানি উঠছে বলে জানা গেছে।

সরেজমিনে গতকাল ফুলগাজী উপজেলার জি এম হাট ইউনিয়নের শরীফপুর গ্রামের কাজী বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বাড়িটিতে ১১টি পরিবার বসবাস করে। সেখানে নিজস্ব উদ্যোগে বসানো পাঁচটি টিউবওয়েল রয়েছে। এসব টিউবওয়েলের একটিতেও পানি ওঠে না। এতে খাওয়ার পানির পাশাপাশি দৈনন্দিন কাজে ব্যবহৃত পানি সংগ্রহ করতে গিয়ে বাড়ির সদস্যদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়। 

তারা পাশের খাল থেকে পানি সংগ্রহ করে সেগুলো রান্নার পাশাপাশি বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করেন। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শুধু ওই বাড়ি নয়, আশপাশের অধিকাংশ বাড়ির নলকূপে পানি ওঠে না। খাবার ও রান্নার পানি তাদের দূর-দূরান্ত থেকে আনতে হয়।

কথা হয় শরীফপুর গ্রামের কাজী বাড়ির বাসিন্দা আবদুল কাদেরের সঙ্গে। তিনি বলেন, গ্রীষ্মকাল এলে বাড়ির অধিকাংশ টিউবওয়েলে পানি ওঠে না। কিন্তু সব কাজের জন্য পানির প্রয়োজন হয়। তখন দূর-দূরান্ত থেকে পানি আনতে হয়। আমাদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়। 

একই বাড়ির সত্তরোর্ধ্ব নারী হাজেরা খাতুন বলেন, ‘গত চার-পাঁচ বছর ধরে গরমের সময় এলেই আমাদের পানির জন্য কষ্ট করতে হয়। অজুর পানিও অন্য জায়গা থেকে আনতে হয়। টিউবওয়েলগুলো নষ্ট। পানি ওঠে না। আধা কিলোমিটার দূরের খালে গিয়ে ওজু-গোসলের পানি আনতে হয়।

একই ইউনিয়নের বসিকপুরের বাসিন্দা আনিস আহমেদ জানান, জিএমহাট ইউনিয়নের শরিফপুর ও শ্রীপুর গ্রামের ৩৫টি গভীর নলকূপের একটিতেও পানি ওঠে না। তাই দূরের জলাশয় থেকে পানি সংগ্রহ করতে তাদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়। 

ফেনী সদর উপজেলার লেমুয়া বাজারের ব্যবসায়ী নেতা মোস্তফা হোসেন বলেন, বাজারে তিনটি চাপকল ও ১০/১২টি পানি তোলার মোটর রয়েছে। এসব কল ও মোটর থেকে পানি ওঠে না। আশপাশের টিউবওয়েলগুলোরও একই অবস্থা।

এদিকে জেলার পরশুরাম, ছাগলনাইয়াসহ সদর উপজেলায় বিভিন্ন বাড়িতে টিউবওয়েলের পানির সংকটের তথ্য পাওয়া গেছে। এতে অনেকে পুকুর অথবা ডোবার অস্বাস্থ্যকর পানি পান করে ডায়রিয়াসহ নানা রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে পড়েছেন।

ফেনী সদর উপজেলার রানীরহাট এলাকার কৃষক দিদারুল আলম বলেন, ‘আমাদের জমিতে এবার ধানের চাষ করেছি। কিন্তু পানির অভাবে ধানের থোড় এখন ভুষি হয়ে যাচ্ছে। পুকুর, জলাশয় ও খালের পানি শুকিয়ে যাওয়ায় সেচ দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। কৃষি জমিতে বিএডিসির পানি দেওয়ার কথা থাকলেও তারা দিতে পারছে না। তাই আমরা বিপাকে আছি। পানির অভাবে ফসল উৎপাদনে চরম সংকট দেখা দিয়েছে।

পরশুরামের কৃষক আবু আহাম্মদ বলেন, আমি এবার পাঁচ একর জমিতে ধানের চাষ করেছি। কিন্তু পানি না পাওয়ার কারণে সব ধান নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আশপাশের নদী, নালা, খাল, বিল সব শুকিয়ে গেছে। কোথাও পানি নেই।’

ফেনী পরিবেশ ক্লাবের সভাপতি নজরুল বিন মাহমুদুল বলেন, অতিরিক্ত তাপমাত্রার কারণে পুকুরের পানি পর্যন্ত শুকিয়ে গেছে। আশপাশের নদী-নালা জলাশয়গুলোতেও পানি কমে গেছে। ফলে পানির স্তর নিচে নেমে গেছে। তাই নলকূপে পানি ওঠে না। এতে জনস্বাস্থ্য হুমকির মুখে পড়েছে।

জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর ফেনীর নির্বাহী প্রকৌশলী শফিউল হক জানান, গত পাঁচ মাস অনাবৃষ্টির পাশাপাশি গরমের তীব্রতা বাড়ায় ভূ-গর্ভের পানির স্তর অনেক নিচে নেমে গেছে। ফলে গভীর নলকূপেও পানি পাওয়া যাচ্ছে না। সংকট কাটিয়ে উঠতে বিকল্প ব্যবস্থা চালুর বিষয়ে মন্ত্রণালয়ে আলোচনা করার কথা জানান তিনি।

প্রেমের ফাঁদে ফেলে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ, প্রেমিক আটক

প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:২৯ এএম
প্রেমের ফাঁদে ফেলে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ, প্রেমিক আটক
ছবি: খবরের কাগজ

টাঙ্গাইলের বাসাইলে প্রেমের ফাঁদে ফেলে নবম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ফয়সাল মিয়া নামে প্রেমিককে এলাকাবাসী আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে। 

বুধবার (১৬ এপ্রিল) রাতে বাসাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জালাল উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এর আগে দুপুরে অভিযুক্ত ফয়সাল মিয়াকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।

অভিযুক্ত ফয়সাল মিয়া জেলার মির্জাপুর উপজেলার হাটফতেপুর উত্তরপাড়া গ্রামের আব্দুল কাদের মিয়ার ছেলে। ভুক্তভোগী ওই ছাত্রী বাসাইল পৌর এলাকার একটি বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী এবং উপজেলার কাউলজানী ইউনিয়নের বাসিন্দা।  

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, প্রায় পাঁচ মাস আগে ওই শিক্ষার্থীর সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পরিচয় হয়। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরে গত পহেলা বৈশাখ সোমবার (১৪ এপ্রিল) বিকেলে ওই ছাত্রীকে বেড়ানোর কথা বলে মোটরসাইকেলযোগে বাসাইল পূর্ব-মধ্যপাড়া এলাকায় বাসাইল মুজিব হাবিব ইসলামীয়া দাখিল মাদরাসার পেছনে মজিবুুর রহমানের পুকুরের পূর্বপাশে একটি পরিত্যক্ত ঘরে নিয়ে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ করে। এ সময় স্থানীয়রা বিষয়টি টের পেয়ে প্রেমিক ফয়সাল মিয়াকে আটকে রেখে মারধর করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করে। এ ঘটনায় মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) বিকেলে ওই ছাত্রী বাদী হয়ে ফয়সাল মিয়ার বিরুদ্ধে বাসাইল থানায় মামলা করে।

ওসি জালাল উদ্দিন বলেন, ‘স্থানীয়রা অভিযুক্তকে আটক করে থানায় সোপর্দ করে। এ ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। অভিযুক্তকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।’  


জুয়েল/মেহেদী/

চা শিল্পকে টিকিয়ে রাখা শ্রমিকদের এখনো নেই ভূমির অধিকার

প্রকাশ: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:০১ পিএম
চা শিল্পকে টিকিয়ে রাখা শ্রমিকদের এখনো নেই ভূমির অধিকার
একডো আয়োজিত সিলেটের সাংবাদিকদের সঙ্গে এডভোকেসি সভায় চা শ্রমিক, সাংবাদিক ও বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধিরা। ছবি: খবরের কাগজ

‘সারা দেশে রয়েছে ১৬৮টি চা বাগান, এর মধ্যে ১৩৪টি চা বাগান আছে সিলেট বিভাগের মধ্যে। প্রায় পৌনে দুইশ বছর ধরে নামমাত্র মজুরি নিয়ে চা শিল্পকে টিকিয়ে রাখলেও এখন পর্যন্ত ভূমির অধিকার নেই চা শ্রমিকদের। চা বাগান গড়ার শুরু থেকেই চাষ উপযোগী জমি তৈরি করেছেন এই চা শ্রমিকরা। তারপরও নিজেদের তৈরি করা ভূমিতেই ভূমিহীন হয়ে আছেন চা শ্রমিকরা। র্দীঘবছর যাবত শোষিত এই চা জনগোষ্ঠী এখনো লড়ছেন দারিদ্র্যতার সঙ্গে। তাই ভূমি অধিকারের মতো রাষ্ট্রীয় মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হওয়ার দাবি তারা বিভিন্ন সময় তুললেও এই দাবি আদায়ে কখনো জোরালো ভূমিকা গ্রহণ করেতে পারেননি চা শ্রমিকরা।’ 

বুধবার (১৬ এপ্রিল) বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী উন্নয়ন সংস্থা এথনিক কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (একডো) আয়োজিত সিলেটের সাংবাদিকদের সঙ্গে এডভোকেসি সভায় এসব কথা বলেন চা শ্রমিক, সাংবাদিক ও বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধিরা। 

আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও অক্সফাম ইন বাংলাদেশের যৌথ সহযোগিতায় ‘লিডারশিপ ডেভলপমেন্ট অব টি লেবার ওমেন ওয়ার্কার অন দেয়ার রাইটস’ শিরোনামে নারী চা-শ্রমিকদের মধ্যে নেতৃত্ব বিকাশ এবং তাদেরকে অধিকার সচেতন করে তোলার লক্ষ্যে একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে একডো। এই প্রকল্পের মাধ্যমেই বর্তমানে চা শ্রমিকদের ভূমি অধিকার নিয়ে কাজ করতে চাচ্ছে একডো। 

একডোর নির্বাহী পরিচালক লক্ষ্মীকান্ত সিংহের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সভাপতি ফারুক মাহমুদ চৌধুরী, সিলেট প্রেসক্লাবের সভাপতি ইকরামুল কবির, সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার (কো-অর্ডিনেটর) ডা. আবু সালমান মো. সাইফুল ইসলাম। 

এই এডভোকেসি সভায় সিলেট প্রেসক্লাব, সিলেট জেলা প্রেসক্লাব, ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন (ইমজা) ও সিলেট উইমেনস জার্নালিস্ট ক্লাবের নেতারা ও বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন। 

সভায় বক্তারা বলেন, চা শ্রমিকদের ভূমির মালিকানা দিতে গেলে রাষ্ট্রকে উদ্যোগ নিতে হবে। কারণ সরকারি খাস জমি লিজ নিয়ে বিভিন্ন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান চা বাগান গড়ে তুলেন। তাই লিজ নেওয়া জমির মালিকানা কাউকে হস্তান্তর করার নিয়ম নেই। চা জনগোষ্ঠীর ভূমির অধিকারের জন্য রাষ্ট্রকেই প্রধান ভূমিকা পালন করতে হবে। কিন্তু দেশে বিভিন্ন সময় সরকার বদল হলেও চা শ্রমিকদের ভূমির অধিকার নিয়ে কখনোই কোনো সরকার উদ্যোগ নেয়নি। তাই এখনও সর্বক্ষেত্রে চা শ্রমিক জনগোষ্ঠী বৈষম্যের শিকার। 

মূলত কোনো ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান, সংস্থা বা নিবন্ধিত কোম্পানি চা বাগান করার জন্য জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে খাস জমি ইজারা নেন। জেলা প্রশাসকের অনুমতি সাপেক্ষে ইজারা গ্রহীতা ইজারার চুক্তি নামা ব্যাংকে বন্ধক রেখে ঋণ সুবিধাও গ্রহণ করতে পারেন। তবে ইজারাদাররা বাগানের ভূমি কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে সাবলিজ বিক্রয়, দান বা বাটোয়ায়ারা করার এক্তিয়ার রাখেন না। এমন কিছু করলে ইজারা বাতিল হওয়ার নিয়ম আছে। এছাড়াও চা শ্রমিকদের বসবাসের জন্য ঘর করে দেওয়ারও নিয়ম আছে। বর্তমানে এই নিয়মেই বাগান কর্তৃপক্ষ চলছেন। চা বাগানের ভিতর তৈরা করা ঘরগুলোতেই চা শ্রমিকরা থাকছেন। তবে এসব ঘরের মালিকানা তাদের নেই। যুগযুগ ধরে প্রতিটি চা শ্রমিক পরিবার থেকে কেউ না কেউ বাগানে কাজ করার সুবাদেই এসব ঘরে বসবাস করছেন চা শ্রমিকরা। 

সভায় উপস্থিত চা শ্রমিক সুমি নায়েক বলেন, যুগ যুগ ধরে আমাদের পূর্বসুরীরা এই চা বাগান গড়ে তুলেছেন। এই পরম্পরায় আমরাও কাজ করছি চা বাগানে। তারপরও আমরা ভূমিহীন। প্রতি ঘরের একজন করে বাগানে কাজ করে তাই আমরা ঘরে থাকতে পারি। আমাদের কি ভূমির মালিক হওয়ার কোনো অধিকার নাই? 

শাকিলা ববি/মাহফুজ

 

বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলী নিখোঁজের এক যুগ পার

প্রকাশ: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ০৭:৫৪ পিএম
আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:০৪ পিএম
বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলী নিখোঁজের এক যুগ পার
নিখোঁজ বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলী। ছবি: সংগৃহীত

কেন্দ্রীয় বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও সিলেট ২ আসনের সাবেক এমপি এম ইলিয়াস আলী নিখোঁজের এক যুগ পার হলো আজ বুধবার (১৬ এপ্রিল)। ১৩ বছর পূর্বে ১৭ এপ্রিল রাতে ঢাকা থেকে নিজের গাড়িচালকসহ নিখোঁজ হন তিনি। এই ১৩ বছরেও সাবেক এই সংসদ সদস্যের নিখোঁজ হওয়ার রহস্য উদঘাটন হয়নি। তিনি ফিরে আসবেন বলে এখনও আশায় আছেন তার পরিবারের সদস্য ও বিএনপির নেতা-কর্মীরা। তিনি নিখোঁজের পর থেকে বিএনপি অভিযোগ করছে তৎকালীন আওয়ামী সরকার তাকে ‘গুম’ করে রেখেছে। তবে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকারের পতনের পরও কোনো খোঁজ মেলেনি ইলিয়াস আলীর।

ইলিয়াস আলীর পরিবার ও জেলা বিএনপি সূত্রে জানা যায়, ইলিয়াসের গ্রামের বাড়ি সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলায়। তৎকালীন বিশ্বনাথ বালাগঞ্জ (বর্তমান বিশ্বনাথ-ওসমানীনগর নিয়ে গঠিত সিলেট-২) আসনের এমপি ছিলেন তিনি। ২০১২ সালের ১৭ এপ্রিল রাতে গাড়িতে করে নিজের বনানীর বাসা থেকে বের হন বিএনপির তৎকালীন সাংগঠনিক সম্পাদক এম ইলিয়াস আলী। এসময় তার সঙ্গে ছিলেন গাড়িচালক আনসার আলী। রাত ১২টার পর মহাখালী থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় ইলিয়াস আলীর প্রাইভেটকার উদ্ধার করে পুলিশ। তখন গাড়িতে ছিলেন না ইলিয়াস ও তার গাড়িচালক। বনানী থানার তৎকালীন এসআই সাইদুর রহমান সে সময় সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, মধ্যরাতে ইলিয়াস আলীর প্রাইভেট কারটি মহাখালী সাউথ পয়েন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনে থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ। গাড়ির ভেতরে পাওয়া চালক আনসারের মোবাইল ফোন সূত্রে জানা যায়, গাড়িটি ইলিয়াস আলীর।

বিএনপির এই প্রভাবশালী নেতা নিখোঁজ হওয়ার পর থেকেই সিলেট বিএনপি নেতারা নানা প্রতিবাদ কর্মসূচি করে আসছেন। ইলিয়াস আলীকে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে প্রতিবছরই প্রতিবাদ মিছিল নিয়ে সিলেটের জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দেন সিলেট জেলা বিএনপির নেতারা। বিগত বছরগুলোর ন্যায় এবারও প্রতিবাদ কর্মসূচি করবে সিলেট জেলা বিএনপি। ইলিয়াস আলী ও তার গাড়ি চালককে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে কর্মসূচি ঘোষণা করেছে সিলেট জেলা বিএনপি।

এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সিলেট জেলা বিএনপির সহ-দফতর সম্পাদক মাহবুব আলম এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১১টায় সিলেট নগরীর কোর্ট পয়েন্ট মানববন্ধন ও বেলা ১২টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে প্রধান উপদেষ্টা বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান।

এই দুই কর্মসূচিতে বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের সকলস্তরের নেতা-কর্মীদের যথাসময়ে উপস্থিত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী।

শাকিলা ববি/মাহফুজ