
অনুমতি ছাড়া কর্মস্থল ত্যাগ ও গাড়িতে অবৈধ অর্থ বহনের অভিযোগে গাইবান্ধা এলজিইডির সেই নির্বাহী প্রকৌশলী ছাবিউল ইসলামকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) এলজিআরডি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নিজাম উদ্দিনের সই করা এক চিঠিতে এ তথ্য জানা গেছে।
মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে গাইবান্ধা এলজিইডি কার্যালয় থেকে এ সংক্রান্ত চিঠি গণমাধ্যমের হাতে আসে।
চিঠিতে বলা হয়, কর্তৃপক্ষের অনুমতি না নিয়ে নির্বাহী প্রকৌশলী ছাবিউল ইসলাম কর্মস্থল ত্যাগ, গাড়িতে অবৈধ অর্থবহন ও যৌথবাহিনী গাড়ি ও টাকা জব্দ করার বিষয়টি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত হয়েছে।
এ ঘটনায় নির্বাহী প্রকৌশলী ছাবিউল ইসলামের বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর বিধি ৩(খ) ও (ঘ) অনুসারে অসদাচরণ ও দুর্নীতির অভিযোগে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়। ২০১৮ এর বিধি ১২ (১) অনুসারে তাকে বরখাস্ত করা হয়। বরখাস্তকালীন তিনি খোরপোশ ভাতা পাবেন।
এদিকে বরখাস্ত হওয়ার বিষয়ে জানতে বুধবার ছাবিউল ইসলামের মেবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
এর আগে গত রবিবার এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলী (চলতি দায়িত্ব) আবদুর রশীদ মিয়া গাইবান্ধা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী ছাবিউল ইসলামকে কারণ দর্শানোর (শোকজ) নোটিশ দেন। এতে জানতে চাওয়া হয়, কর্মস্থল ত্যাগ ও অবৈধ অর্থ বহনের ঘটনায় কেন আপনার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে না তা সাত কার্যদিবসের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে।
প্রসঙ্গত যৌথবাহিনীর সদস্যরা গত বৃহস্পতিবার রাতে নাটোর-বগুড়া মহাসড়কে যানবাহনে তল্লাশি করছিলেন। রাত ২টার দিকে বগুড়া থেকে নাটোর অভিমুখে একটি ব্যক্তিগত গাড়ি থামিয়ে তল্লাশির সময় গাড়ির পেছনের ডালায় বিপুল পরিমাণ টাকা দেখতে পান তারা। এ সময় গাড়িতে থাকা আরোহী ছাবিউল ইসলাম নিজেকে গাইবান্ধার এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী পরিচয় দেন। পরে তাকে ও গাড়িচালককে সিংড়া থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
তদন্তকারী কর্মকর্তা তলব করা মাত্র হাজির হবেন, শুক্রবার সন্ধ্যায় এমন শর্তে মুচলেকা দিয়ে ছাড়া পান ছাবিউল ইসলাম। এ সময় তিনি ওই টাকা তার জমি বিক্রির বলে দাবি করেন। তবে এর সমর্থনে ছাবিউল কোনো প্রমাণ দিতে না পারায় পুলিশ ওই টাকা ও টাকা বহনকারী গাড়িটি জব্দ করে। ওই টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দিতে নির্দেশ দেন নাটোরের সিংড়া আমলি আদালত।
২০০৫ সালের ২১ ডিসেম্বর সাঘাটা উপজেলা প্রকৌশলী হিসেবে মো. ছাবিউল ইসলাম গাইবান্ধা জেলায় এসেছিলেন। বর্তমানে তিনি গাইবান্ধা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী। ২১ বছর ধরে তিনি গাইবান্ধা জেলাতেই কর্মরত আছেন। মাঝখানে তাকে বরিশালে বদলি করা হলেও ২৩ দিনের মাথায় আবারও গাইবান্ধায় চলে আসেন। সরকারি চাকরিবিধি অনুযায়ী, একজন সরকারি কর্মকর্তা একই কর্মস্থলে টানা তিন বছরের বেশি থাকার কথা নয়। অথচ তিনি ম্যানেজ প্রক্রিয়ায় ২১ বছর ধরে একই স্থানে রয়েছেন।