ঢাকা ১১ বৈশাখ ১৪৩২, বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫
English
বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ১১ বৈশাখ ১৪৩২

লিবিয়ায় নির্যাতনের শিকার মাদারীপুরের আরও এক যুবকের মৃত্যু, নিখোঁজ চাচাতো ভাই

প্রকাশ: ২০ মার্চ ২০২৫, ০৭:০৫ পিএম
লিবিয়ায় নির্যাতনের শিকার মাদারীপুরের আরও এক যুবকের মৃত্যু, নিখোঁজ চাচাতো ভাই
খবরের কাগজ গ্রাফিকস

স্বপ্নের দেশ ইতালি যাওয়ার জন্য দালালের খপ্পরে পড়ে লিবিয়ার বন্দিশালায় নির্যাতনের শিকার হয়ে সজিব সরদার (২৮) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। বুধবার (১৯ মার্চ) রাতে পরিবারের সঙ্গে শেষ কথা হয় তার। বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) বাংলাদেশ সময় মৃত্যুর খবর বাড়িতে পৌঁছালে শোকের ছায়া নেমে আসে পরিবারে। নিহত সজিব সদর জেলার শিবচর উপজেলার নিলখী ইউনিয়নের বাগমারা গ্রামের চান মিয়া সরদারের ছেলে।

জানা গেছে, ইতালি যাওয়ার জন্য চারমাস আগে বাড়ি ছাড়েন সজিব ও তার চাচাতো ভাই রাকিব। স্থানীয় দালালের মাধ্যমে প্রথমে লিবিয়া পৌঁছান তারা। লিবিয়া যাওয়ার পরই দালাল চক্রের হাত বদল হয়। বন্দী হয় মাফিয়াদের হাতে। এরপর থেকেই চলে নির্যাতন। নির্যাতনের ভিডিও বাড়িতে পাঠিয়ে আদায় করা হয় মোটা অঙ্কের টাকা। লিবিয়ার বন্দীশালায় পালাক্রমে নির্যাতনের শিকার হতে থাকেন সজিব ও রাকিব। এক পর্যায়ে সজিব গুরুতর অসুস্থ হয়ে পরলে লিবিয়াতে থাকা আরেক দালালের তত্ত্বাবধানে ছেড়ে দেওয়া হয়। পরে বৃহস্পতিবার রাতে তার মৃত্যু হয়।

নিহতের স্বজনেরা জানান, মাদারীপুর সদর উপজেলার শিরখাড়া এলাকার দালাল বোরহান বেপারীর মাধ্যমে ১৫ লাখ টাকা চুক্তিতে ইতালির নিয়ে যাওয়ার কথা বলে লিবিয়া নেয়। সেখান থেকে সরাসরি ইতালি নেওয়ার জন্য মাফিয়াদের কাছে বিক্রি করে দেয়। দুই দফা বিক্রি করে সজিবকে। মারধর করে দফায় দফায় ৪৬ লাখ টাকা আদায় করে দালাল চক্র। বুধবার সজিবের অবস্থা খারাপ দেখে মাফিয়ারা রাস্তায় ফেলে যায়। পরে খোঁজ নিয়ে লিবিয়ায় থাকা পরিচিত কয়েকজন সজিবকে উদ্ধার করে বাসায় নিয়ে আসে। পরে বেসরকারি একটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে তার মৃত্যু হয়।

নিহত সজিবের বাবা চান মিয়া সরদার বলেন, ‘আমার ছেলেকে দালাল বোরহানের ইতালি নেওয়ার কথা বলে লিবিয়া নিয়ে যায়। সেখানে বিক্রি করে দেয়। চার মাস আটকে রেখে মারধর করে। শিকল দিয়ে বেঁধে রাখে। মারতে মারতে আমার ছেলেটা গতকাল মরে গেছে।’

নিহত সজীবের বোন শামীমা আক্তার বলেন, ‘দফায় দফায় ৪৬ লাখ টাকা দিয়েও ভাইকে বাঁচাতে পারলাম না। জমি-জমা বিক্রি করে দিয়েছি ওর জন্য। সরকারের কাছে আমার ভাইয়ের লাশ যেন বাড়ি আসে এই দাবি জানাই। আর দালাল বোরহানের ফাঁসি চাই।’

শিবচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পারভীন খানম বলেন, ‘বিষয়টি মর্মান্তিক। আমি খোঁজ খবর নিচ্ছি। মরদেহ আনার বিষয়ে প্রয়োজনী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

মো. রফিকুল ইসলাম/মাহফুজ 

 

নাটোরে বোর্ড বই তৈরির কারখানা সিলগালা

প্রকাশ: ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ১১:৪১ এএম
নাটোরে বোর্ড বই তৈরির কারখানা সিলগালা
নাটোরে বোর্ড বই তৈরির কারখানা সিলগালা করা হয়েছে। ছবি: খবরের কাগজ

নাটোরের সিংড়া উপজেলার হাতিয়ান্দহ ইউনিয়নের নলবাতা এলাকায় বোর্ড বই তৈরির একটি কারখানাকে নকল কারখানা সন্দেহে সিলগালা করেছে যৌথবাহিনী।

বুধবার (২৩ এপ্রিল) এই সিলগালা করা হয়।

প্রশাসনের দাবি মালিক যদি ওই বই ছাপানোর প্রয়োজনীয় বৈধ ডকুমেন্ট দেখাতে পারে তবে সিলগালা প্রত্যাহার করা হবে। অন্যথায় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট গোলাম রব্বানী সরদার আর জানান জানান, বুধবার দুপুর পর গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ওই অভিযান চালায় যৌথবাহিনী।

ওই সময় তারা মাদ্রাসা বোর্ডের বিপুল পরিমাণ  বোর্ড বই উদ্ধার করেন। এরপর কারখানাটি সিলগালা করা হয়।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট গোলাম রব্বানী সরদার আরও জানান, জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই)-এর তথ্যের ভিত্তিতে হাতিয়ান্দহ ইউনিয়নের নলবাতা বাজারে ক্ষণিকালয় নামে একটি বাড়িতে ওই অভিযান চালনা করা হয়।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, বাড়ির মালিক কয়েকটি কক্ষ ভাড়া দেন। তবে প্রেসের মালিক আব্দুল হালিমকে সেখানে পাওয়া যায়নি। মোবাইল ফোনে কথা হয়েছে। কারখানা মালিক ওই বই ছাপানোর অনুমতি আছে এমন দাবি করার পর তাকে ডকুমেন্ট দেখাতে বলা হয়েছে। ডকুমেন্ট দেখানোর পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কামাল মৃধা/সুমন/

পোষা সাপের কামড়ে প্রাণ গেল সাপুড়ের

প্রকাশ: ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ১১:২২ এএম
পোষা সাপের কামড়ে প্রাণ গেল সাপুড়ের
সাপ ধরছেন সাপুড়ে শাকিল

দিনাজপুর খানসামায় নিজ বাড়িতেই পোষা সাপের কামড়ে শাকিল ইসলাম (৩১) নামে এক সাপুড়ের মৃত্যু হয়েছে। 

মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) বিকেলে উপজেলার খামারপাড়া ইউনিয়নের গারপাড়া পেশার মেম্বারপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত সাপুড়ে শাকিল ইসলাম ওই এলাকার ফরমাজ আলীর বড় ছেলে।

এলাকাবাসী ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে, শাকিল মাহান (গুনিকের) পাশাপাশি বিভিন্ন সাপ নিয়ে খেলা করতেন। রমজান মাসের কয়েকদিন আগে তিন এই গোমা (গোখরা) সাপটি ধরে বাড়িতে নিয়ে আসেন। পরে মঙ্গলবার দুপুরে তার পোষা সেই সাপটি তাকে কামড় দেয়। প্রথমে শাকিল বিষয়টি কাউকে জানাননি, নিজে নিজে সাপটির বিষ নামানোর চেষ্টা করেন। পরে পরিবারের লোকজন বিষয়টি জানতে পেরে অন্য আরেক গুনিকের কাছে নিয়ে যায়। সেই গুনিকেও সাপের বিষ নামাতে পারে না পরে শাকিল খুব বেশি অসুস্থ হয়ে পড়লে দিনাজপুর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। 

পরে মৃত শাকিলকে হাসপাতাল থেকে বাড়িতে এনে পরিবারের ধারণামতে তার জীবন ফিরে আসবে এ বিশ্বাসে রাতে আবারও গুনিক ও ওঝা নিয়ে ঝাড়ফুঁক করা হয়। এ ঘটনা দেখতে এলাকায় উৎসুক জনতার ভিড় লাগে। অবশেষে বুধবার (২৩ এপ্রিল) সকাল ১০টার দিকে তার জানাজা নামাজ শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন হয়।

আরও জানা গেছে, এর আগেও তাকে ঐ সাপটি কামড় দিয়েছিল, তখন কিছু হয়নি। কিন্তু এদিন সেই সাপের কামড়েই তার মৃত্যু হয়েছে। উৎসুক জনতা সাপটিকে মেরে ফেলে দিয়েছে।

খামারপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু বক্কর সিদ্দিক চৌধুরী বলেন, আমি শাকিলকে দীর্ঘদিন থেকে জানতাম মাহানগিরি (গুনিক) করে। আমি তার মাধ্যমে মৌমাছির চাকও কেটে নিয়েছিলাম। বিভিন্ন সময়ে তাকে সাপ নিয়ে খেলা করতে দেখা যেত।

এ বিষয়ে খানসামা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজমূল হক বলেন, আপনার মাধ্যমে জানলাম সাপের কামড়ে একজন মারা গেছে। এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হবে।

সুলতান/মেহেদী/

হাটহাজারীতে নিশীথে পাহাড় কাটা, অভিযানে লাখ টাকা জরিমানা

প্রকাশ: ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ১১:১৪ এএম
আপডেট: ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ১১:২০ এএম
হাটহাজারীতে নিশীথে পাহাড় কাটা, অভিযানে লাখ টাকা জরিমানা
চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে গভীর রাতে অবৈধভাবে পাহাড় কাটার বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। ছবি: খবরের কাগজ

চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে গভীর রাতে অবৈধভাবে পাহাড় কাটার বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। অভিযানে একজনকে আটক করে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। 

বুধবার (২৩ এপ্রিল) রাত ১১টার দিকে হাটহাজারী উপজেলা প্রশাসনের নেতৃত্বে দক্ষিণ পাহাড়তলীর নন্দীরহাট এলাকায় এ অভিযান পরিচালিত হয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবিএম মশিউজ্জামান এবং পরিবেশ অধিদপ্তরের একটি দল এ অভিযানে অংশ নেয়।

ঘটনাস্থল থেকে হাতেনাতে ধরা হয় মো. নোমান সিদ্দিকী নামে এক ব্যক্তিকে, যিনি এক্সকেভেটর (খননযন্ত্র) দিয়ে পাহাড় কাটছিলেন। নোমান নোয়াখালীর চৌমুহনী এলাকার বাসিন্দা। 

ইউএনও বলেন, ‘আটক ব্যক্তি দোষ স্বীকার করে নেওয়ায় তাকে পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫ অনুযায়ী এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এই অপরাধের সঙ্গে জড়িত অন্যদের বিরুদ্ধে পরিবেশ অধিদপ্তর নিয়মিত মামলা করবে।’ 

ইউএনও জানান, অভিযানে ধরা পড়া ব্যক্তি ছাড়াও পাহাড় কাটার পেছনে থাকা মূল হোতারা আগেই পালিয়ে যায়। 

এর আগে চট্টগ্রামের একটি পত্রিকার অনুসন্ধানী প্রতিবেদন অনুযায়ী, দক্ষিণ পাহাড়তলীর মাহমুদাবাদ এলাকায় গত দুই মাস ধরে একটি প্রভাবশালী চক্র রাতের আঁধারে পাহাড় কেটে মাটি বিক্রি করে আসছে। আলী (র.) দরগাহর আশপাশে খননযন্ত্র দিয়ে পাহাড় কেটে রাস্তা ও বিভিন্ন স্থানে ভরাটের কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে সেই মাটি। এতে পাহাড়ের একটি বড় অংশ প্রায় বিলীন হয়ে গেছে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, প্রতিদিন রাতভর ৮-১০টি ড্রাম ট্রাকে করে প্রতি ট্রাক মাটি ২৪০০ টাকায় বিক্রি করা হয়। কবরস্থান, বাড়িঘর বা নির্মাণাধীন স্থানে এসব মাটি ব্যবহৃত হচ্ছে।

এই সিন্ডিকেটে জড়িতদের তালিকায় রয়েছে এনাম সওদাগর, নেজাম উদ্দিন, শাহনেওয়াজ, ফোরকান, কাশেম সওদাগরসহ ১৪-১৫ জন। এ ছাড়া ‘মাটি মনসুর’ নামেও একজনের বিরুদ্ধে বড় পরিসরে মাটি ব্যবসার অভিযোগ উঠেছে।

তাওফিক/ 

টাঙ্গাইলে ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বসতঘরে, নারীর মৃত্যু

প্রকাশ: ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ১০:২৩ এএম
আপডেট: ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ১১:২০ এএম
টাঙ্গাইলে ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বসতঘরে, নারীর মৃত্যু
ছবি: খবরের কাগজ

টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে পাথরবোঝাই একটি ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বসতঘরের ওপর উল্টে পড়ে রমেচা বেগম (৫৫) নামে এক নারীর ঘুমন্ত অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে। 

সে উপজেলার টে‌পিবাড়ি এলাকার আব্দুল কুদ্দুসের স্ত্রী।

বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) ভোর সাড়ে ৫টার দিকে ভূঞাপুর-তারাকান্দি আঞ্চলিক মহাসড়কের উপ‌জেলার টেপিবাড়ি মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। 

স্থানীয়রা জানায়, ফজর নামাজ আদায় করে রমেচা বেগম ঘুমিয়ে পড়ে‌ছিলেন। এ সময় তার স্বামী কুদ্দুস নামাজ পড়তে পাশের মসজিদে যান। এর মধ্যেই হঠাৎ জামালপুরগামী পাথরবোঝাই একটি ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে গিয়ে তাদের ঘরের ওপর প‌ড়ে। এতেই রমেচা বেগমের মৃত্যু হয়। পরে ট্রাকচালককে আটক ক‌রে পু‌লিশ ও ফায়ার সা‌র্ভিসকে খবর দেওয়া হয়। 

এ ব্যাপারে ভূঞাপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) অনন্ত দাস বলেন, পাথরবোঝাই ট্রাক উল্টে ঘরের ওপর উঠে গিয়ে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। চালকসহ ট্রাক আটক করা হয়েছে। 

জুয়েল/মেহেদী/

চবির অপহৃত ৫ শিক্ষার্থীর মুক্তি নিয়ে ধূম্রজাল

প্রকাশ: ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ১০:১৮ এএম
আপডেট: ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ১১:১২ এএম
চবির অপহৃত ৫ শিক্ষার্থীর মুক্তি নিয়ে ধূম্রজাল
চবির অপহৃত ৫ শিক্ষার্থী

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া অপহৃত পাঁচ শিক্ষার্থীকে অপহরণকারীরা ছেড়ে দিয়েছে- মঙ্গলবার রাত থেকেই চাউর হয়েছে এমন খবর। তবে খবরটি সত্য কি না, তা নিশ্চিত করতে পারেননি কেউই। এতদিন অপহৃতদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা গেলেও এখন তাদের কারোর সঙ্গেই যোগাযোগ করা সম্ভব হয়ে উঠছে না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ বলছে, পাঁচ শিক্ষার্থীর মুক্তির বিষয়টি নিছক গুজব। তার ওপর অপহৃতদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পারা নতুন শঙ্কার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। 

সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (পিসিজেএসএস) সহযোগী ছাত্রসংগঠন পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি নিপুণ ত্রিপুরা বলেন, ‘মঙ্গলবার রাত থেকে বিভিন্ন মাধ্যমে শোনা যাচ্ছে অপহৃতদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত এর কোনো সত্যতা আমরা পাইনি। কয়েক দিন ধরে অপহৃতদের কারোর পরিবারের সঙ্গেও যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না। তাদের কারোরই মোবাইল নম্বর খোলা নেই। নিকটাত্ময়ীদের নম্বরগুলোও বন্ধ করে রাখা হয়েছে। এটি আরেকটি নতুন শঙ্কার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অপহৃত অলড্রিন ত্রিপুরার বাবা বিজয় ত্রিপুরার সঙ্গে সর্বশেষ গত ১৭ এপ্রিল যোগাযোগ করতে পেরেছিলাম। এরপর থেকে তার সঙ্গেও আর যোগাযোগ করতে পারছি না। শুধু দিব্যি চাকমার বাবা ধনঞ্জয় চাকমার মোবাইল ফোন খোলা রয়েছে। তবে তিনিও কারও ফোন রিসিভ করছেন না।’

অপহৃতদের কোনো সন্ধান তো মিলল না, উপরন্তু তাদের অভিভাবকরাই এখন যোগাযোগবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন। 
শুরু থেকেই পাঁচ শিক্ষার্থী অপহরণের ঘটনায় প্রসিত খীসার নেতৃত্বাধীন পাহাড়ি আঞ্চলিক সংগঠন ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্টকে (ইউপিডিএফ) দায়ী করে আসছে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ। যদিও এ অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে প্রসিত খীসার ইউপিডিএফ। 

এদিকে অপহরণের আট দিন পার হলেও এখন পর্যন্ত থানায় কিংবা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে কেউ লিখিত বা মৌখিক কোনো অভিযোগ করেননি বলে জানিয়েছেন খাগড়াছড়ি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল বাতেন মৃধা। শুধু অপহরণের শিকার দিব্যি চাকমার মা ভারতী দেওয়ান ঘটনার দিন ফেসবুকে একটি পোস্ট করে সন্তান ফিরে পাওয়ার আকুতি জানিয়েছিলেন। তবে কেন, কী কারণে অপহরণ করা হয়েছে তা তিনি পোস্টে উল্লেখ করেননি। 

খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার মো. আরেফিন জুয়েল বলেন, ‘মঙ্গলবার রাত থেকেই গুজব ছড়িয়েছে অপহৃতদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে কোনো তথ্য নেই।’

অপহৃত পাঁচ শিক্ষার্থী হলেন- রাঙ্গামাটি জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলার বটতলা এলাকার মৈত্রীময় চাকমা, বরকল উপজেলার চাইল্যাতুলি এলাকার দিব্যি চাকমা, জুরাছড়ি উপজেলার জামেরছড়ি এলাকার রিশন চাকমা, বান্দরবান জেলার লামা উপজেলার সতীশপাড়া এলাকার অলড্রিন ত্রিপুরা এবং আলীকদম উপজেলার রেংপু পাড়া পোয়ামুহুরী এলাকার লংঙি ম্রো। এরা সবাই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। এবারের বৈসাবির ছুটিতে অন্য চার বন্ধু মিলে রাঙামাটি জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলার বটতলা এলাকার মৈত্রীময় চাকমার বাড়িতে বেড়াতে যান। 

বৈসাবি উৎসব শেষে গত ১৫ এপ্রিল তারা বাঘাইছড়ি থেকে খাগড়াছড়ি আসেন এবং ওই রাতে খাগড়াছড়ি সদরের কুকিছড়া এলাকায় মৈত্রীময় চাকমার বাড়িতে রাতযাপন করেন। পরদিন ১৬ এপ্রিল ভোরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ফেরার পথে খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার গিরিফুল এলাকা থেকে অটোরিকশাচালকসহ তাদের অপহরণ করে নিয়ে যায় পাহাড়ি কয়েকজন অস্ত্রধারী। পরে অটোরিকশাচালককে ছেড়ে দেওয়ার কথা শোনা গেলেও তা এখনো নিশ্চিত করতে পারেননি কেউই।