ঢাকা ১০ বৈশাখ ১৪৩২, বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫
English
বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ১০ বৈশাখ ১৪৩২

পাওনা টাকা না পেয়ে উঠানের মাটি কেটে নিল যুবদল নেতা

প্রকাশ: ২০ মার্চ ২০২৫, ০৮:১৯ পিএম
পাওনা টাকা না পেয়ে উঠানের মাটি কেটে নিল যুবদল নেতা
ছবি: খবরের কাগজ

টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে পাওনা টাকা না পেয়ে বসতবাড়ির মাটি কেটে নিলেন এক যুবদল নেতা। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার আজগানা ইউনিয়নের আজগানা গ্রামে।

বুধবার (১৯ মার্চ) ভুক্তভোগী বাড়ির মালিক আজাহার গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে তার এ ক্ষোভের কথা জানান। অভিযুক্ত যুবদল নেতা মাসুদ সিকদার আজগানা ইউনিয়নের খাড়াপাড়া গ্রামের সাগর সিকদারের ছেলে।

উপজেলার আজগানা গ্রামের আজাহার (৩৫) আজগানা ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক। তিনি উপজেলা যুবদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মাসুদ সিকদারের কাছ থেকে বাকিতে কিছু ইট কিনেন। ইটের টাকা পরিশোধ করতে না পারায় আজাহার বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র অবস্থান করছেন। ওয়াদা অনুযায়ী ইটের টাকা পরিশোধ না করায় মাসুদ সিকদার রাতের আঁধারে ভেকু দিয়ে বসতবাড়ির মাটি কেটে নিয়ে গেছেন বলে আজাহার অভিযোগ করেছেন।

ভুক্তভোগী আজাহার বলেন, গত বছর মাসুদ সিকদারের কাছ থেকে বাকিতে ১ লাখ টাকার ইট নিয়ে ঢাকার একটি সাইটে দিয়েছি। ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর ঢাকার ব্যবসায়ী ইটের টাকা না দিয়ে পালিয়ে যায়। এরপর মাসুদ সিকদার ইটের টাকার জন্য আমাকে চাপ দেন। একপর্যায়ে একটি সাদা স্ট্যাম্পে আমার স্বাক্ষর নেন। এরপর কয়েকদিন আগে রাতের আধারে প্রভাব খাটিয়ে আমার বাড়ির উঠানের মাটি ভেকু মেশিন দিয়ে কেটে নিয়ে যায়। পুরো আজগানা গ্রামটা সিকদার পরিবারের কাছে জিম্মি। তাদের ভয়ে কেউ কথা বলতে পারে না। আমি এর উপযুক্ত বিচার চাই।

যুবদল নেতা মাসুদ সিকদার বলেন, চার বছর আগে আজাহার ৫০ হাজার টাকার ইট নেয়। আরও কয়েক দফায় ৫০ হাজার টাকা নিয়ে টাকা দিতে না পারায় বসতবাড়ির লাল মাটি বিক্রি করবে বলে জানান। এরপর ১ হাজার ২০০ টাকা গাড়ি হিসেব করে ৮৬ গাড়ি মাটি কাটি। আমি জোর করে মাটি কাটিনি। আজাহার নিজেই আমার কাছে মাটি বিক্রি করেছেন।

মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) এবিএম আরিফুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জুয়েল রানা/মাহফুজ

সীতাকুণ্ডে কিশোরীকে বিয়ে করতে এসে জরিমানা গুণলেন ভারতীয় যুবক

প্রকাশ: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:৪২ এএম
আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:৪৩ এএম
সীতাকুণ্ডে কিশোরীকে বিয়ে করতে এসে জরিমানা গুণলেন ভারতীয় যুবক
সীতাকুণ্ডে ১৪ বছরের কিশোরীকে বিয়ে করতে এসে জরিমানা গুণল ভারতীয় যুবক। ছবি: খবরের কাগজ

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার দক্ষিণ বাঁশবাড়িয়া এলাকায় ১৪ বছরের কিশোরীকে বিয়ে করতে আসলে ভ্রাম্যমাণ আদালত বিয়ের আয়োজনকারীকে ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করেন।

মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) রাত আটটার দিকে সীতাকুণ্ড উপজেলার দক্ষিণ বাঁশবাড়িয়া এলাকার (বাদামতল) পশ্চিম পাশে অরুণ বাবুর খোলা নামক বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।

বর সেঁজে বিয়ের পিঁড়িতে বসেছেন সুশান্ত নাথ নামের এক যুবক। অথচ তিনি একজন ভারতীয় নাগরিক। ওই ভারতীয় যুবক গত ১৬ এপ্রিল বেড়াতে এসেছিলেন বাংলাদেশে। চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার দক্ষিণ বাঁশবাড়িয়া এলাকায় দীপালি বালা নাথ নামের তার ফুফুর বাড়িতে এসে ওঠেন তিনি। এরই মধ্যে ওই ভারতীয় যুবকের সঙ্গে বিয়ে ঠিক করা হয় নবম শ্রেণির এক ছাত্রীর। শুরু হয় বিয়ের আনুষ্ঠানিকতাও। এমন বাল্যবিবাহের খবরে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন ম্যাজিস্ট্রেট। এতে পণ্ড হয় বিবাহ।

বিয়ের পিঁড়িতে বসা ওই তরুণীর নাম শান্তা নাথ (১৪)। তার পরিবার দক্ষিণ বাঁশবাড়িয়া এলাকায় বসবাস করেন।

অন্যদিকে ভারতীয় নাগরিক ওই যুবকের নাম সুশান্ত নাথ (২৭)। তিনি ভারতের কলকাতার বাসিন্দা। তার পাসপোর্ট অনুযায়ী তিনি এক মাসের জন্য বাংলাদেশে ভ্রমণে এসেছিলেন। 

ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল্লাহ আল মামুন।

ভ্রাম্যমাণ অভিযান সূত্রে জানা গেছে, এ সময় নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী শান্তা নাথ নামের এক তরুণীকে ভারতীয় এক যুবকের সঙ্গে বিয়ে দেওয়ার সময় হাতেনাতে ধরা হয়। ওই ভারতীয় যুবক এক মাসের জন্য বাংলাদেশে বেড়াতে এসেছিলেন তার আত্মীয়ের বাড়িতে। তার পাসপোর্ট ও ভিসা দেখে তাকে ভারতীয় নাগরিক হিসেবে শনাক্ত করা হয়।

এ বিয়ের আয়োজন ও তত্ত্বাবধানের অপরাধে অভিযুক্ত দীপালি বালা নাথকে বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন ২০১৭-এর সংশ্লিষ্ট ধারায়   ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

পরবর্তীতে ১৮ বছরের আগে যেন বিবাহের আয়োজন না করে সে বিষয়ে কন্যার মা-বাবাসহ অভিযুক্তকে সতর্ক করা হয়। মোবাইল কোর্ট অভিযানে সহযোগিতা করেন সীতাকুণ্ড মডেল থানা পুলিশ।

মুসলেহ উদ্দীন/সুমন/

টাঙ্গাইলে গ্রামবাসীর মুষ্টিচালে হচ্ছে রাস্তা

প্রকাশ: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:৪৮ এএম
টাঙ্গাইলে গ্রামবাসীর মুষ্টিচালে হচ্ছে রাস্তা
টাঙ্গাইলের মির্জাপুর-দেলদুয়ার উপজেলার দুই গ্রাম গবড়া ও ডুবাইল। গ্রামবাসী নিজেদের সঞ্চিত মুষ্টিচাল বিক্রি করে রাস্তা নির্মাণ করছেন। ছবি: খবরের কাগজ

স্বাধীনতার ৫৪ বছর পার হলেও উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি টাঙ্গাইলের মির্জাপুর-দেলদুয়ার উপজেলার দুই গ্রামে। গ্রাম দুটিতে বাস করেন কয়েক হাজার মানুষ। রাস্তা নিচু হওয়ায় প্রতিবছর বন্যাকবলিত হয় গ্রামবাসী। বৃষ্টি হলেই অনুপযোগী হয়ে পড়ে রাস্তা দিয়ে চলাচল। এতে ভোগান্তিতে পড়েন দুই গ্রামের বাসিন্দারা। সেই ভোগান্তি দূর করতে উদ্যোগ নেন নিজেরাই। সাপ্তাহিক মুষ্টির চাল তুলে তা বিক্রি করে এক কিলোমিটার রাস্তা করেছেন দুই গ্রামবাসী।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গ্রামের বাসিন্দারা মাটি কাটার কাজ করছেন। বিভিন্ন বয়সী মানুষ রাস্তা দিয়ে মাটি ফেলছেন। কেউ কেউ বাড়ি বাড়ি গিয়ে মুষ্টির চাল তুলছেন। রাস্তার উন্নয়নের জন্য দুই গ্রামের মানুষ মিলে ৫ বছর ধরে মুষ্টির চাল তুলছেন বলে জানান তারা।

গ্রামবাসী জানান, মির্জাপুর-দেলদুয়ার উপজেলার শেষ প্রান্তে দুটি গ্রাম গবড়া ও ডুবাইল। স্বাধীনতার পর তাদের এলাকার কোনো উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। বর্ষা মৌসুম আসার সঙ্গে সঙ্গে পানিতে তলিয়ে যায় রাস্তা। সে সময় ৪-৫ মাস জলাবদ্ধতা থাকে। ছেলেমেয়েদের স্কুল-কলেজ ও অসুস্থ মানুষ নিয়ে চলাচলে চরম দুর্ভোগ হয়। রাস্তা সংস্কারে সরকারি কোনো অনুদান নেই। তাই নিজেদের উদ্যোগে করা হচ্ছে রাস্তা। 

পাঁচ বছর ধরে সাপ্তাহিক মুষ্টির চাল তুলে তা বিক্রি করে দুই মাস ধরে এক কিলোমিটার রাস্তার কাজ চলছে। রাস্তাটির সম্পূর্ণ কাজ করতে প্রশাসন ও সরকারের সহযোগিতা চান দুই গ্রামের বাসিন্দারা।

দেলদুয়ার উপজেলার ডুবাইল গ্রামের সুজাত আলী বলেন, ‘আমাদের গ্রাম দেলদুয়ারের শেষ প্রান্তে হওয়ায় এই এলাকায় উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। স্বাধীনতার ৫৪ বছরেও উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন হয়নি। বিভিন্ন সময় কর্তৃপক্ষের কাছে ঘুরেও কোনো কাজ হয়নি। তাই আমরা নিজ উদ্যোগে মুষ্টি ফান্ড ও বিভিন্নভাবে টাকা সংগ্রহ করে এক কিলোমিটার রাস্তায় মাটি ফেলেছি। যদি সরকারি সহযোগিতা পাই, তবে অসম্পন্ন কাজ শেষ করতে পারব। আশা করছি, প্রশাসন ও সরকারের দায়িত্বে যারা আছেন, তারা এই রাস্তার বিষয়ে দৃষ্টি দেবেন।’

মির্জাপুর উপজেলার গবড়া গ্রামের আতিক মিয়া বলেন, ‘গবড়া ও ডুবাইল গ্রাম মাঝামাঝি হওয়াতে এখানে কোনো উন্নয়নের ছোঁয়া পাচ্ছি না। আমরা কারও কাছে সহযোগিতা না পেয়ে যুবসমাজ ও মুরব্বিরা মিলে নিজেদের রাস্তা নিজেরা নির্মাণ করছি। সাধ্যের মধ্যে যতটুকু সম্ভব পারছি, করছি। নিজেরাই মাটি কেটে রাস্তায় ফেলছি।

বর্তমানে আমাদের মুষ্টির ফান্ড চলছে। এই ফান্ডের টাকা ও গ্রামের মানুষের সহযোগিতায় রাস্তা কিছুটা সম্পন্ন করতে পেরেছি। কাজ করতে যে পরিমাণ টাকা ছিল, তা শেষ হয়ে গেছে। এর ফলে বাকি কাজ শেষ করতে পারছি না। এ ব্যাপারে মির্জাপুর-দেলদুয়ার প্রশাসন ও রাজনৈতিক ব্যক্তিদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।’ আবদুল মালেক নামে অপর এক গ্রামবাসী বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন সময়ে ইউপি সদস্যদের মাধ্যমে উপজেলায় জানিয়েছি। কিন্তু কোনো কাজে আসেনি। এর কারণে নিজেরা টাকা তুলে কাজ করছি।’

দেলদুয়ার উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা রওশন করিম বলেন, ‘চাল তুলে সেটা বিক্রি করে রাস্তা হচ্ছে, এমন তথ্য আমার জানা নেই। কখনো রাস্তার বিষয়ে কেউ আসেননি। খোঁজখবর নিয়ে তারপর এ বিষয়ে বিস্তারিত বলতে পারব।’ দেলদুয়ার উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাব্বির আহমেদ খবরের কাগজকে বলেন, ‘আমি বিষয়টি জানি না। আর এলাকাবাসী নিজ উদ্যোগে কাজ করে থাকলে ভালো। যদি কেউ আমাদের কাছে সমস্যার বিষয়ে আবেদন করেন, তা হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সোনাগাজীতে বোরকা পরে এসে বিএনপি কর্মীকে কুপিয়ে খুন

প্রকাশ: ২২ এপ্রিল ২০২৫, ১০:৩৩ পিএম
সোনাগাজীতে বোরকা পরে এসে বিএনপি কর্মীকে কুপিয়ে খুন
নিহত আবুল হাসেম। ছবি: সংগৃহীত

ফেনীর সোনাগাজীতে আবুল হাসেম (৫০) নামে বিএনপির এক কর্মীকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) ভোরে উপজেলার ওলামা বাজার এলাকায় বোরকা পরে এসে দুর্বৃত্তরা তার ওপর হামলা চালায়। 

নিহত হাসেম উপজেলার চরদরবেশ ইউনিয়নের উত্তর চরদরবেশ গ্রামের শুক্কুর মিয়ার ছেলে। 

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আবুল হাসেম সোনাগাজী পশ্চিম বাজার এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন। মঙ্গলবার ভোরে তিনি গ্রামের বাড়িতে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে ওলামা বাজার এলাকায় পৌঁছালে বোরকা পরা এক ব্যক্তি তার গতিরোধ করে। এ সময় আরও কয়েকজন তাকে বৈদ্যুতিক খুঁটির সঙ্গে বেঁধে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে সোনাগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে যান। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, নিহত হাসেমের পরিবারের সঙ্গে প্রতিবেশী বেলায়েত হোসেন বেলালের দীর্ঘদিনের জায়গা-জমি সংক্রান্ত বিরোধ ছিল। এসবের জেরে ২০২১ সালের ৩১ মে কৃষক বেলালকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় করা হত্যা মামলায় আবুল হাসেমকে দুই নম্বর আসামি করা হয়েছিল। ওই ঘটনার জের ধরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটতে পারে।

সোনাগাজী উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জামাল উদ্দিন সেন্টু বলেন, হাসেম দলীয় পদে না থাকলেও সক্রিয় কর্মী ছিলেন। পূর্ব বিরোধের জেরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটতে পারে। 

এ বিষয়ে সোনাগাজী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বায়েজিদ আকন বলেন, নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ফেনী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রাসেল নামের একজনকে আটক করা হয়েছে।  

তোফায়েল নিলয়/মাহফুজ

 

টেকনাফের দুর্গম পাহাড় থেকে নিখোঁজ হওয়া ৬ জন উদ্ধার

প্রকাশ: ২২ এপ্রিল ২০২৫, ১০:৩১ পিএম
টেকনাফের দুর্গম পাহাড় থেকে নিখোঁজ হওয়া ৬ জন উদ্ধার
ছবি: সংগৃহীত

সিলেটে থেকে কক্সবাজার গিয়ে নিখোঁজ হওয়া ছয় জনের খোঁজ পাওয়া গেছে। টেকনাফের রাজার ছড়া গ্রামের দুর্গম পাহাড় থেকে মঙ্গলবার (২২এপ্রিল) রাতে সাড়ে ৮টার দিকে তাদের উদ্ধার করে টেকনাফ থানা পুলিশ।

বর্তমানে তারা টেকনাফ মডেল থানায় পুলিশের হেফাজতে রয়েছেন বলে জানিয়েছেন নিখোঁজ এমাদ উদ্দিনের চাচাতো ভাই আব্দুল বাছিত দুলাল।

তিনি খবরের কাগজকে বলেন, টেকনাফের রাজার ছড়া গ্রামের দুর্গম পাহাড় থেকে তাদের উদ্ধার করা হয়েছে। এখনো ভালোভাবে কারো সঙ্গে কথা বলতে পারিনি। তবে তার উদ্ধার হয়েছে।

উদ্ধার হওয়া ৬ জন হলেন-জকিগঞ্জ উপজেলার ৪নং খলাছড়া ইউনিয়নের পশ্চিম লোহারমহল গ্রামের মৃত লুকুছ মিয়ার ছেলে রশিদ আহমদ (২০), ফারুক আহমদের ছেলে মারুফ আহমদ (১৮), আজির উদ্দিনের ছেলে শাহিন আহমদ (২১), মৃত দুরাই মিয়ার ছেলে এমাদ উদ্দিন (২২), সফর উদ্দিনের ছেলে খালেদ হাসান (১৯) ও মৃত সরবদি'র ছেলে আব্দুল জলিল (৫৫)।

এব্যাপারে জকিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জহিরুল হক মুন্না খবরের কাগজ বলেন,সিলেট জেলা পুলিশের সার্বিক সহযোগিতায় কক্সবাজার ও টেকনাফ থানা পুলিশ নিখোঁজ ৬জনকে উদ্ধার করেছে। তারা বর্তমানে সেখানে রয়েছেন। তারা কীভাবে সেখানে গেলেন এ ব্যাপারে এখনো জানা যায়নি।

শাকিলা ববি/এমএ/

সাত দিনেও হদিস মেলেনি চবির অপহৃত ৫ শিক্ষার্থীর, অভিযান অব্যাহত

প্রকাশ: ২২ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:৪০ পিএম
আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:৪১ পিএম
সাত দিনেও হদিস মেলেনি চবির অপহৃত ৫ শিক্ষার্থীর, অভিযান অব্যাহত
অপহৃত চবির ৫ শিক্ষার্থী। ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ শিক্ষার্থী অপহরণের সাত দিন পেরিয়ে গেছে। অপহরণের দিন গত ১৬ এপ্রিল বিকেল থেকে তাদের উদ্ধারে যৌথ বাহিনীর অভিযান শুরু হলেও এখন পর্যন্ত অপহৃত পাঁচ শিক্ষার্থীসহ অটোরিকশাচালকের কোনো হদিস মেলেনি। সাত দিনেও অপহৃতদের কোনো সন্ধান না পাওয়ায় ক্ষুব্ধ তাদের পরিবার ও সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সহযোগী ছাত্রসংগঠন পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সদস্যরা। এদিকে অপহৃতদের উদ্ধারে যৌথ বাহিনীর অভিযানে প্রসিত খীসার নেতৃত্বাধীন পাহাড়ি আঞ্চলিক সংগঠন ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের (ইউপিডিএফ) গোপন আস্তানার সন্ধান পেয়েছে যৌথ বাহিনী।

পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি নিপুণ ত্রিপুরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, ‘সাত দিনেও অপহৃতরা উদ্ধার হননি। প্রশাসনের উদ্ধার তৎপরতা নিয়ে আমরা হতাশ। এ ঘটনার সঙ্গে প্রসিত খীসার ইউপিডিএফ জড়িত।’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে অপহরণের শিকার এক শিক্ষার্থীর মা অভিযোগ করে বলেন, ‘উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা নিয়ে আমরা দিনরাত পার করছি। অথচ আমাদের ছেলেমেয়েদের কোনো খোঁজ এখনো পাওয়া যায়নি। জানি না আর কত দিন এভাবে শঙ্কা নিয়ে অতিবাহিত করতে হবে। প্রশাসনও স্পষ্ট করে আমাদের কোনো তথ্য দিতে পারছে না। প্রশাসনের উচিত আরও কঠোর হওয়া। নইলে আমাদের সন্তানদের হয়তো আর ফিরে পাব না।’

খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার মো. আরেফিন জুয়েল বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আমাদের কাছে আশাব্যঞ্জক কোনো তথ্য নেই। তবে সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ ও আনসারের সমন্বয়ে গঠিত যৌথ বাহিনীর অভিযান অব্যাহত আছে। শহরের আশপাশসহ সন্দেহজনক কিছু পাহাড়ি এলাকায় অভিযান চলছে। অপহৃতরা উদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত এই অভিযান চলবে।’

এদিকে ঘটনার পর থেকেই প্রসিত খীসার ইউপিডিএফকে দায়ী করে আসছে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ। তবে অপহরণের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে ইউপিডিএফ। ইউপিডিএফের সংগঠক অংগ্য মারমা শুরু থেকে বলে আসছেন, শিক্ষার্থী অপহরণের সঙ্গে তাদের কোনো রকম সংশ্লিষ্টতা নেই।

তবে অপহৃতদের উদ্ধার করা সম্ভব না হলেও অভিযানের ষষ্ঠ দিনে গত সোমবার ভোরে খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার ভাইবোনছড়া ইউনিয়নের পূর্ণচন্দ্র কার্বারী পাড়ায় ইউপিডিএফের গোপন আস্তানার সন্ধান পেয়েছে যৌথ বাহিনী। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত সোমবার ভোর রাতে যৌথ বাহিনী ওই এলাকায় অভিযান চালায়। এ সময় একটি ঘর তালাবদ্ধ দেখে সন্দেহ হলে স্থানীয়দের সহায়তা নিয়ে তালা ভেঙে ওই ঘরে তল্লাশি চালানো হয়। তল্লাশি করে সেখান থেকে চাঁদা আদায়ের রসিদ, ল্যাপটপ, মোবাইল, ইউপিডিএফের সাংগঠনিক নথিপত্র এবং সামরিক পোশাকসহ বিপুল পরিমাণ প্রশিক্ষণ সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়।

প্রসঙ্গত, বৈসাবি উৎসব শেষে গত ১৬ এপ্রিল ভোরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ফেরার পথে খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার কুকিছড়া এলাকা থেকে অটোরিকশাচালকসহ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী অলড্রিন ত্রিপুরা ও মৈত্রীময় চাকমা, নাট্যকলা বিভাগের দিব্যি চাকমা, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের রিশন চাকমা এবং লংঙি ম্রোকে অপহরণ করে নিয়ে যায় পাহাড়ি কয়েকজন অস্ত্রধারী।