ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়কে বাড়ছে গাড়ির চাপ। বুধবার (৪ জুন) ভোর থেকে এই মহাসড়কে গাড়ির লম্বা লাইন দেখা যায়। অনেকে বাসে সিট না পেয়ে ট্রাক বা পিকআপে বাড়ি যাচ্ছেন।
সড়কপথে ঈদযাত্রায় ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়কে ঘরমুখো মানুষ ও যানবাহনের চাপ বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। ভোরে যমুনা সেতু সংযোগ সড়কে একাধিক সড়ক দুর্ঘটনা ও গাড়ি বিকল হওয়ায় থেমে থেমে যানজটের সৃষ্টি হয়। দুর্ঘটনাকবলিত যানবাহনগুলো সরানোর পর যানচলাচল স্বাভাবিক হয়।
ভোর থেকে বিভিন্ন বাসস্ট্যান্ডে কয়েক ঘণ্টা পর্যন্ত বাসের জন্য অপেক্ষা করছেন ঘরমুখো মানুষ। এ সুযোগে যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছেন পরিবহন সংশ্লিষ্টরা। উত্তরের ঘরমুখো মানুষ বলছেন, ৩০০ টাকার ভাড়া ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা আদায় করা হচ্ছে। এ বিষয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন যাত্রীরা।
সকাল থেকে মহাসড়কে গণপরিবহনের চেয়ে ট্রাক ও ব্যক্তিগত যানবাহনের সংখ্যা বেশি লক্ষ্য করা গেছে। গণপরিবহন না পেয়ে জীবনের ঝুকি নিয়ে খোলা ট্রাকে করে গন্তব্য পৌঁছাতে দেখা গেছে যাত্রীদের। অনেকেই গরুবাহী ফিরতি ট্রাকেও বাড়ি ফিরছেন।
বেলা ১১টায় মহাসড়কের এলেঙ্গা বাসস্ট্যান্ডে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসক শরীফা হক।
এ সময় তিনি বলেন, ঘরমুখো মানুষ যাতে নিরাপদে বাড়ি যেতে পারেন সেজন্য সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। মহাসড়কের বিভিন্ন জায়গায় মোবাইলকোর্ট বসানো হয়েছে। পরিবহন কর্তৃপক্ষ যাতে বাড়তি ভাড়া না নিতে পারে সেজন্য অভিযান চলমান রয়েছে।
বাসচালকরা বলছেন, উত্তরবঙ্গ থেকে খালি গাড়ি নিয়ে ঢাকায় নিয়ে যেতে হয়। তাই কিছুটা ভাড়া বেশি নেওয়া হচ্ছে। আর যানবাহনের চাপ বাড়লেও বর্তমানে সড়কের অবস্থা স্বাভাবিক।
যমুনা সেতুর পূর্ব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফয়েজ আহমেদ বলেন, মহাসড়কে যানবাহনের চাপ থাকলেও যানজট নেই। মহাসড়কে পর্যাপ্ত পুলিশ দায়িত্ব পালন করছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনা সেতু থেকে দুই কোটি ৮৬ লাখ ৬৩ হাজার ৯০০ টাকা টোল আদায় করেছে সেতু কর্তৃপক্ষ। এর বিপরীতে ৩৩ হাজার ৫৬৪টি যানবাহন পারাপার হয়েছে।
বুধবার (৪ জুন) সকালে যমুনা সেতু সাইট অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল কবীর পাভেল এ বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
যমুনা সেতু কর্তৃপক্ষ জানায়, সোমবার রাত ১২টা থেকে মঙ্গলবার রাত ১২টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৩৩ হাজার ৫৬৪টি যানবাহন পারাপার হয়েছে। এর মধ্যে উত্তরবঙ্গগামী ১৭ হাজার ৬৫৭টি যানবাহন থেকে টোল আদায় হয়েছে এক কোটি ৪৪ লাখ ৮২ হাজার ৮৫০ টাকা। অপরদিকে ঢাকাগামী ১৫ হাজার ৯০৭টি যানবাহন থেকে টোল আদায় হয়েছে এক কোটি ৪১ লাখ ৮১ হাজার ৫০ টাকা।
যমুনা সেতু সাইট অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল কবীর পাভেল বলেন, মহাসড়কে যানবাহনের চাপ বাড়লেও নেই যানজট। যানজট নিরসনে যমুনা সেতু পূর্ব ও পশ্চিম উভয় অংশে ৯টি করে ১৮টি টোল বুথ স্থাপনসহ মোটরসাইকেলের জন্য চারটি বুথ স্থাপন করা হয়েছে। সেতুর উপর কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে সেই জন্য দুইটি রেকারের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। আমাদের পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় আছে।সার্বক্ষণিক সিসি ক্যামেরা দিয়ে মনিটরিং করা হচ্ছে, যেন মানুষ নিবিঘ্নে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারেন।
এলেঙ্গা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মোহাম্মদ শরীফ বলেন, মহাসড়কে যানবাহনের চাপ রয়েছে। তবে যানজট নেই। মানুষ যেন নিবিঘ্নে গন্তব্য পৌঁছাতে পারেন সেজন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
জুয়েল রানা/অমিয়/