
কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে স্কুল কমিটি নিয়ে বিরোধের সময় পুলিশ, জনপ্রতিনিধি এবং এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে প্রতিপক্ষের হামলায় ছাত্রদলের আশিক খাঁ নামের এক নেতাকে সেখানেই কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে।
শনিবার (২২ মার্চ) দুপুরে উপজেলার মুমুরদিয়া ইউনিয়নের চাতল বাগহাটা স্কুল অ্যান্ড কলেজে কমিটিসংক্রান্ত সভা চলাকালে এ ঘটনা ঘটে। নিহত আশিক খাঁ মুমুরদিয়া ইউনিয়ন চাতল গ্রামের আরব আলী খাঁর (২০) ছেলে এবং মুমুরদিয়া ইউনিয়ন ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, চাতল বাগহাটা স্কুল অ্যান্ড কলেজের অ্যাডহক কমিটি নিয়ে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সম্পাদক নুরুজ্জামান চন্দন ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আশিকুজ্জামান নজরুলের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে ওই স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকসহ অন্তত চারজন আহত হন। তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ছাত্রদল নেতা আশিকের মৃত্যু হয়।
নিহতের মা রিতা বেগম বলেন, আমার ছেলেকে যারা অকারণে মেরেছে তাদের বিচার চাই। আর মামলা করলে তো অন্যপক্ষ টাকা দিলেই সব শেষ। বিচার আর হয় না।
আশিকের চাচাতো বোন রিমা বলেন, ঘটনাটি পুলিশ, চেয়ারম্যান ও নেতা-কর্মীদের সামনেই ঘটে। কিন্তু তারা মারামারি শুরু হলে চলে যায়। এদের তো কিছু হয়নি, হয়েছে আমার ভাইয়ের, আমার ভাই মরেছে। এদের তো কিছু হবেও না, এরা তলে তলে টাকা দেবে, বিচার কিছুই হবে না।
মুমুরদিয়া ইউপির চেয়ারম্যান মো. আলাউদ্দিন সাবেরী বলেন, ‘সব ভিডিওতে আছে, কে কি করেছে? কমপ্লেক্সে ঢুইকা প্রিন্সিপালরেও মারছে।’
হোসেনপুর-কটিয়াদী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. তোফাজ্জল হোসেন নিহতের ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, স্কুল কমিটি নিয়ে সংঘর্ষের সূত্রপাত। এতে আশিক নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। এখন পর্যন্ত এ ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি এবং এ ঘটনায় দুজনকে আটক করা হয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ঘটনায় কটিয়াদী উপজেলার ছাত্রদল ও যুবদলের নেতা-কর্মীরা মো. আশিক খাঁর লাশ কাঁধে নিয়ে কটিয়াদী সরকারি হাসপাতাল থেকে বের হয়ে কটিয়াদী রিকশামোড়, কলেজ রোড ও উপজেলা রোড হয়ে কটিয়াদী বাসস্ট্যান্ডের পেট্রল পাম্প পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল করেন। পরে তারা আশিকের লাশ কটিয়াদী মডেল থানা পর্যন্ত কাঁধে বয়ে আনেন এবং এর মধ্য দিয়ে মিছিলের সমাপ্তি ঘটান।
তাসলিমা আক্তার মিতু/মাহফুজ