ঢাকা ১১ বৈশাখ ১৪৩২, বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫
English
বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ১১ বৈশাখ ১৪৩২

ময়মনসিংহে ঈদের কেনাকাটা চড়া দামে পোশাক বিক্রি, তবুও ক্রেতাদের ঢল

প্রকাশ: ২৩ মার্চ ২০২৫, ১২:২৮ পিএম
আপডেট: ২৩ মার্চ ২০২৫, ০৩:১০ পিএম
চড়া দামে পোশাক বিক্রি, তবুও ক্রেতাদের ঢল
ময়মনসিংহ শহরের গাঙ্গিনারপাড় এলাকায় বারি প্লাজা শপিংমল ও একই এলাকায় ফুটপাতের ছবি। ছবি: খবরের কাগজ

ময়মনসিংহে শপিংমল ও বিপণি-বিতানগুলোতে ঈদের কেনাকাটা জমজমাট হয়ে উঠেছে। ফুটপাতেও ক্রেতাদের কমতি নেই। ফুটপাতে পোশাকের দামে স্বস্তি থাকলেও শপিংমল ও বিপণি-বিতানগুলোতে গত বছরের চেয়ে এবার পোশাকের দাম বাড়িয়ে বিক্রি করছেন বিক্রেতারা। এতে উচ্চবিত্তদের কোনো সমস্যা না হলেও বিপাকে পড়েছেন মধ্যবিত্ত আয়ের লোকজন। তবুও বাধ্য হয়ে সামর্থ্য অনুযায়ী পছন্দের পোশাক কিনতে এক দোকান থেকে আরেক দোকানে ছুটে বেড়াচ্ছেন। দামের সঙ্গে অনেকের সামর্থ্যের হিসাব না মেলায় ফুটপাতকেই ভরসা মনে করছেন।

বিভাগীয় এই শহরের হৃৎপিণ্ড গাঙ্গিনারপাড় এলাকা। এক সময় এই এলাকাতেই গড়ে উঠেছিল শপিংমল। ফুটপাতেও দেদারসে হতো বেচাকেনা। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে শহরে বেড়েছে জনসংখ্যার চাপ। বিভাগীয় শহরে উন্নীত হওয়ায় মানুষ বাসাবাড়ির সংখ্যা বাড়ার পাশাপাশি বিভিন্ন জেলা থেকে মানুষের আনাগোনা বাড়ে। একই সঙ্গে বাড়ে যানবাহনের সংখ্যাও। এই সড়কের পাশ ঘেঁষে গড়ে উঠেছে অসংখ্য শপিংমল, বিপণি-বিতান। কিন্তু সরু সড়কের কোনো পরিবর্তন হয়নি। ফলে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কে সারা বছরই লেগে থাকে যানজট। ঈদ এলে তা বাড়ে কয়েকগুণ বেশি। প্রশাসন নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ করলেও ভোগান্তি শেষ হয় না।

গাঙ্গিনারপাড়ে একচেটিয়া ব্যবসাকে মাথায় রেখে ক্রেতা টানতে সময়ের ব্যবধানে আশপাশের এলাকায় গড়ে উঠেছে বহু শপিংমল, বিপণি-বিতান। সারা বছর এসব ব্যবসা প্রতিষ্ঠানেও ক্রেতা ভিড়ছে। ঈদ এলে এসব শপিংমল, বিপণি-বিতানে মানুষের ঢল নামে। তবে এসব এলাকাতেও সমস্যা একটাই, তা হলো যানজট। সারা বছর বিভিন্ন যানবাহনের চাকা থেমে থেমে চললেও ঈদের আগে ক্রেতাদের চাপে যানজট ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করে। এবারও এমন রূপ দেখা যাচ্ছে। যদিও পুলিশ বলছে, ঈদ কেনাকাটাকে কেন্দ্র করে যানজট সহনীয় পর্যায়ে রাখতে নানামুখী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, পুলিশ সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

সরেজমিনে গাঙ্গিনারপাড় এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, শপিংমল আর বিপণি-বিতানগুলোতে ক্রেতাদের ঢল নেমেছে। অনেক দোকানি বেচাকেনার চাপে দম ফেলার সময় পাচ্ছেন না।  দোকানে বিক্রেতা পোশাক বিক্রির সঙ্গে সঙ্গে আরও কয়েকজন ক্রেতা চলে আসছেন। এক রেটের দোকানগুলোতে বিক্রেতাদের তেমন কষ্ট না হলেও বিভিন্ন দোকানে ক্রেতা-বিক্রেতাদের দামাদামিতে দোকান সরগরম। গত বছরের চেয়ে বাড়তি দামে বিক্রি হওয়ায় মনোক্ষুণ্ণ অনেক ক্রেতা। তবুও পরিবারের সদস্যদের মুখে হাসি ফোটাতে কিনছেন পছন্দের পোশাক।

একই অবস্থা স্টেশন রোড, সিকে ঘোষ রোড, চরপাড়া, রামবাবু রোড ও নতুন বাজার এলাকায়। তবে স্টেশন রোড, গাঙ্গিনারপাড় এলাকার ফুটপাতে পা ফেলার জায়গা নেই। ন্যায্য দামের মধ্যে পছন্দের পোশাক পাওয়া যাওয়ায় ভিড় মাত্রা অতিক্রম করেছে। একই অবস্থা বাসাবাড়ি ও হকার্স মার্কেটে। বিভিন্ন শপিংমল ও বিপণি-বিতানের চেয়ে এই দুই মার্কেটে পোশাকের দাম অনেকটাই কম। ফলে একশ্রেণির মানুষের পছন্দ এই মার্কেটগুলো। ক্রেতাদের ঢল নামায় দোকানিরা চরম ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন।

গাঙ্গিনারপাড়ে ফুটপাত থেকে পছন্দের পোশাক কিনছিলেন জাহানারা খাতুন। তিনি খবরের কাগজকে বলেন, 'আশপাশে সুন্দর সুন্দর মার্কেট। মন চাই এইনোযায়্যা পছন্দমতো জামা-কাপড় কিনি। তবুও যাই না। গেলেই দোহানদার ট্যাহা (টাকা) বেশি কয়। এত ট্যাহা দিয়্যা কাপড় কনবার সাধ্য নাই। এর লাইগ্যা পছন্দের কাপড় কিনবার ফুটপাতে আইছি। ফুটপাতই ভালা।'

বাড়িপ্লাজা শপিংমল থেকে পরিবারের জন্য কেনাকাটা শেষে চলে যাচ্ছিলেন আকরাম হোসেন। তিনি খবরের কাগজকে বলেন, 'গত বছরের চেয়ে বেশিরভাগ পোশাকের দাম বেশি। তবুও পরিবারের সবার জন্য পোশাক কিনেছি।'

গাঙ্গিনারপাড় ফুটপাতে বাচ্চাদের পোশাক বিক্রি করেন নাজিম উদ্দিন বলেন, 'আমরা যে পোশাকগুলো বিক্রি করছি, একই পেশাক অনেক দোকানে তুলে বিক্রি করা হচ্ছে। সেখানে দামও বেশি রাখা হচ্ছে। আমরা ন্যায্য দামে পোশাক বিক্রি করায় নিম্ন ও মধ্যম আয়ের লোকজন ভিড় জমাচ্ছেন, পছন্দের পোশাক কিনে বাড়ি ফিরছেন।'

বাড়িপ্লাজা শপিংমলের বিক্রেতা আনোয়ার হোসেন বলেন, 'এবার পাইকারিভাবে পোশাকের দাম বেড়েছে। আমরা আগের চেয়ে বেশি দামে কিনে এনেছি। ফলে ক্রেতাপর্যায়ে দাম বেড়েছে।'

ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের সচিব ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) সুমনা আল মজীদ বলেন, 'শহরের সড়কগুলো খুবই পুরাতন। সড়ক ঘেঁষে বহু বছর ধরে অসংখ্য ভবন নির্মাণ হয়েছে। তবে প্রশস্ত হয়নি সড়ক। বিগত সময়ে সড়ক প্রশস্ত করার উদ্যোগও গ্রহণ করা হয়নি। ফলে যানজট প্রধান সমস্যা হয়ে দাড়িয়েছে। ঈদর কয়েক দিন আগে থেকে যানজটের কারণে ভোগান্তি আরও বাড়ে। তবে এবার সবার প্রচেষ্টায় যানজট সহনীয় পর্যায়ে থাকবে বলে আশা করছি।'

ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সফিকুল ইসলাম বলেন, 'ইতোমধ্যে ফুটপাতসহ বিপণি-বিতানগুলোতে ক্রেতাদের উপস্থিতি বাড়ছে। এ সুযোগে চোর ও ছিনতাইকারীর উৎপাত বাড়তে পারে। সে জন্য পুলিশ সদস্যরা শহরে সারাক্ষণ টহল দিচ্ছে।'

এ বিষয়ে ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার কাজী আখতার উল আলম বলেন, 'সরু সড়কে সারা বছর প্রচুর যানবাহন চলাচল করে। ঈদ এলে এই সংখ্যা আরও বেড়ে যায়। ঈদে এবার যানজট কমানোর লক্ষ্যে নানামুখী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন পয়েন্টে অটোরিকশা আটকে দেওয়া হচ্ছে। চুরি-ছিনতাই বন্ধ করতে গুরুত্বপূর্ণ এলাকাসহ বড় শপিংমলের সামনে পুলিশ সারাক্ষণ সতর্ক রয়েছে। তবে কেনাকাটা করতে আসা লোকজনকেও সতর্ক থাকতে হবে।'

কামরুজ্জামান/জোবাইদা/

৭৫ বছরেও স্বীকৃতি মেলেনি ঐতিহাসিক খাপড়া ওয়ার্ড দিবসের

প্রকাশ: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:৪৬ পিএম
৭৫ বছরেও স্বীকৃতি মেলেনি ঐতিহাসিক খাপড়া ওয়ার্ড দিবসের
ছবি: খবরের কাগজ

ঐতিহাসিক ‘খাপড়া ওয়ার্ড শহিদ দিবস’ বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল)। ১৯৫০ সালের এই দিনে রাজশাহী কারাগারের খাপড়া ওয়ার্ডে আটক কমিউনিস্ট ও বামপন্থি রাজবন্দিদের ওপর পুলিশ নির্বিচারে গুলি চালিয়েছিল। সেই নৃশংস ঘটনায় সাতজন নিহত এবং ৩২ জন আহত হয়েছিলেন। সেই থেকে দিবসটি এই উপমহাদেশে ‘খাপড়া ওয়ার্ড হত্যা দিবস’ হিসেবে স্মরণ করা হয়। তবে কমিউনিস্ট ও বামপন্থি নেতারা দাবি জানিয়ে এলেও দীর্ঘ ৭৫ বছরে এই দিনটিকে সরকারিভাবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। 

১৯৪৭ সালে পাকিস্তান সৃষ্টির পর মুসলিম লীগের শাসকরা প্রথম এ দেশের কমিউনিস্ট ও বামপন্থি সমর্থক কৃষক, শ্রমিক ও ছাত্র সমাজকে আঘাত করেন। ১৯৪৮ থেকে ১৯৫০ সালের মধ্যে এই অঞ্চলে বেশ কয়েকটি রক্তক্ষয়ী কৃষক আন্দোলন সংঘটিত হয়। রাজশাহী অঞ্চলে কমিউনিস্ট নেত্রী ইলা মিত্রের নেতৃত্বে তেভাগা আন্দোলন; ময়মনসিংহ অঞ্চলে কমিউনিস্ট নেতা মণি সিংহ এবং যশোর অঞ্চলে আবদুল হকের নেতৃত্বে কৃষক আন্দোলন সংঘটিত হয়। গোটা বাংলায় কৃষক আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। 

পাকিস্তান আমলে কারাবন্দিদের ওপর প্রচণ্ড নির্যাতন চালানো হতো নানা অজুহাতে। তেলের ঘানি টানানো, গম মাড়াই-পেষাইসহ নানা কাজ করতে হতো বন্দিদের। এসব কাজে দেরি হলে তাদের ভয়াবহ নির্যাতন করা হতো। কারা কর্তৃপক্ষের এরকম দুর্ব্যবহারের পাশাপাশি নিম্নমানের খাবার সরবরাহ এবং কারাবিধান অনুযায়ী প্রয়োজনীয় সুযোগ না দেওয়ার প্রতিবাদে রাজবন্দিরা ১৯৫০ সালের ৫ এপ্রিল অনশন শুরু করেন। আইজি প্রিজন আমীরউদ্দিন ২৪ এপ্রিল ১২ জন রাজবন্দিদের প্রতিনিধির সঙ্গে আলোচনায় বসেন। ওই আলোচনায় মতবিরোধ দেখা দিলে তৎকালীন জেলার বিনা উসকানিতে পাগলা ঘণ্টা বাজিয়ে বন্দিদের ওপর গুলিবর্ষণের নির্দেশ দেন। পুলিশের নির্বিচার গুলিতে খাপড়া ওয়ার্ডের ৭ জন বন্দি নিহত এবং ৩২ জন আহত হন। নিহতরা হলেন, কমরেড বিজন সেন (রাজশাহী), কম্পরাম সিং (দিনাজপুর), আনোয়ার হোসেন (খুলনা), সুধীন ধর (রংপুর), হানিফ শেখ (কুষ্টিয়া), সুখেন ভট্টাচার্য (ময়মনসিংহ) ও দেলোয়ার হোসেন (কুষ্টিয়া)।
 
বৃহস্পতিবার দিবসটি উপলক্ষে রাজশাহীতে নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)। সিপিবি রাজশাহীর সভাপতি হুমায়ূন রেজা জেনু বলেন, ‘খাপড়া ওয়ার্ডের শহিদদের স্বপ্ন ছিল শোষণমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠা। তাদের আত্মত্যাগ আমাদের অনেক বড় দায়িত্ব অর্পণ করে গেছে।’ আজ সকাল ১১টায় কারাগারের ভেতর শহিদদের বেদীতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হবে। পরে একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।
 
তিনি আরও বলেন, ‍‍‘খাপড়া ওয়ার্ডে দেশের প্রথম জেল হত্যার ঘটনা ঘটলেও দীর্ঘ ৭৫ বছরেও একে রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি।’ তিনি ২৪ এপ্রিলকে ‘জাতীয় শহিদ দিবস’ হিসেবে ঘোষণা, পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করা এবং নিহত সাত বিপ্লবীকে জাতীয় শহিদ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি জানান। 

এনায়েত করিম/মাহফুজ

আগে কোনো দাবি উত্থাপন করলে রাষ্ট্র সেখানে ঝাঁপিয়ে পড়তো: শিক্ষা উপদেষ্টা

প্রকাশ: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:১৭ পিএম
আগে কোনো দাবি উত্থাপন করলে রাষ্ট্র সেখানে ঝাঁপিয়ে পড়তো: শিক্ষা উপদেষ্টা
ফরিদপুর সাহিত্য পরিষদের সাহিত্য ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন শিক্ষা ‍উপদেষ্টা ড. সি আর আবরার। ছবি: খবরের কাগজ

শিক্ষা উপদেষ্টা ড. সি আর আবরার সারাদেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অস্থিরতার বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, আমরা এ বিষয়ে যথেষ্ট উদ্বিগ্ন। এটা যাতে না ঘটে তার জন্য আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে। আগে একটি অস্থিরতার পরিবেশ ছিল, এটি যে রাতারাতি ঠিক হয়ে যাবে এটা ভাবা ঠিক না। আগে যারা দাবি-দাওয়া উত্থাপন করতো তাদের সুযোগ-সুবিধা দেয়া হতো না। সে সময় কেউ যদি কোনো দাবি-দাওয়া উত্থাপন করতো, রাষ্ট্র সেখানে তাদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়তো। এখন এমন একটা ব্যবস্থা হয়েছে যেখানে সাধারণ মানুষ মনে করে তারা তাদের কথা বলতে পারবে। এখানে হয়তো তাদের একটু তাড়াহুড়া আছে। তারা চায় যে তাদের দাবিগুলো মানা হোক। আমরা সেসব দাবি সংবেদনশীলভাবে দেখছি। আমরা চেষ্টা করব তারা যেভাবে চাচ্ছেন সেটা আইন এবং নিয়মের মধ্যে থেকে একটি যুক্তিসঙ্গতভাবে সমাধান করার চেষ্টা। 

বুধবার (২৩ এপ্রিল) বিকেলে ফরিদপুর সাহিত্য পরিষদের সাহিত্য ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি এসব কথা বলেন। 

তিনি এ সময় কুয়েটের শিক্ষার্থীদের অনশনের বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে বলেন, সকালে আমি সেখানে গিয়েছিলাম। খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) পুরো প্রক্রিয়া নিয়ে আমরা আলাপ করেছি। এখানে যারা বিভিন্ন অংশীদার ছিলেন তাদের সঙ্গেও আমাদের কথা হয়েছে। কুয়েট উদ্ভুত পরিস্থিতি নিরসনের লক্ষ্যে একটি কমিটি করা হয়েছে। কমিটির সিদ্ধান্তের আলোকে সরকার বিবেচনা করবে। কুয়েটে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সকালে যখন আমরা কথা বলেছি। তাদের যে অনশন সেখানে আমার একটি আহ্বান ছিল, তোমরা এই গরমের মধ্যে আছো। এরই মাঝে কয়েকজন অসুস্থ হয়ে পড়েছে। তোমরা একটু শান্ত হও, আমরা কাজ শুরু করে দিয়েছি। ছাত্ররা হয়তো ভেবেছে অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে আমরা হয়তো সেই কথাটি রাখতে পারব না। আমি তাদের নিশ্চিত করেছি আমরা অতি দ্রুত এটি সমাধান করতে পারব।  

এ সময় ফরিদপুর সাহিত্য পরিষদের সভাপতি প্রফেসর আলতাফ হোসেনের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সহকারী একান্ত সচিব মো. ইনজামুল হক, এলজিইডির সাবেক প্রধান প্রকৌশলী শহিদুল হাসান, ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক মো. কামরুল হাসান মোল্লা, পুলিশ সুপার মো. আব্দুল জলিল, স্থানীয় সরকার, ফরিদপুরের উপপরিচালক চৌধুরী রওশন ইসলাম, সাহিত্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মফিজ ইমাম মিলন প্রমুখ। 

পরে তিনি ফরিদপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে ফরিদপুর সাহিত্য পরিষদের উদ্যোগে ‘আগামীর শিক্ষা: প্রেক্ষিত বর্তমান’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে অংশগ্রহণ করেন। 

সঞ্জিব দাস/মাহফুজ

 

প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হত্যা মামলার প্রধান আসামি গ্রেপ্তার

প্রকাশ: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:০৮ পিএম
আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:১৪ পিএম
প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হত্যা মামলার প্রধান আসামি গ্রেপ্তার
প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম পারভেজ হত্যা মামলার প্রধান আসামি মেহেরাজ ইসলাম। ছবি: খবরের কাগজ

প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম পারভেজ হত্যা মামলার প্রধান আসামি মেহেরাজ ইসলামকে (২০) গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-১৩ গাইবান্ধা।

বুধবার (২৩ এপ্রিল) বিকেল ৪টার দিকে গাইবান্ধার সদর উপজেলার শাহপাড়া ইউনিয়নের ভবানীপুর গ্রামের এরশাদ হোসেনের বসতবাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

মেহেরাজ ইসলাম ঢাকার বনানী থানার মহাখালী হাজারীবাড়ি এলাকার নুরুল ইসলাম সরদারের ছেলে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেন র‌্যাব-১৩ সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিপ্লব কুমার গোস্বামী।

তিনি জানান, তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার ও গোয়েন্দা তথ্যের মাধ্যমে জানতে র‌্যাব জানতে পারে যে, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ বনানী থানার হত্যা মামলার এজাহারনামীয় প্রধান আসামি মো. মেহেরাজ ইসলাম (২০) গাইবান্ধা জেলার সদর থানা এলাকায় অবস্থান করছে। আজ বিকেল সাড়ে ৪টায় ভবানীপুর গ্রামের জনৈক মো. এরশাদ হোসেনের বসতবাড়িতে অভিযান চালায় র‌্যাব সদস্যরা। তারা ওই বাড়ি থেকে চাঞ্চ্যকর জাহিদুল ইসলাম পারভেজ হত্যা মামলার পলাতক এজাহারনামীয় প্রধান আসামি মেহেরাজ ইসলামকে গ্রেপ্তার করে।

রফিক খন্দকার/এমএ/

আমরা রংপুরের মানুষ দুইটি পরাশক্তির কাছে জিম্মি ছিলাম: আসাদুল হাবিব দুলু

প্রকাশ: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ০৭:৫০ পিএম
আমরা রংপুরের মানুষ দুইটি পরাশক্তির কাছে জিম্মি ছিলাম: আসাদুল হাবিব দুলু
রংপুর শিল্পকলা একাডেমিতে ‘রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তি’ রংপুর জেলা ও মহানগর বিএনপির কর্মশালায় আসাদুল হাবিব দুলু । ছবি: খবরের কাগজ

বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলু বলেন, আমরা রংপুরের মানুষ দুইটি পরাশক্তির কাছে জিম্মি ছিলাম। জাতীয়ভাবে কোনো সরকার রংপুরের উন্নয়নের কথা বলেনি। রাজনীতির ক্ষেত্রে আমরা দুটি মহা পরাক্রমশালী শক্তির কাছে লড়াই করছি রংপুরে। সেই লড়াইয়ে বিএনপির পতাকাকে তুলে ধরেছিলাম। তারা বিগত সময়ে রংপুরের জন্য কিছু করেনি, তেমনিভাবে এই ডাইনি পুত্রবধূও কিছু করেনি।

বুধবার (২৩ এপ্রিল) রংপুর শিল্পকলা একাডেমিতে ‘রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তি’ রংপুর জেলা ও মহানগর বিএনপির কর্মশালায় এসব কথা বলেন। এই অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি বক্তব্য রাখবেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

আসাদুল হাবিব বলেন, ‘জাগো বাহে কোণ্ঠে সবাই’, এটা একটা ভালোবাসা, এটা আমাদের জীবনের স্লোগান, ভালোবাসার স্লোগান। বাংলাদেশ একটি নদীমাতৃক দেশ, নদী আমাদের সভ্যতা, আমাদের প্রাণ নদী, আমাদের মা। বাংলাদেশের সব নদী হারিয়ে যাচ্ছে। ৩১ দফার ভিতরে এই দফা কেন আসেনি সেটি আমার জানা নেই। সংস্কারের নামে অনেক স্লোগান দিচ্ছেন অনেকে অনেক ছবক দিচ্ছেন। তার অনেক আগেই সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছেন তারেক রহমান।

একটি মানবিক বাংলাদেশ গড়ব আমরা, একটি বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়তে চাই আমরা। সেই বাংলাদেশে বৈষম্য থাকলে কোনো না কোনোভাবেই আমাদের দুঃখের কারণ হয়ে দাঁড়ায় বলে মন্তব্য করেন তিনি।

নদীপাড়ের ৮ কোটি মানুষ ক্ষতবিক্ষত, ভূমিহীন। এসব ৩১ দফার ভিতরে অন্তর্ভুক্ত কর উচিৎ। নদী আইন রয়েছে, নদী যখন ভেঙ্গে যায়, জমি সরকারের কাছে খাস হয়ে যায়। ফলে বাড়ি-ভিটা উচ্ছেদ হয়ে যায়। এটি তার পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেয়। নদী যখন পানি থেকে ভেসে ওঠে তখন আবার সরকার নিয়ে নেয়। তাই আইন সংশোধন হওয়া উচিত। অথবা ওই জমি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে দেওয়া উচিত। বিচ্ছিন্ন অঞ্চল ভেঙে তছনছ হয়ে যাচ্ছে, সে ব্যাপারে বিএনপির পদক্ষেপ থাকবে কিনা এ প্রশ্ন করেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, আমরা সবসময় রংপুরের বৈরী রাজনীতির আঘাতে ক্ষত-বিক্ষত। এরশাদ ছিলেন, হাসিনা ছিলেন, আবার নতুন দলের আবির্ভাব ঘটেছে। বাংলাদেশের যে নতুন দল এসেছে তার দু’জন খ্যাতনামা নেতার বাড়ি রংপুরে। আমাদের তিস্তা মহা পরিকল্পনা যদি ঠিকমতো ভাবতে পারি এবং ৩২ দফার ভিতরে অন্তর্ভুক্ত করতে পারি, রংপুরের মানুষ বিএনপি এবং ধানের শীষের পক্ষেই থাকবে।

তিনি বলেন, বৈষম্যের কারণে আমরা রংপুরের মানুষ দিন দিন এত পিছিয়ে পড়ছি, না আছে কোনো কারখানা, না আছে কোনো বিদেশে যাওয়ার ব্যবস্থা।

এসময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা, মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক মওদুদ হোসেন, আলমগীর পাভেল, নাটোর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ফারজানা শারমিন পুতুল, রংপুর মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক শামসুজ্জামান সামু, সদস্য সচিব মাহফুজ উন নবী ডন, জেলা বিএনপির আহবায়ক সাইফুল ইসলাম, সদস্য সচিব আনিছুর রহমান লাকু প্রমুখ।

সেলিম সরকার/মাহফুজ

 

আদর্শের নামে ফ্যাসিবাদ চাপিয়ে দেওয়ার মানসিকতা থেকে বের হতে হবে: শিবির সভাপতি

প্রকাশ: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ০৭:১০ পিএম
আদর্শের নামে ফ্যাসিবাদ চাপিয়ে দেওয়ার মানসিকতা থেকে বের হতে হবে: শিবির সভাপতি
বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম। ছবি: খবরের কাগজ

আদর্শের নামে ফ্যাসিবাদ চাপিয়ে দেওয়ার প্রবণতা পরিহার করে মুক্ত ও গণতান্ত্রিক চেতনায় বিশ্বাসী হতে তরুণ সমাজকে আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম।

বুধবার (২৩ এপ্রিল) দুপুরে ইসলামী ছাত্রশিবির নীলফামারী সরকারি কলেজ শাখার আয়োজনে কলেজের হলরুমে ‘সেরা হওয়ার জন্য নিরলস অভিযান (Quest for The Best)’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, বিগত সময়ে আমাদের ওপর ফ্যাসিবাদ চেপে বসেছিল, এখন ফ্যাসিবাদ মুক্ত পরিবেশে ক্যাম্পাসগুলোতে সাধারণ শিক্ষার্থীসহ সবাই মুক্তভাবে তাদের শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। আমরা চাই সমাজের প্রতিটি স্তর থেকে ফ্যাসিবাদ বিতাড়িত হোক। বাংলাদেশ হবে সবার বাংলাদেশ, যেখানে সবাই নাগরিক সুবিধা পাবে।

জাহিদুল ইসলাম আরও বলেন, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির একটি সুখী ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে চায়। এ লক্ষ্যে আমরা সৎ, দক্ষ ও দেশপ্রেমিক নাগরিক তৈরির জন্য কাজ করে যাচ্ছি। শিবিরের সকল কার্যক্রম এই উদ্দেশ্যেই পরিচালিত হচ্ছে।

তিনি উল্লেখ করেন, জুলাই-আগস্টে যে বিপ্লব বাংলাদেশে হয়েছে, সেটি সকলের অংশগ্রহণে একটি নতুন বাংলাদেশের দিগন্ত উন্মোচন করেছে।

শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ক্ষমতা ধরে রাখতে যা যা করা দরকার গত ১৫ বছরে স্বৈরাচারী হাসিনা তাই করেছেন। এছাড়া দেশের এক বিশাল ফ্যাসিবাদী গোষ্ঠী তাকে ক্ষমতায় রাখতে সহায়তা করেছে।

নির্বাচন সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমার মতে দেশের সকল নাগরিকের মতামতের ভিত্তিতে জাতীয় নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। তাহলেই আমরা ভবিষ্যতে সত্যিকারের গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ দেখতে পাব।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ইসলামী ছাত্রশিবির নীলফামারী শহর শাখার সভাপতি শফিকুল ইসলাম এবং সঞ্চালনায় ছিলেন কলেজ শাখার সভাপতি মো. হাসান আলী।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন শিবিরের কেন্দ্রীয় দাওয়াত সম্পাদক হাফেজ মেজবাহুল করিম, রংপুর মহানগর শাখার সভাপতি নুরুল হুদা, নীলফামারী জেলা সভাপতি তাজমুল হাসান সাগর, সাবেক জেলা সভাপতি আহমাদ রায়হান ও কামারুজ্জামান, শহর সেক্রেটারি মাজেদুল ইসলাম প্রমুখ।

কেন্দ্রীয় সভাপতি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন এবং ভবিষ্যৎ নেতৃত্বের প্রস্তুতির জন্য প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা প্রদান করেন।

মমিনুর আজাদ/মাহফুজ