ঢাকা ১০ বৈশাখ ১৪৩২, বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫
English
বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ১০ বৈশাখ ১৪৩২

সাতকানিয়ায় প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে যুবকের মৃত্যু

প্রকাশ: ২৩ মার্চ ২০২৫, ০১:০৭ পিএম
আপডেট: ২৩ মার্চ ২০২৫, ০২:৫৬ পিএম
সাতকানিয়ায় প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে যুবকের মৃত্যু
নিহত সুবীর চক্রবর্তী। ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলায় জমিসংক্রান্ত বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে এবং তার বড়ভাই আহত অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। 

শুক্রবার (২১ মার্চ) রাত সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার পুরানগড় ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ফকিরখীল গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত যুবকের নাম সুবীর চক্রবর্তী (৩৪)। তার বড়ভাই পল্লী চিকিৎসক প্রবীর চক্রবর্তী। তাদের পিতা মৃত অরুণ চক্রবর্তী। 

অভিযুক্তরা হলেন- একই এলাকার মৃত অরুণ দাসের পুত্র রূপক দাস (৫০), দীপক দাস (৫২), অলক দাস (৪৫) এবং দীপক দাসের ছেলে অমিত দাস (২০) ও দীপ্ত দাস (১৮)।

জানা যায়, নিহত সুবীর চক্রবর্তীর পরিবারের সঙ্গে রূপক দাসের পরিবারের দীর্ঘসময় জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল এবং প্রায় দুই বছর আগে এ নিয়ে তাদের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে। যার প্রেক্ষিতে একটি মামলা হয়। বর্তমানে মামলাটি আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।

সর্বশেষ গত শুক্রবার প্রতিপক্ষ রূপক দাস ও তার পরিবারের সদস্যরা নিহত সুবীরের স্ত্রী জয়শ্রী চক্রবর্তী ও প্রবীরের স্ত্রী সোমা ভট্টাচার্যকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে পুনরায় বিরোধ সৃষ্টি হয়। একই দিন রাতে স্থানীয় সমাজপতি সুশীল দাস সুবীর ও তার বড়ভাইকে পূজার বিষয়ে আলাপচারিতার জন্য ডাকেন। সেখানে যাওয়ার পথে তাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায় প্রতিপক্ষ গ্রুপ এবং সুবীরকে ছুরিকাঘাত করে। তার বড়ভাই বাধা দিতে গেলে তাকেও ছুরিকাঘাত করা হয়।

নিহত সুবীর চক্রবর্তীর স্ত্রী জয়শ্রী চক্রবর্তী খবরের কাগজকে বলেন, ‘আমার স্বামী দোকান থেকে ফিরে সুশীল দাসের সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার পথে রূপক দাসের পরিবার তার ওপর হামলা চালায় এবং তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে ছুরিকাঘাত করে। স্থানীয়রা তাকে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। আমি আমার স্বামীর হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবি জানাচ্ছি।’

সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাহেদুল ইসলাম জানান, সংবাদ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তবে এ ঘটনায় অভিযুক্তদের বাড়িতে পাওয়া যায়নি। নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য চমেক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। 

এদিকে শনিবার (২২ মার্চ) প্রবীর চক্রবর্তী বাদী হয়ে সাতকানিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।  মামলায় ১২ জনকে আসামি করা হয়েছে। আসামিদের মধ্যে দীপক দাসের স্ত্রী ঝুমুর দাস, রূপক দাসের স্ত্রী স্বপ্না দাস ও মেয়ে অন্তরা দাসকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানান ওসি মো. জাহেদুল ইসলাম।

মামলার অন্য আসামিরা হলেন- রূপক দাস, দীপ্ত দাস, অলক দাস, দীপক দাস, প্রিয়ম দাস কালু ও সুদীপ্ত দাস। 

আরিফুল/তাওফিক/ 

চট্টগ্রামে রিকশাচালক-পুলিশের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া

প্রকাশ: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ০২:৩৬ পিএম
চট্টগ্রামে রিকশাচালক-পুলিশের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া
রিকশাচালক-পুলিশের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনায় সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।

চট্টগ্রাম নগরের চান্দগাঁও থানার বাহির সিগন্যাল এবং কাপ্তাই রাস্তার মাথা এলাকায় ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে। 

বুধবার (২৩ এপ্রিল) দুপুরে রিকশা বন্ধে অভিযানে নামলে উভয়পক্ষে উত্তেজনা দেখা দেয়। পরে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়।

ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। 

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নগর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের ব্যাটারিচালিত রিকশাবিরোধী সাঁড়াশি অভিযানের প্রতিক্রিয়ায় এই সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়েছে। তবে এ ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে এখনো কোনো তথ্য জানা যায়নি। 

ঘটনার বিষয়ে জানতে নগর পুলিশের ডিসি উত্তর, এডিসি (জনসংযোগ) এবং চান্দগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আফতাব উদ্দিনকে কল করা হলে তারা কেউ সাড়াই দেননি। 

চলতি এপ্রিল মাসে চট্টগ্রাম নগরে ট্রাফিক পুলিশের অভিযানে ২ হাজার ৮৯৬টি ব্যাটারিচালিত রিকশা জব্দ ও ডাম্পিং করা হয়েছে। এর প্রেক্ষিতে চালকদের মধ্যে ক্ষোভ দানা তৈরি হচ্ছিল বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। 

পপি/

ভোলায় চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে পিডিবিএফ কর্মীদের বিক্ষোভ

প্রকাশ: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ০১:২৮ পিএম
ভোলায় চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে পিডিবিএফ কর্মীদের বিক্ষোভ
ভোলা শহরের কালীবাড়ি রোডে উপ-পরিচালক কার্যলয়ের সামনে পিডিবিএফ কর্মচারী ইউনিয়নের বিক্ষোভ। ছবি: খবরের কাগজ

ভোলায় অস্থায়ী কর্মীদের স্থায়ীকরণ, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পদোন্নতির দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন পল্লি দারিদ্র্য বিমোচন ফাউন্ডেশন (পিডিবিএফ) কর্মচারী ইউনিয়নের সদস্যরা। 

বুধবার (২৩ মার্চ) সকালে ভোলা শহরের কালীবাড়ি রোডে উপ-পরিচালক কার্যলয়ের সামনে ঘণ্টাব্যাপী এ কর্মসূচি পালন করেন তারা। 

দাবি না মানা পর্যন্ত আগামী ২৬ এপ্রিল নিয়োগ পরীক্ষা বাতিলের দাবি জানান তারা। 

এ সময় বক্তরা জানান, দেশের দারিদ্র্য বিমোচনের লক্ষ্যে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে যাচ্ছেন তারা। দীর্ঘদিন কাজ করলে অস্থায়ী কর্মীদের স্থায়ী করা ও স্থায়ী কর্মীদের পদোন্নতি না দেওয়ায় তারা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। স্বল্প বেতনে তাদের সংসার চালানো কষ্ট হচ্ছে।

তাই দ্রুত অস্থায়ী কর্মীদের স্থায়ী করার দাবি জানান তারা। 

এ সময় পল্লি দারিদ্র বিমোচন ফাউন্ডেশন ভোলা অঞ্চল কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি মো. রাসেল, সাধারণ সম্পাদক নিয়াজ মোর্শেদ, সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ নূরুন্নবী সোহাগ, কার্যকরি সভাপতি মোহাম্মদ মনির হোসেনসহ ভোলা অঞ্চলের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন। 

ইমতিয়াজ/পপি/

ট্রাকচাপায় প্রাণ গেল নৈশপ্রহরীর

প্রকাশ: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ০১:১৪ পিএম
আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ০২:২৩ পিএম
ট্রাকচাপায় প্রাণ গেল নৈশপ্রহরীর
প্রতীকী ছবি

ঝিনাইদহে ট্রাকের চাপায় বাদল মোল্লা (৫৫) নামের এক নৈশপ্রহরী নিহত হয়েছেন।

বুধবার (২৩ এপ্রিল) সকাল ৬টার দিকে শহরের হামদহ আল-হেরা মোড়ে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত বাদল মোল্লা সদর উপজেলার ছোট কামারকুণ্ডু উত্তর পাড়া গ্রামের মোকছেদ আলীর ছেলে। তিনি শহরের আল-হেরা মোড় এলাকায় তার দায়িত্ব পালন করতেন।

স্থানীয়রা জানায়, ভোরে দায়িত্ব পালনের এক পর্যায়ে রাস্তার পশ্চিম পাশে দাঁড়িয়েছিলেন বাদল মোল্লা। সে সময় কালীগঞ্জ থেকে ঝিনাইদহগামী একটি ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে তাকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান।

ঝিনাইদহ ফায়ার সার্ভিসের পরিদর্শক তানভীর হাসান খবরের কাগজকে জানান, খবর পেয়ে মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

মাহফুজুর/তাওফিক/ 

মাদ্রাসাছাত্রীকে জোরপূর্বক বাল্যবিয়ে দিলেন মা ও সৎবাবা!

প্রকাশ: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ১২:৪৯ পিএম
আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ০১:৫৮ পিএম
মাদ্রাসাছাত্রীকে জোরপূর্বক বাল্যবিয়ে দিলেন মা ও সৎবাবা!
প্রতীকী ছবি

চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় ১৪ বছর বয়সী এক মাদ্রাসাছাত্রীকে জোরপূর্বক বাল্যবিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তারই মা ও সৎবাবার বিরুদ্ধে। 

এ ঘটনায় মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) সকাল ১০টার দিকে প্রতিকার চেয়ে বাল্যবিয়ের শিকার ওই মাদ্রাসাছাত্রী বাদী হয়ে তার মা, সৎবাবা ও তিন প্রতিবেশীকে বিবাদী করে সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন। 

বিবাদী ওই তিন প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে বাল্যবিবাহে সহযোগিতার অভিযোগ আনা হয়।

বাল্যবিবাহের শিকার ওই মাদ্রাসাছাত্রী উপজেলার বাজালিয়া ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের পূর্ব মাহালিয়া গ্রামের চিতামুড়া এলাকার মৃত আবু নৈয়মের মেয়ে। এ ছাড়াও সে বাজালিয়া হেদায়েতুল ইসলাম ফাজিল ডিগ্রি মাদ্রাসার সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী।

বিবাদীরা হলেন- ভুক্তভোগীর মা মিনু আক্তার (৩৫), সৎবাবা নুরুল ইসলাম (৪৫), প্রতিবেশী আবদুর রশিদ (৫০), আবদুর রশিদের স্ত্রী হালিমা বেগম (৪৫) ও তাদের ছেলে মোহাম্মদ রাকিব। তারা প্রত্যেকে উপজেলার বাজালিয়া ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের পূর্ব মাহালিয়া গ্রামের চিতামুড়া এলাকার বাসিন্দা।

অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, জন্মনিবন্ধন অনুযায়ী ভুক্তভোগী মাদ্রাসাছাত্রীর বয়স এখনো ১৪ বছর। ২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসের শেষের দিকে তার সঙ্গে ৫ লাখ টাকা দেনমোহরে স্থানীয় জাবেদ নামে এক যুবকের বিয়ের আয়োজন করেন মা মিনু আক্তার ও সৎবাবা নুরুল ইসলাম। মেয়েটি এ বিয়েতে রাজি না হওয়া সত্ত্বেও উভয় পরিবারের মধ্যে সিদ্ধান্ত হয় যে, বিয়ে রেজিস্ট্রি সম্পন্ন হওয়ার পরবর্তী দুই মাস পর্যন্ত ওই মাদ্রাসাছাত্রী নিজের বাড়িতেই অবস্থান করবেন এবং দুই মাস পূর্ণ হলে তাকে সামাজিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শ্বশুরবাড়িতে পাঠানো হবে। তারই প্রেক্ষিতে কোনো ধরনের পারিবারিক অনুষ্ঠান ছাড়াই এক প্রকার গোপনে কাজির মাধ্যমে বিবাহ রেজিস্ট্রি সম্পন্ন করেন দুই পরিবারের কর্তারা। বিবাহ রেজিস্ট্রি সম্পন্ন হওয়ার পর পূর্বের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ওই মাদ্রাসাছাত্রী নিজ বাড়িতেই অবস্থান করেন। এভাবে বেশ কিছুদিন যাওয়ার পর ওই মাদ্রাসাছাত্রী হঠাৎ করে বাড়ি থেকে পালিয়ে পারভীন আক্তার নামে তার এক নিকটাত্মীয়ের চট্টগ্রামস্থ বাসায় আশ্রয় নেয়। পরে তার পরিবারের সদস্যরা সেখান থেকে তাকে জোরপূর্বক বাড়িতে নিয়ে আসেন। 

বাড়িতে ফিরে আসার কিছুদিন পর তাকে মারধর করে জোরপূর্বক শ্বশুরবাড়িতে পাঠানোর চেষ্টা করেন তার মা ও সৎবাবা। এ ঘটনার কয়েক দিন পর সে পুনরায় বাড়ি থেকে পালিয়ে তার খালু জাহাঙ্গীর আলমের কাছ থেকে তার আরেক নিকটাত্মীয় মনোয়ারা বেগমের চট্টগ্রামস্থ বাসার ঠিকানা সংগ্রহ করে সেখানে আশ্রয় নেন। এ ঘটনায় তার মা সাতকানিয়া থানায় একটি অভিযোগ করেন। তার বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়টি জানতে পেরে ওই ছাত্রী তার মা ও সৎবাবার বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে নিজেই থানায় হাজির হন। পরে সাতকানিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (নিরস্ত্র) খাইরুল হাসান ভুক্তভোগী ও তার মা, সৎবাবা এবং এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে একটি সালিশী বৈঠকের আয়োজন করেন। ওই সালিশী বৈঠকে ভুক্তভোগী ছাত্রী বিবাহের সম্পর্কটি ছিন্ন করে পড়ালেখায় মনোনিবেশ করবেন বলে জানান। পরে তার মা ও সৎবাবা মেয়েকে ছাড়াই বাড়িতে ফিরে যান। এর পর থেকে ওই মাদ্রাসাছাত্রী তার প্রতিবেশী ও দূর সম্পর্কের আত্মীয় এ্যানি আকতারের বাড়িতে অবস্থান করছেন।

বাল্যবিবাহের শিকার মাদ্রাসাছাত্রী বলে, আমার বয়স এখনো ১৪ বছর। আমি বাজালিয়া হেদায়েতুল ইসলাম ফাজিল ডিগ্রি মাদ্রাসার সপ্তম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত। আমার ইচ্ছা ছিল পড়ালেখা শেষ করে সংসারের হাল ধরব। কিন্তু আমার মা ও সৎবাবা মিলে আমাকে জোরপূর্বক বিবাহ দিয়েছে। আমাকে মারধর করে বিবাহ রেজিস্ট্রিতে স্বাক্ষর করতে বাধ্য করেছেন। এর পর আমি পালিয়ে গিয়ে আমার এক নিকটাত্মীয়ের বাসায় আশ্রয় নেই। এখনো আমার মা ও সৎবাবা আমাকে শ্বশুরবাড়িতে পাঠানোর জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তাই আমি তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে বাধ্য হয়েছি।

প্রতিবেশী ও দূরসম্পর্কের আত্মীয় এ্যানি আকতার বলেন, সে একদিকে আমার প্রতিবেশী অন্যদিকে দূরসম্পর্কের আত্মীয় হন। তাকে বাল্যবিবাহ দেওয়াতে সে অভিমান করে বাড়ি থেকে পালিয়ে এক নিকটাত্মীয়ের বাসায় চলে গিয়েছিল। পরে সাতকানিয়া থানায় সালিশী বৈঠকে সে জানায়, সে এ বিবাহের সম্পর্কটি ছিন্ন করে পড়ালেখায় মনোনিবেশ করবে এবং মা ও সৎবাবার সঙ্গে একই বাড়িতে বসবাস করবে। কিন্তু তার মা ও সৎবাবা তাকে বাড়িতে নেয়নি। সে থেকে মেয়েটি আমার বাড়িতে রয়েছে।

এ ঘটনায় অভিযুক্ত ওই মাদ্রাসাছাত্রীর মা মোবাইল ফোন ব্যবহার করেন না। পরে সৎবাবা নুরুল ইসলামের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে বাল্যবিবাহের বিষয়টি শিকার করে তিনি বলেন, মেয়েকে বিয়ে দেওয়ার জন্য আমি সিএনজিচালিত অটোরিকশা বিক্রি করে দিয়েছি। মেয়ের জামাইকে ৫০ হাজার টাকা দিয়েছি। মেয়ের শ্বশুরবাড়িতে দেওয়ার জন্য ৬০ হাজার টাকার ফার্নিচার তৈরি করেছি। পরে সে হঠাৎ করে বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। তাকে আমরা অনেক দিন খোঁজাখুঁজির পরে বাড়িতে নিয়ে আসি। পরে সিদ্ধান্ত হয় কাজির কাছে গিয়ে বিয়ের সম্পর্কটি ছিন্ন করা হবে। এর কিছুদিন পর মেয়েটি পুনরায় বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। আমি যেহেতু সৎবাবা এ বিষয়ে আমার আর কিছু বলার নাই। আমি ওই মেয়েকে আর বাড়িতে তুলব না। তার মা যদি তাকে লালনপালন করতে পারে তাকে বাড়িতে নেবে, এতে আমার কোনো আপত্তি নেই।

সাতকানিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (নিরস্ত্র) খাইরুল হাসান বলেন, এ ঘটনায় একটি সালিশী বৈঠকে বসেছিলাম। ওই সালিশী বৈঠকে বাল্যবিবাহের শিকার মাদ্রাসাছাত্রী বিবাহের সম্পর্কটি ছিন্ন করে পড়ালেখায় মনোনিবেশ করবে বলে জানায়। পরে আমরা তাদেরকে আইনি পরামর্শ দিয়েছিলাম। এ ছাড়াও পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে জানতে উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তার কাছ থেকে পরামর্শ নেওয়ার জন্য বলেছি।

সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মিল্টন বিশ্বাস খবরের কাগজকে বলেন, এক মাদ্রাসাছাত্রীকে জোরপূর্বক বাল্যবিবাহ দেওয়ার ঘটনায় ওই মাদ্রাসাছাত্রী বাদী হয়ে আমার কাছে একটি অভিযোগ করেছে। এ ঘটনায় তদন্তপূর্বক দোষীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


আরিফুল/মেহেদী/

মমেক হাসপাতালে র‌্যাবের অভিযান, আটক ১৪ দালাল

প্রকাশ: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ১১:৪৯ এএম
আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ০১:৫৯ পিএম
মমেক হাসপাতালে র‌্যাবের অভিযান, আটক ১৪ দালাল
ছবি: খবরের কাগজ

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতালে অভিযান চালিয়ে ১৪ দালালকে আটক করেছে র‌্যাব।

মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত এ অভিযানে আটকদের সর্বনিম্ন ১৫ দিন থেকে ২ মাস পর্যন্ত বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শফিকুল ইসলাম।

দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- মন্টু মিয়া (২৫), মো. মাসুদ (৪৫), আলাল উদ্দিন (৬০), মো. আশরাফুল (২৭), মো. বিজয় (৫০), মো. আকাশ (২৪), ছোবহান মিয়া (৬৫), সুমন মিয়া (৩০), শাহাদাৎ হোসেন বাবু (৩০), মো. শাকিব (২৪), আনিছ হোসেন রকি (৩৫), সাদ্দাম হোসেন (২৯), মমিনুল ইসলাম রবিন (৩০) এবং রোকসানা আক্তার (৩৫)। এ সময় তাদের সঙ্গে থাকা ১৪টি মোবাইল জব্দ করা হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শফিকুল ইসলাম বলেন, সম্প্রতি হাসপাতালে দালালদের উৎপাত বেড়েছে। এতে প্রতারণার মাধ্যমে রোগী ও তাদের স্বজনদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায়, হাসপাতাল থেকে রোগীদের বাইরের নিয়ে সর্বস্ব লুটে নেওয়াসহ চিকিৎসার নামে হয়রানির ঘটনা ঘটছে। এসব কারণে হাসপাতালের জরুরি বিভাগ, মহিলা ওয়ার্ড, পরীক্ষাগার, আউটডোরসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে ১৪ দালালকে হাতেনাতে আটক করা হয়। পরে তাদের সঙ্গে থাকা ১৪টি মোবাইল জব্দ করা হয়েছে। বিধি অনুযায়ী আটক দালালদের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. জাকিউল ইসলাম বলেন, ১০০০ শয্যার বিপরীতে এই হাসপাতালে রোগী ভর্তি থাকে সাড়ে ৩ থেকে ৪ হাজার। সেবা নিতে এসে অনেকে দালালদের খপ্পরে পড়ে হয়রানির শিকার হন। হাসপাতাল থেকে দালাল নির্মূল হোক, সেটাই চাই।

মিন্টু/মেহেদী/