ঢাকা ৩ বৈশাখ ১৪৩২, বুধবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৫
English

মুন্সীগঞ্জে আন্দোলনে নিহত ৭ নেতাকর্মীর পাশে তারেক রহমান

প্রকাশ: ২৩ মার্চ ২০২৫, ১০:২১ পিএম
মুন্সীগঞ্জে আন্দোলনে নিহত ৭ নেতাকর্মীর পাশে তারেক রহমান
ছবি: খবরের কাগজ

মুন্সীগঞ্জে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত দলীয় ৭ নেতা-কর্মীর পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। 

রবিবার (২৩ মার্চ) বেলা ১১ টার দিকে জেলা শহরের উপকন্ঠ মুক্তারপুর এলাকার উপজেলা বিএনপির কার্যালয়ে নিহতদের পরিবারের মাঝে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।

এসময় আওয়ামী লীগ আমলে আন্দোলনে নিহত পঞ্চসার ইউনিয়নের চম্পাতলা গ্রামের বিএনপির কর্মী হাদিস আলী, মিরকাদিম পৌরসভার মুরমা এলাকার পৌর যুবদলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদ শহীদুল ইসলাম শাওন ও একই এলাকার যুবদল কর্মী আকবর হোসেনর পরিবারের সদস্যদের হাতে নগদ টাকা তুলে দেওয়া হয়।

এছাড়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত মিরকাদিম পৌর ছাত্রদলের সদস্য সচিব শাহরিক চৌধুরী মানিক, শহরের উত্তর ইসলামপুর এলাকার বিএনপি কর্মী সজল মোল্লা, রিয়াজুল ফরাজী ও নুর মোহাম্মদ ওরফে ডিপজলের পরিবারকে আথিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে।

আথিক সহায়তা প্রদানকালে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব মহিউদ্দিন আহমেদ, সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান ফকির, জেলা যুবদলের আহ্বায়ক দেওয়ান মো. মজিবুর রহমান, সদস্য সচিব মু. মাসুদ রানা, শহর যুবদলের সদস্য সচিব রায়হান কবীর প্রমুখ।

মঈনউদ্দিন আহমেদ সুমন/মাহফুজ

 

বাঁশখালীতে স্ত্রীকে হত্যাকারী গণপিটুনির শিকার স্বামীর মৃত্যু

প্রকাশ: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ১২:২৪ পিএম
বাঁশখালীতে স্ত্রীকে হত্যাকারী গণপিটুনির শিকার স্বামীর মৃত্যু
নিহত ফরিদুল আলম। ছবি: খবরের কাগজ

বাঁশখালীতে গণপিটুনির শিকার স্ত্রী হত্যাকারী স্বামী ফরিদুল আলম মারা গেছেন।

বুধবার (১৬ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিনি মারা যান। 

এর আগে মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) বিকেলে বাঁশখালীর খানখানাবাদ এলাকায় গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেছিল উত্তেজিত জনতা।

পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার দুপুরে ফরিদুল আলমকে উপজেলার খানখানাবাদ ইউনিয়নের ডোংরা গ্রামের কালু ফকির বাড়ি থেকে হাতেনাতে আটক করে স্থানীয় জনতা। এ সময় তাকে ব্যাপক গণপিটুনি দেওয়া হয়। খবর পেয়ে বাহারছড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক মজনু মিয়ার নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল গুরুতর আহত অবস্থায় ফরিদুলকে হেফাজতে নেয়। পরে উত্তেজিত জনতা পুলিশের কাছ থেকে তাকে ছিনিয়ে নিয়ে আবার গণপিটুনি দিয়ে মেরে ফেলতে বাহারছড়া পুলিশ ফাঁড়ি ঘেরাও করে। পরে বাঁশখালী থানা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে ফরিদুলকে কড়া নিরাপত্তায় উপজেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়।

এর আগে শুক্রবার (১১ এপ্রিল) ভোরে শ্বশুর বাড়িতে গিয়ে ঘুমন্ত অবস্থায় স্ত্রী মিনু আক্তারকে (৪২) ছুরিকাঘাতে হত্যা করেন ফরিদুল আলম।সঙ্গে কলহের কারণে বাবার বাড়িতে অবস্থান করছিলেন মিনু আক্তার।

জানা গেছে, খানখানাবাদ ইউনিয়নের ডোংরা কালু ফকিরবাড়ির মৃত দুদু মিয়ার ছেলে ফরিদুল আলমের সঙ্গে বাহারছড়া ইউনিয়নের পশ্চিম ইলশার অজি আহমদের মেয়ে মিনু আক্তারের ১৫ বছর আগে বিয়ে হয়। তাদের সংসারে দুই মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে। জাদু টোনা করার অভিযোগে ফরিদুল আলম প্রায় সময় নানা অপবাদ দিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া করতেন। পরে গত শুক্রবার ভোরে ফরিদুল আলম ঘুমন্ত স্ত্রীকে হত্যা করে পালিয়ে যান।

বাঁশখালী থানার ওসি (তদন্ত) সুধাংশু শেখর হালদার জানান, আসামি ফরিদুল আলম বুধবার সকালে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। মঙ্গলবার তাকে স্থানীয় লোকজন গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেছিল। আমরা তাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে বাঁশখালী হাসপাতাল এবং অবস্থার অবনতি হলে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করি। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

শফকত/মেহেদী/

চাটমোহরে শিশুর ঝলসানো মরদেহ উদ্ধার

প্রকাশ: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ১১:৩৮ এএম
চাটমোহরে শিশুর ঝলসানো মরদেহ উদ্ধার
ছবি: খবরের কাগজ

চাটমোহরে জুই (৭) নামে এক শিশুর গলায় নিজের প্যান্ট প্যাঁচানো অবস্থায় ঝলসানো মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) বিকেলে চাটমোহর থানার ওসি (তদন্ত) নয়ন কুমার সরকার এ তথ্য জানান।

সংশ্লিষ্ট পরিবার সূত্রে জানা গেছে, নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার চান্দাই ইউনিয়নের গাড়ফা গ্রামের মালয়েশিয়া প্রবাসী জাহিদুল ইসলাম। তার বাবা প্রতিবন্ধী। মা দুইজন। দুই মা থাকেন পাশাপাশি বাড়িতে। ওই প্রবাসীর দুই মেয়ে-এক ছেলে। বেশ কিছু দিন থেকে জাহিদুলের আপন মা থাকেন চট্টগ্রামে। বড় মেয়ে আর ছোট ছেলেকে নিয়ে স্ত্রী থাকেন বাড়িতে। আর মেজো মেয়ে ও স্থানীয় হেফজখানার ১ম শ্রেণীর ছাত্রী জুঁই। নিজ বাড়ির ২শ গজ দূরে দ্বিতীয় দাদীর বাড়ি। ওই দাদীর কাছেই ছোটবেলা থেকে জুই বড় হচ্ছে। ঈদের আগে জাহিদুলের আপন মা তথা জুঁইয়ের আপন দাদি চট্টগ্রাম থেকে বাড়ি আসেন। পরে সোমবার (১৪ এপ্রিল) সন্ধ্যার কিছু আগে জুঁইকে তার দ্বিতীয় দাদি শেমাই রান্নার জন্য কিছুটা দুধ আনতে প্রথম দাদি ও মায়ের কাছে পাঠান। কিন্তু রাতে আর সেখানে যায়নি জুঁই। দ্বিতীয় দাদি মনে করেছেন, প্রথম দাদি আর তার মা হয়ত জুঁইকে  রেখে দিয়েছেন। এদিকে জুঁইয়ের মা আর দাদি জানেন, জুই দ্বিতীয় দাদীর কাছে আছে। এতে কেউই জুঁইয়ের খোঁজ করেননি। পরে মঙ্গলবার সকালে মাদ্রাসায় যেতে সহপাঠীরা জুঁইকে ডাকতে আসলে দ্বিতীয় দাদি তার মা ও প্রথম দাদীর কাছে জুঁইয়ের খোঁজ করলে জানতে পারেন সেখানে জুঁই যায়নি। বিষয়টি জানাজানি হলে শুরু হয় খোঁজ। এরই ধারাবাহিকতায় বাড়ির পাশেই পাবনা জেলার চাটমেহর এলাকার একটি ভুট্টার জমিতে পাওয়া যায় জুঁইয়ের মরদেহ।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় দফাদার শাহজাহান আলীর বলেন, মরদেহের গলায় প্যান্ট দিয়ে মোড়ানো ছিল। ঘাড়-মাথা এদিক-ওদিক গড়িয়ে পড়ছিল। হয়ত ওই প্যান্ট দিয়ে ঘাড় মচকিয়ে জুঁইকে হত্যা করা হতে পারে। এ ছাড়া জুঁইয়ের চোখ-মুখ ও শরীর ঝলসানোর মতো মনে হয়েছে। হয়ত অ্যাসিড জাতীয় পদার্থ দিয়ে ঝলসানো হয়েছে।

বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুবুর রহমান জানান, শিশুটির বাড়ি বড়াইগ্রাম উপজেলার হলেও মরদেহটি পাওয়া যায় চাটমোহর এলাকায়। ফলে মামলা হবে চাটমোহর থানায়। শিশুটির শরীর কোন দাহ্য পদার্থ দিয়ে পোড়ানো হয়েছে এমনই মনে হয়েছে।

চাটমোহর থানার ওসি নয়ন কুমার সরকার বলেন, 'ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পেলে জানা যাবে হত্যারহস্য। শিশুকে হত্যার আগে ধর্ষণ করা হয়েছে কিনা তাও জানা যাবে। এ ছাড়া শরীর ঝলসানো পদার্থ বিষয়ে তথ্য জানা যাবে।' এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন। মামলার পর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কামাল/মেহেদী/

মাদারীপুরে চাচা শ্বশুরের সঙ্গে পরকীয়ার জেরে সন্তানকে হত্যা!

প্রকাশ: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ১১:০৭ এএম
আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ১১:০৮ এএম
মাদারীপুরে চাচা শ্বশুরের সঙ্গে পরকীয়ার জেরে সন্তানকে হত্যা!
ছবি: খবরের কাগজ

মাদারীপুরে পরকীয়ার জেরে ইমতিয়াজ নামে নিজের আড়াই বছরের সন্তানকে পিটিয়ে ও শ্বাসরোধ হত্যার অভিযোগ উঠেছে এক মায়ের বিরুদ্ধে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য অভিযুক্ত মা শারমিন আক্তারকে আটক করেছে পুলিশ। 

বর্তমানে ময়নাতদন্তের জন্য শিশু ইমতিয়াজের মরদেহ জেলা হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।

মাদারীপুর সদর উপজেলার খোয়াজপুর-টেকেরহাট এলাকার মালয়েশিয়া প্রবাসী দবির বেপারীর স্ত্রী শারমিন আক্তার চাচা শ্বশুর আমির বেপারীর সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। একমাস আগে দবিরকে ডিভোর্স দিয়ে ছোট ছেলে ইমতিয়াজকে নিয়ে আমিরের সঙ্গে রাজধানীর কেরানীগঞ্জের একটি বাসায় বসবাস শুরু করেন শারমিন। সোমবার (১৪ এপ্রিল) রাত ১টার দিকে শারমিন ইমতিয়াজের মরদেহ দাফনের জন্য মাদারীপুরে নিয়ে শুরু হয় হট্টোগোল। পরে মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) সকালে পুলিশকে খবর দেওয়া হলে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য অভিযুক্ত মা শারমিন আক্তারকে আটক করে পুলিশ।

স্বজনদের অভিযোগ, পরকীয়ার জেরে আড়াই বছরের শিশুকে পিটিয়ে ও শ্বাসরোধে হত্যার পর মরদেহ গ্রামের বাড়ি নিয়ে আসা হয়েছে।

মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) শেখ সাব্বির হোসেন জানান, ‘শিশুটির মরদেহ রাজধানী ঢাকার কেরানীগঞ্জ থেকে মাদারীপুরে নিয়ে আসার পর ঘটনা জানাজানি হয়। স্বজনদের অভিযোগ মাথায় নিয়ে পুলিশ কাজ শুরু করছে। পরকীয়ার অভিযোগ থাকায় অভিযুক্ত মা শারমিন আক্তারকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হবে। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট হাতে পেলে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’


রফিকুল/মেহেদী/

স্ত্রীকে হত্যায় অভিযুক্ত স্বামীকে গণপিটুনি

প্রকাশ: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ১১:০১ এএম
স্ত্রীকে হত্যায় অভিযুক্ত স্বামীকে গণপিটুনি
স্ত্রীকে ছুরিকাঘাতে হত্যায় অভিযুক্ত স্বামী ফরিদুল আলমকে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে দিয়েছে স্থানীয়রা। ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে গভীর রাতে স্ত্রীকে ছুরিকাঘাতে হত্যায় অভিযুক্ত স্বামী ফরিদুল আলমকে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে দিয়েছে স্থানীয়রা। মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) দুপুরে ফরিদুলকে উপজেলার খানখানাবাদ ইউনিয়নের ডোংরা গ্রামের কালু ফকির বাড়ি থেকে হাতেনাতে ধরা হয়। এ সময় উত্তেজিত জনতা তাকে বেধড়ক মারধর করে। 

খবর পেয়ে বাহারছড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মজনু মিয়ার নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে গুরুতর অবস্থায় ফরিদুলকে হেফাজতে নেয়।

এ সময় উত্তেজিত জনতা পুলিশের কাছ থেকে তাকে ছিনিয়ে নিতে পুলিশ ফাঁড়ি ঘেরাও করে। পরে বাঁশখালী থানা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে ফরিদুলকে কড়ানিরাপত্তায় উপজেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে আসে। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন বাহারছড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মজনু মিয়া।

এর আগে গত ১১ এপ্রিল ভোরে শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে ঘুমন্ত অবস্থায় স্ত্রীকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেন ফরিদুল আলম। বাঁশখালী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সুধাংশু শেখর হালদার বলেন, ‘এলাকায় ফরিদুল আসার খবর পেয়ে স্থানীয়রা তাকে বাড়িতে গিয়ে আটক করে। পরে আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে বাঁশখালী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে এসেছি।’

সোনারগাঁয় ৫০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী ‘বউমেলা’

প্রকাশ: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ১০:৩৯ এএম
আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ১২:০৯ পিএম
সোনারগাঁয় ৫০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী ‘বউমেলা’
পূজা-অর্চনায় ব্যস্ত সনাতন ধর্মাবলম্বী নারীরা। মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) সোনারগাঁ উপজেলা পরিষদ-সংলগ্ন জয়রামপুর এলাকার ভট্টপুর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠের বটতলায়। ছবি: খবরের কাগজ

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে চলছে ৫০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী বউমেলা। গত সোমবার পয়লা বৈশাখের দিন শুরু হয় মেলা। তিন দিনব্যাপী এ মেলা আজ শেষ হবে।

মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) ছিল মেলার মূল আনুষ্ঠানিকতা। প্রতিবছরের মতো এবারও সোনারগাঁ উপজেলা পরিষদ-সংলগ্ন জয়রামপুর এলাকার ভট্টপুর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠের বটতলায় এ বউমেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। 

স্থানীয়রা জানান, প্রায় ৫০০ বছরের পুরোনো একটি বটগাছকে কেন্দ্র করে যুগ যুগ ধরে পালিত হচ্ছে এ বউমেলা। এ মেলাকে অনেকে সিদ্ধেশ্বরী দেবীর মেলা ও বটগাছকে সিদ্ধেশরী দেবী বলে থাকেন।

মঙ্গলবার সকালে মেলায় গিয়ে দেখা যায়, বটগাছের নিচে সারিবদ্ধভাবে বিভিন্ন ফল-ফলাদির ঝুড়ি নিয়ে পূজা-অর্চনার জন্য দাঁড়িয়ে আছেন সনাতন ধর্মাবলম্বী নারীরা। তাদের সঙ্গে বিভিন্ন সাজে দাঁড়িয়ে আছেন কুমারী মেয়েরা। সবার দৃষ্টি বটগাছের দিকে। দুপুরে দিকে বাড়তে থাকে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উপস্থিতি। 

স্থানীয় সনাতন ধর্মাবলম্বীরা জানান, তাদের কাছে শত শত বছরের বটগাছটি হয়ে উঠেছে পুণ্যের দেবতা। বটগাছটি সিদ্ধেশ্বরী দেবতা নামেও পরিচিতি পায়। সনাতন ধর্মাবলম্বী নারীরা সারা বছর অপেক্ষায় থাকেন এ মেলার জন্য। মেলায় দেবতার সন্তুষ্টির জন্য কবুতর ওড়ানো ও পাঁঠা বলি দেওয়া হয়। স্বামী সংসারের বাঁধন যেন অটুট থাকে, সারা বছর সংসারে যেন সুখ-শান্তি থাকে এ কামনায় পূজার আয়োজন করা হয়। 

মেলায় কয়েকজন নারীর সঙ্গে কথা হলে তারা বলেন, ‘বড়দের কাছ থেকে শুনেছি এ মেলায় এসে পূজা-অর্চনায় স্বামী-সন্তান ও সংসারের কল্যাণ কামনা সফল হয়। সংসারের সুখ শান্তি ও স্বামী-সন্তানের মঙ্গল কামনায় আমরা এ মেলায় পূজা করতে এসেছি।’

বউমেলায় অংশগ্রহণকারীদের অধিকাংশ নারী হলেও পুরুষরাও এ মেলায় অংশ নিয়ে থাকেন, তবে সংখ্যায় কম। পূজা-অর্চনা ছাড়াও বউমেলায় বাঙালি সংস্কৃতির প্রাচীন ঐতিহ্য খুঁজে পাওয়া যায়। মেলায় মৃৎশিল্পীদের তৈরি নানা রঙের টেপা পুতুল, হাতি, ঘোড়া, ময়না, টিয়া, বাঘ-ভাল্লুক, হাঁড়ি-পাতিল থেকে শুরু করে মিঠাইয়ের দোকান বসে। লৌহ, কাঠ ও বাঁশের তৈরি বিভিন্ন পণ্য পাওয়া যায় মেলায়।

পুরোহিত উৎপল ভট্টাচার্য জানান, শত শত বছর ধরেই উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে নারীরা ভিড় করে থাকেন সিদ্ধেশ্বরী বটতলার বউমেলায়। বউমেলা আয়োজক কমিটির সদস্য নিলোৎপল রায় জানান, প্রতিবছর বর্ষবরণ উৎসবে সিদ্ধেশ্বরী কালীপূজার আয়োজন করা হয়। এলাকার হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন এ মেলার আয়োজন করেন। পূজায় দেশবাসী ও এলাকার মানুষের শান্তি ও মঙ্গল কামনায় প্রার্থনা করা হয়।

সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা রহমান বলেন, ‘বউমেলায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। প্রশাসনিকভাবে আমরা এ মেলাকে সার্বিক সহযোগিতা দিয়ে থাকি। নারীদের কেন্দ্র করে একটি মেলা সত্যিই ভিন্নধর্মী অভিজ্ঞতা। মেলা উপভোগ করতে হিন্দু সম্প্রদায় ছাড়াও মুসলিম ধর্মের লোকজনও অংশ নিয়ে থাকেন।’