
শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে হাতি মৃত্যুর পর মাটিচাপা দেওয়া মৃত বন্যহাতির প্রতিশোধ নিতে ওই এলাকায় রাতভর চিৎকার-চেচামেচি করে ব্যাপক তাণ্ডব চালিয়েছে একদল বন্যহাতি। তাণ্ডব চালিয়ে তারা ফসলের ব্যাপক ক্ষতি করেছে। শুক্রবার (২১ মার্চ) ও শনিবার (২২ মার্চ) রাতভর এই তাণ্ডব চালায়।
এর আগে, গত বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার মধুটিলা ইকোপার্কের উত্তরে লাল টেংগুর পাহাড়ি এলাকায় কৃষকের দেওয়া বৈদ্যুতিক তারে জড়িয়ে একটি পুরুষ হাতি মারা যায়। মৃত ওই হাতিকে ময়নাতদন্ত শেষে কৃষকের ক্ষেতের পাশে মাটি চাপা দেওয়া হয়।
স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার সন্ধ্যার পর থেকেই প্রতিশোধ নিতে মৃত বন্যহাতির কবরের পাশে অবস্থান নেয় প্রায় ৩০ থেকে ৪০টি বন্যহাতির দল। সাথী এক হাতিকে হারিয়ে তাকে উদ্ধার করতে ওই স্থানে জড়ো হয়। এসময় হাতিগুলো চিৎকার-চেচামেচি শুরু করে। সেইসঙ্গে হাতি হত্যার অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া কৃষক জিয়াউর রহমান জিয়ার ৫০ শতাংশ বোরোধান ক্ষেতে ব্যাপক তাণ্ডব চালায়। তাণ্ডব চালিয়ে খেতের ধান খেয়ে ও পা দিয়ে মাড়িয়ে বিনষ্ট করে। পরে গ্রামবাসীরা প্রতিরোধ গড়ে তুললে বন্যহাতির পাল পিছিয়ে যায়।
এদিকে, হাতির মৃত্যুর ঘটনায় শেরপুর বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. আল আমিন বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা করেছেন। মামলায় কৃষক জিয়াউল হক ও অজ্ঞাতনামা বেশ কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে। ইতোমধ্যে কৃষক জিয়াউল হককে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে।
ছবি: খবরের কাগজ
মধুটিলা রেঞ্জের রেঞ্জ কর্মকর্তা দেওয়ান আলী বলেন, সেদিন যেখানে হাতির মৃত্যু হয়েছে। তার কবর ও আশপাশে দু’দিন ধরে রাতে একদল বন্যহাতি অবস্থান নিয়ে চিৎকার-চেচামেচি করছে। বর্তমানে ওই হাতির দলটি মধুটিলা ইকোপার্ক এলাকায় অবস্থান করছে। কিন্তু দিনের আলোতে খুব একটা বের হচ্ছে না, সন্ধ্যা হলেই বের হচ্ছে। বন বিভাগের পক্ষ থেকে সচেতন ও সর্তকতা করে যাচ্ছি।
পরিবেশবাদী সংগঠন ‘শাইনের’ নির্বাহী পরিচালক ও শেরপুর বার্ড ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মো. মুগনিউর রহমান মনি বলেন, কেউ যদি হাতিকে ক্ষতি করে, তারা পরে তাদের প্রতিশোধও নিতে পারে। কারণ, হাতির মস্তিষ্ক অত্যন্ত বড় এবং স্মৃতিশক্তি আশ্চর্যজনকভাবে শক্তিশালী। শুধু তাই নয়, হাতি এমন একটি প্রাণী যে তাদের পুরোনো শত্রুদেরও চিনতে পারে এবং প্রয়োজনে প্রতিশোধ নিতে পারে।
শাকিল মুরাদ/মাহফুজ