ঢাকা ৫ বৈশাখ ১৪৩২, শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫
English
শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ৫ বৈশাখ ১৪৩২

সুন্দরবনে পুড়ল ৪ একর বনভূমি

প্রকাশ: ২৪ মার্চ ২০২৫, ১১:১০ এএম
সুন্দরবনে পুড়ল ৪ একর বনভূমি
ছবি : খবরের কাগজ

বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনে জ্বলতে থাকা আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। ৩ কিলোমিটার দূরে মরা ভোলা নদী থেকে পাইপ লাইনের মাধ্যমে পানি নিয়ে আগুন নেভানো হয়। বনে আগুনের ওই এলাকায় মাঝে মধ্যে ধোঁয়া দেখা যায়। আগুনে এরই মধ্যে প্রায় ৪ একর বনভূমি পুড়ে গেছে।

রবিবার (২৩ মার্চ) সকালে সুন্দরবনের আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসে বলে বন বিভাগ এবং ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা নিশ্চিত করেছেন।

এদিকে সুন্দরবনে আগুনের ঘটনায় বন বিভাগ রবিবার ৩ সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) ওই কমিটিকে আগামী ৭ কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।

সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কাজী মুহাম্মদ নুরুল করিম জানান, গত শনিবার রাতভর বন বিভাগ এবং গ্রামবাসী মিলে আগুন নেভানোর কাজ করে। ভোলা নদী থেকে পানি নিয়ে তারা জ্বলতে থাকা আগুনে ছিটিয়েছে। 

রবিবার (২৩ মার্চ) সকাল ৮টার দিকে তাদের সঙ্গে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নেভানোর কাজে যুক্ত হয়। ৩ কিলোমিটার দূরে মরা ভোলা নদীতে পাইপ লাইন বসিয়ে পানি নিয়ে আগুন নেভানোর কাজ চলে। 

ডিএফও কাজী মুহাম্মদ নুরুল করিম আরও জানান, রবিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বনে আগুন জ্বলতে দেখা যায়নি। তবে বিচ্ছিন্নভাবে মাঝে মধ্যে কোনো কোনো স্থানে ধোঁয়া দেখা যাচ্ছে। ধোঁয়া দেখলে সঙ্গে সঙ্গে পাইপ দিয়ে সেখানে পানি ছিটানো হচ্ছে। আগুনে প্রায় চার একর বনের ক্ষতি হয়েছে।

ডিএফও কাজী মুহাম্মদ নুরুল করিমের তথ্য মতে, ২০২৪ সালের ৪ মে সুন্দরবনে আগুনের ঘটনায় তদন্ত কমিটির পরামর্শ অনুযায়ী সুন্দরবনের ২৪, ২৫ এবং ২৭ নম্বর কম্পারমেন্টাল এলাকায় মৌয়ালদের পাশ (অনুমতি) দেওয়া বন্ধ রাখা হয়েছে। এ বছর ১ এপ্রিল থেকে সুন্দরবনে মধু আহরণ মৌসুম শুরু হবে।

ডিএফও কাজী মুহাম্মদ নুরুল করিমের ধারণা, মৌসুম শুরুর আগেই অবৈধ কোনো মৌয়াল সুন্দরবনে প্রবেশ করতে পারে। মৌয়ালের মশাল অথবা বিড়ি সিগারেটের অংশ থেকে সুন্দরবনে আগুন ধরতে পারে। এ ছাড়া আইনভঙ্গ করে কোনো কোনো রাখাল ভোলা নদী পারি দিয়ে তাদের গবাদি পশু নিয়ে সুন্দরবনে প্রবেশ করে। ওই রাখালদের ফেলে রাখা বিড়ি-সিগারেটের আগুন থেকেও সুন্দরবনে আগুনের ঘটনা ঘটতে পারে।

ডিএফও কাজী মুহাম্মদ নুরুল করিমের তথ্য মতে, সুন্দরবনে আগুনের সূত্রপাত এবং জীববৈচিত্র্যের ক্ষয়ক্ষতির হিসাব জানতে ৩ সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির প্রধান করা হয়েছে, সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) দ্বীপেন চন্দ্র দাসকে। কমিটির অপর দুই সদস্য হলেন, ধানসাগর স্টেশন কর্মকর্তা বিপুলেশ্বর চন্দ্র দাস এবং কলমতেজি টহল ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম। কমিটির সদস্যদেরকে আগামী ৭ কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানান ডিএফও।

সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) দ্বীপেন চন্দ্র দাস জানান, সুন্দরবনে যে স্থানে আগুন লেগেছে ওই এলাকার দেড় কিলোমিটার জুড়ে ফায়ার লেন কাটা হয়েছে। আগুন ফায়ার লেন অতিক্রম করতে পারেনি। গতকাল সকালের পর থেকে বন বিভাগের সদস্যরা একটানা আগুন নেভানোর কাজ চালিয়ে যায়। আগুন সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। আগুনে কিছু বনের ক্ষতি হয়েছে।

ভারপ্রাপ্ত স্টেশন কর্মকর্তা আফতাব-ই আলম আরও জানান, বাগেরহাট, মোড়েলগঞ্জ এবং শরণখোলা ফায়ার স্টেশনের ৩টি ইউনিট, বন বিভাগ এবং গ্রামবাসী মিলে আগুন নেভানোর কাজ করা হয়। বন বিভাগের তদন্ত প্রতিবেদন পেলে আগুনের সূত্রপাত এবং ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা যাবে বলে তিনি জানান।

ভারপ্রাপ্ত স্টেশন কর্মকর্তা আফতাব-ই আলমের তথ্য মতে, গতকাল সকালে সুন্দরবনের গুলিসাখালী এলাকায় আগুনের খবর শুনে ফায়ার ব্রিগেডের কিছু কর্মী সেখানে গিয়ে কাজ করে। 

শনিবার সকাল ৭টার দিকে বাগেরহাটের শরণখোলার সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের ধানসাগর স্টেশনের কলমতেজি ক্যাম্পের টেপার বিল এলাকায় আগুন জ্বলতে দেখে বন বিভাগের সদস্যরা। এর পর আগুন নেভানোর কাজ শুরু করা হয়।

আগুন যাতে বনের মধ্যে ছড়াতে না পারে সে জন্য দেড় কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ফায়ার লেন কাটা হয়। সুন্দরবনে কাছাকাছি পানির উৎস না থাকায় আগুন নেভাতে বেগ পেতে হয়। এ নিয়ে ১৯ বছরে সুন্দরবনে ২৯ বার আগুনের ঘটনা ঘটেছে। গত ৪ মে সুন্দরবনে আগুনের ঘটনা ঘটে। বিভিন্ন সময়ে সুন্দরবনে আগুনে এ পর্যন্ত প্রায় ৮৫ একর বনভূমি পুড়ে গেছে। সূত্র: ইউএনবি

রাবি ছাত্রলীগের সহসভাপতি গ্রেপ্তার

প্রকাশ: ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ১২:৪৮ পিএম
রাবি ছাত্রলীগের সহসভাপতি গ্রেপ্তার
রাবি ছাত্রলীগের সহসভাপতি তাওহীদুল ইসলাম দুর্জয় গ্রেপ্তার। ছবি: সংগৃহীত

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি তাওহীদুল ইসলাম দুর্জয়কে (২৮) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

বৃহস্প‌তিবার (১৭ এপ্রিল) রাতে কু‌ড়িগ্রা‌ম সদর উপজেলার কালির আগলা এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তি‌নি‌ ওই এলাকার আব্দুল মোতালেবের ছেলে।

পু‌লিশ সূত্রে জানা যায়, পতিত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা এবং বিভিন্ন সময়ে সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিলেন নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সহসভাপতি দুর্জয়। আওয়ামী সরকারের পতনের পর দুর্জয় বি‌ভিন্ন জায়গায় আত্মগোপনে ছিলেন। গোপন সংবাদের ভি‌ত্তিতে অভিযান চা‌লিয়ে বৃহস্প‌তিবার রাতে কা‌লির আলগা এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

কুড়িগ্রাম জেলা পুলিশের মিডিয়া কর্মকর্তা ও ডি‌বির ওসি বজলার রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, তাকে আদালতের মাধ‌্যমে কারাগারে পাঠানো হবে। 

সালমান/

 

চেকপোস্ট ব্যারাক থেকে পুলিশ সদস্যের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার

প্রকাশ: ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ১২:৩৬ পিএম
চেকপোস্ট ব্যারাক থেকে পুলিশ সদস্যের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
মৃত পুলিশ সদস্য শামীম হোসেন

চুয়াডাঙ্গার দর্শনা জয়নগর চেকপোস্টের পুলিশ ব্যারাক থেকে এক পুলিশ সদস্যের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) সকাল ১০টার দিকে পুলিশ ব্যারাকের একটি কক্ষ থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। 

মৃত শামীম হোসেন (৩১) কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার ঝুটিয়াডাঙ্গা গ্রামের হাশেম আলীর ছেলে। তিনি কনস্টেবল পদে কর্মরত ছিলেন।

শামীমের সহকর্মীরা জানান, শামীম হোসেন যোগ দেওয়ার পর থেকেই গত ৬ মাস ধরে নতুন ইমিগ্রেশন ভবনের দ্বিতীয় তলার একটি কক্ষে থাকতেন। আজ সকাল সাড়ে ৮টায় কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকায় কয়েকজন সহকর্মী খোঁজ নিতে গেলে শামীমকে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান। পরে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়। 

জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) কনক কুমার দাস জানান, শামীমের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। ইতোমধ্যে তার পরিবারের সদস্যদের বিষয়টি জানানো হয়েছে। ঘটনার কারণ উদ্ঘাটনে তদন্ত কার্যক্রম চলছে।

মিজানুর/সালমান/

সিরাজগঞ্জে ট্রাক-মাইক্রোবাস সংঘর্ষে নিহত ২

প্রকাশ: ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ১২:১২ পিএম
সিরাজগঞ্জে ট্রাক-মাইক্রোবাস সংঘর্ষে নিহত ২
দুর্ঘটনাকবলিত ট্রাক। ছবি: খবরের কাগজ

সিরাজগঞ্জে ট্রাক ও মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে দুইজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন একজন।

শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) রাতে সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া রেলওয়ে স্টেশনের পাশে ব্রহ্মকপালিয়া এলাকায় ঢাকা-নগরবাড়ি মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন পাবনার হরিনাথপুর গ্রামের মতিউর রহমানের ছেলে মাইক্রোবাসের চালক মনছুরুল আলম (৪৩) ও একই গ্রামের জীবন চন্দ্র শীলের ছেলে মানিক চন্দ্র শীল (৪২)। 

এ সময় মাইক্রোবাসের যাত্রী সুম্য দাসের ছেলে সুমন কুমার দাস (৪২) আহত হন। তাকে সিরাজগঞ্জ শহিদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

হাটিকুমরুল হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রউফ জানান, বাঘাবাড়ি থেকে একটি সিমেন্টবোঝাই ট্রাক বগুড়া যাচ্ছিল। এ সময় উল্লাপাড়া রেলওয়ে স্টেশনের পাশে ঢাকা থেকে পাবনাগামী একটি মাইক্রোবাসের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলে দুজন মারা যান ও একজন আহত হন।

তিনি আরও জানান, ঘটনার পরপরই ট্রাকের চালক ও হেলপার পালিয়ে যায়। পুলিশ ট্রাকটি জব্দ করে থানায় নিয়ে এসেছে। নিহতদের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।

শিশির/সালমান/ 



ভাড়া নির্ধারণের ভুয়া গণবিজ্ঞপ্তি নিয়ে চাঞ্চল্য

প্রকাশ: ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ১১:১২ এএম
ভাড়া নির্ধারণের ভুয়া গণবিজ্ঞপ্তি নিয়ে চাঞ্চল্য
ছবি: সংগৃহীত

বরিশাল সিটি করপোরেশন (বিসিসি) এলাকায় থ্রি-হুইলারের ভাড়া নির্ধারণের একটি গণবিজ্ঞপ্তি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। বিসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার স্বাক্ষর থাকা ওই বিজ্ঞপ্তিতে নগরীর ১৯টি রুটের ভাড়া উল্লেখ করা হয়েছে। নির্দেশনা না মানলে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলা হয়েছে। যদিও ছড়িয়ে পড়া ওই গণবিজ্ঞপ্তি ভুয়া বলে দাবি করেছে বিসিসি কর্তৃপক্ষ। ওই গণবিজ্ঞপ্তি দেখে বিভ্রান্তিতে না পড়তে অনুরোধ করা হয়েছে।

ছড়িয়ে পড়া গণবিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, সম্প্রতি লক্ষ করা যাচ্ছে, কিছু অসাধু হলুদ অটো ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছেন। যাত্রীদের ন্যায্য ভাড়া নিশ্চিতের জন্য সিটি করপোরেশন থেকে রুটভিত্তিক ভাড়া নির্ধারণ করে দেওয়া হলো। সেখানে আরও উল্লেখ করা হয়, নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে কেউ বেশি দাবি বা আদায় করলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

যদিও সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা আহসান উদ্দিন রোমেল বলেছেন, ‘ভাড়া নির্ধারণের ছড়িয়ে পড়া গণবিজ্ঞপ্তিটি ভুয়া। এমন কোনো সিদ্ধান্ত সিটি করপোরেশন নেয়নি। এ ছাড়া নোটিশে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার যে স্বাক্ষর রয়েছে, তাও ভুয়া। পাশাপাশি যেসব রুট উল্লেখ করা হয়েছে, এর মধ্যে অনেকগুলোর রুটের কোনো অস্তিত্ব নেই। কেউ হয়তো বিভ্রান্তি ছড়ানোর জন্য এসব করেছে। নগরবাসীর প্রতি অনুরোধ, ভুয়া গণবিজ্ঞপ্তি দেখে বিভ্রান্তির মধ্যে পড়বেন না।’

তিনি আরও বলেন, ‘নোটিশটিতে দুই ধরনের ফন্ট ব্যবহার করা হয়েছে। কোনো সরকারি কিংবা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের একটি নোটিশ, আদেশ কিংবা চিঠিতে দুই ধরনের ফন্ট ব্যবহার করা হয় না। এ ছাড়া যে স্মারক ব্যবহার করা হয়েছে, সেটিও বিসিসির নয়।’ 

এদিকে কয়েক দিন ধরে বিভিন্ন রুটের ভাড়া নিয়ে ব্যাটারিচালিত হলুদ অটো ও সিএনজিচালকদের সঙ্গে সাধারণ যাত্রীদের বিভিন্ন সময় বচসা হতে দেখা গেছে। নগরীর ভাটিখানা এলাকার বাসিন্দা ভবেশ হালদার বলেন, ‘জেলখানার মোড় থেকে ভাটিখানার বাজার পর্যন্ত এসেছি। সিটি করপোরেশনের নির্ধারিত পাঁচ টাকার জায়গায় চালক ১০ টাকা চেয়েছে। তাই তার সঙ্গে ঝগড়া হয়েছে। পরে শুনেছি সিটি করপোরেশন এমন কোনো ভাড়া নির্ধারণ করেনি।’ 

লঞ্চঘাট থেকে নথুল্লাবাদ রুটের সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক রুহুল আমিন গাজী বলেন, দুই দিন ধরে যাত্রীদের কাছ থেকে বিসিসির নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে অতিরিক্ত আদায়ের অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। এ নিয়ে প্রায় বাগবিতণ্ডা হচ্ছে। পরে সিটি করপোরেশন থেকে জানতে পারি, তারা কোনো ভাড়া নির্ধারণ করেনি। 

রুপাতলি রুটের চালক শেখ সাদি বলেন, গণবিজ্ঞপ্তিতে উল্লিখিত জেলখানা-লঞ্চঘাট, লঞ্চঘাট-বেলস পার্ক ও মেডিকেল কলেজ, নথুল্লাবাদ-চকবাজার, চকবাজার-সদর রোড, বান্দ রোড-বেলস পার্ক, বেলস পার্ক-মেডিকেল কলেজ, মেডিকেল কলেজ-রুপাতলি, সদর রোড-লঞ্চঘাট নামে কোনো রুট নেই। লঞ্চঘাট-রুপাতলি এবং নথুল্লাবাদ রুটের মধ্যে কয়েকটি স্টেশন রয়েছে।  

বোরো ফসলের ক্ষতি ‘সোনালি স্বপ্ন ভেঙে গেছে’

প্রকাশ: ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ১১:০৫ এএম
‘সোনালি স্বপ্ন ভেঙে গেছে’
মৌলভীবাজারের কাউয়াদীঘির হাওরপারের বিরাইমবাদ এলাকার কৃষকরা বোরো ফসল তুলে বাড়ি নিয়ে যাচ্ছেন। ছবি: খবরের কাগজ

‘বোরো ধানের প্রতিটি ছড়ায় পর্যাপ্ত ধান দেখা গিয়েছিল। কিন্তু ধান কাটার পর দেখা মিলছে চিটা। প্রতি বিঘায় যেখানে ১৮ থেকে ২০ মণ ধান পাওয়ার কথা ছিল, সেখানে ৮ থেকে ১০ মণ ধান পাব। ভাগ্য খারাপ, আমন ফসলের ক্ষতি বোরো ফসলে পুষিয়ে নেব ভেবেছিলাম। কিন্তু এবার তাও হলো না। আমার সোনালি স্বপ্ন ভেঙে গেছে।’ 

আক্ষেপ নিয়ে কথাগুলো বলছিলেন, মৌলভীবাজারের কাউয়াদীঘি হাওরপারের চাষি আহমদ মিয়া। টানা খরা ও অনাবৃষ্টিতে জেলার বিস্তীর্ণ হাওরের জমি শুকিয়ে যায়। ফলে ধানে পোকা ও চিটা দেখা দেয়। এ ছাড়া শিলাবৃষ্টিতে বোরো ধান বাড়িতে তুলতে পারবেন কি না, তা নিয়েই শঙ্কায় আছেন হাওরপারের কৃষকরা। 

স্থানীয় চাষিরা জানান, ২০২৪ সালের ভয়াবহ বন্যায় জেলায় আমন ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়। আমনের ক্ষতি পুষিয়ে বোরো মৌসুমে ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন ছিল অনেক চাষির। কিন্তু বোরো মৌসুমে অনাবৃষ্টি ও খরায় পোকা ধরে ধান চিটা হয়ে গেছে। আমনের পর বোরো ফসলের যে ক্ষতি হয়েছে তা পুষিয়ে উঠতে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হবে। সংসারে টানাপোড়েন শুরু হবে। 

মৌলভীবাজার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জেলার বড় তিনটি হাওর হাকালুকি, হাইলহাওর ও কাউয়াদীঘি ছাড়াও ছোট ছোট হাওর এবং উপরিভাগে এ বছর ৬২ হাজার ২৪০ হেক্টর  জমিতে বোরো ধানের চাষ করা হয়েছে। 

৮ বিঘা জমিতে বোরো আবাদ করেন রসুলপুর এলাকার চাষি আবদুর রকিব। প্রতি বিঘায় প্রায় ৭ হাজার টাকা খরচ হয়। তিনি বলেন, ‘প্রতি বিঘায় যেখানে ২০ মণ ধান পাওয়ার কথা ছিল, সেখানে ১০ মণ ধান পাব কি না সন্দেহ আছে। এখন ধারদেনা করে সংসার চালাতে হবে।’

পাড়াশিমইল গ্রামের চাষি মিজু আহমদ বলেন, ‘এবার আমাদের এলাকার অনেকেই আমন ধান ঘরে তুলতে পারেননি। বন্যায় সব তলিয়ে গিয়েছিল। বোরো ফসলই ভরসা ছিল, কিন্তু সেই বোরো ফসলেও পোকা ও চিটা হয়েছে। ১০ বিঘা জমি চাষ করি। খরচ হয় ৫০ হাজার টাকা, এখন খরচ তোলাই দায়।’

বানেশ্রী এলাকার চাষি পরিমল বিশ্বাস জানান, টানা খরা ও অনাবৃষ্টিতে হাওরের জমি শুকিয়ে যায়। ফলে ধানে পোকা ও চিটা দেখা দেয়। যে পরিমাণ ধান পাওয়ার কথা, এখন তার ধান অর্ধেক পাবেন। 

মৌলভীবাজার সদর উপজেলা হাওর রক্ষা সংগ্রাম কমিটির সভাপতি আলমগীর হোসেন বলেন, ‘এ অঞ্চলে ২০২৪ সালের বন্যায় আমন ফসলে ব্যাপক ক্ষতি হয়। এখন শিলাবৃষ্টি, অনাবৃষ্টি ও পানির অভাবে বোরো ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হলো। হাওরের নদী-খাল খনন ও পানির উৎস থাকলে এ সমস্যার অনেকটা সমাধান হতো। কৃষকদের কৃষি ভর্তুকি দেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানাই।’

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর মৌলভীবাজারের উপপরিচালক জালাল উদ্দীন বলেন, ‘প্রকৃতির বিরূপ প্রভাবে কিছু জায়গায় বোরো ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সহায়তা করা হবে।’