
রাজবাড়ীর কালুখালীতে নিখোঁজের তিন দিন পর নিরব শেখ (১৭) নামে এক কিশোরের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
রবিবার (২৩ মার্চ) সকালে উপজেলার রতনদিয়া ইউনিয়নের মাধবপুর গ্রামের পদ্মা নদীর কোল থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
নিহত নিরব শেখ একই ইউনিয়নের হরিণবাড়িয়া গ্রামের জিয়ারুল শেখের ছেলে।
নিরবের স্বজনরা জানান, গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নিরব বাড়ির পাশে মাধবপুর বাজারে যায়। রাতে বাড়িতে না ফেরায় পরিবারের সদস্যরা তাকে খুঁজতে শুরু করেন। পরের দিনও কোনো সন্ধান না পেয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে খোঁজ চেয়ে পোস্ট দেওয়া হয়। কিছুক্ষণ পর নিরবের বাবার কাছে একটি অচেনা নম্বর থেকে ফোন আসে। ফোনে ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। টাকা না দিলে নিরবকে হত্যা করার হুমকি দেওয়া হয়। মুক্তিপণ দেওয়ার জন্য পাংশা উপজেলার একটি ব্রিজের কাছে যেতে বলা হয়। এরপর থেকেই সেই নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।
শনিবার (২২ মার্চ) নিরবের বাবা কালুখালী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।
রবিবার সকালে স্থানীয় জেলেরা মাছ ধরতে গিয়ে নদীতে একটি মরদেহ ভাসতে দেখে পুলিশে খবর দেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহটি উদ্ধার করে।
স্থানীয় বাসিন্দা রুবেল মোল্লা জানান, সকালে ইকরাম নামে একজন পদ্মা নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে উপুড় হয়ে ভাসমান একটি মরদেহ দেখতে পান। এরপর এলাকাবাসী গিয়ে নিশ্চিত হন, এটি নিখোঁজ নিরবের মরদেহ। নিরবের কোমরে শিকল দিয়ে একটি বালুর বস্তা বাঁধা ছিল, যাতে মরদেহটি পানিতে ডুবে থাকে। তবে মরদেহটি ফুলে পানির ওপরে ভেসে ওঠে। যে শিকলটি ব্যবহার করা হয়েছে, সেটি ঘাটে থাকা একটি নৌকা থেকে নেওয়া হয়েছে বলে স্থানীয়রা জানান।
নিরবের বাবা জিয়ারুল শেখ বলেন, ‘আমার তিন ছেলে। তিন বছর আগে আমার ছোট ছেলে জন্মের সময় আমার স্ত্রী মারা যান। নানা কারণে নিরব নবম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করে বাদ দেয় এবং সাভারের একটি কারখানায় কাজ শুরু করে। তবে বেতন নিয়মিত না পাওয়ায় সে কিছুদিন আগে বাড়ি ফিরে আসে। বৃহস্পতিবার রাতে বাজারে গিয়ে আর ফেরেনি। আজ আমার ছেলের মরদেহ দেখতে হলো। নিরব কারও সঙ্গে কোনো ঝগড়া-বিবাদে জড়িত ছিল না।’
কালুখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ জাহিদুর রহমান বলেন, ‘নিখোঁজের ঘটনায় নিরবের বাবা থানায় জিডি করেছেন। আমরা তদন্ত শুরু করছি। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে এবং মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।’