
রাজধানীর মিরপুরের রূপনগরে রাজনৈতিক বিরোধ ও ফুটপাতের দখলদারিত্ব নিয়ে যুবদলের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় আহত যুবদল কর্মী মো. শাহ আলম (৩২) মারা গেছেন।
রবিবার (২৩ মার্চ) সকালে মিরপুর ১১ নম্বর ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এদিকে নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য শহিদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
গত ২০ মার্চ রাত সাড়ে ১০টার দিকে মিল্কভিটা মোড়ে এই ঘটনার সূত্রপাত ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্যমতে, যুবদল নেতা মিল্টনের অনুসারী সাঈদ, জিলানী, মানিক, জুম্মান, শরীফ, আমিনুল, ইয়াছিন, সাগর, গনিসহ প্রায় ১৫-২০ জন রায়হান নামে এক যুবদল কর্মীকে টেনেহিঁচড়ে রূপনগর থানার সামনে বস্তির ক্লাবে নেওয়ার চেষ্টা করে।
শাহ আলম এর প্রতিবাদ করলে তারা রায়হানকে ছেড়ে দিয়ে তার ওপর হামলা চালায়।
তাকে এলোপাতাড়ি কিল, ঘুষি, লাথি ও রড দিয়ে মারধর করা হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় স্থানীয়রা শাহ আলমকে উদ্ধার করে ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে ভর্তি করেন।
পরে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাকে পুনরায় ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। গতকাল সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সেখানে তিনি মারা যান। এই হত্যাকাণ্ডের পর রূপনগর এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
শাহ আলমের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে রূপনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোজাম্মেল হক বলেন, ‘এলাকার আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন ধরে তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছিল। এরই জেরে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে এবং শাহ আলম নিহত হন।’ তিনি বলেন, ‘ঘটনার পর রূপনগর থানায় একটি হত্যা মামলা করা হয়েছে। ওই মামলায় এখন পর্যন্ত সাগর, রুস্তম ও জিলানীসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে বিস্তারিত জানা যাবে।’
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, নিহত শাহ আলম যুবদল নেতা আরমান সোহেলের ঘনিষ্ঠ অনুসারী ছিলেন। অন্যদিকে, অভিযুক্তরা যুবদল নেতা মিল্টনের অনুসারী বলে দাবি করা হয়। রূপনগর এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানি ও অটোরিকশার অবৈধ সংযোগ, সড়কের ফুটপাত দখল ও মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিরোধ চলছিল। এ নিয়ে প্রায়ই সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটত।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) হুসাইন মাহমুদ জানান, ‘লাশ ময়নাতদন্তের জন্য শহিদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এই ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের ধরতে অভিযান চলছে।’