ঢাকা ৩ বৈশাখ ১৪৩২, বুধবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৫
English

রাঙামাটিতে ২৪ কিমিতে আটকা সমৃদ্ধির দুয়ার

প্রকাশ: ২৪ মার্চ ২০২৫, ০২:৪৮ পিএম
আপডেট: ২৪ মার্চ ২০২৫, ০৩:২০ পিএম
রাঙামাটিতে ২৪ কিমিতে আটকা সমৃদ্ধির দুয়ার
নানিয়ারচর-লংগদু সড়কের ২৪ কিলোমিটার অংশ তৈরি হলে রাঙামাটির বাঘাইছড়ি ও লংগদু উপজেলার মানুষের আর্থিক ও সামাজিক অবস্থার পরিবর্তন আসবে। নানিয়ারচরের বড়পুলপাড়া থেকে সম্প্রতি তোলা। ছবি: খবরের কাগজ

স্বাধীনতার ৫৩ বছরেও জেলা সদরের সঙ্গে সড়ক নেটওয়ার্কে যুক্ত হয়নি দেশের বৃহত্তম দুই উপজেলা রাঙামাটির বাঘাইছড়ি ও লংগদু। ফলে যোগাযোগব্যবস্থার ঘাটতির কারণে পাহাড়ি জনপদের মানুষরা নানা সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। অথচ নানিয়ারচর-লংগদু আঞ্চলিক সড়কের মাত্র ২৪ কিলোমিটার নতুন সড়ক নির্মাণ হলেই রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ির পাঁচ উপজেলার পাঁচ লাখ মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হবে। খুলে যাবে সমৃদ্ধির নতুন দুয়ার। কৃষিপণ্য বিপণন ও পর্যটনে তৈরি হবে গুরুত্বপূর্ণ হাব। মানুষের জীবনমান উন্নয়ন ও নিরাপত্তার পাশাপাশি বছরে বাণিজ্য হবে কয়েক হাজার কোটি টাকার। এরই মধ্যে জনগুরুত্ব বিবেচনায় পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে প্রাথমিক প্রকল্প প্রস্তাব পাঠিয়েছে রাঙামাটি সড়ক বিভাগ। তাই সড়কটি দ্রুত নির্মাণে সরকারের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন পাহাড়ের বাসিন্দারা।

জানা গেছে, বিশেষ ভৌগলিক অবস্থার কারণে পাহাড়ের সব উপজেলা এখনো জেলা সদরের সঙ্গে সড়ক নেটওয়ার্কের আওতায় আসেনি। এর সঙ্গে গত শতকের ১৯৬০ সালে কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণ হলে কৃত্রিম হ্রদের কারণে দূরবর্তী বেশ কয়টি উপজেলার মতো নানিয়ারচর, লংগদু ও বাঘাইছড়িও পানিবন্দি হয়ে জেলা শহর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। সেখানে যোগাযোগব্যবস্থায় নৌযান একমাত্র ভরসা হওয়ায় উৎপাদিত কৃষিপণ্যের পরিবহন ও বাজারজাত করা যেমন ব্যয়বহুল হয়ে পড়ে, তেমনি যাতায়াতেও সৃষ্টি হয় নানান ভোগান্তি। তবে ২০২০ সালে নানিয়ারচরের চেঙ্গী নদীতে ৫০০ মিটার দৈর্ঘ্যের সেতু নির্মাণের পর পাহাড়ে সমৃদ্ধির নতুন সম্ভাবনার দুয়ার উন্মোচিত হয়। 

এদিকে ৩৭ দশমিক ৫০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের বগাছড়ি-নানিয়ারচর-লংগদু আঞ্চলিক সড়কটির সাড়ে ১৩ কিলোমিটার অংশ আগে থেকেই পাকা ছিল। অবশিষ্ট ২৪ কিলোমিটার নতুন সড়ক নির্মাণ হলেই জেলা সদরের সঙ্গে সড়ক নেটওয়ার্কে যুক্ত হবে। এতে রাঙামাটির নানিয়ারচর, লংগদু, বাঘাইছড়ি, খাগড়াছড়ি ও দীঘিনালা এই পাঁচ জেলা-উপজেলার অন্তত পাঁচ লাখ মানুষ সড়কটি ব্যবহার করতে পারবেন। এই সড়ক ধরে পাহাড়ি জনপদে উৎপাদিত কৃষিপণ্য বাজারজাতে খরচ ও সময় সাশ্রয়সহ কৃষি অর্থনীতি সমৃদ্ধ হবে। আর সড়ক যোগাযোগ, পর্যটন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ব্যবসা-বাণিজ্য ও নিরাপত্তা ব্যবস্থায়ও আসবে বৈপ্লবিক পরিবর্তন।

সম্প্রতি নানিয়ারচরের বড়পুলপাড়ায় গিয়ে স্থানীয় বাসিন্দা ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা হলে এসব চিত্র ফুটে উঠে। গ্রামটির বাসিন্দা পলেন চাকমা বলেন, ‘এ সড়কটিতে প্রয়োজনীয় সব কয়টি সেতুই আছে। এখন দরকার সড়ক নির্মাণ। সড়ক হলে লংগদু থেকে নানিয়ারচরে যাতায়াতে সবকিছুতেই সুবিধা হবে। গ্রামবাসী কৃষিপণ্য খুব সহজে বাজারে নিতে পারবে। দামও ভালো পাবে।’

পলাশ চাকমা নামে ওই এলাকার আরেক বাসিন্দা বলেন, ‘আমাদের এদিকে আনারস, কাঁঠালসহ বিভিন্ন ফল ও সবজির চাষ হয়। এই রাস্তাটি হলে আমাদের মালামাল পরিবহনে সময় ও খরচ দুই-তৃতীয়ংশই বেচে যাবে।’

স্থানীয় পূর্ণিমা চাকমা বলেন, ‘রাস্তাটি ভালো হলে সবারই সুবিধা হতো। এখন যাতায়াতে বেশি কষ্ট। অন্তঃসত্ত্বা নারী ও জরুরি রোগীর যাতায়াতে খুবই অসুবিধা হয়। বর্ষাকালে তো পা ফেলাই যায় না।’

সুধাকর চাকমা নামে একজন বলেন, ‘নানিয়ারচর থেকে লংগদু সড়কটি নির্মাণ হলে লংগদু, বাঘাইছড়ির মানুষদের খাগড়াছড়ির দীঘিনালা ঘুরে রাঙামাটি যাওয়া লাগবে না। তখন তারা দ্রুত রাঙামাটি যাতায়াত করতে পারবে। যাতায়াত এখন তিন দিন লাগলেও সড়ক হলে লাগবে সর্বোচ্চ দুই ঘণ্টা।’

রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য মিনহাজ মুরশীদ বলেন, ‘প্রস্তাবিত এ সড়কটি পাহাড়ের মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি। 

নানিয়ারচরের বড়পুল থেকে মাত্র ২৪ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ হলে লংগদু হবে কৃষিপণ্য বিপণন ও পর্যটনের গুরুত্বপূর্ণ হাব। এতে বছরে বাণিজ্য হবে কয়েক হাজার কোটি টাকার। মানুষের জীবনমান উন্নয়ন ও নিরাপত্তার জন্যও কাজে আসবে। পর্যটকরাও সাজেক থেকে লংগদু-রাঙামাটি-বান্দরবান হয়ে স্বল্প সময় ও খরচে কক্সবাজার যেতে পারবেন। তাই সড়কটি দ্রুত নির্মাণে বর্তমান সরকারের হস্তক্ষেপ চাই।’

রাঙামাটি সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সবুজ চাকমা বলেন, ‘মাত্র ২৪ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ হলেই পথটি সচল হবে। পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে আমরা একটি ডিও লেটার পেয়েছি। জনগুরুত্বপূর্ণ বিবেচনায় সড়কটি বাস্তবায়নের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে আমরা মন্ত্রণালয়ের কাছে সুপারিশ করেছি। যেন ভবিষ্যতে কোনো প্রকল্পের আওতায় উন্নয়নমূলক কাজ করা হয়। সড়কটি নির্মিত হলে রাঙামাটি জেলার সঙ্গে লংগদু-বাঘাইছড়ি উপজেলার সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন হবে। পর্যটন এলাকা সাজেকের সঙ্গে যোগাযোগ সহজ হবে।’

চাটমোহরে শিশুর ঝলসানো মরদেহ উদ্ধার

প্রকাশ: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ১১:৩৮ এএম
চাটমোহরে শিশুর ঝলসানো মরদেহ উদ্ধার
ছবি: খবরের কাগজ

চাটমোহরে জুই (৭) নামে এক শিশুর গলায় নিজের প্যান্ট প্যাঁচানো অবস্থায় ঝলসানো মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) বিকেলে চাটমোহর থানার ওসি (তদন্ত) নয়ন কুমার সরকার এ তথ্য জানান।

সংশ্লিষ্ট পরিবার সূত্রে জানা গেছে, নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার চান্দাই ইউনিয়নের গাড়ফা গ্রামের মালয়েশিয়া প্রবাসী জাহিদুল ইসলাম। তার বাবা প্রতিবন্ধী। মা দুইজন। দুই মা থাকেন পাশাপাশি বাড়িতে। ওই প্রবাসীর দুই মেয়ে-এক ছেলে। বেশ কিছু দিন থেকে জাহিদুলের আপন মা থাকেন চট্টগ্রামে। বড় মেয়ে আর ছোট ছেলেকে নিয়ে স্ত্রী থাকেন বাড়িতে। আর মেজো মেয়ে ও স্থানীয় হেফজখানার ১ম শ্রেণীর ছাত্রী জুঁই। নিজ বাড়ির ২শ গজ দূরে দ্বিতীয় দাদীর বাড়ি। ওই দাদীর কাছেই ছোটবেলা থেকে জুই বড় হচ্ছে। ঈদের আগে জাহিদুলের আপন মা তথা জুঁইয়ের আপন দাদি চট্টগ্রাম থেকে বাড়ি আসেন। পরে সোমবার (১৪ এপ্রিল) সন্ধ্যার কিছু আগে জুঁইকে তার দ্বিতীয় দাদি শেমাই রান্নার জন্য কিছুটা দুধ আনতে প্রথম দাদি ও মায়ের কাছে পাঠান। কিন্তু রাতে আর সেখানে যায়নি জুঁই। দ্বিতীয় দাদি মনে করেছেন, প্রথম দাদি আর তার মা হয়ত জুঁইকে  রেখে দিয়েছেন। এদিকে জুঁইয়ের মা আর দাদি জানেন, জুই দ্বিতীয় দাদীর কাছে আছে। এতে কেউই জুঁইয়ের খোঁজ করেননি। পরে মঙ্গলবার সকালে মাদ্রাসায় যেতে সহপাঠীরা জুঁইকে ডাকতে আসলে দ্বিতীয় দাদি তার মা ও প্রথম দাদীর কাছে জুঁইয়ের খোঁজ করলে জানতে পারেন সেখানে জুঁই যায়নি। বিষয়টি জানাজানি হলে শুরু হয় খোঁজ। এরই ধারাবাহিকতায় বাড়ির পাশেই পাবনা জেলার চাটমেহর এলাকার একটি ভুট্টার জমিতে পাওয়া যায় জুঁইয়ের মরদেহ।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় দফাদার শাহজাহান আলীর বলেন, মরদেহের গলায় প্যান্ট দিয়ে মোড়ানো ছিল। ঘাড়-মাথা এদিক-ওদিক গড়িয়ে পড়ছিল। হয়ত ওই প্যান্ট দিয়ে ঘাড় মচকিয়ে জুঁইকে হত্যা করা হতে পারে। এ ছাড়া জুঁইয়ের চোখ-মুখ ও শরীর ঝলসানোর মতো মনে হয়েছে। হয়ত অ্যাসিড জাতীয় পদার্থ দিয়ে ঝলসানো হয়েছে।

বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুবুর রহমান জানান, শিশুটির বাড়ি বড়াইগ্রাম উপজেলার হলেও মরদেহটি পাওয়া যায় চাটমোহর এলাকায়। ফলে মামলা হবে চাটমোহর থানায়। শিশুটির শরীর কোন দাহ্য পদার্থ দিয়ে পোড়ানো হয়েছে এমনই মনে হয়েছে।

চাটমোহর থানার ওসি নয়ন কুমার সরকার বলেন, 'ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পেলে জানা যাবে হত্যারহস্য। শিশুকে হত্যার আগে ধর্ষণ করা হয়েছে কিনা তাও জানা যাবে। এ ছাড়া শরীর ঝলসানো পদার্থ বিষয়ে তথ্য জানা যাবে।' এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন। মামলার পর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কামাল/মেহেদী/

মাদারীপুরে চাচা শ্বশুরের সঙ্গে পরকীয়ার জেরে সন্তানকে হত্যা!

প্রকাশ: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ১১:০৭ এএম
আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ১১:০৮ এএম
মাদারীপুরে চাচা শ্বশুরের সঙ্গে পরকীয়ার জেরে সন্তানকে হত্যা!
ছবি: খবরের কাগজ

মাদারীপুরে পরকীয়ার জেরে ইমতিয়াজ নামে নিজের আড়াই বছরের সন্তানকে পিটিয়ে ও শ্বাসরোধ হত্যার অভিযোগ উঠেছে এক মায়ের বিরুদ্ধে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য অভিযুক্ত মা শারমিন আক্তারকে আটক করেছে পুলিশ। 

বর্তমানে ময়নাতদন্তের জন্য শিশু ইমতিয়াজের মরদেহ জেলা হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।

মাদারীপুর সদর উপজেলার খোয়াজপুর-টেকেরহাট এলাকার মালয়েশিয়া প্রবাসী দবির বেপারীর স্ত্রী শারমিন আক্তার চাচা শ্বশুর আমির বেপারীর সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। একমাস আগে দবিরকে ডিভোর্স দিয়ে ছোট ছেলে ইমতিয়াজকে নিয়ে আমিরের সঙ্গে রাজধানীর কেরানীগঞ্জের একটি বাসায় বসবাস শুরু করেন শারমিন। সোমবার (১৪ এপ্রিল) রাত ১টার দিকে শারমিন ইমতিয়াজের মরদেহ দাফনের জন্য মাদারীপুরে নিয়ে শুরু হয় হট্টোগোল। পরে মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) সকালে পুলিশকে খবর দেওয়া হলে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য অভিযুক্ত মা শারমিন আক্তারকে আটক করে পুলিশ।

স্বজনদের অভিযোগ, পরকীয়ার জেরে আড়াই বছরের শিশুকে পিটিয়ে ও শ্বাসরোধে হত্যার পর মরদেহ গ্রামের বাড়ি নিয়ে আসা হয়েছে।

মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) শেখ সাব্বির হোসেন জানান, ‘শিশুটির মরদেহ রাজধানী ঢাকার কেরানীগঞ্জ থেকে মাদারীপুরে নিয়ে আসার পর ঘটনা জানাজানি হয়। স্বজনদের অভিযোগ মাথায় নিয়ে পুলিশ কাজ শুরু করছে। পরকীয়ার অভিযোগ থাকায় অভিযুক্ত মা শারমিন আক্তারকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হবে। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট হাতে পেলে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’


রফিকুল/মেহেদী/

স্ত্রীকে হত্যায় অভিযুক্ত স্বামীকে গণপিটুনি

প্রকাশ: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ১১:০১ এএম
স্ত্রীকে হত্যায় অভিযুক্ত স্বামীকে গণপিটুনি
স্ত্রীকে ছুরিকাঘাতে হত্যায় অভিযুক্ত স্বামী ফরিদুল আলমকে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে দিয়েছে স্থানীয়রা। ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে গভীর রাতে স্ত্রীকে ছুরিকাঘাতে হত্যায় অভিযুক্ত স্বামী ফরিদুল আলমকে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে দিয়েছে স্থানীয়রা। মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) দুপুরে ফরিদুলকে উপজেলার খানখানাবাদ ইউনিয়নের ডোংরা গ্রামের কালু ফকির বাড়ি থেকে হাতেনাতে ধরা হয়। এ সময় উত্তেজিত জনতা তাকে বেধড়ক মারধর করে। 

খবর পেয়ে বাহারছড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মজনু মিয়ার নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে গুরুতর অবস্থায় ফরিদুলকে হেফাজতে নেয়।

এ সময় উত্তেজিত জনতা পুলিশের কাছ থেকে তাকে ছিনিয়ে নিতে পুলিশ ফাঁড়ি ঘেরাও করে। পরে বাঁশখালী থানা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে ফরিদুলকে কড়ানিরাপত্তায় উপজেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে আসে। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন বাহারছড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মজনু মিয়া।

এর আগে গত ১১ এপ্রিল ভোরে শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে ঘুমন্ত অবস্থায় স্ত্রীকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেন ফরিদুল আলম। বাঁশখালী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সুধাংশু শেখর হালদার বলেন, ‘এলাকায় ফরিদুল আসার খবর পেয়ে স্থানীয়রা তাকে বাড়িতে গিয়ে আটক করে। পরে আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে বাঁশখালী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে এসেছি।’

সোনারগাঁয় ৫০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী ‘বউমেলা’

প্রকাশ: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ১০:৩৯ এএম
আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ১১:১৪ এএম
সোনারগাঁয় ৫০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী ‘বউমেলা’
পূজা-অর্চনায় ব্যস্ত সনাতন ধর্মাবলম্বী নারীরা। মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) সোনারগাঁ উপজেলা পরিষদ-সংলগ্ন জয়রামপুর এলাকার ভট্টপুর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠের বটতলায়। ছবি: খবরের কাগজ

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে চলছে ৫০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী বউমেলা। গত সোমবার পয়লা বৈশাখের দিন শুরু হয় মেলা। তিন দিনব্যাপী এ মেলা আজ শেষ হবে।

মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) ছিল মেলার মূল আনুষ্ঠানিকতা। প্রতিবছরের মতো এবারও সোনারগাঁ উপজেলা পরিষদ-সংলগ্ন জয়রামপুর এলাকার ভট্টপুর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠের বটতলায় এ বউমেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। 

স্থানীয়রা জানান, প্রায় ৫০০ বছরের পুরোনো একটি বটগাছকে কেন্দ্র করে যুগ যুগ ধরে পালিত হচ্ছে এ বউমেলা। এ মেলাকে অনেকে সিদ্ধেশ্বরী দেবীর মেলা ও বটগাছকে সিদ্ধেশরী দেবী বলে থাকেন।

মঙ্গলবার সকালে মেলায় গিয়ে দেখা যায়, বটগাছের নিচে সারিবদ্ধভাবে বিভিন্ন ফল-ফলাদির ঝুড়ি নিয়ে পূজা-অর্চনার জন্য দাঁড়িয়ে আছেন সনাতন ধর্মাবলম্বী নারীরা। তাদের সঙ্গে বিভিন্ন সাজে দাঁড়িয়ে আছেন কুমারী মেয়েরা। সবার দৃষ্টি বটগাছের দিকে। দুপুরে দিকে বাড়তে থাকে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উপস্থিতি। 

স্থানীয় সনাতন ধর্মাবলম্বীরা জানান, তাদের কাছে শত শত বছরের বটগাছটি হয়ে উঠেছে পুণ্যের দেবতা। বটগাছটি সিদ্ধেশ্বরী দেবতা নামেও পরিচিতি পায়। সনাতন ধর্মাবলম্বী নারীরা সারা বছর অপেক্ষায় থাকেন এ মেলার জন্য। মেলায় দেবতার সন্তুষ্টির জন্য কবুতর ওড়ানো ও পাঁঠা বলি দেওয়া হয়। স্বামী সংসারের বাঁধন যেন অটুট থাকে, সারা বছর সংসারে যেন সুখ-শান্তি থাকে এ কামনায় পূজার আয়োজন করা হয়। 

মেলায় কয়েকজন নারীর সঙ্গে কথা হলে তারা বলেন, ‘বড়দের কাছ থেকে শুনেছি এ মেলায় এসে পূজা-অর্চনায় স্বামী-সন্তান ও সংসারের কল্যাণ কামনা সফল হয়। সংসারের সুখ শান্তি ও স্বামী-সন্তানের মঙ্গল কামনায় আমরা এ মেলায় পূজা করতে এসেছি।’

বউমেলায় অংশগ্রহণকারীদের অধিকাংশ নারী হলেও পুরুষরাও এ মেলায় অংশ নিয়ে থাকেন, তবে সংখ্যায় কম। পূজা-অর্চনা ছাড়াও বউমেলায় বাঙালি সংস্কৃতির প্রাচীন ঐতিহ্য খুঁজে পাওয়া যায়। মেলায় মৃৎশিল্পীদের তৈরি নানা রঙের টেপা পুতুল, হাতি, ঘোড়া, ময়না, টিয়া, বাঘ-ভাল্লুক, হাঁড়ি-পাতিল থেকে শুরু করে মিঠাইয়ের দোকান বসে। লৌহ, কাঠ ও বাঁশের তৈরি বিভিন্ন পণ্য পাওয়া যায় মেলায়।

পুরোহিত উৎপল ভট্টাচার্য জানান, শত শত বছর ধরেই উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে নারীরা ভিড় করে থাকেন সিদ্ধেশ্বরী বটতলার বউমেলায়। বউমেলা আয়োজক কমিটির সদস্য নিলোৎপল রায় জানান, প্রতিবছর বর্ষবরণ উৎসবে সিদ্ধেশ্বরী কালীপূজার আয়োজন করা হয়। এলাকার হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন এ মেলার আয়োজন করেন। পূজায় দেশবাসী ও এলাকার মানুষের শান্তি ও মঙ্গল কামনায় প্রার্থনা করা হয়।

সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা রহমান বলেন, ‘বউমেলায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। প্রশাসনিকভাবে আমরা এ মেলাকে সার্বিক সহযোগিতা দিয়ে থাকি। নারীদের কেন্দ্র করে একটি মেলা সত্যিই ভিন্নধর্মী অভিজ্ঞতা। মেলা উপভোগ করতে হিন্দু সম্প্রদায় ছাড়াও মুসলিম ধর্মের লোকজনও অংশ নিয়ে থাকেন।’

রাজশাহীতে চাঞ্চল্যকর সুরুজ হত্যায় বোনসহ ২ ভাগ্নে গ্রেপ্তার

প্রকাশ: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ১০:১৩ এএম
রাজশাহীতে চাঞ্চল্যকর সুরুজ হত্যায় বোনসহ ২ ভাগ্নে গ্রেপ্তার
ছবি: খবরের কাগজ

রাজশাহী নগরীর বিলশিমলা এলাকায় চাঞ্চল্যকর মো. সুরুজ (৪৫) হত্যা মামলায় তার বোনসহ দুই ভাগ্নেকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব।

মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) দুপুরে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে র‌্যাব এ তথ্য জানায়। 

এর আগে সোমবার (১৪ এপ্রিল) দুপুরে মাদারীপুর সদর উপজেলার মোস্তফাপুর গ্রামে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে র‌্যাব রাজশাহীর একটি দল।

নিহত সুরুজ নগরের বিলশিমলা এলাকার বাসিন্দা ছিলেন।

গ্রেপ্তার তিনজন হলেন- সুরুজের বোন বহরমপুর ব্যাংক কলোনি এলাকার বাসিন্দা জাহানারা বেগম (৫০), তার ছেলে মো. হিরা (৪০) ও আশরাফ আলী (৪৫)। তাদের বাবার নাম মৃত আনিচুর রহমান।

র‌্যাব জানায়, গত ১১ এপ্রিল জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে নগরের সিটি বাইপাস এলাকায় আসামিরা সুরুজকে মারধর করেন। হিরা ইট দিয়ে তার মামা সুরুজের মাথায় আঘাত করেন। পরে হাসপাতালে নেওয়া হলে সুরুজ মারা যান।

এ ঘটনায় নিহত সুরুজের ছেলে নগরের রাজপাড়া থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। ঘটনার পর থেকেই আসামিরা পলাতক ছিলেন। র‌্যাব তাদের গ্রেপ্তার করে থানায় হস্তান্তর করেছে।

মেহেদী/