ঢাকা ১০ বৈশাখ ১৪৩২, বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫
English
বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ১০ বৈশাখ ১৪৩২

ঈশ্বরগঞ্জ থানার ঘুষ ফেরত দেওয়া সেই এসআই বরখাস্ত

প্রকাশ: ২৪ মার্চ ২০২৫, ০৪:৫৯ পিএম
ঈশ্বরগঞ্জ থানার ঘুষ ফেরত দেওয়া সেই এসআই বরখাস্ত
বরখাস্ত উপ-পরিদর্শক মো. নজরুল ইসলাম

ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. নজরুল ইসলামকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

সোমবার (২৪ মার্চ) দুপুরে খবরের কাগজকে বিষয়টি নিশ্চিত করে ময়মনসিংহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গৌরীপুর সার্কেল) দেবাশীষ কর্মকার বলেন, তদন্তে ঘুষ লেনদেনের সত্যতা পেয়েছি। শনিবার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে। সে অনুযায়ী জেলা পুলিশ সুপার বিভাগীয় ব্যবস্থা নেবেন।

ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার কাজী আখতার উল আলম বলেন, এসআই মো. নজরুল ইসলামকে সাসপেন্ড করেছি। তিনি এখন পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত রয়েছেন।

জানা যায়, ২০২১ সালের ১২ ডিসেম্বর উপজেলার জাটিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে নৈশপ্রহরী হিসেবে যোগদান করেন একই এলাকার লোকমান হেকিমের ছেলে আরমান হোসেন। গত বছরের ১ অক্টোবর ভোরে ওই বিদ্যালয়ে কর্মরত অবস্থায় আরমানকে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় রাতেই নিহতের মা শামসুন্নাহার ঝর্ণা বাদী হয়ে ছয়জনের নাম উল্লেখ করে আরও কয়েকজনকে অজ্ঞাত আসামি করে হত্যা মামলা করেন। মামলার পরপরই প্রধান আসামি গ্রামপুলিশ মাসুদকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। কিছুদিন পর মাসুদ উচ্চ আদালত থেকে জামিনে মুক্ত হন।

চলতি বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি রাতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) নজরুল ইসলাম এলাকায় অভিযান চালিয়ে আরিফ বিল্লাহ বাচ্চু, রিফাতুল ইসলাম শাহীন, বাবুল মিয়া ও রোমান মিয়াকে আটক করে থানায় নিয়ে যান। জিজ্ঞাসাবাদের নামে তাদের মারধর করা হয়। একপর্যায়ে আটকদের ছেড়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে ৫ লাখ টাকা দাবি করা হয়। অন্যথায় আরমান হত্যা মামলায় তাদের ফাঁসিয়ে দেওয়ার ভয় দেখানো হয়। এমতাবস্থায় বাবুলের বাবা মোনায়েম মিয়া এসআই নজরুলের সঙ্গে ৬০ হাজার টাকায় বিষয়টি রফা করেন।

পরে চারজন এলাকায় এসে সবাইকে ঘুষ লেনদেনের ঘটনাটি জানিয়ে দেন। এতে সমালোচনা শুরু হলে ১২ মার্চ দুপুরে উপজেলার পৌর বাজারে মোনায়েম মিয়ার কাছে ঘুষের ৫৯ হাজার টাকা ফেরত দেন পুলিশ কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম। এদিনই পুলিশ সুপার কাজী আখতার উল আলমের নির্দেশে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গৌরীপুর সার্কেল) দেবাশীষ কর্মকার তদন্ত শুরু করেন।

কামরুজ্জামান/অমিয়/

ভোলায় চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে পিডিবিএফ কর্মীদের বিক্ষোভ

প্রকাশ: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ০১:২৮ পিএম
ভোলায় চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে পিডিবিএফ কর্মীদের বিক্ষোভ
ভোলা শহরের কালীবাড়ি রোডে উপ-পরিচালক কার্যলয়ের সামনে পিডিবিএফ কর্মচারী ইউনিয়নের বিক্ষোভ। ছবি: খবরের কাগজ

ভোলায় অস্থায়ী কর্মীদের স্থায়ীকরণ, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পদোন্নতির দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন পল্লি দারিদ্র্য বিমোচন ফাউন্ডেশন (পিডিবিএফ) কর্মচারী ইউনিয়নের সদস্যরা। 

বুধবার (২৩ মার্চ) সকালে ভোলা শহরের কালীবাড়ি রোডে উপ-পরিচালক কার্যলয়ের সামনে ঘণ্টাব্যাপী এ কর্মসূচি পালন করেন তারা। 

দাবি না মানা পর্যন্ত আগামী ২৬ এপ্রিল নিয়োগ পরীক্ষা বাতিলের দাবি জানান তারা। 

এ সময় বক্তরা জানান, দেশের দারিদ্র্য বিমোচনের লক্ষ্যে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে যাচ্ছেন তারা। দীর্ঘদিন কাজ করলে অস্থায়ী কর্মীদের স্থায়ী করা ও স্থায়ী কর্মীদের পদোন্নতি না দেওয়ায় তারা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। স্বল্প বেতনে তাদের সংসার চালানো কষ্ট হচ্ছে।

তাই দ্রুত অস্থায়ী কর্মীদের স্থায়ী করার দাবি জানান তারা। 

এ সময় পল্লি দারিদ্র বিমোচন ফাউন্ডেশন ভোলা অঞ্চল কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি মো. রাসেল, সাধারণ সম্পাদক নিয়াজ মোর্শেদ, সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ নূরুন্নবী সোহাগ, কার্যকরি সভাপতি মোহাম্মদ মনির হোসেনসহ ভোলা অঞ্চলের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন। 

ইমতিয়াজ/পপি/

ট্রাকচাপায় প্রাণ গেল নৈশ প্রহরীর

প্রকাশ: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ০১:১৪ পিএম
আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ০১:৩১ পিএম
ট্রাকচাপায় প্রাণ গেল নৈশ প্রহরীর
প্রতীকী ছবি

ঝিনাইদহে ট্রাকের চাপায় বাদল মোল্লা (৫৫) নামের এক নৈশ প্রহরী নিহত হয়েছেন।

বুধবার (২৩ এপ্রিল) সকাল ৬টার দিকে শহরের হামদহ আল-হেরা মোড়ে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত বাদল মোল্লা সদর উপজেলার ছোট কামারকুণ্ডু উত্তর পাড়া গ্রামের মোকছেদ আলীর ছেলে। তিনি শহরের আল-হেরা মোড় এলাকায় নৈশ প্রহরীর দায়িত্ব পালন করতেন।

স্থানীয়রা জানায়, ভোরে দায়িত্ব পালনের এক পর্যায়ে রাস্তার পশ্চিম পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন বাদল মোল্লা। সে সময় কালীগঞ্জ থেকে ঝিনাইদহ শহরগামী একটি ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে তাকে চাপা দিয়ে পালিয়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান।

ঝিনাইদহ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের পরিদর্শক তানভীর হাসান খবরের কাগজকে জানান, খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে যান এবং মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন।

মাহফুজুর/তাওফিক/ 

মাদ্রাসাছাত্রীকে জোরপূর্বক বাল্যবিয়ে দিলেন মা ও সৎ বাবা!

প্রকাশ: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ১২:৪৯ পিএম
আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ১২:৪৯ পিএম
মাদ্রাসাছাত্রীকে জোরপূর্বক বাল্যবিয়ে দিলেন মা ও সৎ বাবা!
প্রতীকী ছবি

চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় ১৪ বছর বয়সী এক মাদ্রাসাছাত্রীকে জোরপূর্বক বাল্যবিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তারই মা ও সৎ বাবার বিরুদ্ধে। 

এ ঘটনায় মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) সকাল ১০টার দিকে প্রতিকার চেয়ে বাল্যবিবাহের শিকার ওই মাদ্রাসাছাত্রী বাদী হয়ে তার মা, সৎ বাবা ও তিন প্রতিবেশীকে বিবাদী করে সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন। 

বিবাদী ওই তিন প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে বাল্যবিবাহে সহযোগিতার অভিযোগ আনা হয়।

বাল্যবিবাহের শিকার ওই মাদ্রাসাছাত্রী উপজেলার বাজালিয়া ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের পূর্ব মাহালিয়া গ্রামের চিতামুড়া এলাকার মৃত আবু নৈয়মের মেয়ে। এ ছাড়াও সে বাজালিয়া হেদায়েতুল ইসলাম ফাজিল ডিগ্রি মাদ্রাসার সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী।

বিবাদীরা হলেন- ভুক্তভোগীর মা মিনু আক্তার (৩৫), সৎ বাবা নুরুল ইসলাম (৪৫), প্রতিবেশী আবদুর রশিদ (৫০), আবদুর রশিদের স্ত্রী হালিমা বেগম (৪৫) ও তাদের ছেলে মোহাম্মদ রাকিব। তারা প্রত্যেকে উপজেলার বাজালিয়া ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের পূর্ব মাহালিয়া গ্রামের চিতামুড়া এলাকার বাসিন্দা।

অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, জন্ম নিবন্ধন অনুযায়ী ভুক্তভোগী মাদ্রাসাছাত্রীর বয়স এখনও ১৪ বছর। ২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসের শেষের দিকে তার সঙ্গে ৫ লাখ টাকা দেনমোহরে স্থানীয় জাবেদ নামে এক যুবকের বিয়ের আয়োজন করেন মা মিনু আক্তার ও সৎ বাবা নুরুল ইসলাম। মেয়েটি এ বিয়েতে রাজি না হওয়া সত্বেও উভয় পরিবারের মধ্যে সিদ্ধান্ত হয় যে, বিয়ে রেজিস্ট্রি সম্পন্ন হওয়ার পরবর্তী দুই মাস পর্যন্ত ওই মাদ্রাসাছাত্রী নিজের বাড়িতেই অবস্থান করবেন এবং দুই মাস পূর্ণ হলে তাকে সামাজিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শ্বশুর বাড়িতে পাঠানো হবে। তারই প্রেক্ষিতে, কোন ধরনের পারিবারিক অনুষ্ঠান ছাড়াই এক প্রকার গোপনে কাজীর মাধ্যমে বিবাহ রেজিস্ট্রি সম্পন্ন করেন দুই পরিবারের কর্তারা। বিবাহ রেজিস্ট্রি সম্পন্ন হওয়ার পর পূর্বের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ওই মাদ্রাসাছাত্রী নিজ বাড়িতেই অবস্থান করেন। এভাবে বেশ কিছুদিন যাওয়ার পর ওই মাদ্রাসাছাত্রী হঠাৎ করে বাড়ি থেকে পালিয়ে পারভীন আক্তার নামে তার এক নিকটাত্মীয়ের চট্টগ্রামস্থ বাসায় আশ্রয় নেয়। পরে তার পরিবারের সদস্যরা সেখান থেকে তাকে জোরপূর্বক বাড়িতে নিয়ে আসেন। 

বাড়িতে ফিরে আসার কিছুদিন পর তাকে মারধর করে জোরপূর্বক শ্বশুরবাড়িতে পাঠানোর চেষ্টা করেন তার মা ও সৎ বাবা। এ ঘটনার কয়েকদিন পর সে পুনরায় বাড়ি থেকে পালিয়ে তার খালু জাহাঙ্গীর আলমের কাছ থেকে তার আরেক নিকটাত্মীয় মনোয়ারা বেগমের চট্টগ্রামস্থ বাসার ঠিকানা সংগ্রহ করে সেখানে আশ্রয় নেন। এ ঘটনায় তার মা সাতকানিয়া থানায় একটি অভিযোগ করেন। তার বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়টি জানতে পেরে ওই ছাত্রী তার মা ও সৎ বাবার বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে নিজেই থানায় হাজির হন। পরে সাতকানিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (নিরস্ত্র) খাইরুল হাসান ভুক্তভোগী ও তার মা, সৎ বাবা এবং এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে একটি সালিশী বৈঠকের আয়োজন করেন। ওই সালিশী বৈঠকে ভুক্তভোগী ছাত্রী বিবাহের সম্পর্কটি ছিন্ন করে পড়ালেখায় মনোনিবেশ করবেন বলে জানান। পরে তার মা ও সৎ বাবা মেয়েকে ছাড়াই বাড়িতে ফিরে যান। এর পর থেকে ওই মাদ্রাসাছাত্রী তার প্রতিবেশী ও দূর সম্পর্কের আত্মীয় এ্যানি আকতারের বাড়িতে অবস্থান করছেন।

বাল্যবিবাহের শিকার মাদ্রাসাছাত্রী বলে, আমার বয়স এখনও ১৪ বছর। আমি বাজালিয়া হেদায়েতুল ইসলাম ফাজিল ডিগ্রি মাদ্রাসার সপ্তম শ্রেণিতে অধ্যায়নরত। আমার ইচ্ছা ছিল পড়ালেখা শেষ করে সংসারের হাল ধরব। কিন্তু আমার মা ও সৎ বাবা মিলে আমাকে জোরপূর্বক বিবাহ দিয়েছে। আমাকে মারধর করে বিবাহ রেজিস্ট্রিতে স্বাক্ষর করতে বাধ্য করেছেন। এর পর আমি পালিয়ে গিয়ে আমার এক নিকটাত্মীয়ের বাসায় আশ্রয় নেই। এখনও আমার মা ও সৎ বাবা আমাকে শ্বশুরবাড়িতে পাঠানোর জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তাই আমি তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে বাধ্য হয়েছি।

প্রতিবেশী ও দূর সম্পর্কের আত্মীয় এ্যানি আকতার বলেন, সে একদিকে আমার প্রতিবেশী অন্যদিকে দূর সম্পর্কের আত্মীয় হন। তাকে বাল্যবিবাহ দেওয়াতে সে অভিমান করে বাড়ি থেকে পালিয়ে এক নিকটাত্মীয়ের বাসায় চলে গিয়েছিল। পরে সাতকানিয়া থানায় সালিশী বৈঠকে সে জানায়, সে এ বিবাহের সম্পর্কটি ছিন্ন করে পড়ালেখায় মনোনিবেশ করবে এবং মা ও সৎ বাবার সঙ্গে একই বাড়িতে বসবাস করবে। কিন্তু তার মা ও সৎ বাবা তাকে বাড়িতে নেয়নি। সে থেকে মেয়েটি আমার বাড়িতে রয়েছে।

এ ঘটনায় অভিযুক্ত ওই মাদ্রাসাছাত্রীর মা মোবাইল ফোন ব্যবহার করেন না। পরে সৎ বাবা নুরুল ইসলামের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে বাল্যবিবাহের বিষয়টি শিকার করে তিনি বলেন, মেয়েকে বিয়ে দেওয়ার জন্য আমি সিএনজিচালিত অটোরিকশা বিক্রি করে দিয়েছি। মেয়ের জামাইকে ৫০ হাজার টাকা দিয়েছি। মেয়ের শ্বশুরবাড়িতে দেওয়ার জন্য ৬০ হাজার টাকার ফার্নিচার তৈরি করেছি। পরে সে হঠাৎ করে বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। তাকে আমরা অনেকদিন খোঁজাখুঁজির পরে বাড়িতে নিয়ে আসি। পরে সিদ্ধান্ত হয় কাজীর কাছে গিয়ে বিয়ের সম্পর্কটি ছিন্ন করা হবে। এর কিছুদিন পর মেয়েটি পুনরায় বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। আমি যেহেতু সৎ বাবা এ বিষয়ে আমার আর কিছু বলার নাই। আমি ওই মেয়েকে আর বাড়িতে তুলব না। তার মা যদি তাকে লালনপালন করতে পারে তাকে বাড়িতে নিবে এতে আমার কোনো আপত্তি নেই।

সাতকানিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (নিরস্ত্র) খাইরুল হাসান বলেন, এ ঘটনায় একটি সালিশী বৈঠকে বসেছিলাম। ওই সালিশী বৈঠকে বাল্যবিবাহের শিকার মাদ্রাসাছাত্রী বিবাহের সম্পর্কটি ছিন্ন করে পড়ালেখায় মনোনিবেশ করবে বলে জানায়। পরে আমরা তাদেরকে আইনি পরামর্শ দিয়েছিলাম। এ ছাড়াও পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে জানতে উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কাছ থেকে পরামর্শ নেওয়ার জন্য বলেছি।

সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মিল্টন বিশ্বাস খবরের কাগজকে বলেন, এক মাদ্রাসাছাত্রীকে জোরপূর্বক বাল্যবিবাহ দেওয়ার ঘটনায় ওই মাদ্রাসাছাত্রী বাদী হয়ে আমার কাছে একটি অভিযোগ করেছে। এ ঘটনায় তদন্তপূর্বক দোষীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আরিফুল/মেহেদী/

২০২৪ সালে দেশে চা উৎপাদন কমেছে ১ কোটি কেজি

প্রকাশ: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ১২:৩৫ পিএম
আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ১২:৩৬ পিএম
২০২৪ সালে দেশে চা উৎপাদন কমেছে ১ কোটি কেজি
চা বাগানে কাজ করছেন শ্রমিকরা। ছবি: খবরের কাগজ

দেশের চায়ের উৎপাদন কমেছে কিন্তু বিদেশে চা রপ্তানি বেড়েছে। ২০২৩ সালে দেশে রেকর্ড পরিমাণ চা উৎপাদনের পর ২০২৪ সালে প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে দেশে চা উৎপাদন কমেছে এক কোটি কেজি। 

তবে ২০২৪ সালে চা রপ্তানি হয়েছে ২ দশমিক ৪৫ মিলিয়ন কেজি, ২০২৩ সালে চা রপ্তানি হয়েছিল ১ দশমিক ৪ মিলিয়ন কেজি। চা রপ্তানি করে ২০২৪ সালে আয় হয়েছিল ৪৫৯ দশমিক ৫৮ মিলিয়ন টাকা। আগের বছর রপ্তানি আয় হয়েছিল ২৭২ দশমিক ৫২ মিলিয়ন টাকা। 

বাংলাদেশ টি বোর্ড থেকে এসব তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে। 

এদিকে গত সোমবার চায়ের সর্বশেষ নিলাম অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

আগামী ৫ মে থেকে নতুন মৌসুমের প্রথম নিলাম অনুষ্ঠিত হবে। ইতোমধ্যে চা নতুন নিলামের সময়সূচি ঘোষণা করেছে টি বোর্ড। 

২০২৪ সালের উৎপাদিত চায়ের ৪৯টি নিলাম আয়োজন করা হয়েছিল। সর্বশেষ নিলামে ৭২ হাজার ৮৭৮ প্যাকেটে ৩৬ লাখ ৩৬ হাজার ৬১২ কেজি চা নিলামে বিক্রি হয়। 

বাংলাদেশ চা বোর্ডের তথ্য অনুসারে জানা যায়, ২০২৪ সালে ৯ কোটি ৩০ লাখ কেজি চা উৎপাদন হয়েছে। ২০২৩ সালে ছিল ১০ কোটি দুই লাখ কেজি।  

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, উৎপাদন কম হলেও দেশের বাজারে চায়ের সংকট হবে না। কারণ ২০২৩ সালের উদ্বৃত্ত উৎপাদন এই ঘাটতি পূরণ করবে। 

বাংলাদেশ চা অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান কামরান তানভিরুর রহমান বলেন, ২০২৪ সালে উত্তর অঞ্চলের বেশ কিছু চা বাগান বন্ধ ছিল। এতে প্রভাব পড়েছে চায়ের উৎপাদনের। এছাড়া চা শিল্প বৃষ্টির উপর নির্ভরশীল। চা চাষের জন্য নিয়মিত ও মাঝারি বৃষ্টি প্রয়োজন। ২০২৪ সালে অতিরিক্ত বৃষ্টি উৎপাদনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।'

জানা গেছে, দেশে বর্তমানে দুই দশমিক আট লাখ একরেরও বেশি এলাকায় ১৬৯ চা বাগান আছে। এর মধ্যে, মৌলভীবাজারের ৯০ বাগান থেকে দেশের মোট উৎপাদনের ৫৫ শতাংশ আসে। দ্বিতীয় বৃহত্তম উৎপাদক হবিগঞ্জ থেকে আসে ২২ শতাংশ চা, চট্টগ্রামের চা বাগান থেকে ১০ থেকে ১২ শতাংশ যোগ হয়। 

এদিকে ২০২৪ সালে বাংলাদেশ সাত বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পরিমাণ চা রপ্তানি করেছে। প্রতিযোগিতামূলক দামের কারণে ভারত ও শ্রীলঙ্কার মতো প্রধান রপ্তানিকারকদের তুলনায় বাংলাদেশ বাড়তি সুবিধা পেয়েছে।

বাংলাদেশ চা বোর্ডের তথ্য বলছে, ২০২৪ সালে সাড়ে ২৪ লাখ ৫০ হাজার কেজি চা রপ্তানি হয়েছে। ২০১৭ সালের পর সর্বোচ্চ। ২০১৭ সালে এই পরিমাণ ছিল ২৫ লাখ ৬০ হাজার কেজি। ২০২৪ সালে রপ্তানি আয় ছিল চার কোটি ৫৯ লাখ টাকা।

২০১৮ সালে বাংলাদেশ থেকে সাড়ে ছয় লাখ কেজি চা রপ্তানি হয়েছে। ২০১৯ সালে তা কমে হয়েছিল ছয় লাখ কেজি। এর পর ২০২০ সালে তা বেড়ে হয় ২১ লাখ ৭০ হাজার কেজি। তবে ২০২১ সালে কমে হয় ৬ লাখ ৮০ হাজার কেজি। ২০২২ সালে রপ্তানি বেড়ে হয় ৭ লাখ ৮০ হাজার কেজি। ২০২৩ সালে আরও বেড়ে হয় ১০ লাখ ৪০ হাজার কেজি।

মধ্যপ্রাচ্যসহ যে সব দেশে প্রবাসী বাঙালিদের বসবাস সেখানে বাংলাদেশি চায়ের চাহিদা বেশি বলে জানান চা রপ্তানির সঙ্গে জড়িত এক প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ কর্মকর্তা। 
এ ছাড়া বাংলাদেশের চায়ের কদর রয়েছে পাকিস্তান, আফগানিস্তানে। নতুন দেশ হিসেবে এবার রপ্তানি হচ্ছে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রে। এ ছাড়া সিংগাপুর, সাইপ্রাস, ডেনমার্ক, ফ্রান্সে, স্পেনে রপ্তানি হয় বাংলাদেশি চা। 

বাংলাদেশ থেকে চা রপ্তানিতে শীর্ষে রয়েছে আবুল খায়ের কনজ্যুমার প্রোডাক্ট লিমিটেড, সিটি টি স্টেট, ইস্পাহানি টি লিমিটেড অন্যতম প্রতিষ্ঠান।  

২০২৩ সালে বাংলাদেশের ১৬৮টি বাগান ও ক্ষুদ্রায়তন চা–চাষিদের হাত ধরে ১০ কোটি ২৯ লাখ কেজি চা উৎপাদ করে নতুন রেকর্ড হয়েছিল। ১৮৪০ সালে চট্টগ্রামে প্রথম পরীক্ষামূলক চা চাষ শুরুর পর ১৮৪ বছরের ইতিহাসে গত বছর প্রথমবারের মতো চা উৎপাদন ১০ কোটি কেজি ছাড়িয়েছে। এবার সেই অর্জন ধরে রাখতে পারেনি বাগান গুলোর। ২০২২ সালের চা উৎপাদন হয়েছিল ৯ কোটি ৩৮ লাখ কেজি। এর আগে ২০২১ সালে ৯ কোটি ৬৫ লাখ কেজি চা উৎপাদন রেকর্ড ছিল। ২০১৯ সালে চা উৎপাদিত হয়েছিল ৯ কোটি ৬০ লাখ কেজি। সেসময় তাও রেকর্ড পরিমাণ ছিল। 

বাংলাদেশ চা বোর্ড চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল শেখ মো. সরওয়ার হোসেন (এসইউপি, এনডিসি, পিএসসি) খবরের কাগজকে বলেন, ‘চা বোর্ড, বাগানমালিক, শ্রমিক, ক্ষুদ্র চাষি সবার দলগত পরিশ্রমের ফলে গত বছর চা উৎপাদানের রেকর্ড হলেও এবার তা ধরে রাখা যায়নি। তবে এবার চা রপ্তানিতে রেকর্ড হয়েছে। এবার যা উৎপাদন হয়েছে তাতে দেশের চাহিদা মিটিয়ে রপ্তানি করতে পারা একটা বড় সাফল্য। এ ধারা অব্যাহত থাকবে। রপ্তানির বাজারও সম্প্রসারিত হচ্ছে।  দেশের প্রায় ১২টি চা বাগানে শ্রমিক অসন্তোষের কারণে উৎপাদন বন্ধ ছিল। এর প্রভাব পড়েছে মোট উৎপাদনের উপর। 

আবদুস সাত্তার/পপি/ 

মমেক হাসপাতালে র‌্যাবের অভিযান, আটক ১৪ দালাল

প্রকাশ: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ১১:৪৯ এএম
মমেক হাসপাতালে র‌্যাবের অভিযান, আটক ১৪ দালাল
ছবি: খবরের কাগজ

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতালে অভিযান চালিয়ে ১৪ দালালকে আটক করেছে র‌্যাব।

মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত এ অভিযানে আটকদের সর্বনিম্ন ১৫ দিন থেকে ২ মাস পর্যন্ত বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শফিকুল ইসলাম।

দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- মন্টু মিয়া (২৫), মো. মাসুদ (৪৫), আলাল উদ্দিন (৬০), মো. আশরাফুল (২৭), মো. বিজয় (৫০), মো. আকাশ (২৪), ছোবহান মিয়া (৬৫), সুমন মিয়া (৩০), শাহদাৎ হোসেন বাবু (৩০), মো. শাকিব (২৪), আনিছ হোসেন রকি (৩৫), সাদ্দাম হোসেন (২৯), মমিনুল ইসলাম রবিন (৩০) এবং রোকসানা আক্তার (৩৫)। এ সময় তাদের সঙ্গে থাকা ১৪টি মোবাইল জব্দ করা হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শফিকুল ইসলাম বলেন, সম্প্রতি হাসপাতালে দালালদের উৎপাত বেড়েছে। এতে প্রতারণার মাধ্যমে রোগী ও তাদের স্বজনদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায়, হাসপাতাল থেকে রোগীদের বাইরের নিয়ে সর্বস্ব লুটে নেওয়াসহ চিকিৎসার নামে হয়রানির ঘটনা ঘটছে। এসব কারণে হাসপাতালের জরুরি বিভাগ, মহিলা ওয়ার্ড, পরীক্ষাগার, আউটডোরসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে ১৪ দালালকে হাতেনাতে আটক করা হয়। পরে তাদের সঙ্গে থাকা ১৪টি মোবাইল জব্দ করা হয়েছে। বিধি অনুযায়ী আটক দালালদের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. জাকিউল ইসলাম বলেন, ১০০০ শয্যার বিপরীতে এই হাসপাতালে রোগী ভর্তি থাকে সাড়ে ৩ থেকে ৪ হাজার। সেবা নিতে এসে অনেকে দালালদের খপ্পরে পড়ে হয়রানির শিকার হন। হাসপাতাল থেকে দালাল নির্মূল হোক, সেটাই চাই।

মিন্টু/মেহেদী/