ঢাকা ১৩ বৈশাখ ১৪৩২, শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫
English
শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫, ১৩ বৈশাখ ১৪৩২

স্বাধীনতা দিবসে পতাকা উত্তোলন হয়নি ফুলবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে

প্রকাশ: ২৬ মার্চ ২০২৫, ০৭:৫৮ পিএম
স্বাধীনতা দিবসে পতাকা উত্তোলন হয়নি ফুলবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে
ছবি: খবরের কাগজ

স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জাতীয় পতাকা উত্তোলন না করায় মহান স্বাধীনতা দিবসকে অবমাননার অভিযোগ তুলেছেন মুক্তিযোদ্ধাগণ। অন্যদিকে দায় এড়াতে ভুল স্বীকার করেছেন উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা।

সরকারি ঘোষণা অনুযায়ী সকল সরকারি, বেসরকারিসহ সকল প্রতিষ্ঠানে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হলেও সরকারি সেই আদেশকে বৃদ্ধাঙ্গলী দেখিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেনি। এতে জাতীয় পতাকা ও মহান স্বাধীনতাকে অবমানতার অভিযোগ উঠেছে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে মুক্তিযোদ্ধা ও সাধারণ নাগরিকদের মাঝে। সরকারি নির্দেশনা থাকার পরে জাতীয় পতাকা উত্তোলন না করায়, স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসকে অবমাননার অভিযোগ করে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় সুত্রে জানা গেছে, বুধবার (২৬ মার্চ) স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে সকল সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানসহ গুরুত্বপূর্ণ ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের জন্য প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। ফুলবাড়ী উপজেলা প্রশাসনের অনুষ্ঠান সূচিতেও পতাকা উত্তোলনের কথা বলা হয়েছে।

উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডিপুটি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা এছার উদ্দিন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, মহান স্বাধীনতা দিবসে জাতীয় পতাকা উত্তোলন না করে স্বাধীনতা দিবসকেই অবমাননা করা হয়েছে। এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি করেন তিনি।

একইভাবে ক্ষোভ প্রকাশ করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম আকন্দ। তিনি বলেন, স্বাধীনতা দিবসে পতাকা উত্তোলন না করে ধৃষ্টতা দেখিয়েছে যা স্বাধীনতা দিবসকেই অস্বীকার করার শামীল। এই ঘটনায় তিনি তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন।

জাতীয় দিবসে পতাকা উত্তোলন না করার কারণ জানতে ফুলবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. মশিউর রহমানের সাথে যোগযোগ করা হলে, তিনি পতাকা উত্তোলনের বিষয়টি ভুল স্বীকার করে বলেন, একজনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল সে ভুলবশত উত্তোলন করেনি। এভাবে ভুলস্বীকার করে দায় এড়িয়ে যান তিনি । 

এ বিষয়ে কথা বললে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইসাহাক আলী বলেন, বিষয়টি যেহেতু অন্য দপ্তরের, তাই ওই দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কতৃপক্ষকে বিষয়টি অবগত করুন।

বিষয়টি নিয়ে দিনাজপুর সিভিল সার্জন ডা. আসিফ ফেরদৌস বলেন বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। খুব দ্রুত সময় এই বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে ।

সুলতান মাহমুদ/মাহফুজ 

 

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে নদী ভাঙন রক্ষার দাবিতে কাফনের কাপড় পরে মানববন্ধন

প্রকাশ: ২৬ এপ্রিল ২০২৫, ১২:১৩ এএম
নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে নদী ভাঙন রক্ষার দাবিতে কাফনের কাপড় পরে মানববন্ধন
নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে ছোট ফেনী নদীর ভয়াবহ ভাঙন রোধে জরুরি ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে কাপনের কাপড় পরে মানববন্ধন। ছবি: খবরের কাগজ

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে ছোট ফেনী নদীর ভয়াবহ ভাঙন রোধে জরুরি ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে কাপনের কাপড় পরে মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী। এসময় বাড়ি-ঘর, ফসলি জমি হারিয়ে অনেকে কান্নায় ভেঙে পড়েন।

শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) বিকেলে মুছাপুর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের জনতা বাজারে স্থানীয় এলাকাবাসী, সনাতন ধর্মালম্বী ও যুব সমাজের উদ্যোগে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এসময় অনেকে কাপনের কাপড় পরে আত্মাহুতির ঘোষণা দেন।

এতে প্রধান অতিথি ছিলেন, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সদস্য ও ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের চেয়ারম্যান মো. ফখরুল ইসলাম।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বাহিনীর অব্যাহত বালু উত্তোলনের ফলে গত ২৬ আগস্ট ছোট ফেনী নদীর ওপর নির্মিত মুছাপুর ২৩ ভেন্ট রেগুলেটর ভেঙে যায়। এতে লোনা পানি ঢুকে এ অঞ্চলের এক লাখ ৩০ হাজার হেক্টর জমির ফসল ফলানো যাচ্ছে না। উপরন্তু আশপাশের শত শত বাড়ি-ঘর, ফসলি জমি ভেঙে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে।

ফখরুল ইসলাম আরও বলেন, গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগের পতন হওয়ার পরও এ এলাকায় বালু দস্যুতা বন্ধ হয়নি। আমাদের দলের এক শ্রেণির দূর্বৃত্ত এখন অবাধে বালু তুলে নদী ভাঙন বৃদ্ধি করেছে। আমি বিএনপির হাই কমান্ডের কাছে অনুরোধ করবো, আমাদের দলের যারা এ বালু সন্ত্রাসের সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে জরুরিভিত্তিতে ব্যবস্থা নিন।

ফাতেমা বেগম নামে এক ভুক্তভোগী নারী বলেন, গত ১৪ বছরে আমার বাড়ি চারবার ভেঙে গেছে। আমার আর কিছুই নাই। সামনে বর্ষা মৌসুমে নদী পাড়ের আর কেউ বসবাস করতে পারবে না। আমরাতো বাস্তুহরা হয়ে গেছি। আমাদের পরে যেসব বাড়ি আছে তারা খুবই অসহায়। তাদের দিকে সরকার যাতে একটু দয়াবান হয়। নদী শাসন করে এখানে অচিরেই একটি রেগুলেটর স্থাপনে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সহায়তা কামনা করছি।

কাফনের কাপড় পরে সাহাব উদ্দিন নামে এক ব্যক্তি বলেন, ‘বাড়িঘর  ফসলি জমি হারিয়ে আমি কাপনের কাপড় পরে ফেলেছি। আমার বেঁচে থাকার আর স্বাধ নেই। সরকার যদি আমাদের দিকে নজর না দেয় পরিবারসহ আমরা আত্মাহুতি দেব।‘ এসময় তার সঙ্গে কাফনের কাপড় পরা অনেকে নদী ভাঙন রক্ষায় সরকারের পদক্ষেপের দাবি জানান।

মুছাপুর ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সভাপতি হাজী মোহাম্মদ ইব্রাহীম বলেন, রেগুলেটর ধ্বসে যাওয়ার পর গত ৮ মাসে নোয়াখালীর মুছাপুর, চরহাজারী, চরপার্বতী ও ফেনীর সোনাগাজাীর চরদরবেশ ইউনিয়নের অন্তত ৫০০ বাড়ি, মক্তব, মসজিদ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ শত শত একর ফসলি জমি, রাস্তাঘাট নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। আমরা এ অঞ্চলের লোকজন চরম অসহায় এবং মানবেতর জীবন যাপন করছে। অনেকে বাড়ি হারিয়ে পরিবার নিয়ে বিভিন্ন বিদ্যালয়ে আশ্রয় নিয়েছে। আমরা এর প্রতিকার চাই।

কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা সাবেক কৃষি কর্মকর্তা পুষ্পেন্দু বড়ুয়া বলেন, এই রেগুলেটরটি বঙ্গোপসাগরের সন্দীপ চ্যানেলের কাছাকাছি ছোট ফেনী নদী হয়ে বড় ডাকাতিয়া নদীর মুখে অবস্থিত। কুমিল্লা জেলার ছয়টি উপজেলা- কুমিল্লা সদর, সদর দক্ষিণ, বরুড়া, লাকসাম, নাঙ্গলকোট, চৌদ্দগ্রাম; ফেনী জেলার ফেনী সদর উপজেলা, দাগনভূঞা, সোনাগাজী ও নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা- এই দশটি উপজেলার বৃষ্টির পানি এই মুছাপুর রেগুলেটর হয়েই যেত। আবার বোরো মৌসুমের সেচ কার্যক্রম এই মুছাপুর ক্লোজারের জমানো মিষ্টি পানির মাধ্যমে সম্পন্ন হতো। এই তিন জেলার দশটি উপজেলার আনুমানিক এক লাখ ৩০ হাজার হেক্টর জমি এই রেগুলেটরের ক্যাচমেন্ট এরিয়াতে পড়ে। এটা ভাঙার ফলে রাষ্ট্রের অনেক বড় ক্ষতি হয়ে গেছে।

তিনি আরও বলেন, ‘মুছাপুর রেগুলেটরটি ভাঙার অন্যতম দুটি কারণ দীর্ঘ প্রায় ১৫ বছর ধরে রাজনৈতিক দুর্বৃত্তরা রেগুলেটরের ৫০ থেকে ১০০ মিটার দূরত্বে বালি তুলে শত শত কোটি টাকার বালি ব্যবসা করেছেন। ফলে এই রেগুলেটরের গোড়ার ভিত্তি দুর্বল হয়েছে এবং ভাঙার মতো এই ভয়ানক পরিণতি বরণ করতে হয়েছে। এই রেগুলেটরের মাধ্যমে তিন জেলার দশটি উপজেলার প্রায় একলাখ ৩০ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ হতো। এবছর মিষ্টি পানি না থাকার কারণে এই একলাখ ৩০ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদ সম্ভব হবে না। এতে রাষ্ট্রের প্রায় ১৭শ কোটি টাকার ক্ষতি হবে। সুতরাং, এই ১০ উপজেলার মানুষের বাস্তু নিরাপত্তা, কৃষিসহ সর্বোপরি রাষ্ট্রের প্রয়োজনে অতি দ্রুত এ রেগুলেটরের পুনঃনির্মাণ জরুরি।

জানতে চাইলে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় ও পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান খবরের কাগজকে বলেন, মুছাপুর রেগুলেটর নির্মাণে সরকার আন্তরিক। কিন্তু এটি নির্মাণে অন্তত দুই মৌসুম সময় দিতে হয়। তারপরও আমরা সমীক্ষাসহ নকশা তৈরির কাছ করে যাচ্ছি। আগামী শুষ্ক মৌসুমে জরুরি ভিত্তিতে মুছাপুর রেগুলেটর নির্মাণ কাজ শুরু হতে পারে।

অনুষ্ঠানে যুবদল নেতা হাজী মোহাম্মদ ইব্রাহীমের সভাপতিত্বে ও উপজেলা বিএনপির সদস্য মো. আলমগীর মিয়ার সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আনিছুল হক, সদস্য আফতাব আহমেদ বাচ্চু, একরামুল হক মিলন মেম্বার, মাস্টার আবু নাছের, ফেনী জেলা কৃষক দলের সেক্রেটারি খোকন চেয়ারম্যান, সোনাগাজী উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পদক আবুল কালাম চেয়ারম্যান প্রমুখ।

ইকবাল হোসেন মজনু/এমএ/

রাজশাহীতে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছুঁই ছুঁই, বইছে গরম বাতাস

প্রকাশ: ২৫ এপ্রিল ২০২৫, ১০:৫৮ পিএম
আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০২৫, ১০:৫৮ পিএম
রাজশাহীতে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছুঁই ছুঁই, বইছে গরম বাতাস
ছবি: খবরের কাগজ

রাজশাহীতে সূর্য যেন মাথার ওপর গনগনে আগুনের মতো জ্বলছে। ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছুঁই ছুঁই তাপমাত্রায় স্থবির হয়ে পড়েছে জনজীবন। এর সঙ্গে পদ্মা নদী ঘেঁষে যেন বইছে উত্তপ্ত লু হাওয়া। গরমের তীব্রতায় দুপুর গড়িয়ে বিকেল হলেও রাস্তাঘাটে মানুষের চলাচল কম। সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে রয়েছেন খেটে খাওয়া মানুষ, দিনমজুর ও রিকশাচালকরা। কবে নামবে বৃষ্টি আর স্বস্তি ফিরবে দেহ-মনে, সেই অপেক্ষায় চাতক পাখির মতো আকাশের দিকে তাকিয়ে আছেন নগরবাসী।

শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) নগরীর সাহেববাজার, রেলগেট, নিউ মার্কেট, স্টেশন, কোর্ট স্টেশন, আলুপট্টিসহ বিভিন্ন এলাকায় দেখা যায়, গরমে হাঁসফাঁস করছেন পথচারীরা। কেউ গামছা দিয়ে মাথা ঢেকে আছেন, কেউবা ছায়া খুঁজে আশ্রয় নিচ্ছেন দোকানপাট বা গাছের নিচে। ভাপসা গরমের সঙ্গে উত্তপ্ত বাতাস যেন পরিস্থিতিকে আরও দুঃসহ করে তুলেছে। গরমে ক্লান্ত রাজশাহীর মানুষ অপেক্ষায় আছেন সামান্য বৃষ্টি কিংবা একটুখানি ঠাণ্ডা হাওয়ার জন্য।

আবহাওয়া অফিসের তথ্যমতে, সাধারণত দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে থাকলে তাকে মৃদু তাপদাহ বলা হয়। আর ৩৮ থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ভেতর থাকলে তাকে মাঝারি তাপদাহ হিসেবে ধরা হয়। আর ৪০ থেকে ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রাকে ধরা হয় তীব্র তাপদাহ হিসেবে। সে হিসেবে রাজশাহীতে গত কয়েকদিন ধরে অব্যাহত আছে মাঝারি তাপপ্রবাহ। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে এ ধরনের অস্বাভাবিক তাপপ্রবাহ আরও ঘন ঘন দেখা দেবে। তাই অপ্রয়োজনে বাইরে না বের হওয়া, পর্যাপ্ত পানি পান করা এবং শিশু ও বৃদ্ধদের যত্নে রাখার পরামর্শও দেন তারা।

নগরীর সাহেব বাজার এলাকায় রিকশাচালক রানা সরকার রিকশায় ছাতা বেঁধেছেন। তিনি বলেন, আজ প্রচুর রোদ। রোদ থেকে একটু রেহাই পেতে রিকশায় ছাতা বেঁধে নিয়েছি। তবুও গরম কমছে না। একটু বৃষ্টি হলে আরাম হতো। 

রিকশাচালক শামসুল আলম বলেন, সকালে কাজ শুরু করলেও দুপুর হতে না হতেই শরীর কাহিল হয়ে যায়। গরমে রিকশা চালানো দায় হয়ে গেছে। ছুটির দিনে যাত্রীও কম, আয়টাও কমে গেছে।

পথচারী রেদোয়ান আহমেদ বলেন, পদ্মা নদীর পাড়ঘেঁষা এলাকায় গরমের প্রভাব আরও বেশি। নদীর দিক থেকে আসা বাতাস এখন আর প্রশান্তি নয়, উত্তপ্ত বাতাসের হলকা হয়ে ভেসে আসছে। সন্ধ্যার দিকে একটু ঠান্ডা বাতাস বয়, তা-ই কিছুটা স্বস্তি দেয়।

শ্রমিক নাসিরউদ্দিন জানান, এই গরমে ইটভাটায় কাজ করতে নামলে শরীর মনে হয় পুড়ে যায়। তবু কাজ না করলে পেটে ভাত জুটবে না। তবে অর্ধেক দিন কাজ করে বাসায় ফিরি।

রাজশাহী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের কর্মকর্তা রহিদুল ইসলাম বলেন, আজও (শুক্রবার) রাজশাহীতে মাঝারি তাপপ্রবাহ বইছে। বিকেল ৩টায় রাজশাহীতে সর্বোচ্চ ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। বাতাসের আর্দ্রতা ৪৬ শতাংশ। এটি অব্যাহত থাকতে পারে।

গাইবান্ধায় পত্রিকার হকার খুন

প্রকাশ: ২৫ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:০৭ পিএম
আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:১২ পিএম
গাইবান্ধায় পত্রিকার হকার খুন
পত্রিকা বিক্রেতা আনিস মিয়া। ছবি: সংগৃহীত

গাইবান্ধায় দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে আনিস মিয়া (৩৭) নামে এক পত্রিকা বিক্রেতা মারা গেছেন। বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) রাত দেড়টার দিকে গাইবান্ধা জেলা স্টেডিয়াম সড়কের নেসকো-১ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত আনিস মিয়ার বাড়ি সদর উপজেলার গিদারী ইউনিয়নের কিশামত ফলিয়া গ্রামে। তিনি ওই গ্রামের মৃত হামিদ মিয়ার ছেলে। তিনি পত্রিকা বিক্রির পাশাপাশি অটোরিকশা চালাতেন।

স্থানীয়রা জানান, আনিস মিয়া ২০ বছর ধরে জেলা শহরের বিভিন্ন জায়গায় পত্রিকা বিক্রি করে আসছিলেন। তিনি রাতে অটোরিকশা চালাতেন আর দিনে পত্রিকা বিক্রি করতেন। বৃহস্পতিবার পত্রিকা বিক্রি শেষে রাতে অটোরিকশা নিয়ে বের হন তিনি। রাত দেড়টার দিকে শহরের ২ নম্বর রেলগেট এলাকায় কয়েকজন ব্যক্তি যাত্রী হিসেবে তার অটোরিকশা ভাড়া করেন। রেলগেট থেকে মাত্র ৫০ গজ দূরে স্টেডিয়াম সড়ক হয়ে নেসকো-১ এলাকায় পৌঁছলে আনিসকে ছুরিকাঘাত করে গুরুতর জখম করে তার অটোরিকশা নিয়ে পালিয়ে যান যাত্রীবেশী দুবৃর্ত্তরা। শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) ভোরে এক পথচারী আনিসকে অজ্ঞান অবস্থায় দেখে তার বাড়িতে খবর দেন। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় তাকে উদ্ধার করে প্রথমে গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে ও পরে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সকাল ৯টার দিকে তিনি মারা যান।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গাইবান্ধা সদর থানার ওসি শাহীনুল হক তালুকদার। তিনি বলেন, ‘দুর্বৃত্তদের হামলায় এক ব্যক্তির নিহত হওয়ার খবর পেয়েছি।’

রফিক খন্দকার/এমএ/

চট্টগ্রামে বলীখেলা উপলক্ষে শুরু হয়েছে বৈশাখী মেলা

প্রকাশ: ২৫ এপ্রিল ২০২৫, ১২:২০ পিএম
চট্টগ্রামে বলীখেলা উপলক্ষে শুরু হয়েছে বৈশাখী মেলা
বলীখেলা উপলক্ষে চট্টগ্রাম নগরীর লালদীঘির চারপাশ ঘিরে বসেছে তিন দিনব্যাপী বৈশাখী মেলা। ছবি: মোহাম্মদ হানিফ

আজ (শুক্রবার) চট্টগ্রামের ঐতিহাসিক জব্বারের বলীখেলা। এই কুস্তি প্রতিযোগিতা উপলক্ষে নগরীর লালদীঘির চারপাশ ঘিরে বসেছে তিন দিনব্যাপী বৈশাখী মেলা। দেশের দূর-দূরান্ত থেকে দোকানিরা নানা ধরনের পণ্য নিয়ে এসে পসরা বসিয়েছেন।

তবে এবারের মেলায় শুরু থেকে কঠোর চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন পুলিশ প্রশাসন। তারা মেলার প্রস্তুতি সভায় ঘোষণা দিয়েছিল, সড়কের ওপর কোনো দোকান বসবে না। 

বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) মেলার প্রথম দিনে লালদীঘি এলাকা সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, আন্দরকিল্লা থেকে কোতোয়ালি মোড়, জেল রোড, কে সি দে রোডসহ আশপাশের সড়কের ফুটপাতের ওপর দোকানিরা তাদের পণ্যের পসরা নিয়ে বসার সুযোগ পেয়েছেন। কেউ কেউ দোকান সাজাচ্ছেন। কেউ কেউ বিক্রির জন্য আনা মৃৎশিল্পের নানা পণ্যের ওপর নজরকাড়া রং করছেন। অল্প-স্বল্প বেচাকেনা হচ্ছে। গত বুধবার বিকেলে যারা সড়কের একাংশ দখল করে দোকান বসিয়েছিলেন তাদের রাতে উচ্ছেদ করা হয়েছে।

দোকানিরা জানান, তিন দিনব্যাপী মেলা হলেও তারা প্রতিবছর মেলার দুই দিন আগে থেকেই দোকান সাজাতে শুরু করেন। এবার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোরতার কারণে সেটা পারেননি। তবে যারা এখনো দোকান বসাতে পারেননি তাদের অনেকেই বৃহস্পতিবার রাতের মধ্যে বসে যাবেন।

নগরীর অক্সিজেন এলাকা থেকে মেলায় আসা গৃহবধূ ফাহমিদা আখতার জানান, তিনি প্রতিবছর এই মেলার জন্য অপেক্ষা করেন। মেলায় মানুষের ভিড় বাড়ার আগেই প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেনার চেষ্টা করেন। সেই উদ্দেশ্য নিয়েই বৃহস্পতিবার এসেছেন। কিন্তু এবারের মেলাটা আগাম জমেনি। এরপরও প্রয়োজনীয় জিনিস কেনার চেষ্টা করছেন। মেলায় আসা আরেক গৃহবধূ শান্তা চৌধুরী জানান, শুক্রবার বিকেলে লালদীঘি পাড়ে ঐতিহাসিক জব্বারের বলীখেলা অনুষ্ঠিত হবে। এ ছাড়াও এখানে মেলার আয়োজন করা হয়েছে। চট্টগ্রাম শহরের অনেক মানুষের মতো তিনিও সারা বছর অপেক্ষায় থাকেন এ মেলার জন্য। এখান থেকেই তিনি সারা বছরের ছোট-খাটো প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনেন। এবারও কিনবেন।

গাজীপুর থেকে মাটির জিনিসপত্র বিক্রি করতে আসা রহিম উদ্দিন দোকান সাজিয়েছেন কেসি দে রোডের সিনেমা প্যালেসের পাশে। খবরের কাগজকে তিনি জানান, গাজীপুর থেকে মালামাল নিয়ে এসেছেন তিন দিন আগে। কিছু ফুলদানি এবং শোপিচ নিয়ে এসেছেন। মালসহ ট্রাকটি রেখেছেন বাংলাবাজার এলাকায়। এর মধ্যে সড়কে দোকান বসানো যাবে না বলে পুলিশ কয়েকবার সতর্ক করে গেছে।

ঢাকার শাহবাগ থেকে মাটির তৈরি নানা পণ্য নিয়ে মেলায় এসেছেন আহমদ আলী। তিনি বলেন, ‘পুলিশ দোকান গুটানোর কথা বলেছে। তা হলে আমরা যাব কোথায়? আমাদের বিকল্প কোনো ব্যবস্থা করে দিক। সেখানে গিয়ে বসব।’

ঢাকা থেকে বেপারির সঙ্গে আসা শাকিল রহমান জানান, ১৫০ পদের মাটির তৈরি তৈজসপত্র নিয়ে ৪ দিন আগে‌ চট্টগ্রামে এসেছেন তারা। দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে প্রায় দেড় লাখ টাকার জিনিসপত্র এনেছেন তারা। প্রথমবার মেলায় আসা ও চট্টগ্রাম শহর ঘুরে দেখাসহ ভালো কিছু আশা করছেন তিনি।

আয়োজক কমিটির সাধারণ সম্পাদক শওকত আনোয়ার বাদল বলেন, ‘এসএসসি পরীক্ষা চলছে। এ ছাড়া অন্যান্য পরিস্থিতি বিবেচনা করে সড়কের ওপর দোকান বসাতে দেয়নি পুলিশ। তবে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে রাস্তায় আবার দোকান বসা শুরু করেছে। কোনো দোকানিকে ফেরত যেতে হবে না। আমরা সে বিষয়ে সতর্ক আছি।’

র‌্যাবের গুলিতে নিহত আগৈলঝাড়ায় গ্রেপ্তার আতঙ্কে পুরুষশূন্য গ্রাম

প্রকাশ: ২৫ এপ্রিল ২০২৫, ১২:০৪ পিএম
আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০২৫, ১২:০৫ পিএম
আগৈলঝাড়ায় গ্রেপ্তার আতঙ্কে পুরুষশূন্য গ্রাম
ফাইল ছবি, খবরের কাগজ

বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার রত্মপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ মোল্লাপাড়ার জোরা ব্রিজ এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। গ্রেপ্তার আতঙ্কে গ্রামটি প্রায় পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে। এদিকে র‌্যাবের গুলিতে নিহতের ঘটনায় বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন স্থানীয়রা। গত সোমবার সন্ধ্যায় র‌্যাবের মাদকবিরোধী অভিযানের ওপরে হামলা ও র‌্যাবের গুলিতে একজন নিহত হওয়ার ঘটনায় পৃথক দুটি মামলা হয়েছে।

গত সোমবার (২১ এপ্রিল) সন্ধ্যায় র‌্যাব-৮ সদস্যরা সাদা পোশাকে আগৈলঝাড়া উপজেলার দক্ষিণ মোল্লাপাড়া গ্রামে জোরা ব্রিজের কাছে অভিযান পরিচালনা করে।

অভিযানে মাদক ব্যবসায়ী ও স্থানীয়রা র‌্যাব সদ্যদের ওপর হামলা চালান। এ সময় আত্মরক্ষার্থে র‌্যাব সদস্যরা গুলি ছুড়ে। এতে মাদক ব্যবসায়ী সিয়াম মোল্লা নিহত হন। আহত হয় নিহতের ফুপাতো ভাই এসএসসি পরীক্ষার্থী রকিব মোল্লা। সে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

এদিকে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করে পুলিশি টহল বাড়ানো হয়েছে। স্থানীয়রা জানান, দিনের বেলায় বাড়ির আশপাশে থাকলেও কেউ তেমন প্রকাশ্যে আসছেন না। পাশাপাশি রাতেও বাড়িতে অবস্থান করছেন না। ঘটনার পর থেকে জোড়া ব্রিজের অপর প্রান্তের বাজারের দোকান পাঠ খোলা থাকলেও ব্যবসায়ীদের মধ্যে ভয় ও আতঙ্ক কাজ করছে। এলাকাটি সীমান্তবর্তী হওয়ায় এখানে মাদকের বিস্তার লাভ করেছে।

নিহত সিয়াম মোল্লার চাচাতো বোন মীম আক্তার বলেন, ‘গত সোমবার সিয়াম সারা দিন ঘরেই ছিল। বিকেলে মামাতো ভাই রাকিবকে নিয়ে বের হয়। এর কিছু সময় পরে এই দুর্ঘটনার সংবাদ পাই। সিয়াম মোল্লা আগৈলঝাড়া কারফা আইডিয়াল কলেজে এইচএসসি প্রথমবর্ষের ছাত্র ছিল। আহত রাকিব মোল্লা সাহেবের হাট মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে।’

এ ঘটনায় র‌্যাবের পক্ষ থেকে আগৈলঝাড়া থানায় সরকারি কাজে বাধা ও মাদক আইনে পৃথক দুটি মামলা করা হয়েছে। প্রতিটি মামলায় দুইজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ১৫ জন করে আসামি করা হয়েছে। আগৈলঝাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অলিউল ইসলাম বলেন, মাদকবিরোধী অভিযানের সময়ে হামলার ঘটনায় র‌্যাবের ডিএডি শেখ রিয়াজুল ইসলাম বাদী হয়ে সরকারি কাজে বাধা ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে থানায় পৃথক দুটি মামলা করেছেন। ওই মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চলমান রয়েছে। অভিযান নিয়ে সাধারণ মানুষের আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। নিরপরাধ কোনো ব্যক্তিকে পুলিশ হয়রানি করবে না। তবে মাদক ব্যবসার সঙ্গে এবং র‌্যাবের করা মামলায় যারা জড়িত তাদের গ্রেপ্তার করা হবে।