ঢাকা ২৬ আষাঢ় ১৪৩২, বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫
English
বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫, ২৬ আষাঢ় ১৪৩২

রমেকে বেহাল ছাত্রাবাস, সংস্কারে উদ্যোগ নেই

প্রকাশ: ২৯ মার্চ ২০২৫, ০৮:৩৮ এএম
আপডেট: ২৯ মার্চ ২০২৫, ০৮:৫৭ এএম
রমেকে বেহাল ছাত্রাবাস, সংস্কারে উদ্যোগ নেই
রংপুর মেডিকেল কলেজের রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ছাত্রাবাসের জরাজীর্ণ অবস্থা। ছবি: খবরের কাগজ

জরাজীর্ণ ভবন। অধিকাংশ জানালার কাচ ভাঙা। দেয়ালে শেওলা আর আবর্জনার স্তূপ। দূর থেকে দেখে মনে হয়, এ যেন কোনো পরিত্যক্ত ভবন। ভিতরে পরিচ্ছন্ন থাকলেও শিক্ষার্থীদের নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস প্রায় অকেজো হয়ে পড়েছে। এমন চিত্র রংপুর মেডিকেল কলেজের রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ছাত্রাবাসের। ছাত্রাবাসটি কলেজ ক্যাম্পাসের বাইরে হওয়ায় সংস্কারে গুরুত্ব দেন না কর্তৃপক্ষ। সব দায় গণপূর্ত অধিদপ্তরের ওপর চাপিয়ে দেন।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, গত বছর ৫ আগস্টের আগে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের দখলে থাকায় কোনো ছাত্রাবাসের সংস্কার হয়নি। তবে ৫ আগস্টের পর শিক্ষার্থীদের নানা দাবি-দাওয়া পূরণ হলেও, সেগুলোর অভ্যন্তরীণ অবস্থা আগের মতোই রয়েছে বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তারা।

কলেজসূত্রে জানা যায়, ১৯৭৮ সালে প্রতিষ্ঠিত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ছাত্রাবাসটিতে রয়েছে ১৬টি ইউনিট। ১ ইউনিটে ৪টা করে ব্লক। রুম রয়েছে ৮০টি। প্রতিটি রুমে থাকেন ৪ জন করে শিক্ষার্থী। সেখানে মোট ৩২০ জন শিক্ষার্থী রয়েছেন। তবে এতসংখ্যক শিক্ষার্থীর জন্য আবাসন ব্যবস্থা থাকলেও নেই তদারকি। ফলে শিক্ষার্থীদের শুধু বসবাসের জায়গা থাকলেও নেই নিরাপত্তা।

এদিকে রাস্তার পাশে হওয়ায় শব্দদূষণে মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। চতুর্থ তলার ৪০১ নং কক্ষের একজন শিক্ষার্থী দীর্ঘদিন এমন অবস্থায় থাকায় যানবাহনের শব্দে বধির হয়েছেন বলে অভিযোগ আছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিটি কক্ষের প্রায় সিলিংফ্যান নষ্ট। পলেস্তারা খসে পড়ছে। লাইট নেই। আছে পর্যাপ্ত আলোর সংকট। প্রতিটি ব্লকের ৪টি করে টয়লেট থাকলেও বেশির ভাগই ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এ ছাড়া অধিকাংশ রুমের ছাদে ফাটল ধরেছে। নষ্ট হয়েছে দেয়ালের পলেস্তারা। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা নেই বললেই চলে। দীর্ঘদিন অপরিষ্কার থাকায় বেড়েছে মশা-মাছির উপদ্রব।

অন্যদিকে ছাত্রাবাসের মিটিংরুমে রাখা হয়েছে কয়েকজন শিক্ষার্থীকে। গত ৩ মার্চ দ্বিতীয় তলার ওই রুমে হঠাৎ পলেস্তারা খসে পড়ে। অন্যান্য রুমে ফাটল ধরায় আতঙ্কে রয়েছেন শিক্ষার্থীরা। এ ছাড়া ছাত্রাবাস ঘিরে আবর্জনার স্তূপগুলো পরিষ্কার না করে আগুন ধরিয়ে দেওয়ায় তৈরি হয় কালো ধোঁয়া। শিক্ষার্থীদের ঘরে সেই ধোঁয়া গেলে দম বন্ধ হয়ে যাওয়ার অবস্থা হয় বলে জানান তারা। এতে দেখা দিয়েছে শ্বাসকষ্টসহ নানা রোগ।

রংপুর মেডিকেল কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মাহফুজুর রহমান আবির বলেন, ‘আমার রুমমেট ঘুমিয়ে থাকায় তার পাশেই হঠাৎ করে পলেস্তারা খসে পড়ে। ঘরের বিভিন্ন জায়গায় ফাটল দেখা দিয়েছে। কখন কোথায় পলেস্তরা খসে গায়ে পড়বে, তা নিয়ে আতঙ্কে থাকি।’

তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রাশেদ মিয়া বলেন, ‘ছাত্রাবাসে এত শব্দ যে, আর নিতে পারি না। আমার রুমমেট কিছুটা বধির হয়ে গেছে। এ ছাড়া বাইরের ময়লাগুলোতে আগুন ধরিয়ে দেওয়ায় কালো ধোঁয়া রুমে ঢোকে। কর্তৃপক্ষের এমন অবহেলায় ভুগতে হচ্ছে সবাইকে। এটি মেনে নেওয়ার মতো নয়।’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, ‘প্রাচীর দেয়াল না থাকা, সিকিউরিটি গার্ড না থাকায় অনেক সময় বিপদের মুখে পড়তে হয়। সিসি ক্যামেরা ফুটেজ দেখতে চাইলে কর্তৃপক্ষ তা দেখান না। ফলে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন তারা।

চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী আদিত্য দাস বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে এই সমস্যা দেখে আসছি। ছাত্রাবাস সংস্কারের জন্য অনেক বাজেট আসে। কিন্তু কর্তৃপক্ষ সেটায় কোনো গুরুত্ব দেন না। তৎকালীন দায়িত্বপ্রাপ্তরাও গুরুত্ব দেননি, এখনো দেন না। যে বাজেট দেওয়া হয়, তাতে নিম্নমানের কাজ করায় অতিদ্রুত নষ্ট হয়ে যায়।’

ছাত্রাবাসের হল সুপার  ইউরোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক  মুহ. জহুরুল হকের কাছে সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘হলের বিষয়গুলো সম্পূর্ণ গণপূর্ত সরাসরি তদারকি করে। আমরা শুধু চাহিদাপত্র দিই। এই দায়িত্বগুলো অধ্যক্ষের অধীনে দেওয়া দরকার। তা হলে আমাদের মতো করেই কাজ করতে পারব।’

কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মো শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘ছাত্রাবাস ক্যাম্পাসের বাইরে হওয়ায় আনসাররা যেতে চান না।  বাইরের দোকানদাররা ভিতরে ঢুকে জায়গা দখল করে নিয়েছেন। সেটা উদ্ধার করার জন্য কাজ করছি। ছাত্ররা লিখিত অভিযোগ দিলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রকৌশলী মো. জাকির হোসেন বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের অভিযোগ কলেজের অধ্যক্ষ আমাদের কাছে পাঠিয়েছেন। আমরা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিষয়টি অবগত করেছি। ওখানে তিন-চারটা হল আছে, যেগুলোতে সমস্যা আছে। সম্প্রতি কোনো বরাদ্দ পাইনি। বরাদ্দ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সংস্কার করা হবে।’

শ্রীমঙ্গলে সেপটিক ট্যাংকে নেমে ৪ জনের মৃত্যু

প্রকাশ: ১০ জুলাই ২০২৫, ১১:২৮ এএম
আপডেট: ১০ জুলাই ২০২৫, ১১:২৯ এএম
শ্রীমঙ্গলে সেপটিক ট্যাংকে নেমে ৪ জনের মৃত্যু
ফাইল ফটো

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে সেপটিক ট্যাংকে নেমে রানা নায়েক (১৭), শ্রাবণ নায়েক (১৯), কৃষ্ণ রবিদাস (২০) ও নিপেন ফুলমালি (২৭) নামে চারজনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া রবী বুনার্জী (২০) নামে আহত একজনকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।

বুধবার (৯ জুলাই) রাত দেড়টার দিকে উপজেলার হরিণছড়া চা বাগানে এ ঘটনা ঘটে।

নিহতরা সবাই চা শ্রমিক পরিবারের সদস্য। 

তাদের স্বজনরা গণমাধ্যমকে জানান, একটি কোম্পানির আওতাধীন হরিণছড়া চা বাগানের সেপটিক ট্যাংকে পড়ে যাওয়ায় মোবাইল ফোন তুলতে গিয়ে এ ঘটনা ঘটে। তাদের উদ্ধারের পর মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন। 

মেহেদী/

সারা দেশে পাথর উত্তোলন করা গেলে সিলেটে কেন নয়: বিভাগীয় কমিশনার

প্রকাশ: ১০ জুলাই ২০২৫, ১০:৩৯ এএম
সারা দেশে পাথর উত্তোলন করা গেলে সিলেটে কেন নয়: বিভাগীয় কমিশনার
ছবি: খবরের কাগজ

সিলেটের পাথরমহাল খুলে দেওয়া, জেলা প্রশাসকের অপসারণসহ ছয় দাবিতে গত মঙ্গলবার (৯ জুন) সকাল ৬টা থেকে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট পালন করে সড়ক পরিবহন ও মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদ। একটানা প্রায় ৯ ঘণ্টা গণপরিবহন বন্ধ রাখার পর সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার বৈঠক আহ্বান করায় সংগঠনটির পক্ষ থেকে ধর্মঘট স্থগিত করার ঘোষণা দেওয়া হয়। 

পরে বেলা ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে বৈঠকে অংশ নেন সিলেটের সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী, মহানগর জামায়াতের আমির মো. ফখরুল ইসলামসহ প্রশাসনের পদস্থ কর্মকর্তা, পাথরমহাল সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংগঠনের নেতা এবং পরিবহন মালিক ও শ্রমিক নেতারা। 

সভায় বিভাগীয় কমিশনার খান মো. রেজা-উন-নবী বলেন, ‘সিলেট কোনো বিচ্ছিন্ন জায়গা নয়, দেশের একটা অংশ। সারা দেশে পাথর উত্তোলন করা গেলে সিলেটে যাবে না কেন? এর সঙ্গে মানুষের জীবন ও জীবিকা জড়িত। সনাতন পদ্ধতিতে সিলেট থেকে পাথর উত্তোলন বন্ধ হলো কেন? এটাও একটা বড় প্রশ্ন। যদি আইন মেনে বালু বা পাথর উত্তোলন করা হয়, তাহলে সমস্যা কোথায়? নিশ্চয়ই কোনো না কোনো সমস্যা ছিল বলে বেলা (বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি) রিট করেছে এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে আদালত এমন সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। পুরো বিষয়টি আরও ভালোভাবে বুঝতে হবে এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানতে হবে। যেখান থেকে যে সিদ্ধান্ত দেওয়া হোক না কেন, রিভিউ করার সুযোগ আছে। নিম্ন আদালত থেকে শুরু করে শেষ পর্যন্ত উচ্চ আদালতে গিয়ে যদি রিভিউ করার সুযোগ থাকে, তাহলে প্রশাসনিক আদেশেরও রিভিউ হতে হবে। আমরা এ বিষয়গুলো রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছাব। অন্তর্বর্তী সময়ে আমরা কী করব আর করব না, সেটা আপনাদের জানাব।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা কখনো জনগণের প্রতিপক্ষ ছিলাম না। জুলাই-আগস্টেও আমরা জনগণের পক্ষে ছিলাম। সব সময় জনগণের পক্ষে থাকব। আজকের বৈঠকের সব বিষয় একত্র করে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায় এমনকি প্রধান উপদেষ্টার কাছেও পৌঁছানো হবে। কারণ উপদেষ্টারা যদি বিচ্ছিন্নভাবে সিদ্ধান্ত দেন, তাহলে আমরা সর্বোচ্চ জায়গায় চলে যাব। সবাইকে নিয়ে বসে একটা সিদ্ধান্তে আসা হবে। রাষ্ট্র হলো জনগণের স্বার্থে। জনগণ না বাঁচলে রাষ্ট্রের কোনো অস্তিত্বই থাকবে না। জনগণ সবার ওপরে।’

মদ পান করে... ডোবায় পড়ে মৃত্যু!

প্রকাশ: ১০ জুলাই ২০২৫, ১০:১৬ এএম
আপডেট: ১০ জুলাই ২০২৫, ১০:২৩ এএম
মদ পান করে... ডোবায় পড়ে মৃত্যু!
ছবি: খবরের কাগজ

চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে বিলের পানি নিষ্কাশনের ডোবা থেকে ঢেনা মুর্মু (৫০) নামে এক ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। পুলিশের দাবি অতিরিক্ত মদ পান করে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে গিয়ে ডুবে মারা গেছেন তিনি।

বুধবার (৯ জুলাই) রাতে নাচোল উপজেলার ঝিকরা এলাকা থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।

ঢেনা মুর্মু একই উপজেলার পীরপুর সাহানাপাড়ার বদ্ধাই মুর্মুর ছেলে।

নাচোল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, সন্ধ্যায় ডোবায় মরদেহ ভাসতে দেখে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ডোবা থেকে ঢেনার মরদেহ উদ্ধার করে। ঢেনা গত ৭ জুলাই তার ভাগ্নির মেয়ের বিয়ে অনুষ্ঠান শেষে  নিজ বাড়ির উদ্দেশ্যে বের হন। এর পর থেকে তিনি নিখোঁজ ছিলেন। ধারণা করা হচ্ছে বিয়ের অনুষ্ঠানে অতিরিক্ত মদ পান করেন ঢেনা। পরে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে ডোবায় গিয়ে ডুবে মারা যান। এ ব্যাপারে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

আসাদুল্লাহ/মেহেদী/

নীলফামারীর স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে ওষুধ-জনবলের অভাবে সেবা ব্যাহত

প্রকাশ: ১০ জুলাই ২০২৫, ১০:১২ এএম
আপডেট: ১০ জুলাই ২০২৫, ১০:৪১ এএম
নীলফামারীর স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে ওষুধ-জনবলের অভাবে সেবা ব্যাহত
নীলফামারী সদরের একটি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র। ছবি: খবরের কাগজ

গরিব-দুস্থদের জন্য চালু করা নীলফামারীর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রগুলো এখন লোক দেখানো কাঠামোয় পরিণত হয়েছে। দীর্ঘ আট মাস ধরে এসব কেন্দ্রে ওষুধ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। জনবল সংকটের কারণে সেবাপ্রত্যাশীরা পর্যাপ্ত চিকিৎসাও পাচ্ছেন না। এতে পাঁচ উপজেলার ১৬৯টি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র এবং পাঁচটি মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে চিকিৎসা নিতে আসা নারীরা খালি হাতে ফিরে যাচ্ছেন। এ ছাড়া ওষুধ না থাকায় সেবাপ্রত্যাশীদের সংখ্যাও দিনদিন কমে যাচ্ছে। আগে ওষুধের পাশাপাশি সেবা মিললেও এখন স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে মিলছে শুধুই পরামর্শ। এতে হাজারো শিশু এবং অন্তঃসত্ত্বা নারী প্রসবপূর্ব ও পরবর্তী সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। 

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, অধিকাংশ কেন্দ্রে জনবল নেই। রুমগুলো তালাবদ্ধ। নেই পানির সুব্যবস্থা। রয়েছে নিরাপত্তা বেষ্টনীর অভাব। অনেক কেন্দ্রে পরিদর্শিকা বা সহকারীদের দেখা মাঝেমধ্যে মিললেও সেবাগ্রহীতাদের সংখ্যা একেবারেই নগণ্য। কিছু কিছু কেন্দ্রে কর্মরত একজন স্টাফ দিয়েই চালানো হচ্ছে পুরো কার্যক্রম। ফলে ন্যূনতম চিকিৎসা সুবিধাও মিলছে না। 

স্বাস্থ্যসেবা নাগরিক অধিকার হলেও, নীলফামারীর প্রান্তিক মানুষের কাছে তা এখন রূপ নিয়েছে অপূর্ণ প্রত্যাশায়। দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠবে- এমনটাই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

জেলা পরিবার পরিকল্পনা দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ৭৫১ জন জনবলের বিপরীতে বর্তমানে কর্মরত আছেন মাত্র ৪৯৮ জন। উল্লেখযোগ্য শূন্য পদগুলোর মধ্যে রয়েছে- পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা ৩০ জন, পরিবার কল্যাণ সহকারী ৯৩ জন, উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার ৩৭ জন এবং উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা চারজন। ফলে কয়েক লাখ নিম্ন আয়ের মানুষ স্বাস্থ্যসেবা ও ওষুধ থেকে বঞ্চিত হয়ে আর্থিকভাবেও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।

কথা হয় সদর উপজেলার সংগলশী ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসা নিতে আসা জেসমিন আরার সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘এখানে এলে শুধু ব্লাড প্রেসার মাপা হয়। আগে এখানে ওষুধ পাওয়া যেত। এখন ওষুধ নেই।’ 

সৈয়দপুর উপজেলার খাতামধুপুর ইউনিয়নের ময়দানপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সেবাপ্রত্যাশী নাসরিন বেগম বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ। বাড়ির কাছাকাছি হওয়ায় এখানে চিকিৎসা নিতে আসি। আগে জ্বর, কাশির ওষুধ দিলেও আট মাস ধরে সেগুলো দেওয়া বন্ধ। বাধ্য হয়ে বাইরে থেকে কিনে খেতে হচ্ছে।’

এদিকে চিকিৎসক সংকটের কারণে অনেকে সঠিক পরামর্শও পান না। জান্নাতুল মাওয়া নামে এক নারী এসেছেন সৈয়দপুর মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে। সেখানে গাইনি চিকিৎসক না থাকায় তিনি সেবা না নিয়ে ফিরে যান। ক্যালসিয়াম ও আয়রনের ট্যাবলেট না পাওয়ার অভিযোগও ফুটে ওঠে তার কণ্ঠে।

নীলফামারী সদর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের পরিদর্শিকা শামীম আরা বলেন, ‘কেন্দ্রগুলোতে আগে প্রতি মাসে নরমাল ডেলিভারি হতো। কিন্তু এখন আর হয় না। বর্তমানে ওষুধ না থাকায় রোগীর সংখ্যা দিনদিন কমে যাচ্ছে। ২৭ ধরনের ওষুধের মধ্যে একটিরও সরবরাহ নেই। বাধ্য হয়ে আমরা শুধু মৌখিক পরামর্শ দিচ্ছি। এ ছাড়া জনবল সংকটের কারণে দুজনের কাজ একজনকে করতে হচ্ছে।’ 

কামারপুকুর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের পরিদর্শিকা রোজিনা আকতার বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন সময় স্যাটেলাইট ক্লিনিক করে উঠান বৈঠকের মাধ্যমে প্রান্তিক রোগীদের সেবা-পরামর্শ এবং ওষুধ দিয়ে থাকি। কিন্তু ওষুধের সরবরাহ না থাকায় সেবাপ্রার্থীরা আর স্যাটেলাইট ক্লিনিকে আসেন না। তা ছাড়া জনবল সংকটের কারণে আমরা প্রত্যাশিত সেবাও দিতে পারছি না।’

নীলফামারী জেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের উপপরিচালক মোজাম্মেল হক জনবল সংকট এবং ওষুধ না থাকার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। বলেছেন, ‘জনবল সংকট ও ওষুধের অভাবে সেবা ব্যাহত হচ্ছে। তবে সরকার ইতোমধ্যে দুই বছরমেয়াদি একটি পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। ওই প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে পরিস্থিতির উন্নয়ন হবে।’

সোনারগাঁয় স্কুলছাত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, টাকার বিনিময়ে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা!

প্রকাশ: ১০ জুলাই ২০২৫, ১০:০০ এএম
আপডেট: ১০ জুলাই ২০২৫, ১০:০৪ এএম
সোনারগাঁয় স্কুলছাত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, টাকার বিনিময়ে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা!
প্রতীকী ছবি

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের জামপুর ইউনিয়নের হাতুড়া পাড়া এলাকায় অষ্টম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এদিকে টাকার বিনিময়ে এ ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে।

অভিযুক্তরা হলেন- জামপুর ইউনিয়নের হাতুরাপাড়া এলাকার আব্দুল্লাহ, লাল চান মিয়া এবং ফয়েজ ভূঁইয়া।

গত সোমবার (৭ জুলাই) ভুক্তভোগীর মা বাদী হয়ে সোনারগাঁ থানায় এ বিষয়ে অভিযোগ করেছেন। তিনি স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় রান্নার কাজ করেন।

জানা গেছে, সাদিপুর ইউনিয়নের একটি বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থী স্কুল ছুটির পর বাড়ি ফিরছিল। পথে অভিযুক্ত আব্দুলাহ কাঁঠাল খাওয়ানোর কথা বলে তার বাসায় নিয়ে যায়। পরে আব্দুল্লাহ ওই শিক্ষার্থীকে জোরপূর্বক তার ঘরে নিয়ে আটকে ফেলেন। একপর্যায়ে অন্য আরও দুই সহযোগীকে ফোনে ডেকে নিয়ে তিনজন মিলে ভূক্তভোগীকে পালাক্রমে ধর্ষণ করেন। ধর্ষণের পর ভুক্তভোগীকে ভয়ভীতি দেখিয়ে আইনের আশ্রয় নিলে তার পরিবারের সব সদস্যকে প্রাণ নাশের হুমকি দেন।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, ধর্ষণের ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে ভুক্তভোগীর মাকে (বাদী) ভয়ভীতি প্রদর্শন করছে স্থানীয় প্রভাবশালী সাত্তার ও আক্কাস আলীর নেতৃত্বে একটি দল। তারা ভুক্তভোগী পরিবারকে এক লাখ টাকা দিয়ে ঘটনাকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছেন। 

ভুক্তভোগী ওই ছাত্রীর বোনের স্বামী বলেন, 'আমার স্ত্রীর ছোট বোনকে তিনদিন আগে স্কুল থেকে ফেরার পথে অভিযুক্ত আব্দুল্লাহ তার পথ আটকে নিজের বাসায় নিয়ে যায়। ওইসময় আব্দুল্লাহ বলেছিল যে আব্দুল্লাহর স্ত্রী তার জন্য কাঁঠাল রেখেছে। এ কথা মতো ওই ছাত্রী আব্দুল্লাহর সঙ্গে তার বাসায় যায়। সে সময় তার স্ত্রী বাসায় ছিলো না। আব্দুল্লাহর স্ত্রীর কথা জানতে চাইলে আব্দুল্লাহ কোন উত্তর না দিয়ে মুখ ও হাত-পা বেঁধে তার দুই সহযোগীকে ফোন দিয়ে বাসায় নিয়ে যায়। পরে তারা তিনজন মিলে জোরপূর্বক পালাক্রমে ধর্ষণ করে। পরবর্তীতে আমার শাশুড়ি এ ঘটনা শুনে তালতলা ফাঁড়িতে অভিযোগ করেন। অভিযোগের তিনদিন হলেও কোনো সমাধান পাইনি'। 

ঘটনাটিকে টাকার বিনিময়ে মীমাংসার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, 'তিনি শ্বশুর বাড়িতেই বসবাস করেন। এমন কিছু হলে অবশ্যই তিনি জানতেন। এটা অপপ্রচার।'

তালতলা তদন্ত কেন্দ্রের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোয়াজ্জেম হোসেন জানান, 'এ ঘটনায় বাদী অভিযোগ করলেও মামলার বিষয়ে তাদের কোনো আগ্রহ নেই। তিনি সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। বাদি ও তার পরিবারের কাউকে তিনি পাননি।'

টাকার বিনিময়ে মীমাংসার বিষয়ে তিনি বলেন, তার এ সম্পর্কে জানা নেই। তবে পরিদর্শন করেছেন।

এ ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার বিষয়ে অভিযুক্ত আক্কাস আলীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি অস্বীকার করে এ ঘটনার বিষয়ে কিছু জানেন না বলে জানান। 

তালতলা তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক (ইনচার্জ) আব্দুল হক জানান, ঘটনা সম্পর্কে তিনি জানেন না। এসআইয়ের সঙ্গে কথা বলে জেনে বিস্তারিত বলতে পারবেন।

সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইসমাইল হোসেন জানান, ঘটনাটি সম্পর্কে তিনি জেনেছেন। তিনি নতুন যোগদান করেছেন। এ ঘটনায় একটি অভিযোগ হয়েছে। তদন্তের দায়িত্বে থাকা এসআইকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

ইমরান/মেহেদী/