
পরিবেশ ও বায়ুদূষণ রোধে মানুষকে সচেতন করতে আল আমিন, শাহিন আলম ও ফরহাদ মিয়া নামে তিন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী বাইসাইকেল চালিয়ে তেঁতুলিয়া থেকে টেকনাফ সচেতনতামূলক পথযাত্রা শুরু করেছেন।
‘টেকসই পৃথিবী গড়ি, নেট-জিরো কার্বন মেনে চলি’- এই প্রতিপাদ্য সামনে নিয়ে বৃহস্পতিবার (৩ এপ্রিল) সকালে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার বাংলাবান্ধা জিরোপয়েন্ট থেকে এই তিন তরুণ শিক্ষার্থী বাইসাইকেল চালিয়ে টেকনাফের উদ্যেশে যাত্রা শুরু করেন।
জানা গেছে, আল-আমীনের বাড়ি নওগাঁ জেলায়। সে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী, শাহিন আলমের বাড়ি সুনামগঞ্জে, একই বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের এবং ফরহাদ মিয়া ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউট (IBA) বিভাগের শেষ বর্ষের ছাত্র। তার বাড়ি নড়াইল জেলায়।
যেহেতু বায়ু দূষণ বর্তমান সময়ের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত বায়ুর দেশের তালিকায় ভারত ও চীনের পরেই বাংলাদেশের অবস্থান। ধুলাবালি মিশ্রিত বাতাসের কারণে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। অন্যদিকে শিশুদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি ও নিরাপত্তাহীনতা দিন দিন বেড়ে চলছে। তাই পরিবেশ ও বায়ু দূষণ রোধে এমন ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছেন এই তিন শিক্ষার্থী।
ছবি: খবরের কাগজ
তারা যাত্রা পথে বিভিন্ন সড়ক, হাট বাজার ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সাইকেল থামিয়ে সাধারণ মানুষকে পরিবেশ দূষণ রোদে সচেতনসহ বিভিন্ন পরামর্শ দিতে দেখা গেছে।
তারা জানান, তেঁতুলিয়া থেকে টেকনাফ পর্যন্ত বাইসাইকেল চালিয়ে পরিবেশ বায়ু দূষণ রোধে বিভিন্ন পথসভা ও আলোচনার আয়োজন করবেন, করবেন বৃক্ষরোপণ, সংগ্রহ করবে বিভিন্ন জেলার মাটি। তাদের এই সাইকেল যাত্রা আগামী ৮ দিনের মধ্যে সম্পন্ন করবেন বলে জানান তারা।
এ বিষয়ে শিক্ষার্থী আল আমিন বলেন, প্রতিনিয়ত আমাদের দেশের পরিবেশ ও বায়ু দূষিত হচ্ছে। আর এই দূষণের কারণে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। আমাদের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন ছিল আমরা সাধারণ মানুষকে সচেতন করব। তাই আমরা তিনজনে মিলে তেঁতুলিয়া থেকে টেকনাফের পথে সাইকেল চালিয়ে আমাদের এই সচেতনতামূলক সাইকেল যাত্রা শুরু করেছি। আমরা ইতোমধ্যে ৬০ কিলোমিটার পাড়ি দিয়েছি। আমরা যাত্রা পথে বিভিন্ন মানুষকে পরিবেশ দূষণ রোদে সচেতন করেছি এবং পরামর্শ দিয়েছি।
একই কথা বলেন অন্য দুই শিক্ষার্থী। তারা বলেন, আমরা পরিবেশ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছি। বিভিন্ন সচেতনতামূলকসহ বিভিন্ন প্রোগ্রাম ইতোমধ্যে শেষ করেছি। দেশের মানুষকে পরিবেশ বিষয়ে সচেতন করতে আমরা এই উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। আমরা তেঁতুলিয়া থেকে টেকনাফ পর্যন্ত সাইকেল চালিয়ে বিভিন্ন গ্রামগঞ্জে, পথে-ঘাটের মানুষকে পরিবেশ বিষয় সচেতন করব। ইতোমধ্যে আমরা এ কাজ শুরু করেছি। সকল মানুষ আমাদের এমন উদ্যোগকে সাধুবাদ ও সহযোগিতা করছে। আমরা দেশবাসীর কাছে দোয়া চাই আমরা যেন এই যাত্রা শেষ করতে পারি সফলভাবে।
ফরহাদ মিয়া জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা বিভিন্ন সামাজিক আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত রয়েছি। তাই আমাদের ইচ্ছে ছিল সাইকেল চালিয়ে সাধারণ মানুষকে সচেতন করব। তাই আজকে আমরা তেঁতুলিয়া থেকে টেকনাফের পথে। আমাদের এই কাজে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়, প্রশাসন ও সাধারণ মানুষ যেভাবে সহযোগিতা করছে এতে আমরা অনেক কৃতজ্ঞ। আমরা এই যাত্রা সফলভাবে শেষ করতে পারলে পরবর্তী সময়ে বাইরের দেশেও এমন ব্যতিক্রম উদ্যোগ নেওয়ার ইচ্ছে রয়েছে।
এদিকে বাংলাবান্ধা এলাকার নুর ইসলাম নামে এক বাসিন্দা বলেন, সড়কে হঠাৎ তিনজন যুবককে সাইকেল চালিয়ে যেতে দেখলাম। তারা পরিবেশ নিয়ে মানুষকে সচেতন করছে। এটি ভালো কাজ। তাদের জন্য শুভকামনা রইল।
মো. রনি মিয়াজী/মাহফুজ