ঢাকা ২১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, বুধবার, ০৪ জুন ২০২৫
English

চট্টগ্রামে টিসিবির পণ্য বিক্রি শুরু রবিবার

প্রকাশ: ০৪ এপ্রিল ২০২৫, ১০:৫৭ এএম
আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০২৫, ১১:০৫ এএম
চট্টগ্রামে টিসিবির পণ্য বিক্রি শুরু রবিবার
ছবি: খবরের কাগজ

ঈদুল ফিতরের টানা ৯ দিন ছুটির পর চট্টগ্রামে ন্যায্যমূল্যে পণ্য বিক্রির কার্যক্রম শুরু করতে যাচ্ছে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)। আগামী রবিবার থেকে চট্টগ্রাম নগরে স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ডের মাধ্যমে বিক্রি হবে তিন ধরনের পণ্য।

গতকাল বৃহস্পতিবার (৩ এপ্রিল) টিসিবির চট্টগ্রামের সহকারী পরিচালক আবদুল কুদ্দুছ খবরের কাগজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, রমজান মাসে আমরা খেজুর, ছোলা, ভোজ্যতেল, চিনি ও মসুর ডাল বিক্রি করেছি। আগামী রবিবার থেকে খেজুর, ছোলা ছাড়া বাকি তিন পণ্য বিক্রি হবে। এবার স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ডের মাধ্যমে ভোক্তাদের মাঝে ন্যায্যমূল্যে পণ্য বিতরণ কার্যক্রম শুরু হবে।

টিসিবির ট্রাকসেলে প্রতি লিটার ভোজ্যতেল ১০০ টাকা, প্রতি কেজি মসুর ডাল ৬০ টাকা ও চিনি ৭০ টাকায় বিক্রি হবে। একজন ক্রেতা সর্বোচ্চ দুই লিটার ভোজ্যতেল, দুই কেজি মসুর ডাল ও এক কেজি চিনি কিনতে পারবেন।

জানা গেছে, নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে গেলে গত বছরের ২৪ অক্টোবর থেকে চট্টগ্রাম মহানগরের ২০ পয়েন্টে পণ্য বিক্রি শুরু করে টিসিবি। গত ৩১ ডিসেম্বর বন্ধ করে দেওয়া হয় বিক্রি কার্যক্রম। সে হিসাবে এক মাস ৯ দিন পর ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে আবারও পণ্য বিক্রি শুরু করে টিসিবি। সর্বশেষ গত ২৭ মার্চ পর্যন্ত নগরীর ২০টি পয়েন্টে প্রতিদিন ট্রাকসেলের মাধ্যমে টিসিবির পণ্য বিক্রি হয়। ঈদের ছুটি শেষে আগামী ৬ এপ্রিল থেকে আবারও পণ্য বিক্রি কার্যক্রম শুরু করবে সংস্থাটি।

ব্যস্ত সময় পার করছেন গোপালগঞ্জের কামার শিল্পীরা

প্রকাশ: ০৪ জুন ২০২৫, ০২:১৫ পিএম
ব্যস্ত সময় পার করছেন গোপালগঞ্জের কামার শিল্পীরা
ছবি: খবরের কাগজ

ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে ব্যস্ত সময় পার করছেন গোপালগঞ্জের কামার শিল্পীরা। সারা বছর কাজ না থাকলেও ঈদের কয়েক দিন কর্মব্যস্ত থাকেন তারা। আর সেই সঙ্গে তাদের আয়ও ভালো হয়। 

আর মাত্র কয়েকদিন বাকি ঈদুল আজহার। জেলার সর্বত্র কয়েক হাজার পশু কোরবানি হবে। এসব পশু কাটতে দরকার হবে ছুরি, চাপাতিসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম। তাই প্রতিবছরের মতো এবারও সরগরম হয়ে উঠেছে জেলার কামারপাড়াগুলো। এতে কর্মব্যস্ততা বেড়েছে কর্মকারদের। কেউ হাপর টানছেন, কেউ হাতুড়ি পিটিয়ে তৈরি করছেন দা, বটি, ছুরিসহ মাংস কাটার বিভিন্ন সরঞ্জাম। সারা বছর কাজ কম থাকলেও এ সময়টা ব্যস্ত সময় কাটান তারা। তাদের তৈরি দা, চাপাতি, ছুরিসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম মান অনুযায়ী কেজি দরে আবার পিস হিসেবেও বিক্রি হচ্ছে। আকারভেদে পশুর চামড়া ছাড়ানোর ছুরি ১৫০ থেকে ২০০ টাকা, দা ২৫০ থেকে ৩৫০, বটি ৩৫০ থেকে ৫০০ এবং পশু জবাইয়ের ছুরি ৮০০ থেকে ১০০০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। 

পশু কোরবানি দিতে ও মাংস কাটার সরঞ্জামের জন্য ক্রেতারা ভিড় করছেন স্থানীয় কামারদের কাছে। বানাচ্ছেন দা, চাপাতি, ছুরিসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম। আবার অনেকে তাদের পুরোনো ছুরি, চাপাতি ধারালো করে নিচ্ছেন। জেলার সদর উপজেলার হায়াত আলী বলেন, ‘প্রতিবছর নতুন সরঞ্জাম বানানোর পাশাপাশি পুরোনোগুলো ধার দিতে কামারপল্লিতে আসি। জেলার চন্দ্রদিঘলীয় মাদ্রাসা, গোপীনাথপুর মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন মাদ্রাসায় পশু কোরবানি দেওয়া হবে। এসব পশু কোরবানি দিতে সরঞ্জাম বানাতে এখানে এসেছি। মজুরি গত বছরের মতোই নিচ্ছে।’

একই এলাকার মিটু শরীফ বলেন, ‘কয়েকদিন পরই ঈদুল আজহা। গরু-ছাগল কোরবানি এবং মাংস কাটার জন্য চাকু, ছুরি ও চাপাতি কিনতে কামারপাড়ায় এসেছি।’ কাশিয়ানী উপজেলার রামদিয়া বাজারের কর্মকার কেশব ভক্ত বলেন, ‘এক সময় কামারদের কদর ছিল। বর্তমানে আধুনিক মেশিনে ছুরি, চাপাতি ও দা তৈরি হচ্ছে। ফলে আমাদের তৈরি সরঞ্জামের চাহিদা কমে গেছে। ঈদুল আজহার সময় কিছু কাজ হলেও সারা বছরই কষ্টে চলতে হয়। এ কারণে অনেকেই এ পেশা ছেড়ে অন্য পেশা বেছে নিচ্ছেন।’

সদর উপজেলার কামারপল্লির খোকন কর্মকার বলেন, ‘ঈদ যতই ঘনিয়ে আসছে, ক্রেতার চাপও বাড়ছে। কেউ চাপাতি, কেউ ছুরি আবার কেউ দা বানাতে ভিড় করছেন। কাজের চাপ থাকায় এক প্রকার থাওয়া-দাওয়া ও ঘুম ছেড়ে দিতে হয়েছে। সারা বছর টুকটাক কাজ করে কোনোভাবে সংসার চালিয়ে নিই। এবারের ঈদ অনেক আয় হবে বলে আশা করছি।’

বরিশালে পশুর হাটে ক্রেতার চেয়ে দর্শক বেশি

প্রকাশ: ০৪ জুন ২০২৫, ০২:০১ পিএম
বরিশালে পশুর হাটে ক্রেতার চেয়ে দর্শক বেশি
ফাইল ছবি

ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে বরিশালে বসতে শুরু করেছে কোরবানির পশুর হাট। গরুর দাম গতবারের চেয়ে কিছুটা বেশি হওয়ায় কাঙ্ক্ষিত কেনাবেচা হচ্ছে না। গরু বিক্রেতারা জানান, হাটে আসা বেশির ভাগ মানুষ গরুর দাম শুনে চলে যান। এখন তারা বাজার যাচাই করছেন। হাটে আসা মানুষ জানিয়েছেন, গত বছরের চেয়ে এ বছরে গরুর দাম খানিকটা বেশি মনে হয়।

বরিশালের বিভিন্ন পশুর হাট ঘুরে দেখা যায়, গত বছর ১ লাখ ১০ হাজার টাকায় যে গরু বিক্রি হয়েছে, এবারে একই আকারের গরুর দাম হাঁকা হচ্ছে ১ লাখ ৮৫ থেকে ২ লাখ টাকা পর্যন্ত। আবার মাঝারি সাইজের গরু গত বছর যা বিক্রি হয়েছে ৭০-৮০ হাজার টাকায়, সেই আকারের গরুর দাম চাওয়া হচ্ছে ১ লাখ ২০ হাজার থেকে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা। ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকার গরুর দাম হাঁকানো হচ্ছে ৮৫ থেকে ৯০ হাজার টাকা। তাই হাটে অসংখ্য গরু আসা সত্ত্বেও কেনাবেচা প্রায় শূন্যের কোঠায়।

বরিশাল নগরীতে তিনটিসহ জেলার ১০ উপজেলায় এ বছরে ৬৩টি কোরবানির পশুর হাট বসেছে। এসব হাটে বরিশালের খামারিসহ যশোর, খুলনা, সাতক্ষীরা, চুয়াডাঙা, কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, মেহেরপুরসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পাইকাররা গরু নিয়েছেন। 

চরমোনাই গরুর হাটে আসা ক্রেতা মুশফিকুর রহমান বলেন, গত বছর যে গরু ৮০ হাজার টাকায় কিনেছিলাম, সেই গরুর দাম এ বছরে চাওয়া হচ্ছে ১ লাখ ১০ হাজার টাকা। এ ছাড়া গরুর ব্যাপারীরা বরিশালের হাটগুলোতে ক্ষণে ক্ষণে 
নানা অজুহাতে গরুর দাম বাড়াচ্ছেন।

নগরীর বাঘিয়ার গরুর হাটে আসা ক্রেতা সাইফুল ইসলাম রিপন বলেন, ‘গত বছরের চেয়ে এ বছর গরুর দাম অনেক বেশি মনে হচ্ছে। তাই বাজার যাচাই করছি। ঈদের এখনো বাকি আছে। বিভিন্ন হাটে গরুর দাম যাচাই করে কোরবানির আগের দিন যেকোনো হাট থেকে বাজেট অনুসারে গরু কিনব।’ 

কুষ্টিয়া থেকে বানারীপাড়ার গুয়াচিত্রার হাটে আসা ব্যবসায়ী রমিজ উদ্দিন বলেন, ‘গত সোমবার ১২টি গরু নিয়ে এই হাটে এসেছি। একটিও বিক্রি হয়নি। ক্রেতারা আসছেন। দাম দর করছেন। কিন্তু চাহিদা অনুযায়ী দাম বলছেন না। উৎপাদন খরচের চেয়েও দাম কম বলছেন তারা।’

চরমোনাই হাট ইজারাদারের সহযোগী বেল্লাল হোসেন বলেন, ‘ক্রেতা-বিক্রেতাদের এমন বাস্তবতায় বিপাকে পড়েছেন হাট ইজারাদাররাও। এবারে গৃহস্থ পশু আসছে না। যারাই হাটে গরু নিয়ে আসছেন, তারা ব্যাপারী। এ কারণে কেউ দাম ছাড়ছেন না। ফলে কেনাবেচার অবস্থা খারাপ। পাশাপাশি কোরবানির কয়েক দিন বাকি থাকায় ক্রেতারাও বিভিন্ন বাজার যাচাই করছেন। ফলে হাটে আসা ক্রেতার চেয়ে দর্শক বেশি। তবে আশা রাখি, দু-এক দিনের মধ্যে এই অবস্থার 
পরিবর্তন হবে।’

এদিকে বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলার চাখারের কালী বাজারের শাকিল সুমনের বিশাল দেহী গরু ফনী-২ বিক্রি করতে না পেয়ে গত শনিবার বন্দর নগরী চট্টগ্রামে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বর্তমানে গরুটি চট্টগ্রামের সাগরিকা এলাকার পশুর হাটে রয়েছে। ওই হাটে নগরের সবচেয়ে বড় ও নামিদামি কোরবানির পশু বিক্রি হয়।

রাজবাড়ীতে নিখোঁজ শিক্ষার্থীর খোঁজ চেয়ে মানববন্ধন

প্রকাশ: ০৪ জুন ২০২৫, ০১:৫৮ পিএম
রাজবাড়ীতে নিখোঁজ শিক্ষার্থীর খোঁজ চেয়ে মানববন্ধন
ছবি: সংগৃহীত

রাজবাড়ীর পাংশায় সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্র গত ১৫ দিন ধরে নিখোঁজ রয়েছে। ছেলের খোঁজ না পেয়ে উদ্বিগ্ন পরিবার ও এলাকাবাসী তার সন্ধানের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন।

মঙ্গলবার (৩ জুন) দুপুরে পাংশা পৌর শহরের আবদুল মালেক প্লাজার সামনে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। 

নিখোঁজ আব্দুল্লাহ ওরফে তামিম উপজেলার কলিমহর ইউনিয়নের সাঁজুরিয়া গ্রামের মো. নজরুল ইসলামের ছেলে। সে 
স্থানীয় সরিষা-প্রেমটিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণির ছাত্র।

গত ২০ মে সকালে স্কুলে যাওয়ার উদ্দেশে সে বাড়ি থেকে বের হয়। তবে স্কুলে পৌঁছায়নি এবং দিন শেষে আর বাড়ি ফেরেনি। পরিবারের পক্ষ থেকে সম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজ করেও তার কোনো খোঁজ পায়নি। 

তামিমের বাবা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমার ছেলেকে আজ ১৫ দিন ধরে দেখি না। কোথায় গেল, কে নিয়ে গেল, কিছুই জানি না। আমার ছেলের মুখটা আবার দেখতে চাই, আমি তাকে ফেরত চাই। আমি প্রশাসনের কাছে অনুরোধ করছি আমার ছেলেকে খুঁজে দিন।’

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, গত ১৫ দিন ধরে তামিম নিখোঁজ, এটি শুধু তার পরিবারের নয়, আমাদের সমাজের উদ্বেগের বিষয়। 

এ বিষয়ে পাংশা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সালাউদ্দিন বলেন, ‘নিখোঁজ ছেলেটিকে উদ্ধারে পুলিশের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে। রাজবাড়ীর পুলিশ সুপারসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বিষয়টি তদারকি করছেন।’

ময়মনসিংহ নগরী ডুবছে সামান্য বৃষ্টিতেই

প্রকাশ: ০৪ জুন ২০২৫, ০১:৫৩ পিএম
আপডেট: ০৪ জুন ২০২৫, ০১:৫৬ পিএম
ময়মনসিংহ নগরী ডুবছে সামান্য বৃষ্টিতেই
কয়েক ঘণ্টার বৃষ্টিতে জমে গেছে পানি। বাধ্য হয়ে হাঁটুপানি মাড়িয়ে কয়েকজন ক্রেতা নিত্যপণ্য কিনতে দোকানে গেছেন। ময়মনসিংহ নগরের ধোপাখলা এলাকা থেকে গত রবিবার তোলা/ খবরের কাগজ

ময়মনসিংহ নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে বিভিন্ন খাল খনন, পরিষ্কার ও ড্রেন নির্মাণকাজে কোটি কোটি টাকা খরচ করেছে সিটি করপোরেশন। অথচ প্রতিবছর বর্ষা মৌসুম এলেই নগরে পানি জমে যায়। নগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ডুবে যাওয়াসহ বাসাবাড়িতে পানি উঠে পড়ে। তখন সব শ্রেণি-পেশার মানুষ ভোগান্তিতে পড়েন। কিন্তু চলতি বছর বর্ষা মৌসুমের আগে সিটি করপোরেশন জানিয়েছিল, এবার জলাবদ্ধতা নিরসনে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে। নগরে এবার জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা কম। কিন্তু এরই মধ্যে দেখা গেল উল্টো চিত্র।

গত রবিবার সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত ময়মনসিংহে ভারী বৃষ্টিপাত হয়। মাত্র তিন ঘণ্টার বৃষ্টিতে নগরীর সানকিপাড়া, আকুয়া, গোলকিবাড়ী, বলাশপুর, খাগডহর, চরপাড়া, ত্রিশাল বাসস্ট্যান্ড, বদরের মোড়, ধোপাখলা, কাশর মসজিদের মোড়, জেলখানা রোড, আনন্দ মোহন কলেজ ও ময়মনসিংহ মেডিকেল হাসপাতাল প্রাঙ্গণে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। ওইদিন বিকেল পর্যন্ত নগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে নগরবাসীকে চরম ভোগান্তি পোহাতে দেখা যায়।

তখন স্থানীয়রা জানান, নোংরা ও ময়লাযুক্ত পানিতে বিভিন্ন সড়ক তলিয়ে গেছে। আবাসিক বাসাবাড়ি, দোকানপাট, কাঁচাবাজার ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ময়লাযুক্ত পানি ঢুকে পড়েছে। এতে তারা তখন চরম ভোগান্তিতে পড়েন। তারা জানান, সারা বছর নগরীর বিভিন্ন সড়কে ড্রেনের উন্নয়নকাজ করা হয়। প্রতিবছর খালও পরিষ্কার করা হয়। জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য ড্রেন নির্মাণসহ খাল খনন ও পরিষ্কারকাজে কোটি কোটি টাকা ব্যয় করছেন সিটি করপোরেশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। অথচ তা কোনো কাজেই আসছে না। মাত্র কয়েক ঘণ্টার বৃষ্টিতে নগরীর বিভিন্ন সড়ক তলিয়ে গেছে। জলাবদ্ধতা নিরসনের নামে মোটা অঙ্কের টাকা হরিলুট করা হয়েছে। ফলে প্রতিবছর কার্যক্রম চললেও ফলাফল শূন্য।

ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন (মসিক) সূত্রে জানা যায়, সড়ক ও ড্রেনেজ ব্যবস্থা উন্নয়নের জন্য ২০২০ সালে বিশেষ প্রকল্প হিসেবে ৮৬টি প্যাকেজে বরাদ্দ দেওয়া হয় ১ হাজার ৫৭৫ কোটি টাকা। গত বছরের ডিসেম্বরে প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলেও এখনো শতভাগ কাজ শেষ হয়নি। এ ছাড়া জলাবদ্ধতা নিরসনে নগরীর বিভিন্ন খাল খনন ও পরিষ্কারে ২০২০-২১ অর্থবছরে ২৫ লাখ ১৬ হাজার ৮৫০ টাকা, ২০২১-২২ অর্থবছরে ৫৪ লাখ ৮৫ হাজার ৮৪০ টাকা, ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৬০ লাখ ৩০ হাজার এবং ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৬৩ লাখ ৯০ হাজার টাকা ব্যয় করেছে সিটি করপোরেশন। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে খাল খনন, পরিষ্কার ও ড্রেন নির্মাণকাজ এখনো চলমান।

নগরীর আকুয়া এলাকার বাসিন্দা ফরহাদ হোসেন খবরের কাগজকে বলেন, ‘রবিবার মাত্র কয়েক ঘণ্টার বৃষ্টিতে নগরীর বিভিন্ন সড়কে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এমন চিত্র দেখেই বোঝা যায়, জলাবদ্ধতা নিরসনে নেওয়া কার্যক্রম ব্যর্থ হয়েছে। যদি জলাবদ্ধতাই থাকে, তাহলে কোটি কোটি টাকা খরচ করার কারণ কি?’

তিনি বলেন, ‘চলতি বছরের ২০ মে সকাল পৌনে ১০টা থেকে ময়মনসিংহে ভারী বৃষ্টিপাত শুরু হয়। মাত্র ৪৫ মিনিটের এই বৃষ্টিতে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। কিছুক্ষণের বৃষ্টিতে নগরবাসীর জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। টানা কয়েকদিন বৃষ্টিপাত হলে চরম জলাবদ্ধতায় নগরবাসীকে মাত্রাতিরিক্ত ভোগান্তি পোহাতে হবে।’

গোলকিবাড়ী এলাকার বাসিন্দা নাজমুল হক বলেন, ‘বিগত কয়েকবছরে জলাবদ্ধতা নিরসনে নগরীর বিভিন্ন খাল খনন ও ড্রেন নির্মাণে কোটি কোটি টাকা ব্যয় করা হয়েছে। অথচ আমরা জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি পাচ্ছি না। সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তাদের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন।’

ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম মিয়া বলেন, ‘নগরীতে অনেকগুলো ড্রেনের পরিচ্ছন্নতার কাজ চলছে। আবার নতুন করে ১২০ কিলোমিটার ড্রেন নির্মাণ হচ্ছে। এগুলো শেষ হতে আরও কিছুদিন সময় লাগবে।’

এ বিষয়ে ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সুমনা আল মজীদ বলেন, ‘জলাবদ্ধতা নিরসনে আমাদের চেষ্টার কমতি নেই। প্রয়োজনীয় কাজের মাধ্যমে জলাবদ্ধতা থেকে নগরবাসীর ভোগান্তি নিরসনের চেষ্টা চলছে। তবে নগরবাসীকেও সচেতন হতে হবে। ড্রেনে ডাবের খোসা, চিপসের প্যাকেট ও পলিথিন ফেলা যাবে না। এতে অনেক সময় ড্রেন দিয়ে পানি প্রবাহিত হতে না পেরে পানি রাস্তায় উঠে পড়ে।’

বারদীতে লোকনাথ ব্রহ্মচারীর তিরোধান দিবস পালন

প্রকাশ: ০৪ জুন ২০২৫, ০১:০৯ পিএম
বারদীতে লোকনাথ ব্রহ্মচারীর তিরোধান দিবস পালন
ছবি: খবরের কাগজ

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার বারদীতে আধ্যাত্মিক সাধক লোকনাথ ব্রহ্মচারীর ১৩৫তম তিরোধান দিবস পালন করা হয়েছে। এ উপলক্ষে আশ্রম ও এর আশেপাশের এলাকা ভক্তদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে ওঠে।

মঙ্গলবার (৩ জুন) সকালে পুজা আর্চনার মধ্য দিয়ে তিরোধান দিবসের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। 

এর আগে গত দুই দিন ধরে বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন স্থান থেকে ভক্তরা আশ্রমে তিরোধান উৎসবে যোগ দিতে আসেন। মঙ্গলবার সকালে ঊষাকীর্তন অনুষ্ঠিত হয়। এরপর চলে পূজা-অর্চনা, গীতাপাঠ, কীর্তন, রাজভোগ, বাল্যভোগ ও প্রসাদ বিতরণ।

মঙ্গলবার বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে লোকজনেরও সমাগমও বাড়ে। তিরোধান উৎসব উপলক্ষে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয় স্থানীয় প্রশাসন।

এদিকে তিরোধান উৎসব ঘিরে বারদী এলাকায় বসেছে ৫ দিনব্যাপী মেলা। 

এলাকাবাসীর অভিযোগম, এ মেলায় কতিপয় লোক বিভিন্ন স্থানে জুয়ার আসর বসিয়েছেন। স্থানীয় প্রশাসন এ বিষয়ে নীরব ভূমিকা পালন করছে।

লোকনাথ ব্রহ্মচারী ১৭৩০ খ্রিষ্টাব্দে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের চব্বিশপরগনা জেলার বারাসাতের দে গঙ্গা থানার কচুয়া (কাঁকড়া) গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা রামনারায়ণ ঘোষাল ও মা কমলা দেবী। লোকনাথ ছিলেন তাঁর মা-বাবার ছোট ছেলে। তিনি হিমালয়ে গিয়ে ৪০ বছর সাধনা করেন। তিনি আফগানিস্তানের কাবুলে আরবি ভাষা ও কোরআন শাস্ত্র শিক্ষা করে ইসলাম ধর্ম এবং এর দর্শন সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করেন। লোকনাথের যখন ১০ বছর বয়স, তখনই তাকে সর্বশাস্ত্র পারদর্শী সন্ন্যাসী ভগবান গাঙ্গুলীর হাতে তুলে দেন বাবা রামনারায়ণ। মানবতাই মানুষের শ্রেষ্ঠ ধর্ম এ বাক্য অন্তরে লালন করে মানবজাতির কল্যাণে কাজ করে দীর্ঘ ২৬ বছর বারদী এলাকায় অবস্থান করেন মহাসাধক লোকনাথ ব্রহ্মচারী। ১৬০ বৎসর বয়সে ১৯ জৈষ্ঠ্য তারিখে বারদী আশ্রমে এ মহাসাধকের মহাপ্রয়াণ হয়।

এ উপলক্ষে লোকনাথ ব্রহ্মচারী আশ্রম কর্তৃপক্ষ আয়োজন করেন বিভিন্ন অনুষ্ঠানমালা। এর মধ্যে প্রভাত কীর্তন, গীতাপাঠ, আলোচনা, বাল্যভোগ, রাজভোগ বিতরণ, ভক্তিমূলক গান, সন্ধ্যা আরতি, ফল প্রসাদ, জল প্রসাদ বিতরণসহ বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠান।

অন্যদিকে, উৎসবে আগতদের মধ্যে বিনামূল্যে শিশুখাদ্য, ওষুধ, চিকিৎসাসেবা, মিষ্টি, চিড়ামুড়ি, বাতাসা, পানি ও শরববত বিতরণ করে লোকনাথ সেবা সংঘ, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ, সীতা রাম সংঘ, শারদাঞ্জলি ফোরাম বাংলাদেশসহ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন।

বারদী লোকনাথ ব্রহ্মচারী আশ্রম পরিচালনা কমিটির সদস্যসচিব সাংবাদিক শংকর কুমার দে জানান, তিরোধান উৎসবে অংশ নিতে ভারত, নেপাল, ভুটান ও শ্রীলঙ্কা থেকেও বহু লোকনাথ ভক্ত বারদী আশ্রমে এসেছেন। তাদের থাকা ও খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মফিজুর রহমান জানান, লোকনাথ ব্রহ্মচারীর আশ্রমে আসা ভক্তদের নিরাপত্তায় পুলিশ সব সময় কাজ করেছে। আশ্রম এলাকায় সেনা, পুলিশ, র‌্যাব, আনসারসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন ছিল। এ ছাড়াও আশ্রম এলাকায় অপ্রীতিকর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে সিসি ক্যামেরার আওতায় ছিল। কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।

ইমরান হোসেন/অমিয়/