
দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়ায় শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) অভ্যন্তরীণ রাস্তার অবস্থা বেহাল হয়ে পড়েছে। এতে চলাচলে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের। বিশ্ববিদ্যালয়ের গোল চত্বর থেকে ছাত্রহল এবং ছাত্রীহলে যাওয়ার জন্য মাত্র একটি করে রাস্তা রয়েছে।
গোল চত্বর থেকে শাহপরাণ হল পর্যন্ত রাস্তায় পাকা সড়কের অস্তিত্ব বোঝা গেলেও সৈয়দ মুজতবা আলী হলে যাওয়ার রাস্তায় পাকা সড়ক ভেঙে মাটিতেও তৈরি হয়েছে বড় বড় গর্ত। আসছে বর্ষায় এসব গর্তে পানি জমে মরণ ফাঁদে পরিণত হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামোগত উন্নয়নের অংশ হিসেবে নতুন ছাত্রহল, ছাত্রীহল, শিক্ষা ভবন, প্রশাসনিক ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হলেও নতুন এসব ভবনে যাওয়ার মতো নেই চলাচল উপযোগী রাস্তা। প্রশাসন থেকেও মেরামতের জন্য নেওয়া হচ্ছে না কোনো উদ্যোগ।
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা জানায়, এটা সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) দায়িত্ব। অন্যদিকে সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) জানায়, এটা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দায়িত্ব। দুই প্রতিষ্ঠানের অনীহার কারণে দিন দিন আরও দুরবস্থার দিকে যাচ্ছে সড়কগুলো।
বিশ্ববিদ্যালয়ের গোল চত্বর থেকে ছাত্রহলে যাওয়ার রাস্তায় গিয়ে দেখা যায়, রাস্তায় বড় বড় গর্ত হয়ে আছে। যানবাহন চলাচলের ক্ষেত্রে একটু অসাবধানতায় ঘটতে পারে দুর্ঘটনা। চলতে গিয়ে এসব গর্তে হোঁচট খাওয়া রোজকার ঘটনা। কয়েক দিন পরেই আসছে বর্ষা। বৃষ্টির পানিতে তখন ভোগান্তির পরিমাণ দ্বিগুণ বৃদ্ধি পাবে বলে জানান শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী জুনায়েদ আহমদ বলেন, ‘গোল চত্বর থেকে ছেলেদের হলের রাস্তার অবস্থা এতটাই খারাপ যে নিজে চলাচল না করলে বোঝা যাবে না। বিশেষ করে সৈয়দ মুজতবা আলী হলের রাস্তার অবস্থা খুবই ভয়াবহ। রাস্তায় গর্ত একেকটা ছোট খালের মতো হয়ে গেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন অবকাঠামোগত উন্নয়ন কার্যক্রম চলমান। আমরা আশা করি, সেসব কাজের পাশাপাশি খুব দ্রুততার সঙ্গে রাস্তা মেরামতের উদ্যোগ নেওয়া হবে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী নিশামনি সিনহা বলেন, ‘এই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করার সময় ঝাঁকুনিতে অসুস্থ হয়ে যাই। অন্যদিকে তৃতীয় হল নির্মাণের দুই বছর হতে চললেও এখনো পাকা রাস্তা নির্মাণ করা হয়নি। এর ফলে অটোরিকশার চালকরা সেদিকে যেতে চান না। তাই প্রশাসনের উচিত, যাতায়াতের এসব সমস্যা সমাধানে কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া।’
মেরামতের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হবে কি না জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাজেদুল করিম খবরের কাগজকে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরের রাস্তা মেরামতের দায়িত্ব সিটি করপোরেশনের। আমাদের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে লিখিতভাবে কয়েকবার কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। সিটি করপোরেশন থেকে পদক্ষেপ নিলে আশা করি দ্রুত মেরামত হবে।’
এদিকে সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমানের সঙ্গে কথা বললে তিনি খবরের কাগজকে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ অবকাঠামোগত উন্নয়নের দায়িত্ব সিটি করপোরেশনের নয়। আইনগতভাবে এটা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাজ। তবুও আমরা এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের গোল চত্বর পর্যন্ত রাস্তা ঠিক করে দিয়েছি। এখন পর্যাপ্ত ফান্ড না থাকায় করতে পারছি না। কিন্তু আমাদের পরিকল্পনা আছে সামনে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাকি রাস্তাগুলোও মেরামত করে দেওয়ার।’