ঢাকা ১৬ বৈশাখ ১৪৩২, মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫
English
মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ১৬ বৈশাখ ১৪৩২

বেহাল রাস্তা মেরামতে অনীহা শাবিপ্রবি ও সিসিকের

প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ১০:৩৫ এএম
বেহাল রাস্তা মেরামতে অনীহা শাবিপ্রবি ও সিসিকের
শাবিপ্রবির গোল চত্বর থেকে ছাত্রহলে যাওয়ার রাস্তাটির বেহাল দশা। ছবি: খবরের কাগজ

দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়ায় শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) অভ্যন্তরীণ রাস্তার অবস্থা বেহাল হয়ে পড়েছে। এতে চলাচলে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের। বিশ্ববিদ্যালয়ের গোল চত্বর থেকে ছাত্রহল এবং ছাত্রীহলে যাওয়ার জন্য মাত্র একটি করে রাস্তা রয়েছে। 

গোল চত্বর থেকে শাহপরাণ হল পর্যন্ত রাস্তায় পাকা সড়কের অস্তিত্ব বোঝা গেলেও সৈয়দ মুজতবা আলী হলে যাওয়ার রাস্তায় পাকা সড়ক ভেঙে মাটিতেও তৈরি হয়েছে বড় বড় গর্ত। আসছে বর্ষায় এসব গর্তে পানি জমে মরণ ফাঁদে পরিণত হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামোগত উন্নয়নের অংশ হিসেবে নতুন ছাত্রহল, ছাত্রীহল, শিক্ষা ভবন, প্রশাসনিক ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হলেও নতুন এসব ভবনে যাওয়ার মতো নেই চলাচল উপযোগী রাস্তা। প্রশাসন থেকেও মেরামতের জন্য নেওয়া হচ্ছে না কোনো উদ্যোগ।

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা জানায়, এটা সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) দায়িত্ব। অন্যদিকে সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) জানায়, এটা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দায়িত্ব। দুই প্রতিষ্ঠানের অনীহার কারণে দিন দিন আরও দুরবস্থার দিকে যাচ্ছে সড়কগুলো।

বিশ্ববিদ্যালয়ের গোল চত্বর থেকে ছাত্রহলে যাওয়ার রাস্তায় গিয়ে দেখা যায়, রাস্তায় বড় বড় গর্ত হয়ে আছে। যানবাহন চলাচলের ক্ষেত্রে একটু অসাবধানতায় ঘটতে পারে দুর্ঘটনা। চলতে গিয়ে এসব গর্তে হোঁচট খাওয়া রোজকার ঘটনা। কয়েক দিন পরেই আসছে বর্ষা। বৃষ্টির পানিতে তখন ভোগান্তির পরিমাণ দ্বিগুণ বৃদ্ধি পাবে বলে জানান শিক্ষার্থীরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী জুনায়েদ আহমদ বলেন, ‘গোল চত্বর থেকে ছেলেদের হলের রাস্তার অবস্থা এতটাই খারাপ যে নিজে চলাচল না করলে বোঝা যাবে না। বিশেষ করে সৈয়দ মুজতবা আলী হলের রাস্তার অবস্থা খুবই ভয়াবহ। রাস্তায় গর্ত একেকটা ছোট খালের মতো হয়ে গেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন অবকাঠামোগত উন্নয়ন কার্যক্রম চলমান। আমরা আশা করি, সেসব কাজের পাশাপাশি খুব দ্রুততার সঙ্গে রাস্তা মেরামতের উদ্যোগ নেওয়া হবে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী নিশামনি সিনহা বলেন, ‘এই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করার সময় ঝাঁকুনিতে অসুস্থ হয়ে যাই। অন্যদিকে তৃতীয় হল নির্মাণের দুই বছর হতে চললেও এখনো পাকা রাস্তা নির্মাণ করা হয়নি। এর ফলে অটোরিকশার চালকরা সেদিকে যেতে চান না। তাই প্রশাসনের উচিত, যাতায়াতের এসব সমস্যা সমাধানে কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া।’

মেরামতের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হবে কি না জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাজেদুল করিম খবরের কাগজকে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরের রাস্তা মেরামতের দায়িত্ব সিটি করপোরেশনের। আমাদের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে লিখিতভাবে কয়েকবার কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। সিটি করপোরেশন থেকে পদক্ষেপ নিলে আশা করি দ্রুত মেরামত হবে।’ 

এদিকে সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমানের সঙ্গে কথা বললে তিনি খবরের কাগজকে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ অবকাঠামোগত উন্নয়নের দায়িত্ব সিটি করপোরেশনের নয়। আইনগতভাবে এটা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাজ। তবুও আমরা এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের গোল চত্বর পর্যন্ত রাস্তা ঠিক করে দিয়েছি। এখন পর্যাপ্ত ফান্ড না থাকায় করতে পারছি না। কিন্তু আমাদের পরিকল্পনা আছে সামনে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাকি রাস্তাগুলোও মেরামত করে দেওয়ার।’ 

ইসলামপুরে ৮ শিক্ষককে বহিষ্কার

প্রকাশ: ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৪:৫২ পিএম
ইসলামপুরে ৮ শিক্ষককে বহিষ্কার
ছবি: খবরের কাগজ

জামালপুরের ইসলামপুরে চলমান এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষা চলাকালীন দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে আট শিক্ষককে বহিষ্কার করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) উপজেলার বিভিন্ন পরীক্ষা কেন্দ্র পরিদর্শনের সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তৌহিদুর রহমান ওই শিক্ষকদের বহিষ্কার করেন।

বহিষ্কৃত শিক্ষকরা হলেন- সভুকুড়া মূলপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক রিপন মিয়া, গাফিলতির অভিযোগে সিরাজাবাদ উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক মাহবুবুর রহমান,  ইসলামপুর ইসলামিয়া কামিল মাদ্রাসার শিক্ষক রিদুয়ানুল হক,  হাড়িয়াবাড়ী দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষক আবুল কাশেম, পচাবহলা দাখিল মাদ্রাসার সেলিম মিয়া, মরাকান্দী দাখিল মাদ্রাসার শহিদুল ইসলাম, কান্দারচর দাখিল মাদ্রাসার বিপুল রানা ও রামভদ্রা দাখিল মাদ্রাসার মোস্তাফিজুর রহমান।

ইউএনও মো. তৌহিদুর রহমান বলেন, 'পরীক্ষার পরিবেশ যাতে সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ থাকে, সে বিষয়ে আমরা কঠোর নজরদারি করছি। কোনো ধরনের গাফিলতি বরদাস্ত করা হবে না।

চলতি বছর ইসলামপুর উপজেলায় ১০টি কেন্দ্রে এসএসসি, দাখিল ও ভোকেশনাল মিলিয়ে মোট ৪ হাজার ২৭ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। এর মধ্যে মাধ্যমিকে ২ হাজার ৭৭৪ জন, দাখিলে ৯০৫ জন এবং ভোকেশনালে ৫৪৮ জন পরীক্ষার্থী রয়েছে।

আসিফ/মেহেদী/

সাভারে তোশকের নিচে মিলল অস্ত্র-গুলি, আটক ১

প্রকাশ: ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৪:১৭ পিএম
সাভারে তোশকের নিচে মিলল অস্ত্র-গুলি, আটক ১
ছবি: খবরের কাগজ

ঢাকার সাভারের একটি আবাসিক ভবনে অভিযান চালিয়ে একটি ফ্ল্যাটের শয়নকক্ষের তোশকের নিচে লুকিয়ে রাখা একটি বিদেশি পিস্তল ও তিন রাউন্ড গুলিসহ মো. মাসুদ নামে একজনকে আটক করেছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)। 

মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) সকালে আশুলিয়ার জামগড়া ষ্টার্ন হাউজিং এলাকায় একটি তিনতলা ভবনের ফ্ল্যাট থেকে এসব উদ্ধার করা হয়।

আটক মো. মাসুদ পাবনা জেলার বেড়া থানার হাটুরিয়া গ্রামের হযরত আলীর ছেলে। 

র‍্যাব-৪ (সিপিসি-২)- এর কোম্পানি কমান্ডার মেজর জালিস মাহমুদ খান জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মঙ্গলবার সকালে আশুলিয়ার জামগড়া ষ্টার্ন হাউজিং এলাকায় একটি তিনতলা ভবনে অভিযান চালানো হয়। এ সময় ১টি বিদেশি পিস্তল, ৩ রাউন্ড গুলি ও বেশ কিছু দেশীয় অস্ত্রসহ মাসুদ নামে এক সন্ত্রাসীকে আটক করা হয়। মাসুদ একটি সংঘবদ্ধ অপরাধী চক্রের সদস্য। তিনি সন্ত্রাসী কার্যক্রম করার জন্য নিজ হেফাজতে বিদেশি পিস্তল, গুলি ও দেশীয় অস্ত্র রেখেছিলেন। তার বিরুদ্ধে প্রচলিত অস্ত্র আইনে মামলার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। 

ইমতিয়াজ/মেহেদী/

নরসিংদীতে ট্রেনে কাটা পড়ে গৃহবধূর মৃত্যু

প্রকাশ: ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৪:০৮ পিএম
নরসিংদীতে ট্রেনে কাটা পড়ে গৃহবধূর মৃত্যু
ছবি: খবরের কাগজ

নরসিংদীতে রেললাইনে হাঁটার সময় ট্রেনে কাটা পড়ে সেলিনা বেগম (৫০) নামে এক গৃহবধূ নিহত হয়েছেন।

মঙ্গলববার (২৯ এপ্রিল) দুপুর ১২টার দিকে নরসিংদী পৌর এলাকার বাসাইল রেলগেইট এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

চার সন্তানের জননী নিহত সেলিনা বেগম নরসিংদী পৌর এলাকার বাসাইল মহল্লার বশির উদ্দিনের স্ত্রী।

নরসিংদী রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. জহিরুল ইসলাম ও নিহতের স্বজনরা জানান, দুপুরে বাসা থেকে বের হয়ে রেললাইন ধরে হাঁটার সময় ঢাকাগামী কালনী এক্সপ্রেস ট্রেনের নিচে কাটা পড়ে ক্ষতবিক্ষত হয়ে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে স্বজনেরা মরদেহ শনাক্ত করেন। পরে রেলওয়ে ফাঁড়ি পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে।

নিহতের ছেলে ওমর ইয়াসিন জানান, তার মা দীর্ঘদিন ধরে মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন। ময়নাতদন্ত ছাড়া মরদেহ হস্তান্তরের জন্য আবেদন করা হয়েছে।

এসআই মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, নিহতের পরিবার জানিয়েছে তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন। পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে ময়নাতদন্ত  ছাড়া মরদেহ হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে ।

শাওন/মেহেদী/

হাইমচরে ১২ লাখ চিংড়ির পোনা জব্দ

প্রকাশ: ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৩:৪২ পিএম
আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৪:২০ পিএম
হাইমচরে ১২ লাখ চিংড়ির পোনা জব্দ
হাইমচরে ১২ লাখ চিংড়ির পোনা জব্দ। ছবি: সংগৃহীত

চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলায় মেঘনা নদী থেকে অবৈধভাবে প্রায় ১২ লাখ বাগদা চিংড়ির পোনা ধরে তা পাচারের সময় জব্দ করেছে কোস্টগার্ড। জব্দ পোনার আনুমানিক মূল্য ৪৫ লাখ টাকা। পরে এসব রেণুপোনা ডাকাতিয়া নদীতে অবমুক্ত করা হয়।

মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) বেলা ১১টার দিকে এসব তথ্য জানান চাঁদপুর সদর উপজেলা সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান।

তিনি বলেন, ‘সোমবার (২৮ এপ্রিল) রাত ৯টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে হাইমচর উপজেলার গরম বাজার এলাকায় কোস্টগার্ড ও মৎস্য বিভাগ যৌথ অভিযান পরিচালনা করে। এ সময় মেঘনা নদী থেকে ধরে আনা বাগদা চিংড়ির পোনা খুলনা ও সাতক্ষীরা পাচারের সময় তা জব্দ করা হয়। একশ্রেণির অসাধু জেলে বছরের এই সময়টাতে মেঘনা নদী থেকে অবৈধভাবে ছোট জাল দিয়ে বাগদা চিংড়ির পোনা ধরে সংরক্ষণ করে রাখে। পরে এসব পোনা চালান করা হয়।’ 

অভিযানে কোস্টগার্ডের চিফ পেটি অফিসার এম. শফিকুল ইসলামসহ অন্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। 

চাঁদপুর সদর উপজেলা জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা মির্জা ওমর ফারুকের উপস্থিতিতে রাত ১১টার দিকে ড্রামভর্তি এসব চিংড়ির পোনা কোস্টগার্ড চাঁদপুর স্টেশন এলাকায় ডাকাতিয়া নদীতে অবমুক্ত করা হয়।

ফয়েজ/তাওফিক/ 

চাকরির আশ্বাসে রাশিয়া নিয়ে পাঠানো হয় ইউক্রেন যুদ্ধে

প্রকাশ: ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৩:৩৯ পিএম
আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৩:৫০ পিএম
চাকরির আশ্বাসে রাশিয়া নিয়ে পাঠানো হয় ইউক্রেন যুদ্ধে
ছবি: সংগৃহীত

আমার ছেলে প্যাকেজিং কোম্পানিতে চাকরির আশা নিয়ে রাশিয়া গেছে। ১২ লাখ টাকা সুদে ধার করে ছেলেকে বিদেশে পাঠিয়েছি। তাকে কেন যুদ্ধে পাঠানো হলো। তাকে যারা চাকরি দেওয়ার মিথ্যা কথা বলে রাশিয়া নিয়ে যুদ্ধে পাঠিয়েছে, তাদের বিচার চাই। আমার ছেলেকে ফেরত চাই বলে কান্নায় ভেঙে পড়েন টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার কুরমুশী গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক ফয়েজ উদ্দিন। বলছিলেন একমাত্র সন্তান নাজির উদ্দিনের কথা।

প্যাকেজিং কোম্পানিতে চাকরির কথা বলে নাজিরকে নেওয়া হয় রাশিয়ায়। কিন্তু সেখানে যাওয়ার পর পাঠানো হয় সামরিক প্রশিক্ষণে। ১৪ দিন প্রশিক্ষণ দেয়ার পর পাঠানো হয় রণাঙ্গনে। ইউক্রেনের বিরুদ্ধে সম্মুখ সমরে যাওয়ার পর থেকে বাড়ির সাথে কোন যোগাযোগ নেই নাজিরের।

২০১৭ সালে নাজির ইরাক গিয়েছিলেন। তিন বছর সেখানে চাকরি করে দেশে ফিরে আসেন। নিজ এলাকায় ব্যবসা বাণিজ্য করার উদ্যোগ নেন। কিন্তু সফল হননি। তাই আবার বিদেশে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তার সাথে ঢাকার মিরপুর এলাকার এসপি গ্লোবাল নামক একটি জনশক্তি রপ্তানীকারক প্রতিষ্ঠানের যোগাযোগ হয়। ওই প্রতিষ্ঠানের মামুন নামের এক ব্যক্তির মাধ্যমে রাশিয়া যাওয়ার বিষয়টি চূড়ান্ত হয়। ১২ লাখ ২০ হাজার টাকা নেয় প্রতিষ্ঠানটি।

গত ১৫ ডিসেম্বর নাজির উদ্দিন রাশিয়ার উদ্দেশে রওনা হন। দুবাই হয়ে রাশিয়া পৌঁছান তিনি। তারপর একটি ক্যাম্পে কয়েকদিন রাখা হয়। কিছুদিন পর সেখান থেকে বিমানে আরেক জায়গায় নেওয়া হয়। ওই জায়গায় ১৪ দিনের সামরিক প্রশিক্ষণ দিয়ে ইউক্রেন সীমান্তে নেওয়া হয় তাদের। গত ১৬ এপ্রিল সকালে নাজির উদ্দিন টেলিফোনে কান্না করে বাবা ও স্ত্রীকে জানান, তাদের ইউক্রেনের সম্মুখ সমরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। সেদিনের পর থেকে বাড়ির সাথে কোন যোগাযোগ নেই নাজির উদ্দিনের।

মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) দুপুরে ঘাটাইলের কুরমুশী গ্রামে নাজিরদের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, ছেলের চিন্তায় উদ্বিগ্ন বাবা ফয়েজ উদ্দিন। ছেলের খবরের আশায় প্রতিদিন বিভিন্ন জায়গায় যোগাযোগ করছেন। স্বামীর চিন্তায় অস্থির স্ত্রী কুলসুম।

ফয়েজ উদ্দিন বলেন, আমার ছেলে প্যাকেজিং কোম্পানীতে চাকরির আশা নিয়ে রাশিয়া গেছে। তাকে কেন যুদ্ধে পাঠানো হলো। তাকে যারা চাকরি দেওয়ার মিথ্যা কথা বলে রাশিয়া নিয়ে যুদ্ধে পাঠিয়েছে, তাদের বিচার চাই। তিনি তার ছেলেকে ফিরিয়ে আনতে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সরকার ও রাশিয়ান দূতাবাসের প্রতি দাবি জানান।

নাজির উদ্দিনের স্ত্রী কুলসুম বেগম জানান, পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি নাজির। রাশিয়া যাওয়ার পর তাকে যখন যুদ্ধের প্রশিক্ষণে পাঠানোর কথা জানতে পারেন, তখন থেকে প্রতিদিন টেলিফোন করে কান্নাকাটি করতেন। ১৬ এপ্রিলের পর থেকে তার সাথে কোন যোগাযোগ নেই। তিনি বেঁচে আছেন নাকি মরে গেছেন, সে সম্পর্কেও কোন খোঁজ পাচ্ছেন না।

কুলসুম বেগম আরও বলেন, আমার একমাত্র মেয়ে বয়স মাত্র সাড়ে তিন বছর। সেও প্রতিদিন বাবার খবরের আশায় মোবাইল ফোনের দিকে তাকিয়ে থাকে। সরকার প্রধানের কাছে আমার দাবি, আমার স্বামীকে যুদ্ধ ক্ষেত্র থেকে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করা হোক।

স্থানীয় সোহাগ নামে এক জন বলেন, সে অনেক ভালো লোক ছিলো, তার সাথে দালাল চক্রের এরকম করা ঠিক হয়নি৷ আমরা এলাকাবাসী চাচ্ছি নাজিরকে যেন দেশে ফিরিয়ে আনা যায়।

আব্বাস আলী নামে একজন বলেন, এলাকাবাসীর দাবি যে কোন উপায়ে নাজিরকে যেন দেশে ফিরিয়ে আনা হয়। আমরা নাজিরকে দেখতে চাই। 

এদিকে অভিযুক্ত মামুনের মুঠোফোনে বার বার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। 

টাঙ্গাইল ঘাটাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি রকিবুল ইসলাম বলেন, এবিষয়ে ভুক্তভোগীর বাবা এসেছিলেন। তাকে অভিবাসী মন্ত্রনালয়ে যোগাযোগ করার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া যে কোন সহযোগিতা থানা থেকে করা হবে।

জুয়েল/সিফাত/